প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

 

 

মোদি ম্যাজিক বলতে কিছু নেই!

 


-প্রফেসর আবদুল মান্নান

কট্টর হিন্দুত্ববাদীর প্রবক্তা গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদার মোদি আধুনিক ভারতের প্রধানমন্ত্রী হোক তা বিশ্বের কোন দেশই চায় নি কিন্তু সেই মোদিই আগামী ২৭ মে ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন । ২০ মে বিজেপি সংসদ ভবনে দলের সংসদীয় কমিঠির বৈঠকে যোগ দিয়েছেন । ভারতের জনগণ তাকে হাত খুলে ভোট দিয়েছেন কারণ তিনি নিজেকে জনগণের সামনে কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে সফল ভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন । যে কংগ্রেস স্বাধীন ভারতে বেশীর ভাগ সময় শাসন করেছে সেই কংগ্রেস তার ১২৮ বছরের ইতিহাসে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে সর্বনিম্ন ৪৪ আসন পেয়ে বিরোধী দলের নেতা হওয়ার যোগ্যতাও হারিয়েছে । বিরোধী দলের নেতা হতে হলে আরো দশটি আসনে বিজয়ী হতে হতো । অবস্থা এমন হয়েছে যে বর্তমানে সংসদে একক ভাবে কোন দল বিরোধী দলের নেতার আসনটি দাবিও করতে পারবে না । সোনিয়া গান্ধীর কংগ্রেস, জয়ললিতার এআইএডিএমকে, মমতার তৃণমূল আর সিপিএম’র সাথে জোটবদ্ধ হয়ে লোকসভায় একটি বিরোধী দলীয় জোট বাঁধতে হবে । তারপর জোট ঠিক করবে কে হবেন বিরোধী দলীয় নেতা । বিরোধী দলের নেতা বাছাইয়ের এমন ঘটনাও অভূতপূর্ব । তবে এই মুহূর্তে এটি অনেকটা পরিষ্কার যে কংগ্রেসের কেউ বিরোধী দলীয় নেতা হবেন না ।
ভারতে নির্বাচনের সময় কিছু দিন আমার সে দেশে অবস্থান করার সুযোগ হয়েছিল । চেষ্টা করেছি সেই নির্বাচনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে কিছু মানুষের সাথে কথা বলতে । সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে দিল্লির মসনদে মোদিকে বসানোর পিছনে অবদান অনেকের, মোদির নিজস্ব অবদানতো আছেই । গান্ধী-নেহেরুর কংগ্রেস এখন অনেকটা নেতৃত্বশূন্য । তারা জনগণের প্রত্যাশা বুঝতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে । ভারত একটি দেশ যার ভিতর অনেক ‘রাষ্ট্র’ যার প্রায় সবগুলিই নিজস্ব স্বতন্ত্রতায় শুধু বিশ্বাসই করে না তা ধারণও করে। এমনকি দেব দেবীকেও তারা ভাগ করে নিয়েছে । সার্বিক বিচারে ভারত সম্পূর্ণভাবে একটি Heterogeneous বা বহুধা বিভক্ত দেশ । তেমন দেশে সফল ভাবে সারা দেশব্যাপি, এই ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় ভাবে, রাজনীতি করতে হলে যে বিচক্ষণতার প্রয়োজন ছিল তা কংগ্রেসের বর্তমান প্রজন্মের নেতাদের মাঝে তেমন একটা দেখা যায় নি । সোজা কথাই বলতে হলে তা তারা বুঝতে পারে নি । শুরু থেকে কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকে মোদির বিরুদ্ধে ভারতের পরবর্তি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে বটে কিন্তু রাহুল গান্ধীর সরকার পরিচালনায় কোন অভিজ্ঞতাই ছিল না । অন্যদিকে মোদি গুজরাটের তিনবারের মূখ্যমন্ত্রী । এই নির্বাচনে তিনি ভারতের জনগণকে এটা বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে তাঁর তথাকথিত গুজরাট মডেল সারা ভারতে প্রয়োগ করলে ভারতের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে । রাতারাতি পাল্টে যাবে ভারতের আর্থ-সামজিক চিত্র ।
এই মুহূর্তে ভারতের প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে আছে চরম অর্থনৈতিক মন্দা, দূর্নীতি, বিদ্যুৎ ঘাটতি, মুদ্রঅষ্ফীতি, বেকার সমস্যা ইত্যাদি । ভারতে এই সমস্যাগুলি সব সময় ছিল কিন্তু বিগত কংগ্রেস সরকারের সময় তার মাত্রা শুধু বৃদ্ধি পেয়েছে । মোদি জনগণকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন এই সমস্যাগুলি কংগ্রেসেরই সৃষ্টি । মোদি জনগণের ভাষায় কথা বলতে পেরেছেন এবং জনগণ তাকে বিশ্বাস করেছেন । শুধু সাধারণ জনগণ নয় ভারতের বুদ্ধিজীবী আর সুশীল সমাজের একটি বিরাট অংশ মোদির এই টোপ গিলেছেন । পশ্চিম বঙ্গে মোদির বিজেপি মোট ভোটের প্রায় ১৮% পেয়েছে যদিও আসন পেয়েছে দুটি । এর আগেরবার এই রাজ্যে বিজেপি’র ভোট সংখ্যা ছিল ৯% । এর অর্থ হচ্ছে এমনটি চলতে থাকলে আর একটি কী দুটি রাজ্য বিধান সভা নির্বাচনের পর এই রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠন করলে অনেকেই অবাক হবেন না । কোথা হতে আসলো এই বাকি ৯% ভোট ? অনেকের মতে পশ্চিম বঙ্গের রাজনীতিতে একটা ‘ঠেকাও সংষ্কৃতি’ বেশ ভাল ভাবে কাজ করে । এটি শুরু হয়েছে এই রাজ্যে ৩৪ বছর বামফ্রন্টের রাজত্বকালে । এই ৩৪ বছর বামফ্রন্ট পশ্চিম বঙ্গে অনেক ভাল কাজ করেছে এটি যেমন সত্য ঠিক তেমন সত্য তারা তাদের রাজনীতিতে রাজনৈতিক দূবৃর্ত্তদের জন্য একটি জায়গা করে দিয়েছে । ২০১১ সালের বিধান সভা নির্বাচনের সময় রাজ্যের সাধারণ ভোটাররা সিদ্ধান্ত নিল বামফ্রন্টকে ঠেকাতে হবে এবং মমতা ব্যানার্জির মতো একজন চরম হঠকারি রাজনীতিবিদকে ক্ষমতায় আনতে হবে । সেই নির্বাচনে রাজ্যের অধিকাংশ বুদ্ধিজীবী আর সুশীল সমাজের নেতারা মমতাকে সমর্থন করলেন । প্রাপ্ত তথ্য মতে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনেও অনেক জায়গায় সিপিএম আর তৃণমূল ঠেকাও’র অংশ হিসেবে অনেকেই বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন । যারা মোদির ‘গুজরাট মডেল’কে বিশ্বাস করে তাকে দু’হাত তুলে এই সমর্থন দিয়েছেন তারা একটি বিষয় হয়তো বুঝতে পারেন নি আর সেটা হচ্ছে ভারত একটি ফেডারেল রাষ্ট্র এবং সেখানে রাজ্য সরকার গুলি বেশ শক্তিশালী । চাইলেই কেন্দ্র সরকার অনেক কিছুই করতে পারবে না । বাংলাদেশের সাথে তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি এক মমতা ব্যানার্জিই রুখে দিতে সক্ষম হয়েছেন যদিও ভারতের কেন্দ্র সরকারের এতে কোন আপত্তি ছিল না । অন্যদিকে টাটা পশ্চিম বঙ্গের সিঙ্গুরে তার ন্যানো গাড়ী সংযোজন কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিলো । বাদ সাধলো মমতা । তখন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় । কারখানা স্থাপনের কাজ অর্ধেক পথে ফেলে রেখে টাটা ছুঠলো গুজরাটে কারণ নরেন্দ্র মোদি বলেছেন গুজরাটে টাটা যত ইচ্ছা কারখানা বানাতে পারে, সব সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে । টাটা এখন গুজরাটে ন্যানো গাড়ী বানায় কারণ মোদি বত্রিশ হাজার কোটি রুপি রাজ্য এবং রাষ্ট্রের ক্ষতি করে সেখানে টাটাকে কারখানা স্থাপনের সুবিধা দিয়েছে । রুপির এই সংখ্যাটি কোলকতার দেয়ালে দেখে এলাম । সেটি জনগণের কাছে এই মুহূর্তে মূখ্য নয় কারণ এই কারখানা স্থাপনের ফলে সেখানে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে । আর মোদির ভাগ্য ভাল ভারতে টিআইবি’র মতো তেমন কোন ক্রিয়াশীল সংগঠন নেই ।
বিভিন্ন সংস্থার হিসাব মতে মোদির নির্বাচনী কাজে ১০৩টি দেশী ও বিদেশী কর্পোরেট হাউজ পাঁচ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করেছে, যা ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণের । একই পরিমানের অর্থ বিদেশ হতেও এসেছে বলে অনেকের ধারণা । ঠিক কত রুপি এই নির্বাচনে মোদির দল বিজেপি খরচ করেছে তা হয়তো কখনো জানা যাবে না । চলতি বছরে বাংলাদেশে বার্ষিক বাজেটের পরিমাণ আড়াই লক্ষ কোটি টাকা । তা যোগাড় করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হয় । ভারতের বিশিষ্ট লেখিকা অরুন্ধতি রায় কানাডার ভ্যানকুবার হতে প্রকাশিত পত্রিকা ‘জর্জিয়া স্ট্রেইটে’ দেয়া এক সাক্ষাতকারে সম্প্রতি বলেছেন ভারতের শাসন ক্ষমতা আর রাজনীতি উভয়ই এখন কর্পোরেট হাউজগুলির নিয়ন্ত্রণে চলে গেল । তারা মোদির মাধ্যমে সেই নিয়ন্ত্রণ চালু রাখবে । দরিদ্র আরো দরিদ্র হবে । আগামীতে ভারতে আর সুস্থ ধারার রাজনীতি ফিরে আসাও কঠিন হবে । ভারতে অবস্থানকালে দেখেছি প্রায় প্রতিদিন সে দেশে কয়েক হাজার স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে প্রথম ও শেষের পৃষ্ঠা জুড়ে মোদি ও বিজেপির বিজ্ঞাপন । সব টিভি চ্যানেল খুললেই প্রতি বিজ্ঞাপন বিরতিতে ‘আবকি বার মোদি কা সরকার’ বাণী । সেখানে কংগ্রেস বা রাহুল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত । দিল্লিতে বিজেপি তিনশত নির্বাচনি দপ্তর খুলে সেখানে নিয়োগ দিয়েছে ভারতের বিশ্বসেরা আইআইএম এর গ্রাজুয়েটদের, কোন দলীয় টাউট বাটপারদের নয় । তাদের মাসিক বেতন ক্ষেত্র বিশেষে কুড়ি হাজার হতে পঞ্চাশ হাজার রুপি । তারা নিয়ে এসেছেন আধুনিক বিপণনের সকল চিন্তাধারা। মোদিকে তারা বুঝাতে পেরেছেন ভোটে জিততে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে । তাদের ভাষায় কথা বলতে হবে । বুঝাতে হবে কংগ্রেসের বিকল্প মোদির নেতৃত্ব আর সাথেতো দল বিজেপি আছেই । এই কাজটি ১৯৭০ এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু করতে পেরেছিলেন । তিনি জনগণকে বুঝাতে পেরেছিলেন পাকিস্তানের দুঃশাসন হতে মুক্তির একমাত্র উপায় নৌকা মার্কায় ভোট দেয়া । বঙ্গবন্ধুর সাথে কোন আইআইএম গ্রাজুয়েট ছিলেন না । ছিল তাঁর বিচক্ষণতা আর দূরদর্শিতা। তিনি সারা বাংলাদেশে চষে বেড়িয়েছিলেন । মানুষ তাঁর উপর আস্থা রেখেছিলেন । তিনি তাদের একটি স্বাধীন বাংলাদেশ এনে দিয়েছিলেন । যদিও মোদি ও বিজেপি গুজরাট মডেল সামনে এনে নির্বাচনে এই বিশাল বিজয়ের মালিক হয়েছেন তিনি তাঁর মডেল কতটুকু সর্বভারতে ছড়িয়ে দিতে পারবেন তা দেখার জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে হবে । গুজরাটে মোদির শিল্পবান্ধবতার কারণে শিল্পে বিনিয়োগের দিক দিয়ে গুজরাট ভারতে এখন তিন নম্বরে অবস্থান করছে । কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তার স্থান এক নম্বরে । এই রাজ্যের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে গেছে । কিন্তু মাতৃ মৃত্যু, শিশু মৃত্যু, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে আছে । সব চেয়ে মোদির জন্য নিন্দিত বিষয়টা হচ্ছে তিনি গুজরাটে একটি গণবিরোধী আইন (Disturbed Area Act) করে মুসলমানদের একঘরে করে দিয়েছেন । মুসলমানরা ইচ্ছা করলেই তাদের পছন্দমতো স্থানে জায়গা জমি কিনতে পারেন না যদিও গুজরাটের ছয় কোটি জনসংখ্যার ১০% মুসলমান । এই আইনের ফলে গুজরাটে জুহাপুরা নামে মুসলমানদের একটি আলাদা শহর গড়ে উঠেছে যাকে অন্যরা বলে ‘মিনি পাকিস্তান’ । এটি এক সময়কার দক্ষিণ আফ্রিকার চরম বর্ণবাদের চিহ্ন ‘ব্লাক টাউনশীপে’র সামিল । এখানকার বসবাসকারিদের সর্বক্ষণ ভয়ের সংষ্কৃতিতে বসবাস করতে হয় । এই সব নিয়ে কোন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কখনো মাথা ঘামায় না । এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে মোদি কি গুজরাট মডেল নামে এমন ব্যবস্থা ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও চালান দেয়ার চেষ্টা করবেন ?
মোদির ভারতের প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল বেশ সরগরম । ইতোমধ্যে প্রটোকল অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোদি ও ভারতের জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন । রাষ্ট্রাচারের রেওয়াজ অনুযায়ী তিনি মোদিকে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণও করেছেন । মুসলমান বিদ্বেষী মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এতে বিএনপি আর জামায়াতের তাবুতে আনন্দের মেজাজ লুকানো যাচ্ছে না । বিএনপি নেতা মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন এর ফলে বাংলাদেশে সরকার হঠাও আন্দোলন করতে তাদের সুবিধা হবে । দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম মোদির ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের প্রতি নিয়মিত তোপ দাগছেন । ভারতের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং মোদিকে অভিনন্দন জানানোর আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম জিয়া তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন । অবশ্য তিনি কোন প্রটোকলে তা জানিয়েছেন তা জানা যায় নি । মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে নরেন্দ্র মোদির সাথে তারেক রহমানের দহরম মহরম দীর্ঘ দিন হতে (বাংলাদেশ প্রতিদিন) । দু’জনই কট্টর সাম্প্রদায়িক দলের নেতা । বন্ধুত্ব হওয়াটাই স্বাভাবিক ।
মোদির নির্বাচনে এই ধ্বস নামানো বিজয়কে বলা হচ্ছে মোদি ম্যাজিক । আসলে এখানে ম্যাজিক বলতে কিছু নেই । যেটি আছে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা যেটি বাংলাদেশের খুব কম রাজনৈতিক নেতাদের থাকতে দেখা যায় । মোদির আর একটি বড় গুণ হচ্ছে নির্বাচনের সময় তার বিনয় । ২১ তারিখ মোদির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিও শপথ নেয়ার কথা ছিল । তিনি তা পিছিয়ে দিয়েছেন কারণ ওই দিন রাজীব গান্ধীর হত্যা দিবস । বাংলাদেশের ক’জন রাজনৈতিক নেতার এই গুণটা আছে ? ১৫ই অগাষ্ট বেগম জিয়া তার একটি জন্ম দিনের বড় কেক কাটেন । বাংলাদেশের অনেক রাজনীতিবিদদের অভিধানেইতো বিনয় শব্দটি নেই । রাহুল গান্ধী নির্বাচনী সভার মাঝখান হতে একাধিকবার উঠে চলে গিয়েছেন । এটা বিনয়ের লক্ষণ নয় । নির্বাচন শেষে তিনি কয়েক দিনের জন্য বালি দ্বীপে গিয়েছিলেন ক্লান্তি দূর করতে । মানুষ তা ভাল ভাবে নেয় নি। তাহলে সিপিএম’র মতো কংগ্রেসের রাজনীতির সূর্য কী এখন অস্তগামী ? তা নিশ্চয় নয় । এর আগেও একাধিকবার কংগ্রেস রাজনৈতিক দূর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে কিন্তু আবার ফিরে এসেছে । তার জন্য চাই ধীর স্থির দূরদর্শিতা সম্পন্ন নেতৃত্ব আর সামনের দিনগুলিতে পথ চলার সুনির্দিষ্ট কৌশল । মোদি ম্যাজিক সারা ভারতবর্ষে কাজ করবে তা নাও হতে পারে । রাজনীতি করতে হলে জনগনের প্রত্যাশা বুঝতে হয়, তাদের ভাষায় কথা বলতে হয় । তেমনটি হলে কোন রাজনীতিবিদই ঠকে না । বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের মোদির নির্বাচন পরিচালনা হতে অনেক কিছুই শেখার আছে ।

লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। মে ২৩, ২০১৪

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

[......লেখক আর্কাইভ]