[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

ভারতের লোকসভা নিয়ে পদ্মা পাড়ের ভাবনা

 


-প্রফেসর আবদুল মান্নান

৭ই এপ্রিল বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনের মহাযজ্ঞ শুরু হচ্ছে । ৩৫টি রাজ্যে ও ইউনিয়ন টেরিটরিতে নয় ধাপে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন শেষ হবে আগামী ১২ মে । ফলাফল ঘোষণা করা হবে ১৬ই মে । ৩১ মে পর্যন্ত বর্তমান পনেরতম লোকসভার মেয়াদ আছে । তার আগে ভেঙ্গে দেয়া না হলে তা নিয়ে বাংলাদেশের মতো সে দেশে কেউ হৈ চৈ করবে না । ভারত স্বাধীন হওয়ার পর হতে ছয়টি লোক সভা তার পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারে নি । চলতি নির্বাচনে ৮১.৪৫ কোটি ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন যার মধ্যে ১০ কোটি নতুন ভোটার । এই বিশাল নির্বাচনি মহাযজ্ঞে ভারতীয় ভোটাররা লোকসভায় ৫৪৩ জন সদস্য নির্বাচিত করবেন । যে দল সরকার গঠন করবে সেই দলকে ২৭২ জন লোকসভা সদস্যের সমর্থন আদায় করতে হবে । বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন তিনি এই নির্বাচনে লড়বেন না । আর বিভিন্ন নির্বাচনি জরিপকে যদি বিশ্বাস করতে হয় তা হলে ষোড়শ লোকসভায় ভারতের ঐতিহ্যবাহি এবং ঐতিহাসিক ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসকে বিরোধী দলে বসতে হবে । এই মুহুর্তে ভারতের নির্বাচনের উপর যারা চোখ রাখছেন তারা মনে করছেন নির্বাচনে কোন দল একক সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী না হলেও ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি কেন্দ্রে দ্বিতীয় বারের মতো একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন করবে এবং সেই সরকারের প্রধান হতে পারেন বর্তমানে গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী এবং ২০০২ সালে তার রাজ্যে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য দায়ী নরেন্দ্র মোদিই । আবার কারো কারো মতে মোদির দল একাই সরকার গঠন করার মতো সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে জয়ী হতে পারে । ২০০২ সালের দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ জন মুসলমান আর ২৫০ জন হিন্দুর মৃত্যু হয়েছিল । নরেন্দ্র মোদি লেখাপড়ায় অনেকটা অশিক্ষিত এবং এক সময় রেলষ্টেশনে চা ফেরি করতেন । তার দল বিজেপিকে বলা হয় কট্টর সাম্প্রদায়িক আরএসএস এর রাজনৈতিক ফ্রন্ট । তাদের দলের মূল মন্ত্র হিন্দুত্ববাদি ভারত । দ্বিজাতী তত্ত্বকে পুঁজি করে আরএসএস মনে করে ভারত হবে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বিদের । বিজেপি তা প্রকাশ্যে না বললেও মনে মনে তাকে ধারন করে । বাবরি মসজিদ ধ্বংসে বিজেপি’র হাত ষ্পষ্ট । সে সময় দিল্লির মসনদে বিজেপির শাসন । তারা বাবরি মসজিদ রক্ষায় কোন ভূমিকাতো রাখেই নি বরং এখন বলা হচ্ছে তারা আগে হতেই শিব সেনা, বজরংবলি এবং আরএসএসএ’র মসজিদ ভাঙ্গা পরিকল্পনা সম্পর্কে অবহিত ছিল । সত্যি সত্যি যদি নরেন্দ্র মোদি ভারতের পরবর্তি প্রধানমন্ত্রী হন তা হলে তা হবে অনেকটা নজিরবিহীন এবং একটি রাজনৈতিক ট্র্যাজেডি । কারণ এটি সেই ভারতবর্ষ যেখানে জন্ম নিয়েছে সাতজন নোবেল জয়ী প্রাজ্ঞ ও মহাগুনিজন । এই ভারতবর্ষে জন্ম নিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধি, নেতাজী সুভাষ বোস, প-িত জওহারলাল নেহেরু, মৌলানা আবুল কালাম আযাদ, দেশ বন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস আর ইন্দিরা গান্ধির মতো কালজয়ি রাষ্ট্রনায়ক আর রাজনীতিবিদরা ।
নির্বাচনটি ভারতে হলেও তা নিয়ে বাংলাদেশে উৎসাহ আর উৎকন্ঠা এবং শঙ্কার ঘাটতি নেই । লেখালেখি হচ্ছে প্রচুর । মধ্য রাতের টকশোতে এখন ভারতের নির্বাচন যায়গা করে নিয়েছে । অনেকে মনে করছেন সত্যি সত্যি যদি নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে সরকার গঠন করেন তাহলে বিএনপি তাতে বেজায় খুশী হবে কারণ কংগ্রেসকে আওয়ামী লীগের মিত্র হিসেবে দেখা হয় । কথাট হয়তো সত্য কিন্তু গত পাঁচ বছরে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার বাংলাদেশের সাথে যে সকল দ্বিপাক্ষিক সমস্যা আছে তা সমাধানের কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয় নি । বরং উল্টা তারা বাংলাদেশ হতে এক তরফা অনেক কিছুই আদায় করে নিয়েছে । বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ হতে ভারত যা পেয়েছে পূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় তা কয়েক গুন বেশী । সব চেয়ে বড় পাওনা হচ্ছে ভারতের পূর্ব সীমান্তে শান্তি স্থাপন । আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশ হতে ভারতে কোন জঙ্গিবাদ রপ্তানি হয় নি যা পূর্বের চারদলীয় জোট সরকারের আমলে রাষ্ট্রিয় পৃষ্টপোষকতায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছিল । এক তরফা বন্ধুত্ব তেমন কোন ভাল ফল বয়ে আনে না ।
যে সকল সংস্থা নির্বাচনি জরিপ করেছে তারা এখন পর্যন্ত বিজেপিকে এগিয়ে রেখেছে । তাদের মতে বিজেপি একেবারে নিরঙ্কুস সংখ্যা গরিষ্ট আসনে জয়ী না হলেও কম পক্ষে ২০০ হতে ২২৫ টি আসনে জয়ী হতে পারে । প্রশ্ন বাকি সমর্থন তখন কোথা হতে আসবে ? ভারতীয় রাজনীতির অংক খুবই জটিল । বর্তমান প্রেক্ষাপটে একক ভাবে কোন একটি রাজনৈতিক দল সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হওয়া অসম্ভব নয় তবে কঠিন । এর একটা কারণ গত তিন দশকে ভারতীয় রাজনীতিতে অনেকগুলি শক্তিশালী স্থানিয় রাজনৈতিক দলের আভির্ভাব । এগুলির অনেক গুলির জন্ম হয়েছে আবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে ভেঙ্গে । একসময় কংগ্রেস একটি সর্বভারতীয় দল ছিল যা এখন তারা আর দাবি করতে পারে না । ভারতের রাজনীতিতে স্থানিয় ইস্যুগুলি যথেষ্ট গুরুত্ব পায় এবং এক বিশাল দেশে তা গুরুত্ব পাওয়াটা স্বাভাবিক । যদিও বিশ্লেষকরা একমত যে ভারত বর্তমান শতকের একটি উঠতি অর্থনৈতিক পরাশক্তি তথাপি ভারতে এখনো সমষ্টিগত সংকীর্ণতা আর গোঁড়ামি বেশ শক্তভাবে গেঁড়ে বসে আছে । জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এখনো কুসংষ্করাচ্ছন্ন । কোন কোন এলাকায় বর্ণপ্রথা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে এবং জনগন তা মেনেও নিয়েছে । কংগ্রেসের বড় দূর্বলতা হচ্ছে তারা ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর সর্বভারতীয় নেতা হিসেবে কাউকে গড়ে তুলতে পারে নি । বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং উচ্চ শিক্ষিত, বেশ সজ্জন এবং সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত কিন্তু তিনি নিজেকে কখনো জন মানুষের নেতা হিসেবে পরিচিত করতে পারেন নি । দির্ঘ দশ বছর তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বটে কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার চাবিটা ছিল কংগ্রেস প্রধান ইতালিয় বংশোদ্ভুত সোনিয়া গান্ধীর হাতে । সেই দেশের মানুষ অন্তত তাই বিশ্বাস করে । সোনিয়া গান্ধীর ভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ অনেকটা আকস্মিক । আত্মঘাতি বোমায় রাজিব গান্ধী ১৯৯১ সনের ২১ মে নিহত হলে কংগ্রেস বেকায়দায় পরে যায় । দলের হাল ধরার জন্য কংগ্রেসে তেমন কেউ ছিলেন না আর তখন কংগ্রেস ও রাজিব গান্ধী বোফর্স অস্ত্র ক্রয়ে যে ব্যাপক দূনীর্তির অভিযোগ হয়েছে তা সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছে । ঐ সময়ে কংগ্রেসকে রক্ষা করতে ক্লিন ইমেজের একজনকে প্রয়োজন ছিল এবং স্বাভাবিক কারণেই ইন্দিরা গান্ধী পরিবারের ছোট বউ সোনিয়া গান্ধীর উপর তখন সকলের নজর গিয়ে পরে । বড় বউ মেনকা গান্ধী ইন্দিরা গান্ধি জীবিত থাকতেই হিন্দি টিভি সিরিয়ালের কায়দায় পরিবার হতে ছিটকে পড়েছে । মেনকা ও তাঁর পরিবার পরবর্তি কালে বিজেপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত হয়ে পরেন কিন্তু খুব বেশী দূর অগ্রসর হতে পারে নি । সে দিক দিয়ে সোনিয়া অনেক বেশী ভাগ্যবতি । তিনি কংগ্রেসের শুধু প্রধানই হন নি পর্দার অন্তরালে থেকে ডঃ মনমোহনকে পরিচালিত করেছেন । ২০০৪ সালে তাঁর নেতৃত্বাধীন ইউপিএ যখন ১৪তম লোকসভা নির্বাচনে বিজয় লাভ করে তখন সকলে ধারনা করেছিল তিনি হচ্ছেন ভারতের নতুন প্রধানমন্ত্রী । প্রবল আপত্তি তুললো বিজেপি । একজন বিদেশীনি কেমন করে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হন? বিজেপি’র মূখপত্র সুষমা সরাজতো দিব্যি কাটলেন সোনিয়া যদি প্রধানমন্ত্রী হন তা হলে তিনি মাথা ন্যাড়া করে বাকি জীবন কাটিয়ে দেবেন । সুষমাকে তা করতে হয় নি কারণ সোনিয়া তাঁর চেয়ে অনেকগুন বেশী চালাক । তিনি ঠিকই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর পিছনে থেকে কলকাটি নাড়া অনেক লাভ । তিনি গত দশ বছরে ঠিক সেই কাজই করেছেন । সকলে মনে করেছিল রাহুল গান্ধী আর কিছু না হোক তার পিতার সমকক্ষ হলেও একজন রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠতে পারবেন । কিন্তু রাহুল সেই প্রত্যাশা পূরন করতে ব্যর্থ হয়েছেন । তার বিচরণ অনেকটা উত্তর ভারতেই সীমাবদ্ধ । সেখানেও যে তিনি খুব একটা ভাল করতে পেরেছেন তা কিন্তু নয় । তার হওয়ার কথা ছিল কংগ্রেসের ত্রাণ কর্তা । কিন্তু কংগ্রেসের অনেকের মতে তিনি বর্তমানে হয়ে উঠেছেন দলের জন্য একটি বোঝা । কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন দশ বছরের শাসনে জনগন সন্তুষ্ট নয় । দূর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি, বিদ্যুৎ ঘাটতি, ক্রমবর্দ্ধমান বেকারত্ব, আইন শৃঙ্খলা ও ধর্মীয় সহনশীলতা পরিস্থিতি কোনটাই সরকারের নিয়ন্ত্রনে নেই । প্রায় প্রত্যেক রাজ্যই মনে করে তারা কেন্দ্র হতে চরম অবহেলার শিকার । সুতরাং এইবার কেন্দ্রকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে ।
ভারতের রাজনীতিতে স্থানিয় ইস্যু ছাড়াও আরো একাধিক বিষয় ভূমিকা রাখে । তার একটি হচ্ছে নি¤œ বর্ণের ভোটারদের ভোট কোন দিকে যাচ্ছে সেই বিষয়টা । এটি বেশী কাজ করে উত্তর প্রদেশ সহ উত্তর ও পশ্চিম ভারতের একাধিক রাজ্যে । একসময় সিপিএম একটি বড় ফ্যাক্টর ছিল । সিপিএম ও কংগ্রেসকে দেখা হয় অসাম্প্রদায়িক ভারতের শেষ ভরসাস্থল হিসেবে । সিপিএম’র এখন ভগ্নদশা । তিনদশকের বেশী সময় তারা পশ্চিম বঙ্গের মতো একটি রাজ্য শাসন করেছে । সেই পশ্চিম বঙ্গে এখন তারা অনেকটা ঘর ছাড়া । অদূর ভবিষ্যতে আর ঘরে ফিরতে পারবে তেমন আশা দেখা যাচ্ছে না যদিও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও রাজ্যের মূখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আচার আচরণ এখনো একজন গ্রাম্য মোড়লের মতো । দুর্বল নেতৃত্বের কারণে এই রাজ্যে কংগ্রেস এখন অনেকটা মৃত প্রায় । মমতা আবার এক অজ্ঞাত কারণে বাংলাদেশকে তাঁর সতিন মনে করেন । দিল্লি তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি করতে রাজি হলেও মমতা ঘোষণা করেছেন জান দেব তবু জল দেব না । যদিও তিস্তা এখন মৃতপ্রায় তবুও মমতা আবিস্কার করেছেন দিল্লি রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশেকে সব জল দিয়ে দিচ্ছে । দীর্ঘ দিন পর ভারত বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় ও সীমান্ত চিহ্নিতকরণ চুক্তি স্বাক্ষর হলো । মমতা এখানেও বাগড়া দিয়ে তার বাস্তবায়ন রুখে দিলেন । অথচ মমতার জ্ঞাতি গুষ্টির অনেকেই এখনো বাংলাদেশে বসবাস করেন ।
ভারতীয় মুসলমানরাও সে দেশের রাজীতিতে আর একটি বড় ফ্যাক্টর । তারা চান দিল্লিতে একটি অসাম্প্রদায়িক দল শাসন ক্ষমতায় থাকুক । ২০০২ সালে মোদির কুৎসিত চেহারা তারা দেখেছে । তাদের ধারণা মোদি দিল্লির মসনদে বসলে তাদের অবস্থা আগের যে কোন সময়ের তুলনায় খারাপ হবে । দিল্লির জামে মসজিদের ইমাম সৈয়দ আহমদ বুখারি কংগ্রেস আর তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছে । ইমাম সাহেবের ফতোয়া সব মুসলমান শুনবেন তা কিন্তু নয় । আর পশ্চিম বঙ্গে তলে তলে মমতার সাথে বিজেপি’র একটা সখ্যতাতো রয়েছেই । তার নীতিটা হচ্ছে শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু । আর বিজেপি ইতোমধ্যে দলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে মুসলমানদের নিয়োগ দিয়েছে । ভোটের রাজনীতিতে সব কিছুই সম্ভব । এম জে আকবরের মতো প্রতিথযশা সাংবাদিক যিনি কিনা অসাম্প্রদায়িক ভারত বর্ষ ও সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি সম্পর্কে এত লেখা লেখি করেছেন তিনিও শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । মোটামুটি ভারতের অনেক শিল্পি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সাবেক সেনা প্রধান, আমলা, শিল্পপতি, সকলে মোদির পিছনে লাইন দিয়েছেন । কিরণ খের, বাপ্পি লাহিড়ি, হেমা মালীনি, মনোজ তিওয়ারী, কিরণ বেদী কেউ বাদ জান নি, এমনকি সাবেক সেনা প্রধানও না। মুন মুন সেন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন । বাস্তবে এরা বাতাস যে দিকে সে দিকে পাল ধরেছেন । এটি রাজনীতির খেলা ।
মোদি দিল্লি মসনদ দখল করলে কি হবে এমন প্রশ্ন বাংলাদেশের অনেকেরই । মোদি ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন তিনি ক্ষমতায় গেলে আসাম হতে তার কথায় সকল অবৈধ বাংলাদেশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে । তবে কোন হিন্দু বাংলাদেশে নির্যাতিত হয়ে ভারতে প্রবেশ করলে তাদের বরণ করা হবে । এটি একটি অশনি সংকেত । সাম্প্রদায়িকতা উষ্কে দেয়ার পূর্ব প্রস্তুতি । এর ফলে বাংলাদেশে নতুন করে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে এবং তা হলে উভয় দেশের জন্যই তা ক্ষতির কারণ হবে । ভারতের পূর্ব সীমান্তে এখন যে শান্তি বিরাজ করছে তা পুনরায় অশান্ত হয়ে উঠতে পারে । দিল্লির মসনদে যেই বসুক বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশকেই এটি উপলব্দি করতে হবে কোন দেশে অশান্তি সৃষ্টি হলে তার রেষ পাশের দেশে পরতে বাধ্য ।
সোমবার হতে শুরু হওয়া নির্বাচনে পাঁচ হাজার কোটি কালো রুপি ভারতের বাতাসে উড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে । প্রাণহানিও কম হবে না বলে নিরপেক্ষ সূত্রগুলি দাবি করছে । তবে ভারতের ভাগ্য ভাল সেখানে কোন টিআইবি বা সুজন সখি পার্টির অস্তিত্ব নেই । তবে ভারতের পরবর্তি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব কার হাতে যাচ্ছে তা নির্ধারণের দায়িত্ব একান্ত ভাবে ভারতীয়দের । ভুল করলে খেসারত তাদেরই বেশী দিতে হবে । বিশ্বের দৃষ্টি এখন ভারতের দিকে ।

লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । এপ্রিল ৭, ২০১৪

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

[......লেখক আর্কাইভ]