[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

গ্রহাণুর ওপর নজর রাখবে নতুন ‘কমপ্যাক্ট’ স্যাটেলাইট
 

মহাশুন্যে তারার মেলা

 

 

কমিউনিটি ডেস্ক ।।
পৃথিবীর বুকে বসে আমরা নিজেদের সমস্যা নিয়েই সদা ব্যস্ত রয়েছি৷ কিন্তু আকাশ থেকে যে বিপদ আমাদের মাথার উপর নেমে আসতে পারে, তার কথা আমরা খুব একটা ভাবি কি?

চিন্তা নেই, আমার-আপনার না ভাবলেও চলবে৷ জার্মান মহাকাশ সংস্থা ডিএলআর এবার অভিনব এক প্রকল্পের মাধ্যমে নজরদারি আরও বাড়াতে চলেছে৷ কীভাবে?

একবার ভেবে দেখুন৷ পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল এক অ্যাস্টারয়েড বা গ্রহাণু৷ বায়ুমণ্ডলের স্তর ভেদ করে সব বাধা অতিক্রম করে তা এসে আছড়ে পড়লো পৃথিবীর বুকে৷ এককালে ডাইনোসরদের সঙ্গে যা ঘটেছিল, এবার সমগ্র জীবজগতের সঙ্গেও সেই একই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল৷ পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল প্রাণের স্পন্দন৷

না, ভয় পাবেন না৷ অদূর ভবিষ্যতে এমন আশঙ্কার কোন কারণ বিজ্ঞানীরা দেখছেন না৷ তবে তাঁদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে মহাকাশের দিকে৷ সম্ভাব্য সব মহাজাগতিক বস্তুর গতিবিধির উপর সর্বদা নজর রেখে চলেছে নানা টেলিস্কোপ ও যন্ত্রপাতি৷ জাতিসংঘের ছত্রছায়ায় এই সব উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় করা হয়৷ এবার তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে এক বিশেষ ধরনের স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক – যাকে বলা হয় ‘কমপ্যাক্ট' স্যাটেলাইট৷ জার্মানির মহাকাশ সংস্থা ডিএলআর পৃথিবীর চারিদিকে কিছুটা নিচু কক্ষপথে এমন এক যন্ত্রচক্ষু ছাড়ার পরিকল্পনা নিয়েছে, যার দৃষ্টি এড়িয়ে কোন গ্রহাণু পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসতে পারবে না৷ ‘অ্যাস্টারয়েড-ফাইন্ডার' নামের এই অভিযান বিশেষ নজর রাখবে সেই সব গ্রহাণুর উপর, যারা পৃথিবীর কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে, যাদের বিপদ ঘটানোর ক্ষমতা সবচেয়ে বেশী৷ তবে শুধু বিপদের পূর্বাভাষ নয় – এই যন্ত্রচক্ষু গ্রহাণুদের সংখ্যা, চরিত্র, চালচলনের মত যাবতীয় তথ্যও সংগ্রহ করে যাবে৷ এমন বিপদ চিহ্নিত করতে আন্তর্জাতিক স্তরে যেসব উদ্যোগ রয়েছে, তার সঙ্গে যোগ হবে ‘অ্যাস্টারয়েড-ফাইন্ডার'৷ এর মাধ্যমে আমাদের সৌরজগতে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর গতিবিধি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

আমরা সবাই হয়তো জানি না, যে ছোট-বড় অসংখ্য গ্রহাণু কিন্তু পৃথিবীর কক্ষপথেই বিচরণ করছে৷ বিজ্ঞানীদের ধারণা, এর মধ্যে ১,০০০-এরও বেশী বস্তুর ব্যাস ১০০ মিটারের চেয়ে বেশী৷ মহাকাশ বিজ্ঞানের পরিভাষায় এগুলিকে বলা হয় ‘ইনার আর্থ অবজেক্ট' বা আইইও৷ পৃথিবীর বুকে বসানো কোন টেলিস্কোপের মাধ্যমে এদের পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত কঠিন৷ ফলে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯টি এমন গ্রহাণুকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে৷ সূর্যোদয়ের ঠিক আগে এবং সূর্যাস্তের ঠিক পরে কিছু সময় ধরে এদের দেখা মেলে৷ এমনিতে এরা মোটামুটি শান্তই থাকে, কিন্তু শুক্রগ্রহের মত কোন বড় আকারের মহাজাগতিক বস্তু কাছাকাছি এসে গেলে এদের অভিকর্ষের ভারসাম্যে বিঘ্ন ঘটে৷ তখন যে তারা কী করে বসবে, কোনদিকে ধেয়ে যাবে, তার কোন নিশ্চয়তা নেই৷

পৃথিবীর কক্ষপথের বাসিন্দা এই সব গ্রহাণুদের পর্যবেক্ষণ করতে হলে মহাকাশে সঠিক অবস্থান নিতে হবে৷ পুরোটাই নির্ভর করছে পর্যবেক্ষক স্যাটেলাইটের অবস্থানের উপর৷ জায়গামত অবস্থান নিতে পারলে ২৪ ঘণ্টা ধরে একেবারে সূর্য পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা গ্রহাণুর উপর নজর রাখা সম্ভব৷

জার্মানির মহাকাশ সংস্থা ডিএলআর তার ‘অ্যাস্টারয়েড-ফাইন্ডার' নামের এই অভিযানের পরিকল্পনায় এই সব বিষয়গুলি বিবেচনা করেছে৷ তাই এই অভিযানের আওতায় যে স্যাটেলাইট সক্রিয় হবে, তার মধ্যে থাকবে ছোট একটি ২৫ সেন্টিমিটার টেলিস্কোপ৷ তার সঙ্গে যে ক্যামেরা যুক্ত থাকবে, তা যে কোন ডিজিট্যাল ক্যামেরার মত৷ দিনে ১৪ গিগাবাইট মাপের ছবি পাঠাবে এই স্যাটেলাইট৷ সূর্যের দিকে ৩০ থেকে ৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত গোলাকার একটি এলাকায় স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে এই যন্ত্রচক্ষু৷ তবে এই চোখ মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হবে৷ রাত ও দিনের মধ্যে যে আলো-আঁধারির সীমানা রয়েছে, সেই ‘টার্মিনেটার' কক্ষপথে থাকবে এই স্যাটেলাইট৷ গ্রহাণু সনাক্ত করার ক্ষেত্রে তার পিছনের নক্ষত্রগুলির দিকে নজর রাখাও জরুরি৷ কারণ যখনই কোন ক্ষুদ্র গ্রহাণু নক্ষত্রের সামনে দিয়ে যায়, তখন সেই নক্ষত্র থেকে আসা আলোর মধ্যে কিছুটা তারতম্য দেখা যায়৷ ফলে সেই গ্রহাণুর অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়৷ এই সব গ্রহাণুর উপর কড়া নজর রাখলে তাদের নির্দিষ্ট কক্ষপথ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে৷ আপাতত এই প্রকল্পের মেয়াদ স্থির করা হয়েছে ২ বছর৷ পরে অবশ্য তা বাড়ানো যেতে পারে৷

এতকাল মার্কিন বিজ্ঞানীরাই মূলত গ্রহাণুর দিকে নজর রেখে আসতেন৷ কিন্তু সেদেশে বর্তমানে মহাকাশ কার্যক্রমের জন্য সরকারী অনুদান কমে আসছে৷ তাছাড়া মার্কিন বিজ্ঞানীরা মূলত মঙ্গলগ্রহ ও বৃহস্পতির মধ্যের এলাকায় গ্রহাণুর খোঁজ করে থাকেন – সূর্যের দিকে তাঁরা তেমন একটা নজর দেন না৷ জার্মানির ডিএলআর ‘অ্যাস্টারয়েড-ফাইন্ডার' নামের যে স্যাটেলাইট তৈরি করছে, তার ব্যয় কিন্তু অভাবনীয় মাত্রায় কম৷ এমনকি এই উদ্যোগ সফল হলে একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আরও অনেক সস্তার স্যাটেলাইট তৈরি করা হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে ২০১৩ সালে এই স্যাটেলাইট কক্ষপথে পৌঁছে যাবে৷ সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে।


 

>>প্রবালেরা মারা যাচ্ছেঃ বিভিন্ন দেশে নেমে আসতে পারে বিপর্যয়

>>মৌমাছির হুল ফোটানোয় অসুখ সারে!!

>>মায়া সভ্যতা

>>অ্যাকিলিস

>>২০১৪ সালে চালু হচ্ছে গ্যালিলিও

>>"সেটি" প্রকল্পের ৫০ বছর

>>প্রাচীন মানবের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ
>>ধ্বসে যেতে পারে পশ্চিম এন্টার্কটিকা

>>ঝড়ের সংখ্যা কমে বাড়তে পারে গতি

>>শিরাকাওয়া-গো এবং গোকাইয়ামা

>>পৃথিবীর গভীরতম স্থানঃ চ্যালেঞ্জার ডিপ

>>সুপার ভলকেন

>>চীনে হাজার হাজার ডাইনোসরের পায়ের চিহ্ন

>>শিকোকুর তাকামাত্সুঃ প্রকৃতি, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংমিশ্রন

>>প্যারিস ট্রেন ক্র্যাশঃ কি ছিল তার পেছন

>>তিমি কাহিনী

>>মাউন্ট সেন্ট হেলেনের অগ্নুৎপাত

>>ছাদ উড়ে যাওয়া বিমানের কাহিন

>>টর্নেড

>>জলবায়ু পরিবর্তনে গাছপালা ও প্রাণীকূল সর্বোচ্চ হুমকির মুখে

>>ভূপাল বিপর্যয়

>>মাছেরা যেদিন ডাঙায় উঠল

>>মহাবিশ্বে অজানা গরম বস্তু!

>>এয়ার ক্র্যাশ ইনভেস্টিগেশনঃ মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ঘ

>>তেনেরিফেঃ এভিয়েশন ইতিহাসের সবচাইতে বড় দুর্ঘটনা

>>সুপার কন্টিনেন্টের ভাঙাগড়া

>>কিং কোবরা

>>লেক চুজেনজিঃ মনমাতানো একটি লেক

>>রোমানিয়ায় কমিউনিস্ট বিরোধী বিপ্লবের ২০ বছর

>>ঐতিহাসিক নগরী কামাকুরা

>>গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের রহস্য

>>একাত্তুরের টুকরো ছবি
>>একাত্তুরের গনহত্যা
>>চ্যানেল স্ক্যাবল্যান্ডস

>>ফ্রিক ওয়েভঃ সমুদ্রের দৈত্যাকার ঢেউ
>>চীন জাপান যুদ্ধ
>>সাপ্পোরোর ইয়ূকি মাতসুরি

>>যশোর রোড
>>ইয়াইয়ামাঃ অবকাশ যাপনের অদ্বিতীয় স্থান
>>ইয়াকুশিমাঃ জাপানের প্রাচীনতম বৃক্ষরাজির দ্বীপ

>>মাতসুশিমাঃ জাপানের অন্যতন দর্শনীয় স্থান
>>ওসাকা ক্যাসেল
>>বিশ্বের ব্যাস্ততম ষ্টেশন শিঞ্জুক

 

 

[প্রথমপাতা]