[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

বিজ্ঞানের অসহায়ত্ব ভুপাল দুর্ঘটনা 

 

দুর্ঘটনার পর স্বজনহারা ও ভুক্তভোগীদের একাংশ (ফাইল ছবি)

 

 

কমিউনিটি ডেস্ক ।।
মানব সমাজের কল্যাণই বিজ্ঞানের মূল লক্ষ্য হলেও অনেক সময় বিজ্ঞান হয়ে ওঠে চরম অভিশাপ৷ চেরোনোবিল কিংবা ভুপালের মতো দুর্ঘটনা নিরীহ মানুষের জন্য বয়ে আনে রোগ, শোক আর পঙ্গুত্বের যন্ত্রণা৷

১৯৮৪ সালের দোসরা ডিসেম্বর মধ্যরাত৷ ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের রাজধানী ভুপালে গভীর ঘুমে মগ্ন প্রায় নয় লাখ বাসিন্দা৷ হঠাৎ ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার ৬১০ নম্বর ট্যাংকে ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকে যায়৷ মিথাইল আইসোসায়ানেট তথা এমআইসি পানির সাথে মিশে ঘটে মারাত্মক রাসায়নিক বিক্রিয়া৷ প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ৪০ টনের মতো এমআইসি নামক এই বিষাক্ত পদার্থ উপচে পড়ে ট্যাংক থেকে৷ কারখানার আশপাশে প্রায় আট কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জলাধার এবং বাতাসের সাথে মিশে যায় এই গ্যাস৷

কমপক্ষে তিন থেকে চার হাজার মানুষের ঘুম ভাঙ্গেনি সেই রাতে৷ এমনকি এই নিরীহ মানুষগুলো টেরও পায়নি, কী কারণে তাদের দুনিয়া ছাড়তে হলো আকস্মিকভাবে৷ তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়৷ এই বিষাক্ত গ্যাসের ছোবলে গত ২৫ বছরে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ৷ তাদের কেউ প্রাণ হারিয়েছে, কেউবা আহত কিংবা পঙ্গু৷ ক্যান্সার, যক্ষ্মাসহ নানা মরণব্যাধিতে ভুগছে ভুপালের অসংখ্য মানুষ৷ বিজ্ঞান এখনও জানে না, আর কয় প্রজন্মকে ভোগ করতে হবে এই দুর্ঘটনার প্রতিফল৷

বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির এই অসহায়ত্বের ফলে শুধু মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি৷ এর প্রভাব পড়েছে প্রাণিকুল এবং উদ্ভিদ জগতের উপরও৷ একটি গবেষণায় দেখা গেছে, বিষাক্ত এই গ্যাসের ছোবলে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় চার হাজার গরু-ছাগল, কুকুর, ইঁদুর এবং পাখিসহ অন্যান্য প্রাণী৷ ধ্বংস হয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলের গাছপালা৷ নষ্ট হয়েছে এই অঞ্চলের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য৷ ভারতের বিজ্ঞান ও পরিবেশ কেন্দ্রের সাম্প্রতিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই কারখানা থেকে তিন কিলোমিটার দূরের মাটিতে এখনও প্রায় ১১০ গুণ বেশি বিষক্রিয়া বিদ্যমান৷

ভুপালের মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে রাসায়নিক কারখানার মালিক – মার্কিন প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন কার্বাইড এবং তাদের স্থানীয় সহযোগী ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডের গাফিলতিকে৷ কারখানাটির কর্তৃপক্ষের অসতর্কতা এবং অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনার পরিণাম গড়িয়েছে অনেক দূর, এমনটিও মন্তব্য অনেকের৷ এছাড়া এই অঞ্চলের মানুষের এতো ভোগান্তির পেছনে দায়ী করা হচ্ছে জনগণের সচেতনতার অভাব এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতাকেও৷ ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর সঠিক চিকিৎসা এবং তাদের পুনর্বাসনের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি দীর্ঘ সময়েও৷

ভুপালের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের চিকিৎসার জন্য কাজ করছে বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন৷ এগুলোর মধ্যে ‘সম্ভাবনা' একটি৷ সংস্থাটির মুখপাত্র সতিনাথ সারাঙ্গি বলেন, ‘‘এই অঞ্চলে বিদ্যমান বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের স্তূপ সম্পূর্ণ সরিয়ে ফেলার কাজটি এখনও কেউ করছে না৷'' জানা গেছে, দুর্ঘটনার এক বছর পর কারখানার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রায় ৩৫০ টন বর্জ্য তুলে তা কারখানার আঙিনায় জমা করা হয়৷ কিন্তু এক্ষেত্রে নিরাপদ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি৷ অবশ্য, মধ্যপ্রদেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদের ঊর্ধ্বতন সদস্য আর কে জৈন জানান যে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এই ৩৫০ টন বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হবে৷

গত সপ্তাহে ভুপালের একটি আদালত এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ইউনিয়ন কার্বাইডসহ এর সাবেক সাত কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিলেন৷ তবে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন ঘটনার শিকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং মানবাধিকার সংস্থাসমূহ৷ এই রায়ের দিকে ইঙ্গিত করে জৈন বলেন, আদালতে মামলাটি ঝুলে থাকায় এতোদিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্ভব হয়নি, তবে এখন তা করা হবে৷ এছাড়া ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য ড. চঞ্চল ঘোষ বললেন, ভুপাল দুর্ঘটনার পর থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং জনগণকে এ ব্যাপারে আরো সচেতন এবং সতর্ক করে তোলার জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শিল্প-কারখানাগুলোর উপর আরো কড়াকড়ি করা হচ্ছে৷ ডয়েচে ভেলে।


 

>>কুমিরের সাগর পাড়ি দেবার রহস্য 

>>ছাইমেঘ থেকে বিমান বাঁচানোর নতুন উপায়

>>ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস
>>নানা মারাত্মক রোগের কারণ প্রক্রিয়াজাত মাংস

>>মাদাগাস্কারের ছোট্ট ডুবুরি পাখি হারিয়ে গেল

>>হাবলের চোখে, গ্রহ খাদক নক্ষত্র

>>বিমান বিধ্বস্তের কাহিনী

>>ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলে নতুন প্রজাতির জীব আবিষ্কার

>>ছাইমেঘের জন্য বিজ্ঞানীরা প্রস্তুত

>>জোয়ান অব আর্ক
>>এশিয়ায় হুমকির মুখে পরিযায়ী পাখির দল

>>নেয়ানডার্থালরা আধুনিক মানুষের পূর্বপুরুষ

>>ডেঙ্গু প্রতিরোধে জিনগত কারণ অনুসন্ধান

>>মেক্সিকো উপসাগরে ‘এক্সোন ভালডেজ’ ঘটতে আর কতো দেরী?

>>বোর্নিওতে নতুন প্রানের সন্ধান

>>প্রথমবারের মত পুরো মুখমন্ডলের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন

>>আইসল্যান্ডে আরো বড় অগ্নুৎপাতের সম্ভাবনা বাড়ছে

>>আইসল্যান্ডেই এই, ইয়েলোস্টোন ফাটলে কি হবে?

>>আগ্নেয়গিরির ছাইয়ে প্রভাবিত বিমান, আবহাওয়া, সূর্যাস্ত

>>বাংলা বছরের সূচনা

>>বিশ লাখ বছরের পুরনো কঙ্কাল থেকে বিবর্তন ধারার সন্ধান

>>শুকিয়ে যাচ্ছে আরল সাগর

>>জেব্রাফিশঃ হৃদযন্ত্রের টিস্যু নিজেই সারিয়ে তোলে
>>হাতি -ফোর হুইল ড্রাইভ

>>গ্রহাণুর ওপর নজর রাখবে নতুন ‘কমপ্যাক্ট’ স্যাটেলাইট

>>প্রবালেরা মারা যাচ্ছেঃ বিভিন্ন দেশে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়

>>মৌমাছির হুল ফোটানোয় অসুখ সারে!!

>>মায়া সভ্যতা

>>অ্যাকিলিস

>>২০১৪ সালে চালু হচ্ছে গ্যালিলিও

>>"সেটি" প্রকল্পের ৫০ বছর

>>প্রাচীন মানবের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ
>>ধ্বসে যেতে পারে পশ্চিম এন্টার্কটিকা

>>ঝড়ের সংখ্যা কমে বাড়তে পারে গতি

>>শিরাকাওয়া-গো এবং গোকাইয়ামা

>>পৃথিবীর গভীরতম স্থানঃ চ্যালেঞ্জার ডিপ

>>সুপার ভলকেন

>>চীনে হাজার হাজার ডাইনোসরের পায়ের চিহ্ন

>>শিকোকুর তাকামাত্সুঃ প্রকৃতি, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংমিশ্রন

>>প্যারিস ট্রেন ক্র্যাশঃ কি ছিল তার পেছন

>>তিমি কাহিনী

>>মাউন্ট সেন্ট হেলেনের অগ্নুৎপাত

>>ছাদ উড়ে যাওয়া বিমানের কাহিন

>>টর্নেড

>>জলবায়ু পরিবর্তনে গাছপালা ও প্রাণীকূল সর্বোচ্চ হুমকির মুখে

>>ভূপাল বিপর্যয়

>>মাছেরা যেদিন ডাঙায় উঠল

>>মহাবিশ্বে অজানা গরম বস্তু!

>>এয়ার ক্র্যাশ ইনভেস্টিগেশনঃ মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ঘ

>>তেনেরিফেঃ এভিয়েশন ইতিহাসের সবচাইতে বড় দুর্ঘটনা

>>সুপার কন্টিনেন্টের ভাঙাগড়া

>>কিং কোবরা

>>লেক চুজেনজিঃ মনমাতানো একটি লেক

>>রোমানিয়ায় কমিউনিস্ট বিরোধী বিপ্লবের ২০ বছর

>>ঐতিহাসিক নগরী কামাকুরা

>>গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের রহস্য

>>একাত্তুরের টুকরো ছবি
>>একাত্তুরের গনহত্যা
>>চ্যানেল স্ক্যাবল্যান্ডস

>>ফ্রিক ওয়েভঃ সমুদ্রের দৈত্যাকার ঢেউ
>>চীন জাপান যুদ্ধ
>>সাপ্পোরোর ইয়ূকি মাতসুরি

>>যশোর রোড
>>ইয়াইয়ামাঃ অবকাশ যাপনের অদ্বিতীয় স্থান
>>ইয়াকুশিমাঃ জাপানের প্রাচীনতম বৃক্ষরাজির দ্বীপ

>>মাতসুশিমাঃ জাপানের অন্যতন দর্শনীয় স্থান
>>ওসাকা ক্যাসেল
>>বিশ্বের ব্যাস্ততম ষ্টেশন শিঞ্জুক

 

 

[প্রথমপাতা]