[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

২০১৪: হোক না এটি শান্তি ও সুস্থ রাজনীতির বছর

 

প্রফেসর আবদুল মান্নান

দেখতে দেখতে ঘটনাবহুল ২০১৩ সালটি শেষ হয়ে গেল । নানা কারণে এই সালটি বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ । একই ভাবে গুরুত্বপূর্ণ আগামী বছর, ২০১৪ সাল । সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে কোন ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে কেমন আছেন তার স্বাভাবিক উত্তর হতো ‘আগামী কাল হতে ভাল’। সেকালের সোভিয়েত ইউনিয়নে মনে করা হতো যায় দিন ভাল আসে দিন খারাপ । এর অনেক কারণও ছিল যা নিয়ে নানা বিতর্ক আছে । প্রতিদিন রুটির জন্য লাইন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের জন্য লাইন, প্রচন্ড শীতে অনেক বাড়ীতে অপর্যাপ্ত ঘর গরম করার ব্যবস্থা । সে সময় সোভিয়েত সরকার সামরিক বাহিনীর পিছনে এত বিশাল পরিমাণের অর্থ ব্যয় করতো যে দেশের অন্যান্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ব্যয় করার মতো তেমন অর্থ আর হাতে থাকতো না । এক সময় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেশ নাজুক হয়ে পরে এবং সেনা সদস্যদের বলা হয় নিজেরা নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করতে হবে । মূলত সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্থান দখল করার পর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বড় ধরণের ধাক্কা খায় । এখন যদি বাংলাদেশের কোন ব্যক্তির কাছে জানতে চাওয়া হয় কেমন আছেন বা আগামী বছরটা কেমন দেখতে চান নিশ্চয় তার জবাব হবে বর্তমান বছরের চেয়ে ভাল থাকতে চাই কারণ সদ্য বিদায়ী বছরটা রাজনৈতিক কারণে অনেকের জন্য মোটেও ভাল যায় নি ।


২০০৮ সালের নির্বাচনে অনেক জনকল্যানকর প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক ধ্বস নামানো নির্বাচনী বিজয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেছিল । ২০১৩ সাল বর্তমান সরকারের জন্য শেষ বছর । ২০০৮ সালের নির্বাচনটি হওয়ার কথা ছিল ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে কিন্তু তৎকালিন বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকারের নানা প্রকারের ছল চাতুরী আর ষড়যন্ত্রের কারণে সেই বহু প্রত্যাশিত নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষকে দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে । এই দুই বছরে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া সহ অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে কারাগারে যেতে হয়েছে এবং দেশে সেনা সমর্থিত ক্ষমতাসীন উপদেষ্টা সরকার দেশকে বিরাজনীতিকরণের নানা রকম চেষ্টাও করেছে এবং সেই চেষ্টায় একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যেমন হাত মিলিয়েছিলেন ঠিক একই ভাবে বাংলাদেশের অনেক সুশীল ব্যক্তি এই প্রয়াসকে খোলাখুলি ভাবে সমর্থন করেছিলেন । এই সুশীলদের অনেকে আবার অঘোষিত ভাবে সরকারের উপদেষ্টাও হয়েছিলেন । ২০১৪ সালে অনেকে এই সুশীলদের কাছ হতে দেশ মুক্ত থাকুক তাই প্রত্যাশা করে ।

আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা বেড়ে যায় বহুগুণ কারণ এখনো দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ মনে করে এবং বিশ্বাস কওে, যে দলটি একটি দেশের মুক্তিযুদ্ধের নেৃতৃত্ব দিতে পারে সে দল ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশাই পূরণ করতে পারে । কিন্তু তাদের প্রত্যাশা যে সব সময় পূরণ হয় তা নয় । কারণ বর্তমানে যদিও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী বাস্তবে তাঁর সাথে যারা তাঁকে সরকার পরিচালনায় সহযোগিতা করেন তাদের অনেকের যোগ্যতার যথেষ্ট ঘাটতি আছে যা ইতোপূর্বে আমি অনেকবার বলেছি। বঙ্গবন্ধু কোন ব্যক্তিকে দিয়ে কী কাজ হবে তা জানতেন এবং সেই ব্যক্তিটিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করতেন । এমন মন্তব্য বঙ্গবন্ধু কন্যার ক্ষেত্রে একশত ভাগ সত্য তা বলা যাবে না কারণ গত বিশ বছরে তাঁর চার পাশে অনেক চাটুকারের সমাবেশ ঘটেছে যারা তাঁর এবং দলের যথেষ্ট ক্ষতি করেছেন এবং এর ফলে তিনি এই মেয়াদে দেশের সার্বিক উন্নয়নে যতটুকু করতে পারতেন তার সবটুকু পারেন নি । কোন কোন ক্ষেত্রে এই সব অপরিনামদর্শী ব্যক্তির কারণে সরকারের এবং দলের বেশ বদনাম হয়েছে । তবে তারপরও বলতে হয় শেখ হাসিনার এই মেয়াদে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তা বিগত দিনের সব উন্নয়নের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে । সারা বিশ্বে গত পাঁচ বছরে যে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে গেছে সেই অবস্থায় বাংলাদেশে গড়ে ৬% প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাটা নিঃসন্দেহে একটি বড় অর্জন যদিও বাংলাদেশের অনেক বড় বড় অর্থনীতিবিদরা ভবিষ্যতবাণী করেছিলেন বাংলাদেশে এই অর্থনৈতিক মন্দা আসবে দেরীতে এবং যাবেও দেরীতে । এর ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দীর্ঘায়িত হবে । কিন্তু তা যখন হলো না এই অর্থনীতিবিদরা নতুন তত্ত্ব নিয়ে হাজির হলেন, বললেন এই প্রবৃদ্ধি আরো বেশী হতো যদি দেশে সুশাসন থাকতো । এই পাঁচ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভাল থাকার প্রধান কারণ দেশে সুষ্ঠু কৃষি ব্যবস্থাপনা । বাংলাদেশের কৃষক হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি । শেখ হাসিনার বিদায়ী সরকারের যদি একটিও সফলতার কথা বলতে হয় তা হলে বলতে হবে কৃষি ব্যবস্থাপনায় বিরাট সাফল্য । এর আগেরবারও তাঁর শাসনামলে কৃষিতে শুধু সাফল্যই আসেনি দেশ প্রথমবারের মতো কৃষি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছিল যার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এবারও । সরকারকে চিন্তা করতে হবে এই খাতকে আরো কী ভাবে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় । এখনো কৃষি পণ্য বিপনণে উন্নয়নের যওথেষ্ট সুযোগ রয়েছে । বিদ্যুৎ উৎপাদনে সফলতা, বৈদেশিক মুদ্রার রেকর্ড পরিমাণের রিজার্ভ, শিক্ষা ক্ষেত্রে সফলতা, শত বাধার মাঝেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু এবং সেই বিচারের রায় বাস্তবায়ন সহ বর্তমান সরকারের অনেক অজর্ন আছে কিন্তু কিছু ব্যর্থতার কারণে সে সব অর্জন অনেক সময় চাপা পরে যায় । এই মেয়াদে পদ্মা সেতু করতে না পারাটা একটি বড় ব্যর্থতা হিসেবে সকলে মনে করে যদিও এটাও সত্য এর পিছনে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ব্যাপক ভাবে কাজ করেছে । দলীয় কিছু ব্যক্তির দূর্নীতির কারণে দলের সুনামের প্রভূত ক্ষতি হয়েছে । শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস রুখতে না পারাটা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি করেছে । অনেকে বলবেন শেয়ার মার্কেট ধ্বসের কথা । কিন্তু কোন দেশেই শেয়ার মার্কেট নিয়ে সরকারের তেমন কিছু একটা করার থাকে না । শেয়ার মার্কেট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত প্রভৃতি দেশে বাংলাদেশের চেয়েও অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটেছে কিন্তু সেখানে সরকারকে দায়ী করা হয় নি । যাদের শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে কোন ধরণের প্রাথমিক জ্ঞানই নেই তারা যদি শেয়ার মার্কেটে পুঁজি বিনিয়োগ করে দ্রুত টুপাইস কামানোর চিন্তা করে তাদের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল ।

বিগত বছরে সব চেয়ে অস্থির ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যা অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বলতে গেলে বেশ নাজুক । এর মূল কারণ জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আর বিরোধী দলের সংবিধান বহির্ভূত উপায়ে সংসদ নির্বাচনের আবদার । ৪২ বছর পর অনুষ্ঠিত হওয়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য জামায়াত দেশে এবং দেশের বাইরে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছে কিন্তু এই ব্যাপারে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কারণে তাতে ব্যর্থ হয়ে সারা দেশে তারা যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তা এক কথায় নজিরবিহীন । এই নৈরাজ্য সৃষ্টির পিছনে যেমন আছে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের মৌন সমর্থন তেমন আছে বহির্বিশ্বের কয়েকটি দেশের প্রত্যক্ষ মদদ । এই নৈরাজ্যের ফলে আক্রান্ত হয়েছে আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মী ও নেতৃবৃন্দ আর দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় । এই প্রথমবারের মতো পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ আর পশু হত্যার সংষ্কৃতি চালু হয়েছে । চালু হয়েছে হাজার হাজার গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার । এই নৈরাজ্যে ইন্ধন যুগিয়েছে দেশের এক শ্রেণীর মিডিয়া আর কিছু সুশীল ব্যক্তি । জামায়াতের পিতৃ সংগঠন মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডকে সে দেশে সম্প্রতি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং তাকে সে দেশে পুনরায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে । বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত একটি ’ক্রিমিনাল’ সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে । তারপরও এক রহস্যজনক কারণে এই সংগঠনটিকে বাংলাদেশে এখনো নিষিদ্ধ করা হয় নি । ২০১৪ সালে জনগণের প্রত্যাশা থাকবে এই সংগঠনটিকে দ্রুততম সময়ে নিষিদ্ধ করা হোক আর তা না হলে এই সংগঠনটি ২০১৪ সালেও আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে ।

প্রধান বিরোধী দল সংবিধান বহির্ভূত পদ্ধতিতে আগামী ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি করে আসছে । তারা যে পদ্ধতিতে এই নির্বাচন চান সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত বাতিল করে দিয়েছেন এই বলে যে এই ব্যবস্থা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী । যা মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী তা সংবিধানে ফিরিয়ে আনা সহজ নয় তারপরও বিরোধী দলের আবদার সেই ব্যবস্থার অধীনেই সংসদ নির্বাচন করতে হবে । তাদের এই দাবির প্রতি দেশের কিছু মতলববাজ বুদ্ধিজীবী আর মিডিয়া সমর্থন জানিয়ে পুরো বিষয়টাকে আরো জটিল করে তুলেছেন । ইতোমধ্যে বিরোধীদল তাদের দাবি আদায়ের নামে দিনের পর দিন অবরোধ আর হরতাল ডেকে দেশের জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় ঘটিয়েছে, অর্থনীতির অপূরণীয় ক্ষতি করেছে আর দেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনকে বিপর্যস্ত করেছে । বিদেশে দেশের সুনামের ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক । ধরে নেয়া যায় আগামী ৫ তারিখের সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পরও বিরোধী দলের এমন কর্মকা- অব্যাহত থাকবে কারণ তাদের পিছনে বেশ কয়েকটি দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা সার্বক্ষণিক ভাবে ইন্ধন যোগাচ্ছে । দেশের মানুষ আশা করে ২০১৪ সালে এই অবস্থার সমাপ্তি ঘটবে এবং দেশের সার্বিক ক্ষেত্রে শান্তি ফিরে আসবে । নবম জাতীয় সংসদে বিরোধী দল ৯০% সময় অনুপস্থিত ছিল আর বিরোধী দলের নেতা উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১০ দিন । যে দলটি দেশের গণতন্ত্র চর্চার প্রধান ক্ষেত্র জাতীয় সংসদকে তেমন কোন গুরুত্ব দেন না সেখানে গণতন্ত্র টিকে থাকা কঠিন । এই সত্যটা তাদের উপলব্দি করতে হবে । তাদের উপলব্দি করতে হবে দেশটি কোন একটি দলের নয়, দেশটি ষোল কোটি জনগণের ।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষণা করেছে যার মধ্যে দুটি বিষয়কে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এর একটি হচ্ছে সন্ত্রাস মুক্ত শিক্ষাঙ্গন আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে দূর্নীতি মুক্ত দেশ । সম্প্রতি ঘোষিত কোন কোন সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের অথবা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের সম্পদের হিসাব নিশ্চিত ভাবে সরকার ও দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে । হতে পারে এই সম্পদের অনেকটাই বৈধ উপায়ে আহরিত । তবে তার একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ ব্যাখ্যা থাকা উচিত । স্ত্রীর কাছ হতে ধার বা শ্বশুর বাড়ী হতে উপহার সম্পদের এই সব উৎস জনগণ তেমন একটা গ্রহন করে না । রাজনীতিতে দেশের মানুষ আবুল মাল আব্দুল মুহিত, মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফকে দেখতে চায় । মানুষ দেখতে চায় এমন রাজনীতিবিদ যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধীষ্ট হয়ে নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছেন না । বঙ্গবন্ধু, বা জাতীয় চার নেতা অনেক বড় মাপের রাজনীতিবিদ ছিলেন কিন্তু তাঁদের সততা নিয়ে তাঁদের পরম শত্রুও কখনো কোন কথা বলতে পারে নি । তাঁদের গড়া দলে যারা পরবর্তীকালে সম্পৃক্ত হয়েছেন তারা কেন ব্যতিক্রম হবেন ?

দেশে এবং দেশের বাইরে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ব্যক্তি স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ আগামী দিনের একটি উদীয়মান সূর্য । এর সম্ভাবনা অপরিসীম । এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে প্রয়োজন সুশাসন আর সমষ্ঠিগতভাবে যোগ্য নেতৃত্ব । বঙ্গবন্ধু কন্যাকে এই দিকটার প্রতি আগামী বছর সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে । তবে সকলের আগে প্রয়োজন দেশের একটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যা খুঁজে বের করার দায়িত্ব সরকার ও বিরোধী দল উভয়েরই । মানুষ দেশের সুপ্রিম কোর্টে একজন মহিলা আইনজীবী কোন দলীয় কর্মীর হাতে লাঞ্চিত হচ্ছেন তা দেখতে চায় না । এতে কোন বিরত্ব নেই । মানুষ দেখতে চায় না সাংবাদিকদের প্রিয় প্রেস ক্লাব কোন রাজনৈতিক দলের বিকল্প অফিস হয়ে উঠেছে এবং তাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন হানাহানি হচ্ছে । দেশ এখন উন্নয়নের সড়কে উঠেছে । যে কোন ত্যাগের বিনিময়ে তাকে সেই সড়কে রাখতে হবে । তা অনেকাংশে সহজ হবে যদি বিগত দিনের ভুল গুলি হতে সরকারের নীতি নির্ধারকরা শিক্ষা নেন । তবে বাস্তবে দেখা যায় অতীতের ভুল হতে শিক্ষা নেয়াটা অনেকের জন্য সহজ নয় । বেশীর ভাগ মানুষই মনে করে যা করেছি তা ঠিক করেছি । এমন চিন্তা আত্মঘাতী হতে পারে । সব শেষে বলি বিগত বছরে অনেকে অনেক ট্রেন ফেল করেছেন । ট্রেন ষ্টেশন ছেড়ে চলে গলে তার পিছনে দৌড়ানো বোকামী । তার চেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে পরবর্তি ট্রেন ধরার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা । সকলকে নব বর্ষের শুভেচ্ছা । ২০১৪ সালের নতুন সূর্যকে নতুন প্রত্যাশায় স্বাগতম ।

লেখকঃ সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । ডিসেম্বর ৩১, ২০১৩ ।

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

[......লেখক আর্কাইভ]