@
@
@
@
@ |
@
@
মমতা এলেন, দেখলেন, জয়
কী করলেন?
@
প্রফেসর আবদুল মান্নান
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর আমন্ত্রণে ভারতের পশ্চিম
বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন দিনের সফরে গত বৃহষ্পতিবার
রাতে বাংলাদেশে এসেছিলেন, ফিরে গেলেন শনিবার রাতে । বাংলাদেশে অবস্থানকালে
তাঁকে অনেকটা সরকার প্রধানের মর্যাদা দেয়া হয় । সার্বক্ষণিক তিনি এসএসএফfর
নিরাপত্তা বলয়ে ছিলেন । মমতা বন্দোপাধ্যায় এসেছিলেন, এপার বাংলার বাঙালির
আতিথেয়তা প্রাণ খুলে উপভোগ করেছেন, বঙ্গবন্ধু যাদুঘরে গিয়ে আবেগ আপ্লুত
হয়েছেন, শিল্পী সাহিত্যিকদের সাথে চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছেন, পদ্মার ইলিশের
স্বাদ নিয়েছেন, কিন্তু মানুষের মন কতটুকু জয় করতে পেরেছেন তা নিশ্চিত করে
বলা যাবে না কারণ এক সময় যে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে এ দেশের মানুষ নিজেদের
কাছের মানুষ ভাবতো সেই মমতা বন্দোপাধ্যায় নিজের কিছু কর্ম ফলে এই বাংলার
বাঙালিদের কাছ হতে অনেক দূরে সরে গিয়েছেন । মমতাকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ
হাসিনা এতই কাছের মানুষ মনে করতেন যে মমতা যখন বামফ্রন্টকে রাজ্যবিধান সভায়
পরাজিত করে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে ধ্বস নামানো বিজয় এনে দিয়েছিলেন
তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল প্রটোকল ভেঙ্গে মমতাকে প্রাণঢালা
অভিনন্দন জানিয়েছিলেন অথচ মমতা বন্দোপাধ্যায় ভারতের ২৯টি রাজ্যের
মূখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে একজন মূখ্যমন্ত্রী মাত্র। মনে করা হয়েছিল
পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর পর মমতাই হতে পারে ভারতের
বাংলাদেশের একজন প্রকৃত বন্ধু, সহায়তা করতে পারেন দুদেশের মধ্যে অনেক
অমীমাংসিত সমস্যার সমাধানের । কিন্তু কে জানতো মমতা নিজেই দ্রুত বাংলাদেশের
একজন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠবেন । জ্যোতি বসু আর মমতা দুfজনেরই আদি পিতৃভূমি
পূর্ববঙ্গে যদিও মমতার জন্ম কোলকাতায় । মমতার রাজনীতিতে প্রবেশ কলেজ জীবনে
যখন তাঁর বয়স সবে মাত্র ১৫তে প্রবেশ করেছে প্রদেশ কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের
হাত ধরে । দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত ছিলেন কংগ্রেসের রাজনীতির সাথে । কোলকাতা
বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামের ইতিহাস হতে এমএ পাস করার পর পুরো মাত্রায় জড়িয়ে
পড়েন সার্বক্ষণিক রাজনীতির সাথে । তাঁর সম্পর্কে বলা হয় তিনি বেশ বদ মেজাজী,
নিজের ভিতর এক প্রকারের অহংবোধ কাজ করে, রাজনীতির মাঠে নাটক করতে বেশ পছন্দ
করেন যা কখনো কখনো সীমা ছাড়িয়ে যায় । কোন একটি বিষয়ে তাঁর পদক্ষেপ ক্ষণে
ক্ষণে পাল্টে যায় । রাজ্য সভা নির্বাচনে বিজয় লাভ করার পর সব কিছুতেই তিনি
সিপিএম বা বামফ্রন্টর ছায়া দেখেন । রাস্তায় গাড়ীর চাকা ফাটলে মনে করেন এটি
নিশ্চয় তাদের ষড়যন্ত্র । জীবন যাত্রা সাদাসিধে । কংগ্রেসের টিকিটে
একাধিকবার লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন । কিন্তু তাঁর দৃষ্টি
পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রীর আসন । সেটি মিলল ২০১১ সালে । ২০১১ সালের
নির্বাচনে বামফ্রন্টের হার পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে তেমন একটা
অপ্রত্যাশিত ছিল না কারণ তাদের সাথে ছিল দলীয় পান্ডাদের বেপরোয়া
কর্মকান্ডের ভারী বোঝা ।
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২২ শতাংশ ভোটার মুসলমান । তারা এক সময় কংগ্রেস এবং
বামফ্রন্টকে তাদের মিত্র মনে করতো কিন্তু এই পান্ডাদের অত্যাচারের কারণে
তারাও অনেকটা দূরে সরে গিয়েছিল । মমতা তাদের সামনে অবতারের ভূমিকায় অবতীর্ণ
হয়েছিলেন । প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি হবেন তাদের আশ্রয়স্থল ।
পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের একটি বিরাট অংশ ধর্মীয় মৌলবাদি আর গোড়ামিতে
আচ্ছন্ন । এটি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তি জেলাগুলির ক্ষেত্রে বেশী প্রযোজ্য ।
এখানে দেলওয়ার হোসেন সাঈদি একজন বড় মাপের ইসলামি চিন্তাবিদ । পরিবারগুলি
বেশ রক্ষণশীল । অনেক বাড়িতে টিভি দেখাকে হারাম বলে মনে করা হয় । কোলকাতাতেও
এমন মুসলমানদের সংখ্যা কম নয় । যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাঈদীর যাবজ্জীবন
কারাদন্ড হলে সেখানকার উর্দুভাষী মুসলমানরা তার প্রতিবাদে বেশ বড় আকারের
মিছিল বের করে । অথচ এর পাল্টা মিছিলের আয়োজন করতে চাইলে মমতা
বন্দোপাধ্যায়ের প্রশাসন তার অনুমতি দেয় নি । মমতা বাংলাদেশ হতে ধীরে ধীরে
দূরে সরে গিয়েছিলেন । তারও আগে ২০১১ সালে বাংলাদেশ সফরে আসলেন ভারতের
তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং । সাথে এলেন বাংলাদেশের লাগোয়া
রাজ্যগুলির মূখ্যমন্ত্রীরা । শেষ মূহূর্তে বেঁকে বসলেন মমতা । তাঁর নিজ
দেশের প্রধানমন্ত্রীর জন্য চরম অপমান তুল্য । ধারণা করা হচ্ছিল এই যাত্রায়
বাংলাদেশের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তিটি
সই হবে । শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তেমনটিই আশা করা হচ্ছিল । ভারত যেহেতু একটি
ফেডারেল কাঠামোর রাষ্ট্র সেই দেশের সরকার কোন একটি রাজ্যকে পাশ কাটিয়ে একক
ভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে চায় না । ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা সীমান্ত চুক্তির
পরপরই বাংলাদেশ তা জাতীয় সংসদে অনুমোদন করিয়ে নেয় । ভারত এই যাবত তা করতে
ব্যর্থ হয় যদিও ডঃ মনমোহন সিংএর সরকার এই ব্যাপারে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল
। এখানেও বাধ সাধলেন মমতা বন্দোপাধ্যায় । বললেন এই চুক্তির ফলে ভারত যা পাবে
তার চেয়েও বেশী দিতে হবে বাংলাদেশকে । অথচ এই দুটি অমীমাংসিত সমস্যার
সমাধান হয়ে গেলে বাংলাদেশের চেয়ে ভারত কম লাভবান হতো না । উত্তর
পূর্বভারতের সাতটি রাজ্য তাকিয়ে ছিলেন মমতার দিকে । তাদেরও তিনি চরম হতাশ
করেছিলেন । এই চুক্তি হয়ে গেলে এই রাজ্যগুলি বাংলাদেশের উপর দিয়ে ট্রানজিট
সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেত ।
আসলে মমতা বামফ্রন্ট আর কংগ্রেসকে দূরে ঠেলে রাখার জন্য অপরাজনীতির আশ্রয়
নিয়েছিলেন এবং এখনো নিতে দ্বিধা করেন না । তিনি নির্বোধ মুসলমান তোষণ করতে
গিয়ে নিজেই অনেকটা নির্বোধের মতো আচরণ করেছেন । উর্দুকে রাজ্যের দ্বিতীয়
ভাষার মর্যাদা দিয়েছেন । তারপর এলো খাগড়াগড়ে জঙ্গিদের ডেরায় বোমা বিষ্ফোরণে
ঘটনা। এই বোমা বানানো হচ্ছিল বাংলাদেশে পাচারের জন্য । প্রথম দিকে পুরো
বিষয়টাকে মমতা চেপে যেতে চাইলেন । বললেন এই সব তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়
সরকারের ষড়যন্ত্র । নির্ঘাত eরf এর সাথে জড়িত । দিল্লি খবর দিল কেন্দ্রীয়
তদন্ত সংস্থা পুরো বিষয়টা তদন্ত করবে । মমতা রাজি নন । দিল্লি অনড় । মমতার
কাছ হতে তেমন একটা সহায়তা পাওয়া গেল না । তারপরও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা
তদন্ত করে বের করলো ঘটনার সাথে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জেএমবি জড়িত । বোমা
বানানো হচ্ছিল মূলত বাংলাদেশে ব্যবহার করার জন্য । তাদের সহায়তা করেছে
মমতার পার্টিরই কিছু সদস্য । বিভিন্ন সন্দেহজনক খাত হতে জঙ্গিদের অর্থায়ন
করা হয়েছে । বেকায়দায় মমতা । ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেশ কঠিন
পদের রাজনীতিবিদ । মমতাকে শায়েস্তা করতে পারলে ধীরে ধীরে পশ্চিম বঙ্গে
বিজেপিfর প্রবেশ সহজ হয়ে পরবে । মমতার উপর স্ক্রু টাইট দেয়া শুরু হলো ।
ইতোমধ্যে এই রাজ্যের মুসলমানদের একটি বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ।
কোলকাতায় অনেকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে তৃণমূলের ছাত্রপরিষদের
দূর্বৃত্তপনায় মানুষ অতীষ্ঠ হয়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকছে । এটাও তাদের কাছে
পরিস্কার হয়ে পরেছে এই রাজ্যে কংগ্রেস বা সিপিএম এর পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে
আসাটা কঠিন ।
তাঁর অবস্থান যে কিছুটা নাজুক হয়ে পরেছে তা তিনি উপলব্দি করেছেন । মনে
করেছেন যেহেতু দিল্লি বাংলাদেশের সাথে নিজেদের স্বার্থেই বন্ধুত্ব দৃঢ় করতে
চায় তাহলে স্বউদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কটা উন্নত করে নেয়াটাই
বুদ্ধিমানের কাজ । ছুঠে এলেন ঢাকা । বিমান বন্দরে নেমেই বললেন eজয় বাংলাf।
এতে নিশ্চয় বিএনপি খুব একটা খুশী হয় নি । জিন্দাবাদ বললে খুশি হতো । বেগম
জিয়ার ১৯৯১-৯৬ সন মেয়াদে ভারতের বিখ্যাত অভিনেতা দিলীপ কুমার সরকারের
আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে এসেছিলেন । ওসমানি মিলনায়তনে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয় ।
প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া । দিলীপ কুমার মঞ্চে উঠতেই অনুষ্ঠান
পরিচালক দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন দিলীপ কুমারের আসল নাম কিন্তু ইউসুফ
খান । তিনি একজন মুসলমান । কয়েকবার বলার পরও দর্শকরা তেমন একটা সাড়া দেন
নি। তারা এখানে ইউসুফ খান নয় দিলীপ কুমারকে দেখতে এবং শুনতে এসেছেন ।
মহানায়ক মঞ্চে উঠেই প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিনয়ের সাথে বললেন eআদাবf,
চোস্ত উর্দুতে । ভারতীয় বনেদি মুসলমানরা যেমন সালাম জানিয়ে অন্যজনকে
সম্বোদন করেন ঠিক তেমন ভাবে eআদাবfও জানান । লাখনৌতে এটির বেশ প্রচলন দেখেছি
। দিলীপ কুমার মঞ্চে উঠে বলেন eঅনেক দিন আগে আমি দিল্লি বিমান বন্দরে শীতের
সকালে ছুঠে গিয়েছিলাম আপনাদের দেশের এক মহান নেতাকে দেখতে । তিনি ছিলেন শেখ
মুজিবুর রহমান। আজ তাঁর দেশে আসতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি f। বেগম জিয়ার
চেহারা কিছুটা কালো হয়ে যায় । এর মধ্যে আবার মমতা এসে প্রত্যেকটা অনুষ্ঠানই
শেষ করেছেন eজয় বাংলাf বলে । বিএনপিfর মাথা ঠিক থাকার কথা নয় ।
মমতা একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়েছেন । রাষ্ট্রপতি আবদুল
হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন । সর্বমহলের বড়
প্রশ্ন ছিল মিলবে কী এবার তিস্তার জল অথবা সুরাহা হবে কী সীমান্ত চিহ্নিত
করণ সমস্যার ? মমতা সকলকে বললেন eআমার উপর আস্থা রাখুন, সব সমস্যার সমাধান
হয়ে যাবে ।f এপারের মানুষ সব সময় অন্যের উপর আস্থা রেখেছে কিন্তু অনেক সময়
প্রতারিত হয়েছেন । এবার কিন্তু তারা তেমনটি ঘটুক তা দেখতে চায় না ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে গেলে মমতা যে ধরণের উষ্ণ
অভ্যর্থনা পেয়েছেন তা তিনি জীবনে কতবার পেয়েছেন ? এটি বঙ্গবন্ধু কন্যার
পক্ষেই সম্ভব । তিনি প্রয়োজনে নিমিষেই প্রধানমন্ত্রীর লেবাস ছেড়ে একজন জননী,
একজন বড় বোন, পামের বাড়ীর বড় বুবু অথবা নিকট আত্মীয় হয়ে উঠতে পারেন । বলতে
পারেন eকত দিন দেখিনি তোমায় । কেমন ছিলে এতদিন? খাওয়ার আগে হবে নাকি এক কাপ
চা অথবা কফিf? মমতা কী শেখ হাসিনার এই আন্তরিকতা উপলব্দি করেছেন? তাঁকেতো
স্বীকার করতেই হবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যতদিন বাংলাদেশে একটি সরকার আছে
ততদিন ভারতের পূর্ব সীমান্ত শান্ত থাকবে । না থাকলে এবার দশ ট্রাক নয় শত
ট্রাক অস্ত্র আসবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় । সেই সব অস্ত্র যাবে ভারতের
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কাছে । এই সত্যটা শুধু দিল্লিকে উপলব্দি করলে হবে না ।
বাংলাদেশের লাগোয়া রাজ্য সরকার গুলিকে আরো বেশী করে উপলব্দি করতে হবে যার
মধ্যে পশ্চিম বঙ্গ সরকারের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশী ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার পঙ্কজ শরণ তাঁর সরকারি
বাসায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মানে এক মনোজ্ঞ অর্ভ্যথনা অনুষ্ঠানের আয়োজন
করেছিলেন । সেই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সরকারের মন্ত্রী আমির হোসেন আমু হতে শুরু
করে তোফায়েল আহমদ । চুলে ঘন কলপ লাগিয়ে হাজির হয়েছিলেন হুসাইন মোহাম্মদ
এরশাদ । সস্ত্রীক এসেছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ । ঘিয়ে রঙ্গের পাজামা পাঞ্জাবি
পরে হাসি হাসি মুখ করে সময়মতো এসে পরেছিলেন বেগম জিয়ার উপদেষ্টা লেঃ
জেনারেল (অবঃ) মাহবুব । রুনা লায়লা, ফেরদৌস আর, লিলি ইসলাম, ইফফ্াত আরা কেউ
বাদ যাননি । বাদ যাননি আমাদেও সকলের পরিচিত বাকের ভাই, মানে সংষ্কৃতি
মন্ত্রী অসাদুজ্জামান নূর । আর ঢাকার সাংবাদিক মহলকে বাদ দিয়েতো কোন
অনুষ্ঠান কল্পনাও করা যায় না । এলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে আটপৌড়ে
একটা শাড়ি আর চপ্পল পরে । সকলের সাথে কুশল বিনিময়ের পর মাইকটা হাতে নিয়ে
বললেন eআজ আমি এ্যাংকর। এখন গান হবে, সাথে আবৃত্তি আর নাটকের ডায়ালগ।f তখন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে গেলেন সকলের দিদি । বসে পরলেন তিনি ষ্টেজের
কিনারায়। পাশে বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ,
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ আর হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ । হারমোনিয়াম তবলা
কিছুই নেই । না থাক । কখনো কখনো বেসুরা গলায় গানের চেষ্টা হলো । আন্তরিকতার
অভাব কারো নেই । দিদি বললেন সাংবাদিকরা এত কথা বলেন । তারা কই । কিছু একটা
করুন । জবাবে শ্যামল দত্ত বললেন eটক শোf করতে পারি । দিদির তাৎক্ষণিক উত্তর
eওরে বাবা টক শো? তাতে সব কিছু টক হয়ে যাবে ।f এমন একটা সুন্দর সন্ধ্যা
উপহার দেয়ার জন্য পঙ্কজ শরণকে ধন্যবাদ । ফেরার সময় কাউন্সিলর (পলিটিক্যাল)
সুজিত ঘোষ দুঃসংবাদটা দিলেন । তিনি মার্চের প্রথম সপ্তাহে দিল্লি ফিরে
যাচ্ছেন । সুজিত আমাদের অনেকেরই একেবারে কাছের মানুষ । সহজে সকলকে আপন করে
নিতে পারতেন । পরের জন কী তাঁর মতো হবে ?
অনেক আশা আর আশ্বাস দিয়ে মমতা ফিরে গেছেন কোলকাতায় । নরেন্দ্র মোদি আগামী
মাসে ঢাকা আসছেন । ঘোষণা করেছেন তিনি বাংলাদেশের জন্য ভাল সংবাদ নিয়ে আসবেন
। সকলেই অপেক্ষায় থাকবে এপারে । সত্যি সত্যি যদি সংবাদ ভাল হয় তখন সকলের আগে
মনে পরবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা । বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্ব উত্তরোত্তর
সূদৃঢ় হোক ।
লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫
@
@
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
@
[প্রথমপাতা] |
@
@
@
লেখকের আগের লেখাঃ
[......লেখক আর্কাইভ]
|