|
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা: পাপ বাপকেও ছাড়ে না
-প্রফেসর আবদুল মান্নান বৃহষ্পতিবার চট্টগ্রামের বহু প্রতীক্ষিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার একটি যুগান্তকারী রায়ে আদালত চৌদ্দজন অভিযুক্তকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছেন । মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তদের মাঝে যেমন আছেন লুৎফুজ্জামান বাবরের মতো অর্ধ শিক্ষিত মধ্যমেধার রাজনীতিবিদ তেমন আছেন উচ্চপদস্থ সরকারি সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তা আর আছেন একজন শীর্ষ পর্যায়ের একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী । নিজামীকে এই মামলায় মৃত্যুদন্ড দেয়াতে আবার পাকিস্তান জামায়াত তার প্রতিবাদ করেছে । মামলা হতে খালাস পেয়েছেন ৩৮ জন। বাংলাদেশের ইতিহাসে চোরাচালানের দায়ে এত বিপুল সংখ্যক অপরাধীর মৃত্যুদন্ড পাওয়া নজিরবিহীন । অপর দিকে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সকল অপরাধীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডেও দন্ডিত করা হয়েছে । যে অস্ত্র চোরাচালানের জন্য এত অপরাধীর সাজা তারা কিন্তু একটি বা দুটি অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান বা বহনের দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন না । তারা এত বড় আকারের অস্ত্র চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিলেন যে এই সব অস্ত্র দিয়ে একটি ছোট খাট সেনা ইউনিট সজ্জিত করা সম্ভব ছিল। ২০০৪ সালের ১লা এপ্রিল কর্ণফুলী নদীর অপর পারে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার নিজস্ব ঘাটে দু’টি ট্রলার হতে রাতের অন্ধকারে এই অস্ত্র খালাসের সময় পুলিশের দু’জন সার্জেন্টের হাতে অনেকটা আচমকা ভাবে এই বিশাল অস্ত্র চালানটি ধরা পরে। আলাউদ্দিন আর হেলাল উদ্দিন নামের এই দু’জন পুলিশ সার্জেন্টকে পরবর্তীকালে বেগম জিয়ার সরকার চাকুরিচ্যুত এবং গ্রেফতার করে তাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করে তাদের পা ভেঙ্গে দেয় । দু’জনকে ক্রস ফায়ারের ভয়ও দেখানো হয় । সে সময় এমন বিশাল পরিমাণের অস্ত্র আটকের খবরে সারা দেশের মানুষ স্তম্ভিত ও আতঙ্কিত হয়ে পরেন । শুরুতে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং এই ঘটনার জন্য অস্ত্র খালাসের জন্য নিয়োজিত শ্রমিক, ঘাট হতে গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য ভাড়া করা ট্রাক ড্রাইভার, ট্রলারের চালক সহ এখানে কর্মরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুরো বিষয়টাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চেষ্টা করা হয় । এটি ছিল একই বছরের আগষ্ট মাসের ২১ তারিখে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভেন্যুতে গ্রেনেড হামলা পরবর্তীকালে জজ মিয়া নাটক সাজানোর মতো । উল্লেখ্যে এই মামলার তৎকালীন মহানগর পিপি আহ্সানুল হক হেনা ২০০৭ সালের ২০ নভেম্বর অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করেন এবং সেই মতে নির্দেশ দেন । পরবর্তিকালে এডভোকেট হেনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালে সাকাচৌ’র অন্যতম আইনজীবী ছিলেন । ২০০৪ সালের ১লা এপ্রিল জব্দ করা অস্ত্রগুলির গন্তব্যস্থল ছিল ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফা নিয়ন্ত্রিত ঘাঁটিতে এবং এখন এটি মোটামুটি নিশ্চিত এই অস্ত্র ক্রয়ের জন্য অর্থের যোগান দাতা ছিল পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই । চীনে তৈরী অস্ত্রগুলি জাহাজে তোলা হয়েছিল হংকং বন্দরে এবং তা সিঙ্গাপুর হয়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বাংলাদেশী ট্রলারে মাদার ভেসেল হতে লোড করা হয় । দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী সক্রিয় এবং তাদের সাথে মায়ানমারের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের একটি নিবিড় সম্পর্ক আছে । একসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিবাহিনীর সাথেও এদের ভাল সম্পর্ক ছিল । ভারত পাকিস্তানের মাঝে দীর্ঘদিনের একটি বৈরী সম্পর্ক থাকার কারণে আইএসআই এর মাধ্যমে পাকিস্তান এই বিছিন্নতাবাদীদের নানা ভাবে সাহায্য করেছে । ষাটের দশকে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকান্ড যখন দানা বাঁধতে শুরু করে তখন মিজোরামের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল মিজো লিবারেশন ফ্রন্টকে (এমএলএফ) পাকিস্তান শুধু বিভিন্ন ভাবে সহায়তায় করেনি তাদের নেতা লাল ডেঙ্গাকে ঢাকায় অফিস খুলে তার কর্মকান্ড পরিচালনারও সুযোগ করে দেয় । একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় এমএলএফ পাবর্ত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে একত্র হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারত জেনারেল সুজান সিং উবানের নেতৃত্বে স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের একটি কমান্ডো ব্যাটেলিয়ান পাঠিয়ে সাময়িকভাবে এমএলএফকে উৎখাত করে । বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও এই অঞ্চলে আইএসআইএর তৎপরতা বিন্দু মাত্র কমে নি বরং বর্তমানে তারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী সক্রিয় । ধারণ করা হচ্ছে অনুষ্ঠিতব্য উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে বিএনপি-জামায়াতপন্থী প্রর্থীদের জিতিয়ে আনতে তারা বিপুল পরিমানের অর্থ ব্যয় করছে এবং কোন কোন এলাকায় তারা আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিতে ইতোমধ্যে সফলও হয়েছে । আইএসআই বাংলাদেশকে পূর্ব ভারতে অস্ত্র চোরাচালানের জন্য সব সময় একটা নিরাপদ রুট হিসেবে গণ্য করেছে কারণ পঁচাত্তর পরবর্তীকালে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত যত সরকার বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন ছিল সকলেরই একটি পাকিস্তান কানেকশন ছিল । এই সত্যটি বিভিন্ন সময় আইএসআই এর অনেক বড় বড় কর্মকর্তা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন । জিয়া এরশাদ এক সময় দুজনই পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন এবং সেই সম্পর্ক পরবর্তীকালেও অটুট ছিল । ২০০৪ সালের আগে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে পূর্ব ভারতে বিভিন্ন সময় প্রচুর অস্ত্র চোরাচালান হয়েছে । ১৯৯১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন যখন ক্ষমতায় তখন চট্টগ্রামের চকরিয়া পুলিশের হাতে দু’ট্রাক অস্ত্র ধরা পরেছিল । পরে তার পরিণতি কী হয়েছিল সে সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি । ২০০৫ সালে পুলিশ বগুড়ায় কয়েক হাজার রাউন্ড রাইফেলের গুলি উদ্ধার করে । বাংলাদেশের মতো একটি দেশের ভিতর দিয়ে এত বিপুল পরিমাণের অস্ত্র চোরাচালান করতে হলে তার জন্য অবশ্যই রাষ্ট্রের নিবিড় সহায়তা চাই এবং বাংলাদেশ সরকার যে তা দিতে কার্পণ্য করেনি তা দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দেয়া বিভিন্ন সাক্ষীর সাক্ষ্যে এখন প্রমাণিত । এই ধরণের চোরাচালানের ঘটনা যে দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত ওয়াকিবহাল ছিলেন তা এই মামলার রায়ে প্রকামিত হয়েছে। মামলার রায়ে বলা হয়েছে অস্ত্র আটকের ঘটনাটি যখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় তিনি বিষয়টি অনেকটা স্বাভাবিক ভাবে নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব ছিলেন । শুধু গা ছাড়া ভাবে বলেন, বিষয়টি দেখছি । রায়ে আরো উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজনীতির কাশিম বাজার কুঠি হিসেবে খ্যাত হাওয়া ভবনের নাম । এই রায়ে আবারো প্রমাণিত হলো এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম খল চরিত্র বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া যাকে আবার বিএনপি বাংলাদেশের আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিস্তা করে । দন্ডপ্রাপ্ত এনএসআই‘র সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তারেক জিয়ার বদান্যতায় পাঁচ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে নজিরবীহিন ভাবে লেঃ কর্ণেল হতে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছিলেন । তারেক জিয়ার সাথে তিনি সস্ত্রিক দুবাই সফরে গিয়ে ভারতীয় অস্ত্র ব্যবসায়ী দাউদ ইব্রাহিমের সাথে বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিলেন বলে প্রকাশ। এমনও শোনা গিয়েছিল তিনি বাংলাদেশে সেনা বাহিনীর প্রধান হচ্ছেন । পুরো অপারেশনে আরও জড়িত ছিল দুবাই ভিত্তিক এক পাকিস্তানি মালিকানাধীন এআরওয়াই ব্যবসায়িক গ্রুপ যাদের মাধ্যমে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য আইএসআই অর্থ লেনদেন করেছিল । এই গ্রুপের একটি টিভি চ্যানেল আছে যার কর্মকা- বছর খানেক আগে যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল কারণ তারা রমজান মাসে টিভিতে ঘন্টার পর ঘন্টা পাকিস্তানি ধর্ম ব্যবসায়ীদের চাঙ্ক ভাড়া দিয়ে বেহেশতের জায়গা বিক্রি করতে সহায়তা করে । পরে দেখা যায় সংগৃহীত অর্থের প্রায় পুরোটাই যায় জঙ্গিবাদের অর্থায়নে । এই কাজটি বাংলাদেশের একাধিক টিভি চ্যানেলও যুক্তরাজ্যে রমজান মাসে করে । এক সময় বর্তমানে পলাতক একাত্তরের ঘাতক বাচ্চু রাজাকার ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীও যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এই কাজ করতো । দশট্রাক অস্ত্র মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই মামলায় যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদের কারো সাথে কোন রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা নেই । তারা সকলে সে সময় সরকারি উচ্চপদস্ত দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ছিলেন এবং অনেকেই বাবর আর নিজামীর মন্ত্রণালয়ে তাদের অধীনে কর্মরত ছিলেন । তাদের মধ্যে একাধিক জন আছেন যাদের সততা ও যোগ্যতা নিয়ে কারো কোন সন্দেহ নেই । মামলায় তারা তাদের কাছে জানা তথ্য বস্তুনিষ্ট ও সততার সাথে তুলে ধরেছেন । তারা নিশ্চয় সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য । রায়ের পর বিএনপি-জামায়াতপন্থি অনেক আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, এটি বলার চেষ্টা করেছেন এই রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত । দু’একজনতো এটাও বলার চেষ্টা করেছেন রায়টি ভারতীয় । এটি আদালত অবমাননা কী না জানিনা তবে রায় যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতই হতো তা হলে রায়ে বেগম জিয়াও অভিযুক্ত হতেন কারণ তিনি সে সময় শুধু দেশের প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও তার দায়িত্বে ছিল কারণ বাবর ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী । এটিও আশ্চর্যের বিষয়যে বাংলাদেশের মতো ষোল কোটি মানুষের একটি দেশে বাবরের মতো একজন অর্ধ শিক্ষিত সাবেক চোরাকারবারিকে বেগম জিয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। দশট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলার রায় উপমহাদেশের রাজনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ গুরুত্ব বহন করে । প্রথমেই যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে পূর্বভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে পাকিস্তানের আইএসআই এর একটি নিবিড় সম্পর্ক আছে তা সকলের জানা থাকলেও এই মামলার রায়ের কারণে তা আরো পরিস্কার হলো । এই সম্পর্ক অটুট করতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকার যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তাও এখন পরিস্কার । সম্ভবত এই কারণে সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য কোন কোন মহল এত উৎসাহী ছিল । এটি বলার অপেক্ষা রাখেনা কোন প্রকারে বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই মামলার রায় অন্য রকমও হতে পারতো । হয়তো মামলাটি পুনঃতদন্তের নামে পুরো বিষয়টিকে ধামা চাপা দেয়ার একটি অপচেষ্টা করা হতো । পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে চাই বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন পূর্বভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মুক্তি সংগ্রাম করছে এবং তাদের সমর্থন করা বাংলাদেশের নৈতিক দায়িত্ব । এরপর ব্যারিস্টার মওদুদকে ভারত ভিসা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল । আইএসআই এর সাথে বিএনপি’র যে একটি সক্রিয় সম্পর্ক আছে তা আইএসআই’র জনারেল র্দুরানির মতো একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ার কাছে স্বীকার করেছেন । জামায়াতে ইসলামীকে তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিপুল ভাবে অর্থ সাহায্য করে যেমন ভাবে তারা একসময় যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ’র হয়ে আফগান তালেবানদের করতো । আল-কায়েদা বলি আর তালেবান, এই সব জঙ্গিগোষ্ঠী সৃষ্টিতে একসময় সিআইএ ও আইএসআই সম্মিলিত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে যা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হিলারী ক্লিন্টন অকপটে গণমাধ্যমে স্বীকার করেছেন এবং তিনি এও বলেছেন এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির একটি আত্মঘাতী ভুল । এটি এখন আর কোন গবেষণার বিষয় নয় যে উপ-মহাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের একটি বড় ভূমিকা আছে । এটি দিল্লী স্বীকার করলেও পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করতে নারাজ যে কারণে ভারতের সাথে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না । মমতা সম্ভবত এই সত্যটি বুঝতে অক্ষম যে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠ না থাকলে ভারতের অনেক পুরানো সমস্যাই যে আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে তাই নয় নতুন নতুন আরো অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে । দশ ট্রাক অস্ত্র মালায় যারা দ-প্রাপ্ত হয়েছেন তারা নিশ্চিত ভাবে উচ্চ-আদলতে আপিল করবেন । দেশের মানুষ আশা করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সরকার এই সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবে । লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৪
WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
|
লেখকের আগের লেখাঃ |