[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

আমি এখন নন্দলাল

 


-প্রফেসর আবদুল মান্নান

‘নন্দলাল’ কবিতাটি ঊনবিংশ শতকের কবি, নাট্যকার ডিএলরায় লিখেছিলেন । ডি এল রায় একজন অসাধারণ পন্ডিত ব্যক্তি ছিলেন । এখনো বাংলাদেশে যে ক’টি জনপ্রিয় বাংলা গান সকলের মুখে মুখে ফিরে সেই ‘ধনে ধান্যে পুষ্পে ভরা’ গানটি তাঁরই লেখা । ডিএলরায় স্যাটায়ার ধর্মী কাব্য রচনা করেও বেশ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন যার একটির নাম এই ‘নন্দলাল’ । ‘নন্দলাল’ কবিতার একমাত্র চরিত্র নন্দলাল নিজে। নন্দলাল সব সময় বাড়ীতে বসে সময় কাটায় কারণ তার ধারণা বাড়ী হতে বের হলেই যে কোন অজুহাতে তার জীবন বিপন্ন হতে পারে । নন্দলাল তার জীবনকে খুব ভালবাসে কারণ ওটাই তার একামাত্র সম্বল । হঠাৎ করে আমার নন্দলালের কথা মনে পরলো কারণ চারিদিকে গুম, অপহরণ, খুনের অবস্থা দেখে এখন আমিও নিজ বাসভবন হতে বের হওয়া অনেকটা বন্ধ করে দিয়েছি । কারণ বলাতো যায়না কখন আবার কী বিপত্তি ঘটে আর সম্বল বলতে আমার ওই জীবনটাই । কিছু একটা হলে আমার পরিবার দারুণ অসুবিধায় পরবে । এই মুহুর্তে পরিবার বলতে আমার স্ত্রী আর কন্যা । স্ত্রী আবার বেলার রেজওয়ান হাসানের মতো কোন হাই প্রফাইল মহিলা নন যে তার স্বামীকে কেউ অপহরণ করলে সকলে রাস্তায় নেমে পরবে । আর আমিও রেজওয়ানার স্বামী আবু বকর সিদ্দিকের মতো কোন ভাগ্যবান ব্যক্তি নই যে অপহারণ কারিরা আমার হাতে তিনশত টাকা গুঁজে দিয়ে বলবে ‘যাও বাচা বাড়ী যাও।’ আর আমর কন্যাতো এখন অন্যের ঘরের গৃহিনী । সুতরাং সাবধানে চলতে হয় ।
বাংলাদেশে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া গুম, অপহরণ, খুন নিয়ে স্বাভাবিক কারণেই চারিদিকে বেশ চর্চা হচ্ছে । এমন কী বিএনপি চেয়্যারপারসন বেগম জিয়া পর্যন্ত তাদের দ্বিতীয় দপ্তর বলে খ্যাত জাতীয় প্রেস ক্লাবে গিয়ে আধ ঘন্টার অনশন করলেন এবং জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার জন্য আহ্বান জানালেন । তবে বেগম জিয়ার শাসনামলে গুম, অপহরণ, খুনের ঘটনা ছিল যে কোন সময়ের চেয়ে ঢের বেশী । বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-তো তাঁর ২০০১-২০০৬ শাসনামলে মহামারি আকার ধারণ করেছিল । অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে যৌথ বাহিনীর হাতে ২০০২ সালের অক্টোবর মাস হতে ২০০৩ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত মোট ৬০ জনকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছিল । এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের জন্য কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে যেন বিচারের মুখোমুখি হতে না হয় তার জন্য সে সময় সরকার জাতীয় সংসদে একটি ‘দায়মুক্তি আইন’ পাশ করিয়েছিল । সুলতানা কামালের আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী বিএনপি’র শাসনামলে প্রথম চার বছরে অপহরণ, গুম ও খুন হয়েছিল সর্বাধিক, ১২৫৯ । (দৈনিক প্রথম আলো, ১১ই মার্চ ২০১৪) । আর আওয়ামী লীগের (মহাজোট সরকার সহ) শাসনামলে ২০১০ হতে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট অপহৃত হয়েছেন ২৬৮ জন যাদের মধ্যে ৪৩ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে, ফিরে এসেছেন ২৪ জন আর এখনো নিখোঁজ আছেন ১৮৭ জন (দৈনিক প্রথম আলো, ১৮ই এপ্রিল ২০১৪) । শেখ হাসিনার শাসনকালে এই ধরণের অনেক অপরাধের বিচার হয়েছে যা বেগম জিয়ার শাসনামলে দেখা যায় নি । বিএনপি হোক আর আওয়ামী লীগের আমল হোক, একজন হোক আর একশত জন, কোন সভ্য দেশেই এই ধরণের অমানবিক কান্ড হওয়া উচিৎ নয় যদিও সব দেশেই তা হয়ে থাকে । যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক রাজ্যে প্রতি বছর গড়ে নয়হাজার মানুষ খুন হয় আর এই পরিসংখ্যান নিউ ইয়র্ক সিটির ক্ষেত্রে গড়ে প্রতি বছর পাঁচশত । একসময় যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিকে বলা হতো বিশ্বের অপরাধ জগতের রাজধানী । ১৯৮৯ সালে সে দেশের এবিসি টিভি তাদের বিখ্যাত উপস্থাপক টেড কোপেলের উপস্থাপনায়
DC/Divided City শিরোনামে তাদের রাজধানীর অপরাধ চিত্র নিয়ে এক ঘন্টার এক অনুষ্ঠান প্রচার করে সে দেশে বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছিল । যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে সব চেয়ে অপরাধপ্রবণ শহর হচ্ছে মিশিগান রাজ্যের ডেট্রয়েট শহর । ১৯৭৫ সনের ৩০ জুলাই জিমি হফ্ফা নামে এক শ্রমিক নেতা ইন্ডিয়ানার এক কফির দোকান হতে গুম হয়ে যান । হফ্ফা একজন বড় মাপের প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা ছিলেন । সরকার হতে শুরু করে আমেরিকার মাফিয়া সকলেই তার শত্রু ছিল । এমন এক জাঁদরেল নেতা হঠাৎ দিন দুপুরে হাওয়া হয়ে গেলেন ! আজতক হফ্ফার কোন হদিস পাওয় যায়নি ।
নারায়ণগঞ্জ হতে যখন সাতজন মানুষ গুম হলো আর বাহাত্তর ঘন্টা পর যখন তাদের লাশ পাওয়া গেল তখন আমি পেশাগত কাজে দেশের বাইরে । তবে অনলাইনে দেশের পত্রিকা পড়ে খবরটি জেনে রীতিমত আতঙ্কিত হয়েছি । ৪ তারিখ দেশে ফেরার পর একটি টিভি চ্যানেলের রাতের আলোচনা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে । যাওয়ার আগে পূর্বের কয়েক দিনের পত্রিকা পড়ে সমগ্র বিষয়টা সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করেছি । অনুষ্ঠানে টেলিফোন সংযোগের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জের সিটি মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি আর সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান । দু’জনই শুধু আওয়ামী ঘরনার মানুষই নন আওয়ামী লীগের জন্য তাদের পরিবারের অসামান্য অবদান আছে । শামীম ওসমানের পিতা শামসুদ্দোহা আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন । আর সেলিনা হায়াৎ আইভির পিতা আলী আহম্মদ চুনকা একজন আদর্শবান রাজনীতিবিদ হিসেবে নারায়ণগঞ্জে একটি মানদ- স্থাপন করে গেছেন । এই দুইজনকে এই জেলার মানুষ এখনো শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে । কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত তাদের সন্তানরা পিতার সম্মান রক্ষা করতে সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছেন । অবস্থা এমন হয়েছে নারায়ণগঞ্জে একটি রিক্সার চাকা ফুটলেও পরষ্পর পরষ্পরকে প্রকাশ্যে দায়ী করেন যার সামান্য নমুনা সে দিন রাতে দেখা গেল । তাদের দু’জনের একজনকে মনে হলো প্যালেষ্টাইনের নেতা আর অন্যজনকে ইসরাইলের । নারায়ণগঞ্জতো কোন ইসরাইল নয় ।
একসময় নারায়ণগঞ্জ ঢাকার চেয়ের বেশ সমৃদ্ধশালী নগর ছিল । ঢাকার আগে শীতলক্ষ্যা নদীকে কেন্দ্র করে কল কারখানা গড়ে উঠেছিল এই নারায়ণগঞ্জে । পাটের ব্যবসার জন্য এই জেলা জগৎবিখ্যাত ছিল । বলা হতো পূর্বদেশের ডান্ডি কারণ পূর্ব ভারতে পাট উৎপাদন হলেও সব পাটকল গড়ে উঠেছিল স্কটল্যান্ডের ডান্ডি শহরে । নারায়ণগঞ্জে সেই পাটের বেচা কেনা হতো । সেই শীতলক্ষ্যা নদী এখন নদী খেকোদের কব্জায় পরে বিলীন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে । এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি’র মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই । বেগম জিয়ার প্রথম সরকারের আমলে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্বের বৃহত্তম পাটকল আদমজী বন্ধ করে দিলে এই শহরের পাট ব্যবসাও লাটে উটে । ঠিক একই সময় বিশ্বব্যাংক ছয়টি নতুন পাটকল স্থাপনের জন্য ভারতকে আর্থিক ভাবে সহায়তা করে । এটি হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের অপরাজনীতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ । নারায়ণগঞ্জ এখনও বুনন শিল্পের জন্য বিখ্যাত আর বিখ্যাত আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী দলকে অন্তঃকলহের কারণে কী নোংরা ভাবে পর্যদুস্ত হতে হয় তা প্রত্যক্ষ করার জন্য । তাদের দুজনের কথা বার্তা আর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, বিশেষ করে শামীম ওসমানের, আওয়ামী লীগের শুভাকাক্সিক্ষতো বটেই সকল দর্শক শ্রোতাদের হতবাক করেছে । কোন একটি রাজনৈতিক দলের নেতা পর্যায়ের লোকজন প্রকাশ্যে এমন রূপ ধারণ করতে পারেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য । তারা সেদিন সেই কাজটি করেছেন এবং ক্ষতিটা করেছেন আওয়ামী লীগের তথা দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার যাঁকে এখনো মনে করা হয় আওয়ামী লীগের শেষ বাতিঘর । আর শামীম ওসমানতো কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রীর রেফারেন্স দেন যা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না ।
আওয়ামী লীগের তথা যে কোন রাজনৈতিক দলেরই দু’ধরণের সমালোচক আছেন । এক শ্রেণী আছেন যারা দলের সত্যিকার অর্থেই প্রতিপক্ষ, পারলে দলকে আজই শেষ করে দেন । আর অন্য সমালোচকরা দলের মঙ্গলের জন্য তাদের সমালোচনা করেন। তারা চান নেতানত্রীরা নিজেদের ভুল ভ্রান্তি শুধরে নিয়ে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন । কিন্তু প্রায়শ সমালোচনার বিষয়টিকে যাদের উদ্দেশ্যে করা তারা তা ভালভাবে নেন না । সমালোচকদের তারা শত্রুপক্ষ মনে করেন । বুধবারের দৈনিক জণকণ্ঠে বরেণ্য সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর এই বিষয়ে ‘কোথাও সান্ত¡না নেই, পৃথিবীতে শান্তি নেই আজ’ শিরোনামে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে । সেই লেখায় তিনি তীব্র ভাষায় আওয়ামী লীগের বর্তমান কর্মকান্ডের সমালোচনা করেছেন । তারপর বলেছেন বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফররত ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সে দেশে কীর্তিকলাপ নিয়ে পরবর্তীতে লিখবেন । আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী নিশ্চয় আওয়ামী লীগের কোন শত্রু নন। তিনি আওয়ামী লীগের মঙ্গল প্রত্যাশা করেন বলেই তিনি এই সমালোচনার অধিকার রাখেন । ছাত্রলীগ চারিদিকে জামায়াত শিবির হতে প্রচ-ভাবে মার খাচ্ছে । ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রামে তাদের যে আটজন নেতাকর্মী দিন দুপুরে ছাত্র শিবিরের হাতে খুন হলো এবং পরবর্তীকালে সেই মামলার সকল অভিযুক্তকে উচ্চ আদালত বেকসুর খালাস দিল তার জন্যতো কেউ তেমন কোন সহানুভূতি প্রকাশ করলো না । কেন করলো না তা কী তারা কখনো খতিয়ে দেখেছে?
নারায়ণগঞ্জের ঘটনা নিশ্চিত ভাবে সরকারকে চরমভাবে বিব্রত করেছে । প্রসংসনীয়যে প্রধানমন্ত্রী তথা সরকার ঘোষণা করেছে এই ঘটনার সাথে যারাই জড়িত তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে । কিন্তু এই যাবৎ মূলহোতাদের কেউই গ্রেপ্তার হন নি । তবে তরিৎ ব্যবস্থা হিসেবে জেলার সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তা সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সেখান হতে প্রত্যাহার করা হয়েছে । এটিও সরকারের একটি প্রসংসনীয় উদ্যোগ । ঘটনা রোধ করতে না পারাটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বড় ব্যর্থতা । নিহত নজরুল ইসলামের শ্বশুর অভিযোগ করেছেন এই ঘটনার সাথে র‌্যাবের কয়েকজন জড়িত ছিলেন যারা সেনাবাহিনী হতে র‌্যাবে এসেছিলেন । এখানে নাকি ছয় কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে । এর আগে তিনি প্রথমে এক কোটি টাকা ও পরে তিন কোটি টাকা উল্লেখ করেছিলেন । তরা কথায় নানা গরমিল আছে । তার ভাষ্য মতে র‌্যাবের যাকে এই টাকা দেয়া হয়েছিল তাদের একজন আবার আওয়ামী লীগের এক নেতার জামাতা । ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী তাদের আইনের অধীনে সেই তিন সেনা কর্মকর্তাকে দায়িত্বে অবহেলার কারণে অবসরে পাঠিয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা সম্ভবত এই প্রথম । সেনাবাহিনীতে ওএসডি করার কোন নিয়ম নেই । এই বিষয়ে একটি তদন্ত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে নির্দোষ প্রমানিত হলে তারা আবার চাকুরিতে পূনর্বহাল হতে পারেন । তবে মহামান্য হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে বলেছিলেন তদন্ত কমিটিতে যেন র‌্যাবের কোন প্রতিনিধি রাখা না হয় । সরকারের উচিৎ হবে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একটি বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা ।
সেনাবাহিনী আর র‌্যাব বাংলাদেশের দুটি গর্ব করার মতো প্রতিষ্ঠান । কিছু ব্যক্তির অপকর্মের কারণে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষতি হোক তা কেউ চাইবে না । বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন চারদলিয় জোট সরকার যদি একটি ভাল কাজ করে থাকে তা হলো তার শাসনামলে ২০০৪ সালে র‌্যাব গঠন করা । এদের যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ট্রেনিং দিয়েছে । র‌্যাব দেশকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে অনেক প্রসংসনীয় কাজ করেছে তাতে কোন সন্দেহ নেই । তবে তাদের কিছু সদস্যের কর্মকান্ডের কারণে তারা যথেষ্ট সমালোচিতও হয়েছেন । এই সমালোচনার কারণগুলি অবস্যই দূর করতে হবে ।
অনেকে বেশ জোর গলায় বলছেন র‌্যাবকে ভেঙ্গে দিতে হবে । তা মোটেও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না । সব দেশেই র‌্যাবের ধাঁচে একাধিক এলিট আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী আছে । প্রয়োজন তাদের সঠিক ভাবে পরিচালিত করা । যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বা বিচারের রায়কে কেন্দ্র দেশকে অস্থিতিশীল করতে নারায়নগঞ্জের ঘটনাকে ব্যবহার করা হবে তাতে সন্দেহ নেই । এই কাজে ব্যবহারের জন্য একটি প্রভাবশালী এনজিও একটি বেশ বড় তহবিল গঠন করছে বলে শোনা যাচ্ছে । এমন ঘটনা ঢাকার চার পার্শ্বে আরো ঘটানোর চেষ্টা হতে পারে । একই সাথে চলবে নানা ধরণের গুজব আর প্রচারণা । সে দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক নির্দ্বিধায় বলে গেলেন এর পরে গুম বা অপহরণ হতে পারেন কোন বড় মাপের বুদ্ধিজীবী এবং পরের ধাপে কোন উঁচু স্তরের রাজনৈতিক নেতা । পূরো পরিকল্পনায়টাই হচ্ছে সরকারকে বেকায়দায় ফেলা । এই ব্যাপারে সরকার কতটুকু ওয়াকিবহাল তা জানি না । তবে ভাল দিক হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী পুরো বিষয়টাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে । এখন প্রয়োজন দ্রুত নারায়ণগঞ্জ কান্ডের একটি সফল সমাপ্তি টানা অর্থাৎ এই জঘন্য কর্মকান্ডের জন্য যারা দায়ি তাদের গ্রেপ্তার করা এবং সকল দোষি ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দেয়া । আর যতদিন এই সবের সুরাহ না হচ্ছে চিন্তা করছি নেহায়াত প্রয়োজন না হলে ততদিন গৃহবন্দি হয়েই থাকবো । একেবারে একবিংশ শতকের নন্দলাল ।

লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । মে ৭, ২০১৪

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

[......লেখক আর্কাইভ]