[প্রথমপাতা]

 

 

 

৮৫ সালের জাপান এয়ারলাইন্স দুর্ঘটনাঃ যা ঘটেছিলো

 

কমিউনিটি রিপোর্ট ।।

সম্প্রতি জাপান সরকার ১৯৮৫ সালে জাপান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৪৭-১৪৬এসার বিমান বিধ্বস্ত হবার কাহিনীর আরো বিস্তারিত দুর্ঘটনায় নিহতদের স্বজনদের নিকট বর্ণনা করেছেন। মর্মান্তিক ঐ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫২০ জন, আর বেঁচে যান মাত্র ৪ জন। তবে বিশ্লেষকরা বলে থাকেন, সে সময় জাপান সরকার যদি আরেকটু তৎপর হতো তাহলে সেদিন অনেকেই হয়তো প্রাণে বেঁচে যেতেন। বেঁচে যাওয়ারা বলেছেন, সে রাতে তারা অনেকের আর্তনাদ শুনেছেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন মাত্র ৪ জন।

দুর্ঘটনায় পতিত বোয়িং ৭৪৭ বিমানটি জাপান এয়ারলাইন্সের সাথে যুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৮শে জানুয়ারী। বিমানটি সর্বমোট ১৮,৮৩৫ বার ওঠানামা করে এবং উড্ডয়ন ঘন্টা ছিলো ২৫,০৩০।

অন্তিম দিনে বিমানটি হানেদা থেকে সন্ধ্যা ৬.১২ তে উড্ডয়ন করে। ১২ মিনিট পর বিমানটি তার সর্বোচ্চ উচ্চতায় আরোহন করে সাগামি বে'র উপর অবস্থান করছিলো। ঠিক এ সময় বিমানের ভেতরকার বাতাস ধরে রাখার জন্য বিমানের একদম পেছেন লেজের নীচে বাল্কহেড (বিমান মধ্যে বায়ুরোধক বেষ্টনী) খুলে পড়ে যায়। ফলে বিমানের ভেতর বাতাসের চাপ মারাত্মক রকম হ্রাস পায় এবং অত উচ্চতায় অক্সিজেনের পরিমানও থাকে খুবই সামান্য। ফলে নেমে আসে অক্সিজেন মাস্ক।

বিমানের ক্যাপ্টেন মাসামি তাকাহামা, ফার্স্ট অফিসার ইউতাকা সাসাকি এবং ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার ফুকুদা হিরোশি টোকিও কন্ট্রোল সেন্টারে বিপদবার্তা পাঠান। তারা জানান বিমানটিকে নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছেনা। ইয়োকোতাতে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিও এই বিপদবার্তা শুনতে পায়।

ইতিমধ্যেই বিমানটির হাইড্রোলিক ফ্লুইড যা দিয়ে বিমানের বিভিন্ন অংশ নিয়ন্ত্রন করা হয় তা সব ভাঙ্গা অংশ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। ফলে বিমানটি একেবারে নিয়ন্ত্রন অযোগ্য হয়ে পড়ে। বিমানটি নিজের ইচ্ছেমত করে ঢেউ মতন উপরে নীচে ওঠা নামা করতে থাকে। ৪১০০ মিটার নীচে পড়ে যাবার পর পাইলট বিমান সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনের অযোগ্য বলে রিপোর্ট করেন। ইজু উপদ্বীপের নিকট দিয়ে বিমানটি প্রশান্তমহাসাগরের দিকে ছুটতে থাকে, উপকূলের কাছাকাছি এসে বিমানটি আরো ২১০০ মিটার নীচে নেমে যায়। এ সময় পাইলট আবার কিছুটা উপরে ওঠাতে সক্ষম হন।

বিমানটি ৪০০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থানের কিছুক্ষন পর সন্ধ্যা ৬.৫৬ মিনিটে ২১০০ মিটারে নেমে আসে এবং রাডারের সাথে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানটির শেষ কয়েক মুহূর্তে একটি পাহাড়ের মাথায় আঘাত করে অপর একটি পাহাড়ের উপর পেছনের অংশ দিয়ে আছড়ে পরে। গুন্মা প্রিফেকচারের উয়েনো গ্রামের দুর্গম পাহাড়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

ইয়োকোতা বিমানঘাঁটিতে অবস্থানরত মার্কিনবাহিনী রাডার ট্র্যাক ধরে ২০ মিনিটের মধ্যে দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করে। তারা সাথে সাথে জাপানি উদ্ধারবাহিনীকে দুর্ঘটনাস্থল সনাক্ততে সহায়তা ও উদ্ধারাভিযানে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিতে থাকে। কিন্তু এ সময় জাপানের কর্মকর্তারা মার্কিন বাহিনীকে অবিলম্বে তাদের ঘাঁটিতে ফেরৎ যাওয়ার নির্দেশ দেয়।

জাপানের এসডিএফ নিজেরা উদ্ধারাভিযান চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনাস্থল হতে ৬৩ কিঃমিঃ দূরবর্তী একটি স্থানকে চিহ্নিত করে। এসডিএফ হেলিকপ্টার সেখানে কেউ বেঁচে নেই -এমন মন্তব্য করে রাতের মত উদ্ধারাভিযান পরিত্যাগ করে। পরের দিন আসল দুর্ঘটনাস্থল চিহ্নিত করা হয়। এই সময়ের মধ্যে অনেক গুরুতর আহত মানুষ সারারাত দুর্ঘটনাস্থলে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

কারণ অনুসন্ধানঃ

বিমানটির লেজের অংশে বাল্কহেড ১৯৭৮ সালে ওসাকা বিমানবন্দরে একটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিমানটির মেরামত বোয়িং অনুমোদিত উপায়ে সম্পন্ন করা হয়নি। বোয়িংয়ের টেকনিশিয়ান দুটি পৃথক প্লেট জোড়া দিয়ে দু'সারি রিভেটের বদলে মাত্র একসারি রিভেট ব্যবহার করেন। মার্কিন ফেডারাল এভিয়েশন এডমিনিস্ট্রেশনের মতে এতে মেটাল ফেটিগ বা লোহায় ফাটল ধরার সম্ভাবনা ৭০ ভাগ। ভেতর এবং বাইরের চাপ ও বিমানের ওঠানামায় ক্রম দুর্বল হওয়া বাল্কহেডটি এক সময় খুলে যায়। সাথে উড়িয়ে নিয়ে যায় ভার্টিক্যাল স্টেবিলাইজার বা লেজের বড় অংশ। হাইড্রোলিক ফ্লুইড ভাঙা অংশ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এসব কিছুর পরিনতিতে বিমানটি অনিয়ন্ত্রনযোগ্য হয়ে পড়ে।

পরবর্তী পরিনতিঃ

জাপান এয়ারলাইন্সের প্রেসিডেন্ট ইয়াসুমোতো তাকাগি দায়ভার নিয়ে পদত্যাগ করেন। হানেদার মেইনটেইনেন্স ম্যানেজার দুর্ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে আত্মহত্যা করেন। বিমানটির অপূর্ণাঙ্গ মেরামতের পর যিনি এর পরিদর্শনের দায়িত্বে ছিলেন তিনিও আত্মহত্যা করেন।

 
 

 

>>ক্যালিফোর্নিয়ায় আঘাত হানতে পারে ভয়াবহ 'সুপারস্টর্ম'

>>বিপির ছড়িয়ে পড়া তেল থেকে মিথেন খেয়ে ফেলেছে ব্যাকটেরিয়া
>>টর্নেডো

>>আইসল্যান্ডঃ আগ্নেয়গিরি থেকে জন্ম নেয়া হিম রাজ্য

>>চীন-জাপান যুদ্ধ

>>দেশভেদে ভাষা বদলে যায় বাদুড়দের!

>>অতিক্ষুদ্র সামুদ্রিক প্রাণীরা ইঙ্গিত দিচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের

>>জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুরু, বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা

>>সুপার কন্টিনেন্টের ভাঙাগড়া

>>গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের রহস্য

>>নতুন ধরনের তেল খেকো অনুজীব আবিষ্কার

>>সুপার ভলকেনো

>>ম্যামথ বিলুপ্তিতে মানুষের হাত নেই

>>মেগা ফ্লাডঃ চ্যানেল্ড স্ক্যাবল্যান্ডসের ভয়ঙ্কর বন্যা

>>তেনেরিফেঃ এভিয়েশন ইতিহাসের সবচাইতে বড় দুর্ঘটনা

>>রহস্য খুলছে বরফ মানব

>>আনবিক বোমা

>>বন্যপ্রাণী ঠেকাতে মরিচের গুঁড়ো

>>শেষ হলো প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বানানো জাহাজের অভিযান

>>গাছ চিন্তা করে, মনেও রাখে

>>বৃহত্তম তারার সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা

>>প্যারিস ট্রেন ক্র্যাশঃ কি ছিল তার পেছনে

>>ডিম নয়, বিজ্ঞান বলছে, 'সম্ভবত মুরগিই!’

>>সমুদ্রতলে মাছরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলে

>>সবচাইতে শীতল বাদামী বামনের সন্ধান লাভ

>>রাশিয়ান কার্গো শিপ ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে থামতে ব্যর্থ হল

>>ফ্রিক ওয়েভঃ সমুদ্রের দৈত্যাকার ঢেউ

>>২০৫০ সাল নাগাদ এশিয়ার বেশিরভাগ নদীর পানিপ্রবাহ কমে যাবে

>>সিঙ্গাপুরে প্রত্যেকের জন্য ইলেকট্রনিক মেইলবক্স

>>মিশরে ৩,৬০০ বছর আগের একটি শহরের সন্ধান লাভ 

>>আগুনের সঙ্গে বসবাস

>>বিজ্ঞানের অসহায়ত্ব ভুপাল দুর্ঘটনা

>>কুমিরের সাগর পাড়ি দেবার রহস্য 

>>ছাইমেঘ থেকে বিমান বাঁচানোর নতুন উপায়

>>ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস
>>নানা মারাত্মক রোগের কারণ প্রক্রিয়াজাত মাংস

>>মাদাগাস্কারের ছোট্ট ডুবুরি পাখি হারিয়ে গেল

>>হাবলের চোখে, গ্রহ খাদক নক্ষত্র

>>বিমান বিধ্বস্তের কাহিনী

>>ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলে নতুন প্রজাতির জীব আবিষ্কার

>>ছাইমেঘের জন্য বিজ্ঞানীরা প্রস্তুত

>>জোয়ান অব আর্ক
>>এশিয়ায় হুমকির মুখে পরিযায়ী পাখির দল

>>নেয়ানডার্থালরা আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষ

>>ডেঙ্গু প্রতিরোধে জিনগত কারণ অনুসন্ধান

>>মেক্সিকো উপসাগরে ‘এক্সোন ভালডেজ’ ঘটতে আর কতো দেরী?

>>বোর্নিওতে নতুন প্রানের সন্ধান

>>প্রথমবারের মত পুরো মুখমন্ডলের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন

>>আইসল্যান্ডে আরো বড় অগ্নুৎপাতের সম্ভাবনা বাড়ছে

>>আইসল্যান্ডেই এই, ইয়েলোস্টোন ফাটলে কি হবে?

>>আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে প্রভাবিত বিমান, আবহাওয়া, সূর্যাস্ত

>>বাংলা বছরের সূচনা

>>বিশ লাখ বছরের পুরনো কঙ্কাল থেকে বিবর্তন ধারার সন্ধান

>>শুকিয়ে যাচ্ছে আরল সাগর

>>জেব্রাফিশঃ হৃদযন্ত্রের টিস্যু নিজেই সারিয়ে তোলে
>>হাতি -ফোর হুইল ড্রাইভ

>>গ্রহাণুর ওপর নজর রাখবে নতুন ‘কমপ্যাক্ট’ স্যাটেলাইট

>>প্রবালেরা মারা যাচ্ছেঃ বিভিন্ন দেশে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়

>>মৌমাছির হুল ফোটানোয় অসুখ সারে!!

>>মায়া সভ্যতা

>>অ্যাকিলিস

>>২০১৪ সালে চালু হচ্ছে গ্যালিলিও

>>"সেটি" প্রকল্পের ৫০ বছর

>>প্রাচীন মানবের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ
>>ধ্বসে যেতে পারে পশ্চিম এন্টার্কটিকা

>>ঝড়ের সংখ্যা কমে বাড়তে পারে গতি

>>শিরাকাওয়া-গো এবং গোকাইয়ামা

>>পৃথিবীর গভীরতম স্থানঃ চ্যালেঞ্জার ডিপ

>>চীনে হাজার হাজার ডাইনোসরের পায়ের চিহ্ন

>>শিকোকুর তাকামাত্সুঃ প্রকৃতি, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংমিশ্রন

>>তিমি কাহিনী

>>মাউন্ট সেন্ট হেলেনের অগ্নুৎপাত

>>ছাদ উড়ে যাওয়া বিমানের কাহিন

>>টর্নেড

>>জলবায়ু পরিবর্তনে গাছপালা ও প্রাণীকূল সর্বোচ্চ হুমকির মুখে

>>ভূপাল বিপর্যয়

>>মাছেরা যেদিন ডাঙায় উঠল

>>মহাবিশ্বে অজানা গরম বস্তু!

>>এয়ার ক্র্যাশ ইনভেস্টিগেশনঃ মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ঘ

>>সুপার কন্টিনেন্টের ভাঙাগড়া

>>কিং কোবরা

>>লেক চুজেনজিঃ মনমাতানো একটি লেক

>>রোমানিয়ায় কমিউনিস্ট বিরোধী বিপ্লবের ২০ বছর

>>ঐতিহাসিক নগরী কামাকুরা

>>একাত্তুরের টুকরো ছবি
>>একাত্তুরের গনহত্যা
>>সাপ্পোরোর ইয়ূকি মাতসুরি

>>যশোর রোড
>>ইয়াইয়ামাঃ অবকাশ যাপনের অদ্বিতীয় স্থান
>>ইয়াকুশিমাঃ জাপানের প্রাচীনতম বৃক্ষরাজির দ্বীপ

>>মাতসুশিমাঃ জাপানের অন্যতন দর্শনীয় স্থান
>>ওসাকা ক্যাসেল
>>বিশ্বের ব্যাস্ততম ষ্টেশন শিঞ্জুক

 

 

 

[প্রথমপাতা]