[প্রথমপাতা]

 

 

 

ঐতিহাসিক নগরী কামাকুরা  
 

(কমিউনিটি ডেস্ক): টোকিওর থেকে দক্ষিনে এক ঘন্টারও কম দুরত্বে কানাগাওয়া প্রিফেকচারের একটি উপকুলীয় শহর হলো কামাকুরা।

প্রাচীন শহর কামাকুরা শত শত বছর ধরেই একটি আলাদা গুরুত্ব বহন করে চলেছে। মিনামোতো ইওরিতোমো ১১৯২ সালে শহরটিকে সামরিক প্রশাসন পরিচালনার জন্য বেছে নেবার পরপরই কয়েকশ বছর ধরে শহরটি পূর্ব জাপানের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত হতে থাকে।

১১৮৫ সালে তাইরা ক্ল্যানের সংগে গেমপেই যুদ্ধে মিনামোতো বংশ জয়লাভ করে। এতে গোটা জাপানের এক বড় অংশ মিনামোতোদের হাতের মুঠোয় চলে আসে। তখন মিনামোতো ইওরিতোমোকে ঐ এলাকার প্রশাসক হিসেবে পাঠানো হলে তিনি কামাকুরাতে তার রাজধানী স্থাপন করেন।

১১৯৯ সালে ইওরিতোমোর মৃত্যুর পর এলাকাটির নিয়ন্ত্রন নিয়ে ব্যাপক বিরোধ দেখা দেয়। ১২২১ সালে এক যুদ্ধের মাধ্যমে কামাকুরা কিয়োতোর ইমপেরিয়াল আর্মিকে পরাজিত করলে নিয়ন্ত্রন নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটে। চতুর্দশ শতাব্দীতে এসে কামাকুরা আরো দুর্বল হয়ে গেলে মুরোমাচি সরকার ক্ষমতায় আসে। কিন্তু তা সত্বেও কামাকুরার গুরুত্ব রয়ে যায় আগের মতই।

আজকের কামাকুরাতে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন মেলে। এর মধ্যে গ্রেট বুদ্ধা, হাসেদেরা মন্দির, এনগাকুজি মন্দির, কেনচোজি মন্দির সহ দেখার মত অনেক কিছুই রয়েছে।

এর মধ্যে গ্রেট বুদ্ধা অফ কামাকুরা বিশেষ ভাবে উল্লেখ যোগ্য। ১৩.৩৫ মিটার উঁচু ব্রোঞ্জের এই মূর্তি জাপানে ব্রোঞ্জের তৈরি বৌদ্ধ মূর্তিগুলোর মধ্যে সবচাইতে উঁচু। একে কামাকুরা দাইবুত্সুও বলা হয়ে থাকে। কোতোকুইন মন্দিরে দেখা মিলবে এই মূর্তিটির। মূর্তিটি ১২৫২ সালে তৈরি করা হয়। সে সময় মন্দিরের একটি বিশাল হলরুমে মূর্তিটি ছিল। পরে চতুর্থ ও পঞ্চদশ শতাব্দীতে তাইফুন ও সামুদ্রিক ঢেউয়ের আঘাতে মূল মন্দির ভবনটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে গ্রেট বুদ্ধা উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে (১৪৯৫) তা খোলা আকাশের নীচেই আছে।



হাসেদেরা মন্দিরে রয়েছে বিখ্যাত ষ্ট্যাচু অব ক্যাননোন এর মূর্তি। এটি একটি দেবীর মূর্তি আর স্বরস্বতীর মত এর রয়েছে এগারোটি হাত। এই বিশাল কাঠের মূর্তিটির উচ্চতা ৯.১৮ মিটার।

এসব ঐতিহাসিক স্থান ছাড়াও কামাকুরাতে রয়েছে ঘন পাহাড়ী বন। হাইকিং এ যাবার জন্য যা খুবই আকর্ষনীয়। প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে রয়েছে কামাকুরা সি বীচ। কামাকুরা ষ্টেশন থেকে মাত্র বিশ মিনিট হাঁটলেই দেখা মিলবে এই সি বীচের।

ডিসেম্বরের ছুটির দিনগুলোতে ঘুরে দেখতে পারেন কামাকুরার এসব চমৎকার স্থান গুলি।

[প্রথমপাতা]