[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

প্রাচীন মানবের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ

 

 

কমিউনিটি ডেস্ক ||

গ্রিনল্যান্ডের এক আদি বাসিন্দার চুল থেকে সম্ভব হল প্রাচীন মানবের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ৷ প্রায় ৪,০০০ বছর আগে গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে বসবাস করতো ওই মানুষ৷ এ গবেষণা জিন প্রযুক্তির অনেক নতুন পথ উন্মোচন করেছে৷

কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মর্টেন রাসমুসেন এবং অধ্যাপক এসকে ভিলারস্লাভের নেতৃত্বে গবেষকরা প্রাচীন মানবের চুলের ডিএনএ থেকে এই জিন বিশ্লেষণ করেন৷ গ্রিনল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলের কেকারতাসুসুকে বরফের মধ্যে জমে থাকা অবস্থায় ওই মানুষটির চারটি চুল পাওয়া গিয়েছিল৷ ১৯৮৬ সালে অন্যান্য প্রাচীন বর্জ্যের সঙ্গে ওই চুলগুলো উদ্ধারের পর তা ডেনমার্কের জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত ছিল৷

বিজ্ঞানীরা গত বছর ‘নিয়ানডার্থাল' মানুষ বা প্রায় ৩০ হাজার বছর আগে বিলীন হয়ে যাওয়া প্রাচীন মানবগোষ্ঠীর এক সদস্যের জিন গবেষণায় সক্ষম হন৷ এর আগে প্রাচীন হাতি বা ম্যামথের শুকিয়ে যাওয়া চুলের ডিএনএ গবেষণাও হয়েছে৷ কিন্তু কোনো প্রাচীন মানুষের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ এই প্রথম৷ আর পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ হয়েছে মানব ইতিহাসে এমন নবম ব্যক্তির মর্যাদা পেলেন গ্রিনল্যান্ডের ওই আদি মানব৷ কেননা, জানামতে এখন পর্যন্ত বর্তমান মানব প্রজাতির মাত্র আট জনের পূর্ণাঙ্গ জিন বিশ্লেষণ হয়েছে৷

এই গবেষণা থেকে নতুন ধারণা পাওয়া গেছে সুমেরু অঞ্চল এবং উত্তর অ্যামেরিকায় প্রাচীন মানুষের অভিবাসন সম্পর্কেও৷ আশ্চর্যের বিষয় হল এই মানুষের আদি বসতি ছিল সাইবেরিয়ায় এবং আধুনিক গ্রিনল্যান্ডের মানুষদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগসূত্রই ছিল না৷ নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘‘এ থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, প্রায় ৫,৫০০ বছর আগেই সাইবেরিয়া থেকে নতুন বিশ্বের দিকে অভিবাসন করেছিল মানুষরা৷ যা কিনা আধুনিক আদি আমেরিকান এবং ইনুয়িট'দের উত্থান থেকে স্বতন্ত্র৷''

গ্রিনল্যান্ডের এই বাসিন্দা ছিলেন প্যালেও-এস্কিমো সংস্কৃতির মানুষ যাদেরকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা ‘সাক্কাক' বলে অভিহিত করে থাকেন৷ এই মানবের ‘জেনোম' বা জিন সঙ্কেতকে ভিত্তি হিসেবে ধরে বিজ্ঞনীরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ‘সাক্কাক'দের নিকটতম জীবিত জ্ঞাতিগোষ্ঠী হচ্ছে সাইবেরিয়ার সবচেয়ে পূর্ব উপকূলে বসবাসকারী সম্প্রদায় ‘চুকচিস'রা৷

বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাঁর পূর্বপুরুষরা ৫,৫০০ বছর আগে ‘চুকচিস' সম্প্রদায় থেকে আলাদা হয়ে যান এবং উত্তর অ্যামেরিকার আর্কটিক অঞ্চল পেরিয়ে কোনো এক সময়ে গ্রিনল্যান্ডে পৌঁছান৷

গবেষক দলের অন্যতম সদস্য ক্যানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং মেরু অঞ্চলের জনবসতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল এইচ ক্রফোর্ড জানান উত্তর আমেরিকায় সাক্কাক জনগোষ্ঠীর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি৷ অর্থাৎ সাইবেরিয়া থেকে আসা ‘চুকচিস'রা বেরিং প্রণালীর সেই সময়ের ‘ভূমিসেতু' বা সংযুক্ত ভূখণ্ড দিয়ে উত্তর আমেরিকার আলাস্কা উপকূলে আসেননি৷ তারা হয়তো শীতকালীন বরফের ওপর দিয়ে কিংবা মাছ ধরার নৌকো দিয়ে সুমেরু অঞ্চল পেরিয়ে গ্রিনল্যান্ডে গিয়েছেন৷

এই সাক্কাক মানবের জিন সঙ্কেত এতোটাই সম্পূর্ণ যে, ডেনিশ গবেষকরা তাঁর একটা সম্ভাব্য মুখচ্ছবিও নির্মাণ করতে পারছেন৷ তাঁর শরীরের রোগ সম্পর্কেও ধারণা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ তারা বলছেন, সম্ভবত বাদামি রঙের চোখ ছিল এই মানুষটির৷ কেননা, জিন বিন্যাসের যে চারটি উপাদান থাকার কারণে পূর্ব এশীয় মানুষদের বাদামি চোখ হয় তারও জিন বিন্যাস সেই রকম৷ এছাড়া তার শরীরে পাওয়া গেছে ‘ইএডিআর' নামের এক ধরণের জিন৷ যা থাকার কারণে পূর্ব এশীয়দের চুল মোটা হয়ে থাকে, যেমনটা সাধারণ ইউরোপীয় বা আফ্রিকানদের মধ্যে দেখা যায় না৷

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গবেষণার মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত জিন ইতিহাসের জগতে কিছুটা হলেও প্রবেশ করতে পেরেছেন তারা৷ তারা বলছেন, এই সাক্কাক মানবের সম্ভবত চুলপড়া রোগ ছিল এবং তিনি হয়তো অল্প বয়সেই টেকো হয়ে গিয়েছিলেন৷

এই গবেষণার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ডিয়েগোর প্রতিষ্ঠান ইলুমিনার তৈরি অগ্রসর প্রযুক্তির ডিএনএ সিকোয়েন্সিং পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন বিজ্ঞানীরা৷ আর প্রাচীন মানুষের ডিএনএ সিকোয়েন্সিংয়ের ক্ষেত্রে যে ঝুঁকিটি সবসময়ই থাকে তা হল সংক্রমণের ঝুঁকি৷ অর্থাৎ, গবেষক বা অন্য কোনো আধুনিক মানুষের সংস্পর্শে ডিএনএ নমুনায় সংক্রমণের ঝুঁকি৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গবেষণায় এমন কিছু হয়নি বলে নিশ্চিত তারা৷ কেননা শুরু থেকেই এ নিয়ে অত্যন্ত সচেতন ছিলেন তারা৷ সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে।

 


>>ধ্বসে যেতে পারে পশ্চিম এন্টার্কটিকা

>>ঝড়ের সংখ্যা কমে বাড়তে পারে গতি

>>শিরাকাওয়া-গো এবং গোকাইয়ামা

>>পৃথিবীর গভীরতম স্থানঃ চ্যালেঞ্জার ডিপ

>>সুপার ভলকেন

>>চীনে হাজার হাজার ডাইনোসরের পায়ের চিহ্ন

>>শিকোকুর তাকামাত্সুঃ প্রকৃতি, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংমিশ্রন

>>প্যারিস ট্রেন ক্র্যাশঃ কি ছিল তার পেছন

>>তিমি কাহিনী

>>মাউন্ট সেন্ট হেলেনের অগ্নুৎপাত

>>ছাদ উড়ে যাওয়া বিমানের কাহিন

>>টর্নেড

>>জলবায়ু পরিবর্তনে গাছপালা ও প্রাণীকূল সর্বোচ্চ হুমকির মুখে

>>ভূপাল বিপর্যয়

>>মাছেরা যেদিন ডাঙায় উঠল

>>মহাবিশ্বে অজানা গরম বস্তু!

>>এয়ার ক্র্যাশ ইনভেস্টিগেশনঃ মাঝ আকাশে দুই বিমানের সংঘর্ঘ

>>তেনেরিফেঃ এভিয়েশন ইতিহাসের সবচাইতে বড় দুর্ঘটনা

>>সুপার কন্টিনেন্টের ভাঙাগড়া

>>কিং কোবরা

>>লেক চুজেনজিঃ মনমাতানো একটি লেক

>>রোমানিয়ায় কমিউনিস্ট বিরোধী বিপ্লবের ২০ বছর

>>ঐতিহাসিক নগরী কামাকুরা

>>গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের রহস্য

>>একাত্তুরের টুকরো ছবি
>>একাত্তুরের গনহত্যা
>>চ্যানেল স্ক্যাবল্যান্ডস

>>ফ্রিক ওয়েভঃ সমুদ্রের দৈত্যাকার ঢেউ
>>চীন জাপান যুদ্ধ
>>সাপ্পোরোর ইয়ূকি মাতসুরি

>>যশোর রোড
>>ইয়াইয়ামাঃ অবকাশ যাপনের অদ্বিতীয় স্থান
>>ইয়াকুশিমাঃ জাপানের প্রাচীনতম বৃক্ষরাজির দ্বীপ

>>মাতসুশিমাঃ জাপানের অন্যতন দর্শনীয় স্থান
>>ওসাকা ক্যাসেল
>>বিশ্বের ব্যাস্ততম ষ্টেশন শিঞ্জুক

 

 

[প্রথমপাতা]