@
@
@
@
@ |
@
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত ভয়াবহ ঘটনার
পূর্বাপর পর্যালোচনা
@
প্রফেসর আবদুল মান্নান
জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ফ্রন্ট ইসলামী ছাত্র শিবির কর্তৃক গত ১০
সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি শিক্ষক বাসে ককটেল হামলা সহ
সশস্ত্র হামলা এবং এই হামলায় বারজন শিক্ষকের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কে
বিভিন্ন গণমাধ্যমের কল্যাণে এরই মধ্যে দেশের মানুষ জেনে গেছে । ঘটনাটি ঘটেছে
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস হতে প্রায় দুই কিলোমিটাার দূরে নন্দির হাটে । ঘটনাটি
ঘটার আধঘন্টা পর আমি ওই রাস্তা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই এবং ক্যাম্পাসে
শিক্ষক ও কর্মচারিদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ লক্ষ্য করি যা ছিল স্বাভাবিক ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের দুর্বৃত্তপনা নতুন কিছু নয় তবে
শিক্ষকভর্তি বাসে হামলা এবং এই ঘটনায় শিক্ষক আহত হওয়া এই প্রথম । এর
কয়েকদিন আগে তারা ক্লাস করতে আসা শত শত শিক্ষার্থী ভর্তি শাটল ট্রেনে ককটেল
হামলা করে তাদের দুর্বৃত্তপনার নতুন যুগের সূচনা করেছে । ১০ তারিখের ঘটনা
দেশের প্রায় সকল গণমাধ্যমে সঠিক ভাবে প্রচারিত হলেও কয়েকটি গণমাধ্যম এই
হামলার জন্য দুর্বৃত্তদের দায়ী করেছে শিবিরকে নয় । ঘটনার পর শিবির এই ঘটনার
জন্য ছাত্রলীগের অন্তঃদলীয় কোন্দলকে দায়ী করেছে এবং তাকেই কয়েকটি গণমাধ্যম
প্রাধান্য দিয়ে তাদের রিপোর্ট করেছে । একটি পত্রিকাতো আবার এক কাঠি উপরে
গিয়ে লিখেছে এই ঘটনার জন্য অভিযুক্ত কয়েকজনকে পুলিশ আটক করলে উপাচার্য নাকি
তাদের ছাড়িয়ে আনার জন্য তদবির করছেন । দূর্ভাগ্য হচ্ছে বিভিন্ন পত্র
পত্রিকার হয়ে যারা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন তাদের কদাচিৎ
একটি বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকে ।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকরাও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের দলীয় কোন্দলের
সাথে নিজেদের জড়িয়ে ফেলেন এবং তাদের অনেকেরই রিপোর্টিংfএ তাদের রাজনৈতিক বা
দলীয় মতাদর্শ প্রতিফলিত হয় । অনেকেই আবার ঘটনার পিছনের ঘটনা সম্পর্কে হয়
ওয়াকিবহাল থাকেন না অথবা থাকলেও তা প্রকাশ করেন না । কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়
সাংবাদিকের আনাড়িপনা বেশ পীড়াদায়ক ।
১০ তারিখের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পিছনে মূল কারণ ছাত্রশিবিরের তাদের শক্তঘাঁটি
বলে পরিচিত সোহরোওয়ার্দি হল ও শাহ আমানত হলের হাতছাড়া হয়ে যাওয়া । এই দুটি
হল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংঘর্ষের কারণে বর্তমানে বন্ধ করে দিয়েছে
এবং এর প্রতিবাদে তারা সাধারন শিক্ষার্থীদের ব্যনারে একটি অকার্যকর অবরোধ
ডেকেছিল । এটি তাদের নিয়মিত ফেরেবাবাজির একটি নমুনা । গত জানুয়ারি মাসে
প্রশাসন প্রথমে বন্ধ করেছে শাহ আমানত আর আগস্ট মাসে সোহরোওয়ার্দি হল ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই ব্যবস্থার কারণে দীর্ঘ প্রায় দুই দশক দখলে
থাকা এই দুটি হল শিবিরের হাত ছাড়া হয়ে গেল । কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছে
এই দুfটি হল পর্যায়ক্রমে বৈধ ছাত্রদের জন্য খুলে দেয়া হবে । শাহ আমানত হলের
আবাসিক ছাত্রদের অনেকেই ইতোমধ্যে পরীক্ষা দিয়ে হল ছেড়েছে । এটি শিবিরের কাছে
গ্রহণযোগ্য নয় কারণ তা হলে তাদের দখলে থাকা অনেক অবৈধ সিট তাদের হাতছাড়া হয়ে
যেতে পারে । ১৯৯৯ সনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলের সব সিট বাতিল করে
দিয়ে অনুষদ ভিত্তিক সিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল । এটি করতে গিয়ে শুধু ছাত্র
শিবিরের বিরোধিতার মুখেই পরতে হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষকও তার
বিরোধিতা করেছিলেন । এই সব শিক্ষক ছাত্র শিবিরের স্থানীয় অভিভাবক হিসেবে
কাজ করেন । বাতিলের পর দেখা গেল বিভিন্ন হলে প্রায় সাতশত সিট শিবিরের অবৈধ
দখলে আছে এবং এই সিট গুলি তারা ভাড়া দিয়ে সিট প্রতি দুই হতে সাতশত টাকা
পর্যন্ত মাসে ভাড়া আদায় করে । অনেকেই হয়তো জানেন না এই বিশ্ববিদ্যালয়ের
চারপার্শে গড়ে উঠা বিভিন্ন প্রাইভেট মেসের প্রায় সবগুলিই শিবিরের
মালিকানাধীন । এই কাজে তাদের মূল সংগঠন জামায়াত আর্থিক সহায়তা দেয় । এরই
মধ্যে জামায়াত এই এলাকায় অনেক স্থাবর সম্পত্তির মালিকও হয়েছে আর ছাত্র
শিবিরের অনেকেই এই এলাকায় বিয়ে শাদি করে তাদের ঘাঁটি শক্ত করেছে । ১৯৭৩
সনের পর এই নির্বাচনী (হাটহাজারি) আসন হতে কোনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কখনো
বিজয়ী হন নি । বর্তমানে জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এই আসন হতে
নির্বাচিত সংসদ সদস্য । এর আগে দীর্ঘ দিন যিনি বিএনপি হতে সংসদ সদস্য ছিলেন
তিনি একাত্তরে সাকা চৌধুরীর ডান হাত ছিলেন । অনেকের প্রশ্ন তার বিরেুদ্ধে
কেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার শুরু হচ্ছে না ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামি ছাত্র শিবির কখনো সংগঠিত বা তাদের
অস্তিত্বও ছিল না । ১৯৮২ সনে চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের তাদের উত্থান এবং অনেকে অবাক হলেও সেই নির্বাচনে ছাত্র
শিবিরের বিজয়ের পিছনে ছাত্রলীগের বড় অবদান ছিল কারণ ছাত্রলীগ দুটি প্যানেল
দিয়ে নিজেদের পরাজয় নিশ্চিত করেছিল । সেই নির্বাচনে চাকসু ভিপি নির্বাচিত
হয়েছিল শিবিরের জসিম উদ্দিন সরকার আর সাধারণ সম্পাদক আবদুল গাফ্ফার । জসিম
পরবর্তীকালে ঢাকা মহানগরের জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা হন আর গাফ্ফার
চট্টগ্রামের একটি সরকারি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন । এই শিবিরকে ঠেকানোর
জন্য ১৯৮৯ সনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে একটি শিবির বিরোধী
মোর্চা হয় যেখানে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট সহ
প্রগতিশীল সকল ছাত্র সংগঠন একটি সম্মিলিত প্যানেল দিয়ে নির্বাচন করে । এই
ঐক্য গঠনের পিছনে ছাত্র সংগঠনগুলির চেয়ে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
অনেক বেশী অবদান রাখেন, যাদের মধ্যে দুfটি নাম উল্লেখযোগ্য । একজন হচ্ছে
আওয়ামী লীগের এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী আর অন্যজন বিএনপিfর আবদুল্লাহ আল
নোমান । দূর্ভাগ্য সেই সময় বড় বড় রাজনৈতিক দল গুলির নেতৃবৃন্দ অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রখালেও তা বর্তমানে আর দেখা যায় না বরং কোন কোন সময়
তাঁদের শহরের রাজনৈতিক কোন্দল তাঁরা ক্যাম্পাসে চালান দেন এবং ক্যাম্পাসকে
অস্থিতিশীল করতে নিজেরাও কম অবদান রাখেন না । ১৯৮৯ সনের সর্বদলীয় ছাত্র
ঐক্য চাকসুতে ধ্বস নামানো বিজয় অর্জন করে ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের জন্ম লগ্ন হতেই ছাত্র শিবির বেপরোয়া ছিল
এবং তাদের হাতে সব চেয়ে বেশী নিগৃহীত হয়েছে ছাত্র দলের নেতা কর্মীরা । ১৯৮৬
সনের ২৬ নভেম্বর ছাত্র দল হতে এরশাদের ছাত্র সমাজে আসা আবদুল হামিদের ডান
হাত ইটের উপর রেখে কিরিচ দিয়ে কব্জি পর্যন্ত কেটে নিয়ে তা কিরিচের মাথায়
গেঁথে শিবির সভাপতি আমির হোসেনের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে তারা মিছিল বের করে ।
তার আগে হামিদকে বন্দুকের ছররা গুলি ছুড়ে তার বাম চোখ চিরতরে অন্ধ করে দেয়
। ১৯৯৩ সনে তারা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ইসলামী
ইতিহাস বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ডঃ এনামুল হকের পুত্র ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ
মুসাকে পিটিয়ে হত্যা করে । ১৯৯০ সালের ২২ ডিসেম্বর শিবিরের অবরোধ উপক্ষো করে
কয়েক হাজার ছাত্র ও শিক্ষক ক্লাস নিতে ক্যাম্পাসে গেলে শিবিরের সশস্ত্র
ক্যাডাররা ছাত্র শিক্ষকদের উপর এক ভয়াবহ হামলা চালায় এবং প্রায় ষাটজন
শিক্ষককে গুরুতরভাবে আহত করে । হত্যা করা হয় ছাত্রনেতা ফারুকুজ্জামান
ফারুককে এই ঘটনার সাথে জড়িত তিনজন শিবির ক্যাডার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
হয়েছিলেন । ২২ ডিসম্বেরের ঘটনার পর তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক বছর অচল করে
রাখে এবং এক পর্যায়ে একজন নির্বাচিত উপচার্যের পদত্যাগ দাবি করে তাঁর বাড়িতে
পানি বিদ্যুত বন্ধ করে তার বাসভবনের সামনে মাইক লাগিয়ে রাত দিন চব্বিশ ঘন্টা
তাঁকে অবিরাম গালিগালাজ করতে থাকে । তিনি সেই অবস্থায় বারদিন বন্দী ছিলেন
এবং এক পর্যায়ে তৎকালিন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ বদরুদ্দোজা তাঁর সাথে দেখা করে
তাঁকে শিবিরের দাবি অনুযায়ী পদত্যাগ করতে পরামর্শ দেন । বলাবাহুল্য
উপাচার্য তা করতে অস্বীকার করেন এবং বেগম জিয়া ১৯৯১ সনের ২৯ মে তাঁকে তাঁর
পদ হতে অব্যাহতি দিয়ে এক নজিরবিহীন ন্যাক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ।
১৯৯৯ সনে শিবিরের ক্যাডাররা শহর হতে শিক্ষক আনতে যাওয়া বাসে গুলি ছুঁড়লে
হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ডঃ আহমদ নবীর ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের
মেধাবি ছাত্র মুসফিক নিহত হয় । ডঃ নবী বিএনপিfর রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন ।
২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর শিবির ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে ছাত্রলীগের
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আলি মর্তুজাকে । ১৯৯৯ সালে রাত বারটার সময়
শিবিরের ক্যাডাররা আমার নিজস্ব বাড়িতে হাতবোমা নিক্ষেপ করে । পরে পরিকল্পনা
করে আমার গাড়ীতে ব্রাস ফায়ার করবে । গোয়েন্দা সংস্থার আগাম সতর্কবাণীর কারনে
সে যাত্রায় বেঁচে যাই ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিবিরের এই দৌরাত্ম বন্ধ করতে অনেকে বলেন
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের সংখ্যা ৩০ ভাগ তারা কেন হলে থাকবে ? হলে তো থাকবে
বাকি ৭০ ভাগ । এটি একটি অনেকটা বাস্তবতা বর্জিত দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি ।
বাস্তবে ক্যাম্পাসে ২২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র শিবিরের রগকাটা
রাজনীতির সাথে ১০ ভাগ ছাত্রও জড়িত নয় । ধরে নেয়া যায় ৭০ হতে ৮০ ভাগ ছাত্র
ছাত্রী কোন ছাত্র সংগঠনের সাথেই সম্পৃক্ত নয় । বাকি দশ ভাগ অন্যান্য ছাত্র
সংগঠনের রাজনীতির সাথে জড়িত । এদের মধ্যে ছাত্রদলের কমিটি থাকলেও তাদের কোন
কর্মকান্ড নেই । বাম ছাত্র সংগঠন গুলি ছাত্র বেতন দুfটাকা বৃদ্ধি করলে তৎপর
হয় । ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে সর্বদা অন্তঃকলহে লিপ্ত থেকে শক্তি ক্ষয় করে ।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় তাদের কোন কমিটি নেই । নতুন কমিটি ঘোষণা হলে
পূর্বের অভিজ্ঞতায় বলা যায় সংঘাত অনিবার্য । কfদিন আগে ঢাকায় সরকারী
তিতুমীর কলেজে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলে পদবঞ্চিতরা বিমান বন্দর সড়ক বন্ধ
করে দিয়ে বেশ কয়েকটি গাড়ী ভাঙচুর করেছে । দক্ষিণ চট্টগ্রামের কমিটি নিয়ে
তেমনটি হবে বলে অনেকের ধারণা । চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা
কর্মীরা নিজের স্বার্থে অন্যের দ্বারা ব্যবহৃত হন বলে অভিযোগ অনেকেরই । এই
অন্যদের মধ্যে যেমন আছেন কিছু অপরিণামদর্শী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঠিক তেমন
আছেন কিছু পদলোভী শিক্ষক । যাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগই ছিল একটি দূর্ঘটনা
তাদের অনেকেই নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে ছাত্রলীগ নেতাদের ব্যবহার করেন বলে
ক্যাম্পাসে অনেকে মনে করেন । অথচ এক ছাত্রলীগই যদি সুস্থ রাজনীতি করতো তাহলে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবির নামের এই দুর্বৃত্তদের অস্তিত্ব
খুঁজে পাওয়া যেত না । আর যারা ৭০-৩০ অনুপাতে হলের সিট ভাগের কথা বলেন তারা
তা সৎ উদ্দেশ্যে বলেন না । হলের সিট মেধার ভিত্তিতে ভাগ হয় কে কোন ছাত্র
সংগঠন করে তার ভিত্তিতে নয় । যারা হলে সিট পায় তাদের শিবির প্রয়োজনে নানা
সুযোগ সুবিধা দিয়ে নিজেদের দলে টানে । অন্যদের তেমন কোন কর্মসূচী নেই ।
ছাত্র শিবিরকে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করার দাবি বহু পুরানো । কিন্তু এই কাজটি
কোন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিক ভাবে করতে পারে না, করতে হলে
রাষ্ট্রকে করতে হবে । দেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করার দাবি
বহুপুরানো । বৃটেনের জেনস ডিফেন্স উইকলির জরিপ অনুযায়ী ছাত্র শিবির বর্তমানে
বিশ্বের তৃতীয় ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী সংগঠন । রাষ্ট্রীয়ভাবে হিযবুত্ তাহরির বা
জেএমবি যদি নিষিদ্ধ হয় যায় হলে জামায়াত শিবির নয় কেন ? একই সাথে
ক্যাম্পাসগুলিকে অপরাজনীতির হাত হতে মুক্ত করতে হলে দেশে সুস্থ ছাত্র
রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে, টেন্ডাবাজি, চাঁদাবাজি আর ধান্ধাবাজি
নির্ভর কোন রাজনীতি আর নয় । ১০ তারিখের ঘটনায় আমার যে সকল সহকর্মী আহত
হয়েছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা ও সমবেদনা। ইতোমধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে এই
ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করেছেন । সকলের প্রত্যাশা পুলিশ কোন
পক্ষপাতিত্ব না করে তাদের বিরুদ্ধে সঠিক অনুসন্ধান পূর্বক দেশের আইনে
ফৌজদারি মামলা রুজ্জু করবেন । আর এদের মধ্যে যদি কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে
সম্পৃক্ত থাকেন তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনেও সাজা দিতে হবে । আর যারা ঘোলা
পানিতে মৎস্য শিকারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন তারা তা হতে নিভৃত হলে তাদের ও
বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মঙ্গল । ভাগ্যে থাকলে স্বচ্ছ পানিতেও মৎস পাওয়া যায় ।
লেখক : সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । সেপ্টম্বর ১৩, ২০১৪
@
@
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
@
[প্রথমপাতা] |
@
@
@
লেখকের আগের লেখাঃ
[......লেখক আর্কাইভ]
|