[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নয়, নৈরাজ্যের উদ্দেশ্য ভিন্ন

 

 

প্রফেসর আবদুল মান্নান


বুধবার ১৮ দল তথা বিএনপি’র ডাকা চুরাশি ঘন্টার হরতাল নামক হত্যা, অগ্নিসংযোগ, মানুষের গায়ে পেট্রোল আর গান পাউডার মেরে হত্যা ও হত্যা প্রচেষ্টা আর জাতীয় সম্পদের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির আর একটি দফা শেষ হলো । এই কর্মসূচী যদিও বেগম জিয়া ১৮ দলের নামে ডেকেছিলেন বাস্তবে মাঠে জামায়াত-শিবিরের দূবৃর্ত্তরা ছাড়া তেমন একটা কেউ ছিল না । ইদানিং জামায়াত শিবিরের দূবৃর্ত্তরা ছাড়াও প্রচুর সংখ্যক ভাড়াটে সন্ত্রাসীরাও বিরোধী দলের এই সব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে । বলা যেতে পারে বিএনপি বেশ মুন্সিয়ানার সাথে এই সব ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের কাছে ‘আউটসোর্স’ করে দিয়ে নিজেরা ঘরে বসে পরিবারের সাথে সময় কাটানোটাকে অনেক বেশী ফলপ্রসূ মনে করেছে । এটা তাদের এক বড় সফলতা বলতে হয় । যে সব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে এই কাজগুলি ‘আউটসোর্স’ করা হয় তাদেরও টুপাইস কামানোর ব্যবস্থা হয় । এটি ধারণা করা হয়েছিল সামনের সপ্তাহেও আবার দেশ একটি লম্বা হরতাল নামক জাতীয়তাবাদী সন্ত্রাসের হাতে পরবে । কিন্তু আপাততঃ মনে হচ্ছে বেগম জিয়া তাঁর এই দেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ডে দু’একদিনের বিরতি দেয়াটাকে সমীচীন মনে করেছেন কারণ বাংলাদেশে সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিস নিশা দেশাই বিসোয়াল। বেগম জিয়া আর তার সহকর্মীদের ধারণা বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান মিস দেশাই ওয়াশিংটন হতে নিয়ে আসছেন । এটি বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের বড় ব্যর্থতাযে দেশের সব রাজনৈতিক সমস্যা যদিও নিজেদের কারণে সৃষ্ট তথাপি তারা মনে করেন এই সব সমস্যার সমাধান বিদেশী কুতুবরা এসে সমাধান করে দেবেন । বাংলাদেশের ইতিহাসে সম্ভবত সব চেয়ে বড় রাজনৈতিক সমস্যা বা সংকট সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭১ সনে যখন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা সত্তরের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে জয়ী হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছিল । সেই সংকট নিরসনে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সাথে প্রাথমিক ভাবে আলোচনার পথ বেছে নিয়েছিলেন । সেই আলোচনা প্রায় মাস খানেক স্থায়ী হয়েছিল এবং তা ব্যর্থ হলে বাঙালি যুদ্ধে গিয়েছিল । আলোচনার কোন পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বিদেশী কারো হস্তক্ষেপের প্রয়োজন মনে করেন নি । পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রায় দুই দশক ধরে একটি রক্তক্ষয়ী অশান্ত পরিবেশ বজায় ছিল । সেই রক্তক্ষয়ী অশান্ত পরিবেশকে কোন তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ ছাড়া শান্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যার ফলে ১৯৯৭ সনে পার্বত্য শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল । সেই সব রাজনৈতিক সংকটের তুলনায় বর্তমানে বাংলাদেশে যে সংকট চলছে তা কোন অবস্থাতেই বড় নয় ।
যদিও উপর থেকে মনে হতে পারে বেগম জিয়া বা তাঁর মিত্রদের আন্দোলন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে (বর্তমানে যা অসাংবিধানিক) জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য, বাস্তবে তা কিন্তু নয় । নির্বাচন সংবিধানে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী হবে আর দশটি দেশে যে ভাবে হয় সেই ভাবে । ১৯৯০ সালের আগ পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সব নির্বাচনই ১৯৭২ এর সংবিধান অনুযায়ী হয়েছিল । একটি বিশেষ ব্যবস্থায় এবং সব দলের সমঝোতার ভিত্তিতে ১৯৯১ সনে একটি নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল । সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি । দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আবার ১৯৭২ সনের সংবিধানের আওতায় ফিরেও গিয়েছিল । ১৯৯৪ সনে যদি বেগম জিয়া মাগুরা উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে জিততে না চাইতেন তা হলে পরবর্তী নির্বাচনগুলিও ওই ৭২ সালের সংবিধানের অধীনেই হতো । ৭২ সালের সংবিধানের অধীনেই হলো বেগম জিয়ার ১৯৯৬ সনের ১৫ই ফেব্রুয়ারির সেই ঐতিহাসিক এক তরফা সংসদ নির্বাচন । সঙ্গে অবশ্য বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি তাঁর স্বামীর এককালের সহকর্মী এবং প্রীতিধন্য কর্নেল (অবঃ) আবদুর রশিদ । সকলে মিলে সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী আনলেন । বললেন এইবার হতে নির্বাচনের সময় একটি নিদর্লীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকবে । তবে সেবার সংসদের মেয়াদ ছিল মোট এগার দিন । সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচন হলো ১৯৯৬ সনে । নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলেন শেখ হাসিনা । শান্তিপূর্ণভাবে ২০০১ সনে তিনি আর একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেন । দীর্ঘদিন পর এমন শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর ঘটলো যদিও সেদিন একজন বর্ষিয়ান সাংবাদিক একটি টিভি টকশোতে বলছিলেন বাংলাদেশে নব্বই সালের পর কখনো শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি । শেখ হাসিনার উপর তার অনেক ক্ষোভ কারণ তিনি তারেক জিয়ার এক ঘনিষ্ট বন্ধুর হয়ে একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স চেয়েছিলেন যা তিনি পান নি । এতেই তিনি বর্তমান সরকার আর প্রধানমন্ত্রীর উপর ভীষণ ক্ষুব্ধ। অবশ্য আমার মতে তাকে তার চাওয়া লাইসেন্স দিয়ে দিলে শেখ হাসিনা বা সরকারের এমন কোন ক্ষতিবৃদ্ধি হতো না কারণ এই সরকারের আমলে যাদের টিভি লাইসেন্স দেয়া হয়েছে তাদের ক’জন সরকারের দীর্ঘ পাঁচ বছরের সাফল্য বা অর্জনগুলি তুলে আনে? একটি টিভি চ্যানেল শেখ হাসিনার পূর্বের শাসনামলে তিনি নিজে উদ্বোধন করেছিলেন । ২০০১ সালে বেগম জিয়া ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক মাসের মাথায় (২৯ আগষ্ট ২০০২ সাল) সরকার তা একঘন্টার নোটিশে বন্ধ করে দিয়েছিল । সেই টিভি চ্যানেল এখন সকাল সন্ধ্যা মোটামুটি সব অনুষ্ঠানই সাজিয়েছে বর্তমান সরকারকে ঘায়েল করার জন্য । তাদের একজন প্রতিবেদক আছেন যাকে বেগম জিয়ার তৃতীয় পুত্র হিসেবে সকলে চিনেন । তিনি একজন রিক্সাওয়ালার সামনে মাইক ধরে তার কাছে জানতে চান ‘পদ্মা সেতুতে ব্যাপক দূর্নীতি হয়েছে, এই ব্যাপারে আপনার মত কী ?’ একই প্রশ্ন করা হলো এ‘বার পত্রিকার একজন হকারের কাছে । পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক চা বিক্রেতা । এবার তার সামনে মাইক ধরলেন সেই রিপোর্টার । ক’দিন আগে এই চ্যানেলে একজন স্বঘোষিত নাস্তিক প্রকাশ্যে বোমাবাজদের আহ্বান জানালেন যেন যে সব টিভি চ্যানেল সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা বলে অথবা প্রগতি ও ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষে নেয় সেই সব মিডিয়া হাউজে যেন বেশী বেশী করে বোমা মারা হয় । সুতরাং সেই বর্ষিয়ান সাংবাদিকের নামে একটা টিভি’র লাইসেন্স দিলে তিনি হয়তো আর ঠাট্টা করে বলতে পারতেন না তিনি ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ’ ।
১৯৯৬ সনের এক দলীয় নির্বাচন করে বেগম জিয়া যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম দিয়েছিলেন তাকেও আবার প্রশ্নবিদ্ধ করলেন বেগম জিয়া স্বয়ং ২০০৬ সালে । এ’সব পুরানো কাসুন্দি । ২০০০ সালে একজন সলিমুল্লাহ খান হাইকোর্টে এই রকমের সরকার ব্যবস্থা আমাদের মূল সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সাথে সাংঘর্ষিক কী না তা জানতে চেয়ে একটি রিট মামলা দায়ের করেন । হাইকোর্ট তা নিষ্পত্তি না করে তা সরাসরি সর্বোচ্চ আদালতে পাঠিয়ে দেন । এই আদালত দীর্ঘ শুনানির পর ২০১১ সালে রায়ে বলেন ‘সংবিধানের (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, ২০১১ সালের ১০ই মে তারিখ হইতে ভাবীসাপেক্ষ ভাবে (Prospectively) অসাংবিধানিক তথা অবৈধ ঘোষণা করা হইল ’। এটিই আদালতের তর্কিত বিষয়ে রায় । বাকি সবই আদালতের পর্যবেক্ষণ । যেমন সকলে দুই মেয়াদের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার কথা নিয়মিতভাবে বলে থাকেন । আদালতের ভাষায় এটি পর্যবেক্ষণ হিসেবে এই ভাবে উপাস্থাপিত হয়েছে : ‘উপরোক্ত নীতিসমূহের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সাময়িকভাবে শুধুমাত্র পরবর্তী দুইটি সাধারণ নির্বাচনের ক্ষেত্রে থাকিবে কি না সে সম্বন্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র জনগণের প্রতিনিধি জাতীয় সংসদ লইতে পারে।’ মহামান্য আদালত তাদের পর্যবেক্ষণে আরো বলেন ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধুমাত্র জনগণের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যগণ দ্বারা গঠিত হইতে পারে, কারণ, জনগণের সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমতায়ন, গণতন্ত্র, প্রজাতান্ত্রিকতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের basic structure এবং এই রায়ে উক্ত বিষয়গুলির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে’ । বাস্তব কথা হচ্ছে যে মুহুর্তে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ত্রয়োদশ সংশোধনী অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে সেই মুহুর্ত হতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি সম্পূর্ণ অবৈধ হয়ে পরেছে । পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে শুধু মাত্র এই ব্যবস্থাটিকে সংবিধান হতে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে ১৯৭২ সনের সংবিধানের পূর্বের ব্যবস্থা, যা জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার করেছেন তার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে । এখনো এই বিষয়ে সংসদ বা সরকার নতুন কিছুই করেনি ।
বেগম জিয়া এবং তাঁর দল গত দুই বছর ধরে আন্দোলনের নামে সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের মাধ্যমে যে ভয়াবহ সহিংসতা শুরু করে বেপরোয়া ভাবে মানুষ হত্যা সহ নিয়মিত যে তা-ব সৃষ্টির উল্লাস নৃত্য করছে তার পিছনে মূল কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নয় । প্রথমে বেগম জিয়া বর্তমানে জামায়াত শিবিরের হাতে বেশ নগ্নভাবে ব্যবহৃত হচ্ছেন । জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সব নেতা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এবং বেশ ক’জন মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত । বেগম জিয়াকে দিয়ে তারা একাধিকবার ঘোষণা করিয়েছেন ক্ষমতায় গেলে শুধু দন্ডিতদেরই তিনি মুক্ত করে দেবেন না, যে ট্রাইবুনালে এই বিচার কাজ চলছে তা বন্ধ করে দিয়ে যারা এই বিচারের পিছনে দীর্ঘদিন লড়াই সংগ্রাম করেছেন তাদের তিনি বিচার করবেন । বেগম জিয়ার দুই পুত্র দূর্নীতি আর মানি ল-ারিংএর দায়ে অভিযুক্ত হয়ে আটক হয়েছিলেন । বর্তমানে তারা দুজনই প্যারোলে মুক্ত হয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন । ছোট ছেলে কোকোর দূর্নীতির বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রমাণিত । রোববার তারেক জিয়ার মানি ল-ারিং মামলার রায় হওয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে । এই মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কমকর্তা এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন । বেগম জিয়ার এখন অন্যতম অগ্রাধিকার হচ্ছে কী ভাবে তার এই দুই পুত্রকে বাঁচিয়ে আবার তাদের পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা যায় সে চিন্তা করা । তার জন্য তিনি ইতোমধ্যে সারা দেশকে জিম্মি করে ফেলেছেন । শেখ হাসিনা একাধিকবার বলেছেন তার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশকে সাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং একটা অবাধ সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা । তার জন্য তিনি সর্বদলীয় অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার কথা বলেছেন । রাতের টকশোর ধূম্রজাল সৃষ্টিকারীরা বলছেন এমন সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে নেই । তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও সংবিধানে নেই । চারদলীয় অথবা মহাজোট সরকার ব্যবস্থা কোনটাই সংবিধানে ছিল না । আসলে সর্বদলীয় সরকার ব্যবস্থার ধারণাটাই হচ্ছে নির্বাচনকালীন সময়ে সকলের অংশগ্রহণে একটি সরকার ব্যবস্থা । যারা কুতর্ক করেন তারা বলেন এমন সরকার গঠন করলে তখনতো সংসদে আর বিরোধী দল থাকবে না । বাস্তবে একবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে স্বাভাবিক অবস্থায় আর সংসদ বসার কোন কারণ নেই যদি না দেশে কোন জরুরী অবস্থার সৃষ্টি হয় । বিএনপি এবং তার মিত্ররা তাদের পুরোনো এবং বর্তমানে অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবিতে দেশে সহিংসতার একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেও বর্তমানে সেখান হতে সরে এসে বন্দুকটা শেখ হাসিনার দিকে তাক করেছেন । এখন বলছে তিনি সরকার প্রধান না থাকলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে । তিনি যে কেন তাদের এত বড় শত্রু তা পরিষ্কার নয় । সকলে ভুলে যান ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী । সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে একটি সরকার পাঁচ বছর দেশ শাসনের দায়িত্ব পায় । সরকারের এই পাঁচ বছরের কর্ম মনে রেখে পরবর্তী নির্বাচনে তাদের দেশের জনগণ মূল্যায়ন করে । জনগণ তাদের সিদ্ধান্তে ভুল করে না । করলে তার জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হয় । দেশের শান্তিকামী মানুষ আশা করে যারা বর্তমানে রাজনীতির নামে দেশে সন্ত্রাসের উল্লাস নৃত্য করছে তাদের বোধোদয় হবে এবং সময় থাকতে তারা সুস্থ রাজনীতির পথে আবার ফিরে আসবে ।

লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । নভেম্বর ১৫, ২০১৩

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

[......লেখক আর্কাইভ]