@
@
@
@
@ |
@
@
বাংলাদেশের eআম-আদমি
পার্টিf সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে
@
প্রফেসর আবদুল মান্নান
আমার এই লেখাটি যখন পাঠকের হাতে পৌঁছাবে ততক্ষণে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ
দিন আর ঘটনা পার করে এসেছি । বাংলাদেশের বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দেশের
মানুষ পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালবাসা দিবস, মানে ভ্যালেন্টাইনস ডে উদযাপন
করেছেন। প্রতি বছরের মতো এই দিনও তরুণ তরুণীরা বেশ ঘটা করে দিনটি পালন করেছে
। এই দুfটি দিন উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে বেশ জমকালো অনুষ্ঠান হয়েছে যা সরাসরি
দেশের মানুষ কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের কল্যাণে দেখতে পেয়েছে । বেগম
জিয়া যেদিন হতে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে মানুষ পোড়ানোর মচ্ছব শুরু
করেছেন ততদিন পর্যন্ত স্কুল কলেজের পড়–য়ারা সপ্তাহের কর্মদিবসে তাদের
বিদ্যালয়ে যেতে পারে নি । হরতালের দিন পেট্রোল বোমা হতে শিক্ষার্থীদের
নিরাপত্তার কথা ভেবে কর্তপক্ষ স্কুল কলেজ বন্ধ রেখেছে । তাদের জন্য পয়লা
ফাল্গুনের দিন, শুক্রবারেও ক্লাস হয়েছে । বেগম জিয়ার কারণে সময় মতো আমাদের
বাচ্চারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারে নি । তাদেরও এখন শুক্র ও শনিবার
পরীক্ষা দিতে হয়, স্কুল কলেজে যেতে হয় । আমার বাসার সামনে একটি মাধ্যমিক
পরীক্ষা কেন্দ্র আছে । পরীক্ষার কেন্দ্রের প্রবেশ মুখে গলিসম রাস্তায় এক
ফুল বিক্রেতা বসে ফুল বিক্রি করছে । বেলা বারটায় পরীক্ষা শেষ হলো । অনেক
পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শেষে সেই ফুল বিক্রেতার কাছ হতে একটি রজনীগন্ধা বা
গোলাপ ফুল কিনে বাড়ী ফিরেছে । অভিভাবকরাও তা কিনে দিতে কোন কার্পণ্য করেন
নি । এটাই আমার বাংলাদেশ । শত বাধা বিপত্তির মধ্যে এই দেশের মানুষ সামনের
দিকে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করে । বেগম জিয়া গত ৩৯ দিন ধরে দেশের মানুষকে ঘরে
বন্দি করে রাখার ঘোষণা করেছিলেন কারণ তার ক্ষমতা চাই। সাধারণ মানুষ তাতে
খুব বেশী কর্ণপাত না কওে ঘর হতে বের হয়ে এসেছেন । কষ্ট হচ্ছে দেশের খেটে
খাওয়া মানুষের । তাতে বেগম জিয়ার কর্ণপাত করার সময় নেই । তিনিতো আর গরীব
চাষাভূষার জন্য রাজনীতি করেন না । গুলশান বারিধারার এলিট শ্রেণীর সাথে তার
যত কাজ কারবার । ল-নে এখন তাঁর সদর দপ্তর । এর মধ্যে তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত
রহমান কোকো অর্থপচারের দ- মাথায় নিয়ে কুয়ালামপুরে মৃত্যু বরণ করছে ।
পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকায় কবর দিয়ে কুলখানির আগেই আবার কুয়ালামপুরে ফিরে
গেছেন কারণ বেগম জিয়ার দুই নাতনির পরীক্ষা ।
বেগম জিয়া ঘোষণা করেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে তার হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে
চলে না যাওয়া পর্যন্ত দেশের বিরুদ্ধে তার চলমান যুদ্ধ থামবে না । অবশ্য তিনি
বলেছেন তার এই যুদ্ধ গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের জন্য যুদ্ধ । এই সব হচ্ছে
রাজনৈতিক ভাষা । এদেশের মানুষের তা বুঝতে কষ্ট হয় না । যুদ্ধেও মূল কারণ
জামায়াতের যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করা আর নিজের ও বড় ছেলে তারেক রহমানকে
দূর্নীতির মামলা হতে রেহায় দেয়া । বেগম জিয়ার যুদ্ধের জোশে দলের একজন
গুরুত্বপূর্ণ নেতা, সুপ্রিম কোর্ট বারের এক সময়ের সভাপতি জয়নাল আবেদীন ঘোষণা
দিয়েছিলেন ১৩ ফেব্রুয়ারির পর শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় থাকছেন না । কয়েকজনের
কাছে জানতে চাই ১৩ তারিখের মাজেজা কী ? তাদের কয়েকজন জানালেন ১৪ তারিখতো
বিশ্ব ভালবাসা দিবস। পেট্রোল বোমা না মেরে সাধারণ মানুষকে ফুল দিয়ে শেখ
হাসিনার পতন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাবেন বলে এই দিনটিকে জয়নাল অবেদিন বেছে
নিয়েছিলেন । সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনা তাদের সেই সুযোগ দিতে
রাজি নন । বিএনপি-জামায়াত জোট না চাইলেও তিনি এখনো বহাল তবিয়তে বাংলাদেশের
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন । এর সাথে আছে ১৪ তারিখ হতে শুরু
হওয়া বিশ্বকাপের ডামাডোল । সার্বিক বিচারে মনে হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে জয়নাল
আবেদীন সাহেবদের শেখ হাসিনাকে উৎখাত কওে ক্ষমতা দখল করার জন্য আরো দীর্ঘ
সময় ধরে অপেক্ষা করতে হতে পারে । এর মধ্যে সরকারের পক্ষ হতেও বেশ কয়েকাটি
অগ্রহণযোগ্য কাজ করা হয়েছে । বেগম জিয়ার অফিস কাম রেসিডেন্সে বিদ্যুৎ, ডিস
লাইন, মোবাইল ফোন যোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা মোটেও উচিৎ হয়
নি । পরে অবশ্য বিদ্যুৎ ও মোবাইল সংযোগ পূনঃস্থাপিত হয়েছে । বাকিগুলিও
পূনঃস্থাপিত হলে ভাল হয় । শুনেছি এদেশের আর দশজন মহিলার মতো তিনিও সন্ধ্যায়
বেশ আরাম করে ভারতের জি-বাংলা আর স্টার জলসার মহিলাদের ষড়যন্ত্র সর্বস্ব
বাংলা সিরিয়াল উপভোগ করেন । এeথেকে তাকে বঞ্চিত করা সরকারের মোটেও উচিৎ হয়
নি । ইন্টারনেট আর মোবাইল সংযোগ চালু থাকলে সরকারের কোন ক্ষতি নেই ।
বর্তমানে সারা বিশ্বের অনেক দেশেই সব টেলিফোন কল ও ইন্টারনেটে আড়ি পাতার
সফ্টওয়ার পাওয়া যায় । জানা মতে বাংলাদেশেরও তা আছে । জাতীয় নিরাপত্তার জন্য
তা অপরিহার্য । মাহমুদুর রহমান মান্নার এমন এক ফোনালাপ মহামারি আকারে
ছড়িয়েছে । সুতরাং বেগম জিয়া কার সাথে কী কথা বললেন তা মুহূর্তেই জানা সম্ভব
। ইতোমধ্যে তার এবং তারেক রহমানের একাধিক টেলিফোন সংলাপ সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে । নাশকতা চালাতে বেগম জিয়ার নির্দেশ সম্বলিত
আলাপচারিতার টেপ এখন সহজলভ্য । বুধবার হতে নাকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী
বেগম জিয়ার আবাসস্থলে অবস্থানরত অর্ধশত দলীয় নেতা কর্মী ও কর্মচারিদের
খাওয়ার নিতে বাধা দিচ্ছে । এতে বেগম জিয়া সহ সকলের কষ্ট হচ্ছে । বর্তমানে
তারা পাকিস্তান হতে সরবরাহকৃত খেজুর ও খোরমা আর বাংলাদেশের মুড়ি দিয়ে তাদের
খাদ্য ঘাটতি পূরণ করছেন । সরকারের এই পদক্ষেপ সম্ভবত এই কারণে বেগম জিয়ার
হরতাল অবরোধ কর্মসূচীর কারণে যে সকল নিম্ন আয়ের মানুষ না খেয়ে আছে তাদের
কষ্ট বুঝানোর জন্য । তবে এটা গ্রহণযোগ্য নয় কারণ হাজার হলেও তিনি দুইবার
পূর্ণমেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন । তবে রক্ষে শুক্রবার বেগম
সেলিমা রহমানের বাসা হতে পর্যাপ্ত খাবার এসেছে ।
এরই মধ্যে গত ৭ তারিখ দেশ ও জনগণ নিয়ে সর্বদা উদ্বিগ্ন থাকেন এমন কিছু
সুশীল ব্যক্তি এক সাথে হয়েছিলেন ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে দেশের
চলমান অবস্থা নিয়ে চিন্তা করতে । নিজেদের তারা দিল্লির কেজিরিওয়ারের
fআম-আদমি পার্টিf মনে করেন । অনেক চিন্তা ভাবনা আর সলা পরামর্শ করে ঠিক
করলেন দেশের এই অবস্থা হতে পরিত্রাণ পেতে হলে দুই নেত্রীর মধ্যে আলাপ
আলোচনার প্রয়োজন । উদ্যোগ নিতে পারেন রাষ্ট্রপতি । এই উদ্বিগ্ন নাগরিকরা
পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ মারাকে কদাচিৎ জোড়ালো ভাবে নিন্দা জানান, অথবা
হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে গিয়ে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ মানুষকে সমবেদনা জানানোর
প্রয়োজন মনে করেন। উদ্বিগ্নদের একজন আবার রাতের একটি জনপ্রিয় টকশোতে গিয়ে
বলেন এই পেট্রোল বোমা সন্ত্রাস কে করছে তার কোন প্রমাণ যেহেতু তার কাছে নেই
তা হলে ধরে নিতে হবে তা সরকারই করছে । বলেন পেট্রোল বোমা কারা মারে তা
আদালত নির্ধারণ করবেন । তিনি আবার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন
উপদেষ্টাও ছিলেন । টিভির টকশো প্রযোজকদের কাছে বেশ সমাদৃত । টিভির টকশোর
বদৌলতে প্রতিরাতে কত ভূয়া ব্যারিষ্টার আর স্বঘোষিত সংবিধান বিশেষজ্ঞের বাণী
যে দেশবাসীকে শুনতে হয় তার কোন হিসাব নেই । এমন একজন fসংবিধান বিশেষজ্ঞfকে
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আদালত অবমাননার দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন
। জানা গেল তিনি একজন আয়কর আইনজীবী । বেগম জিয়ার খেদমতে আছেন । তো এই সব
উদ্বিগ্ন নাগরিকরা উল্লেখিত তিনজন গুরুতপূর্ণ ব্যক্তিকে দেয়ার জন্য একটি
অভিন্ন পত্র তৈরী করলেন । মনে হতে পারে দেশের বর্তমান চলমান চরম নৈরাজ্যকর
পরিস্থিতির জন্য তিনজনই সমান ভাবে দায়ী । জানা গেল বঙ্গভবন সেই পত্র গ্রহণ
করতে সময় দিতে অপারগতা জানিয়ে দিয়েছে । সরকারি দল এই উদ্যোক্তাদের তুমুল
সমালোচনা করে বলেছে দেশে যখন জামায়াত-বিএনপিfর অগ্নি সন্ত্রাস চলছে এই সব
পরামর্শ গ্রহণ করার কোন অবকাশ নেই । বেগম জিয়া তার বক্তব্য আবার বিদেশী
গণমাধ্যম এএফপিfর মাধ্যমে দেশবাসিকে জানিয়ে দিয়েছেন । দেশের গণমাধ্যমের উপর
তার আবার তেমন খুব আস্থা নেই । তিনি বলেছেন আগে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে
হবে তারপর মধ্যবর্তি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে । আবার এই সব ডামাডোলের
মধ্যে এই কথিত সংলাপের উদ্যোগ থেকে দলবদ্ধ নাগরিকরা ডঃ কামাল হোসেন ও
মাহমুদুর রহমান মান্নাকে বাদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তাদের একজন ।
সরকারি দল যখন এই সুশীলদের এইসব কর্মকান্ডকে তুমুল সমালোচনা করা শুরু করলো
তখন উদ্যোক্তাদের একজন ডঃ কামাল হোসেন সমালোচকদের eমানসিকভাবে অসুস্থe বলে
এক হাত নিলেন । ডঃ কামাল হোসেন একজন সম্মানিত ব্যক্তি ও সফল আইনজীবী । তাঁর
রাজনৈতিক সকল অর্জন বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে । যেমুহূর্তে
তিনি তার বাইরে চলে গিয়েছেন সেই মুহূর্তে তিনি রাজনৈতিক ভাবে হিরো হতে জিরো
হয়েছেন । মান্না এক সময়ের ডাকসাইটে ছাত্র নেতা । দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি ছিলেন । গুছিয়ে তার
বক্তব্য ভাল ভাবে উপাস্থাপন করতে পারেন । বেশ সজ্জন । সমাজতন্ত্রের মন্ত্রে
দীক্ষিত ছিলেন । সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলে সমাজতন্ত্রকে শুভ বিদায় জানিয়ে
আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন । শেখ হাসিনার আশীর্বাদ নিয়ে ২০০১ সালের
নির্বাচনে বগুরা-২ আসন হতে নৌকা মার্কায় প্রার্থী হয়েছিলেন । বিএনপিfর
রেজাউল করিম ডিনার কাছে ৪৭৮১৯ ভোট পেয়ে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়ে জামানত
হারিয়েছিলেন । ডিনা পেয়েছিলেন ১,১৬,৮০৬ ভোট । প্রীতিভাজন মান্না অনেক দিন
ধরে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন । eনাগরিক ঐক্যf নামের একটি
রাজনৈতিক দলেরও গোড়াপত্তন করেছেন । দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সব সময়
বেশ উদ্বিগ্ন । বলেন পেট্রোল বোমা আর ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা দুটিই একই
জিনিষ । পেট্রোল বোমায় সরকারের হাত থাকতে পারে । নাগরিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ
করার জন্য শনিবার দুfঘন্টা সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে অবস্থান করার কথা আছে ।
বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম । বন্ধু মুনতাসির মামুন
নাম দিয়েছেন ব্রীজ উত্তম কাদের সিদ্দিকী । টাঙ্গাইলে ব্রীজ করবেন বলে সরকার
হতে প্রচুর অর্থ নিয়েছিলেন । দেশ ও জনগণের চিন্তায় ব্রীজ করার আর সময় হয় নি
। এলাকার মানুষ অপেক্ষায় আছেন । দেশের চলমান অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে মতিঝিলে
শয্যা পেতেছেন । তার ভক্তরা গিয়ে তার শয্যায় বসে সেলফি তুলে তা সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন । দুপুর বেলায় ভক্তরা মাছ ভাত নিয়ে আসেন ।
সত্য মিথ্যা জানিনা, দশ থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত পথের মানুষ দান বাক্সে
দিচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জানিয়েছে । নিখরচায় বিনোদনের এমন
ব্যবস্থা অন্য কোন দেশে পাওয়া যাবেনা । প্রশংসনীয় উদ্যোগ ।
ফিরে আসি নাগরিক বা সুশীলদের কথায় । ২০০৭ সালের নির্বাচনের বেশ আগে
গুলশানের এক অভিজাত কনভেনশন সেন্টারে সমবেত হয়েছিলেন বেশ অনেক কুলিন সুশীল
। উদ্যোক্তা সিপিডি । সাথে ছিল দুটি জনপ্রিয় দৈনিক আর একটি প্রাইভেট টিভি
চ্যানেল । বলা যেতে পারে মিডিয়া পার্টনার । সকলে সম্মিলিত কণ্ঠে বললেন ২০০৭
এর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সব দলকে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী দিতে হবে । এটি
তাদের আন্দোলন । নামকরণ করা হলো eযোগ্য প্রার্থী আন্দোলনe। যোগ দিয়েছিলেন
আমাদের নোবেল লরিয়েট ডঃ ইউনূস আর প্রফেসর রেহমান সোবহানের মতো বিজ্ঞ জনেরা
। চারিদিকে ধন্য ধন্য পরে গেল । ডঃ ইউনূসের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইল কোন
একটি সংসদীয় এলাকায় কোন দলই আপনাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী যদি eযোগ্য প্রার্থীf
না দেয় তা হলে কী করবেন ? তিনি উত্তরে চটজলদি জানালেন সেখানে আমরা আমাদের
প্রার্থী দেব । এই প্রসঙ্গে প্রফেসর রেহমান সোবহানের মন্তব্য ওটি eডঃ
ইউনূসের ব্যক্তিগত মতf । যখন সকল দলের রাজিৈনতিক কর্মকা- নিষিদ্ধ তখন তিনি
প্রতিষ্ঠা করলেন eনাগরিক শক্তিf নামের একটি রাজিৈনতক দল । সংক্ষেপে eনাশf ।
তেমন একটা সাড়া না মেলাতে তিন মাসের মথায় দল গুটিয়ে নিলেন । ডঃ ফেরদৌস আহমদ
কোরেশী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) আর জেনারেল (অবঃ)
ইব্রাহিম eকল্যান পার্টিf। দুর্জনরা নাম দিয়েছিল কিংস পার্টি ।
২০০৭ সালের নির্বাচনকে নিজের মতো করার জন্য বেগম জিয়ার সে কী আপ্রাণ চেষ্টা
। বাদ সাধলেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সমমনা দলগুলি ।
বিদগ্ধ নাগরিকরা তখন অনেকটা লাজোয়াব । এলো সেনা সমর্থীত এক এগারর সরকার ।
নাগরিকদের অনেকেই নতুন স্যুট পরে ছুটলেন ডঃ ফখরুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের উপদেষ্টা হতে । তখন একেক জনের চেহারায় নূরানি ঝলক । যাদের ভাগ্যে
উপদেষ্টা হওয়া জুটলো না তাদের কেউ কেউ সান্ত¡না পুরস্কার হিসেবে
রাষ্ট্রদূতের চাকুরি নিয়ে পাড়ি জমালেন বিদেশে । যারা রয়ে গেলেন তারা ব্যস্ত
হয়ে পরলেন জনগণকে এটা বুঝাতে এই দেশে রাজনীতিবিদদের দিয়ে কিছু হবে না । ভাল
যদি কিছু হয় তা হলে তা হবে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে । জন্ম হলো eমাইনাস
টুf ফর্মূলার । যত নষ্টের মূল এই দুই নেত্রী । এদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে
পারলে দেশের সব সমস্যার সমাধান । আসলে এটি ছিল eমাইনাস ওয়ানe ফর্মূলা । শেখ
হাসিনাকে বিদায় করতে হবে । ২১ আগষ্ট চেষ্টা করা হয়েছিল । নেতা কর্মীরা
নিজের জীবন দিয়ে তাঁকে রক্ষা করেছেন । আল্লাহ্র ইচ্ছা তেমনই ছিল । এবার আর
তাঁর রক্ষা নেই । একজন বর্ষিয়ান সাংবাদিক (বর্তমানে প্রয়াত) কৃপাপ্রার্থী
সুশীল আর সেনা বাহিনীর মাঝে দূতিয়ালী শুরু করে দিলেন । তিনি ঠিকই জানেন
ক্ষমতার শিকড় কোথায় । না কোন কিছুই ছক অনুযায়ী হলো না । ২০০৮ এর
ছাত্র-শিক্ষক জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে সব কিছু ভেস্তে গেল । তারপরের
ইতিহাস সকলের জানা । আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে মিডিয়া পার্টনারদের একজন
কর্মকর্তা এবার একুশে পদকের জন্য মনোনিত হয়েছেন । তার টিভিকে অনেকে বলেন
দিগন্ত টিভির বিকল্প । ঘটনা সেখানেই শেষ নয় । জাসাসের একজন সক্রিয়
সমর্থককেও এবার এই পদকের জন্য মনোনিত করা হয়েছে (মরণোত্তর) । আওয়ামী লীগের
সমস্যা হচ্ছে এত কিছুর পরও তারা শত্রু মিত্র চিনতে সব সময় ভুল করেন এবং তার
জন্য সব সময় চড়া মূল্য দিতে হয় । বিএনপি এই কাজটি কখনো করবে না ।
দেশে দীর্ঘ সময় ধরে বেগম জিয়া ঘোষিত যে যুদ্ধ চলছে তা সরকার পুরাপুরি বন্ধ
করতে সফল হয় নি । করতে হলে সরকারের হাতে যত রকমের আইনী অস্ত্র আছে তা
শক্তভাবে ব্যবহার করতে হবে । আমার বন্ধু আলম আওয়ামী লীগের একজন বড় সমর্থক ।
তবে সরকারের উপর ভীষণ বিরক্ত । বলেন আওয়ামী লীগকে কোথাওতো দেখা যায় না । একা
শেখ হাসিনা বা সরকারের পক্ষে সব কিছু সামাল দেওয়াতো সম্ভব নয়। সত্তরে
বঙ্গবন্ধুর কাছে তো সরকার ছিল না । ছিল আওয়ামী লীগ । কোথায় সেই দল ? বলেন
রাত নয়টার পর হাইওয়েতে গাড়ী চালানো বন্ধ না করে প্রয়োজনে বেসামরিক প্রশাসনকে
সহায়তার জন্য সেখানে সেনা বাহিনী নামানো যেতে পারে । সে আরো বলে বুঝতে পারি
না বিএনপিfর নতুন বিন লাদেন তাদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিনকে কেন
এখনো লাদেনি কায়দায় হরতাল ঘোষণা করতে দেয়া হয় ? আর কেনই বা গণমাধ্যম তা
প্রচার করে? তার মতে এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে যদি
একাধিক জনসভা করে জামায়াত-বিএনপি আর তথাকথিত সুশীলদের বদমতলব সম্পর্কে
জনগণকে অবহিত করতে পারেন তা হলে জাতির অনেক লাভ । সব শেষে একটি সরল
জিজ্ঞাস্য । ১৯৯৬ সনের ১৫ই ফেব্রুয়ারি কতজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায়
নির্বাচিত হয়েছিলেন ? জবাব দিতে পারলেন নাতো । ১৬২ জন । ১৬ টি আসনে কোন
প্রার্থীই ছিল না । বিশ্বাস হয় না ? নির্বাচন কমিশনের রেকর্ডে দেখুন অথবা
বই মেলায় পাওয়া গেলে এ এস এম শামছুল আরেফিনের বিশাল গ্রন্থ eবাংলাদেশের
নির্বাচন-১৯৭০-২০০১f এর একটি কপি সংগ্রহ করতে পারেন । যারা রাতে টকশো অথবা
লেখালেখি করেন তাদের কাজে লাগবে । সকলকে বসন্ত ও বিশ্বভালবাসা দিবসের
শুভেচ্ছা ।
লেখক: সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৫
@
@
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
@
[প্রথমপাতা] |
@
@
@
লেখকের আগের লেখাঃ
[......লেখক আর্কাইভ]
|