প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

 এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

গুলশানের ঘটনা না ঘটলে জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক কতটা গভীর তা বুঝতাম নাঃ কাজুহিরো ওয়াতানাবে

 

New Page 1


গোড়া থেকে

 

কমিউনিটি রিপোর্ট ।। জুলাই ২৬, ২০১৬ ।।

এনএইচকে বাংলা বিভাগের সিনিয়ার প্রযোজক কাজুহিরো ওয়াতানাবে বলেছেন, ৪০ বছর ধরে আমি এনএইচকে'র বাংলা বিভাগের সাথে জড়িত, বাংলাদেশে এমন ঘটনা কখনো ঘটতে পারে তা ছিলো আমার কল্পনার বাইরে। গুলশানের ঘটনায় আমি ঘটনায় খুবই মর্মাহত হয়েছি কিন্তু এর একটি ইতিবাচক দিকও আমার চোখে পড়েছে। আমি লক্ষ্য করেছি, জাপানিরা তাদের মন্তব্যে বলেছেন- বাংলাদেশটা এতো সুন্দর দেশ, বাংলাদেশের মানুষরা জাপানিদের এতো ভালোবাসে যা খুবই বিরল। কেউ কেউ এমন মন্তব্যও করেছেন, বাংলাদেশ তো আমার দ্বিতীয় জন্মভূমি। সাধারণ জাপানিরা বাংলাদেশকে যে এতো ভালোবাসেন তা আমি এতো গুলো বছরেও বুঝতে পারিনি।

ওয়াতানাবে বলেন, আমার ধারণা এর মাধ্যমে জাপানিরা নতুন ভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে পারবেন। ভবিষ্যতে পরিস্থিতির উন্নতি হলে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক আগের চেয়ে আরো গভীর হবে বলেই আমার মনে হয়।

গত রোববার ২৪ জুলাই টোকিও'র আকাবানে বিভিও হলে অনাবাসিক বাংলাদেশিদের সংগঠন এনআরবি -জাপান, বাংলাদেশে জঙ্গি হামলায় নিহতদের উদ্দেশ্যে এক শোক সভার আয়োজন করে। ওয়াতানাবে সেখানে এই বক্তব্য রাখেন।

সামনে রাখা ৫টি দেশের নিহত ২০ জন নামের স্মৃতিফলকের সামনে অনুষ্ঠানের শুরুতেই সমবেত অতিথিরা এক এক করে সাদা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর সবাই দাঁড়িয়ে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।

এনআরবি'র পক্ষে শহীদুর রহমান খান হিরো শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে কাজুহিরো ওয়াতানাবে, নাবি উল্লাহ আসিফ, মারুবেনি প্রধান ইনাদোমে হিদেকি, কাজী মাহফুজুল হক লাল, বাংলাদেশে কাজ করা এনজিও শাপলা নীড় চেয়ারম্যান ইউকিও ইওয়াকি, বাদল চাকলাদার, আজিয়া ব্র্যান্ডের ইশিজাকি মিয়াকো, ছালেহ মোঃ আরিফ, এমদাদুল হক, মিজানুর রহমান, খন্দকার আসলাম হীরা, জেড এম আবুসিনা, জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা, শেখ এমদাদ, হারুনুর রশীদ, জাকির হোসেন জোয়ার্দার, কাজী ইনসানুল হক, অভিনেতা কোদা তাৎসুইয়া, খন্দকার নাজিমুর রহমান, মুনসী কে আজাদ প্রমুখ।


রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা তার বক্তব্যে বলেন, অনুষ্ঠানে সকলের বক্তব্য শুনে আমি উৎসাহিত বোধ করছি। জাপানিদের ভালোবাসা ও উদারতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশে নিহত ৭ জনেরই শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে আমি উপস্থিত ছিলাম, কিন্তু সে সব পরিবারের কারো চোখে আমি রাগ দেখিনি, লজ্জায় আমার মাথা নত হয়ে গেছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপানের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা তাদের টিফিনের অর্থ ভারতে পাড়ি জমানো বাংলাদেশের দুঃস্থ শিশুদের জন্যে দান করেছিলো, আমরা সেই তাদেরকেই হত্যা করেছি।

মিস ফাতিমা ভবিষ্যতের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আমি আশাবাদী। গত সপ্তাহে মঙ্গলিয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে'র বৈঠকের পর তারা দু'দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সংকল্পের কথা বলেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালানো হবে। আমরা তাদেরকে শাস্তি দেবোই -এই নিশ্চয়তা আমি আপনাদেরকে দিতে পারি। তিনি সকলকে উস্কানিমূলক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।

প্রতি সপ্তাহেই বিভিন্ন জাপানি প্রতিনিধি দলের সাথে তার বৈঠকের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জাপানিরা আমাকে জিজ্ঞেস করেন বাংলাদেশে সাহায্য অব্যাহত রাখা উচিত কিনা, আমি তার জবাবে বলি, নিশ্চয়ই উচিত, তা না হলে সন্ত্রাসেরই জয় হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ও জাপান দু'দেশই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত জাপানি নাগরিকরা তাদের বক্তব্যে বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশের প্রতি তাদের ভালোবাসার কথা ব্যক্ত করেন। তাদের বক্তব্য দেয়ার সুযোগটি প্রশংসনীয় ছিলো। ইশিজাকি মিয়াকো তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, টোকিওর রাস্তায় এক বাংলাদেশের নাগরিকের সাথে দেখা হলে বাংলাদেশের নাগরিকটি তার কাছে ক্ষমা চান ও কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন গোটা বাংলাদেশের মানুষ এখন কতটা লজ্জিত হয়ে পড়েছে। এ সময় ইশিজাকি নিজেও অশ্রুসজল হয়ে পড়েন, ছল ছল নেত্রে কোনো মতে তার বক্তব্য শেষ করেন।


অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন সলিমুল্লাহ কাজল।

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.

[প্রথমপাতা]