@

[প্রথমপাতা]

@

@

মাতসুশিমাঃ জাপানের অন্যতন দর্শনীয় স্থান 

(কমিউনিটি ডেস্ক): ২৬০ টি ছোট ছোট দ্বীপ দিয়ে তৈরি জাপানের তিনটি শীর্ষ দর্শনীয় স্থানের একটি মাতসুশিমা। মিয়াগী প্রিফেকচারের উত্তর-পূর্ব কোনায় অবস্থিত মাতসুশিমায় রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অতি ক্ষুদ্র দ্বীপমালা যা পাইন গাছে ছাওয়া। আছে বহু প্রাচীন কিছু মন্দির। এছাড়াও আছে চমকপ্রদ নৌবিহারের ব্যাবস্থা। আছে চমৎকার সূর্যদয় দেখার সুযোগ।

মাতসুশিমা ভালভাবে দেখার জন্য একদিন সারাদিন যথেষ্ট নয়। সংক্ষিপ্ত নৌবিহার ও আশেপাশে একটু ভ্রমন করতেই অনেক সময় লেগে যায়। বিভিন্ন স্থানে উঁচু টিলা ও দ্বীপের উপর থেকে সাগর দেখার অনুভূতিই আলাদা। এসব স্থানে রয়েছে বড় বড় গাছ। প্রকৃতির এত কাছে থেকে আপনার মনে হবে আরো কিছুক্ষন থাকি। বিশেষ করে হালকা গরমের সময় গেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি নির্জনতা আপনাকে মুগ্ধ করবে। এইসব টিলা থেকে সন্ধ্যার সূর্যাস্ত সরাসরি দেখা যায়না বটে, কিন্তু সন্ধ্যার আবছা আলোয় দুরের দ্বীপগুলোকে কেমন যেন রহস্যে ঘেরা আশ্চর্য এক মনমুগ্ধকর স্থান বলেই মনে হয়। পুরো অনুভুতি ভাষায় ব্যাক্ত করা কঠিন।

নৌভ্রমনে বিভিন্ন ধরনের কোর্স আছে, আপনি সংক্ষিপ্ত বা লম্বা সময় ধরে মাতসুশিমার দ্বীপগুলোকে দেখার চেষ্টা করতে পারেন। ছোট স্পীডবোট ছাড়াও আছে ছোট ও মাঝারী সাইজের প্রমোদতরী। প্রমোদতরীতে ভ্রমনের খরচ কিছুটা কম, সুযোগ পেলে বসার স্থানও মেলে। তবে আসনপ্রাপ্তিটা অনিশ্চিত। টিকেট আপনার আসন প্রাপ্তি নিশ্চিত করেনা। অবশ্য আসন পেলেও তাতে বসে থাকতে খুব একটা ইচ্ছে হয় এমন নয়। কারন এইসব নৌযান গুলোতে মেলে চিপস। আপনি এগুলো কিনে পাখিকে খাওয়াতে পারেন। পাখীগুলো স্পীডবোট বা প্রমদতরী দেখলেই ছুটে আসে। আপনি হাত বাড়ালেই পাখীগুলো ছুটে আসবে আপনার হাত থেকে চিপস খাওয়ার লোভে। উড়ন্ত অবস্থাতেই তারা চেষ্টা করে হাত থেকে চিপস ছিনিয়ে নিয়ে খেতে। পাখীদেরকে খাওয়ানোটা একটা খুবই মজার বিষয়। অনেকেই এটাকে বেশ পছন্দ করেন।

এরপর নজরে আসবে ছোট ছোট দ্বীপগুলো। এইসব দ্বীপগুলোতে মানববসতি নেই। আছে পাখিদের রাজত্ব। বড় বড় গাছগুলোতে পাখিরা বেশ সুখে শান্তিতেই আছে। ওদের সুখ দেখে আপনারও ভাল লাগবে।

যেসব দ্বীপগুলোতে আপনি বেশ সহজেই যেতে পারেন তার একটি হলো ওশিমা আইল্যান্ড। একটি ছোট্ট লালব্রীজ দিয়ে মূল ভূখন্ডের সাথে এর যোগাযোগ। এখানে মিলবে ঐতিহাসিক কিছু নিদর্শন। প্রাচীন মন্দিরও আছে। আছে সাগর দেখতে দেখতে একটু বিশ্রাম নেবার ও গল্পসল্প করার জন্য বসার স্থান। মাতসুশিমা কাইগান ষ্টেশন থেকে ৫-১০ মিনিট হাটলেই এ দ্বীপটির সন্ধান পাবেন।

জুইগাঞ্জি মন্দিরে (নির্মান সাল ৮২৮ খৃঃ) প্রবেশের জন্য মাথা পিছু ৭০০ ইয়েনের টিকেটের প্রয়োজন হবে। ফুকুউরা দ্বীপে যাবার জন্য দরকার হবে ২০০ ইয়েনের টিকেট। এই দ্বীপে যাবার জন্য মাতসুশিমা বে এর উপর রয়েছে ২৫২ মিটার লম্বা ব্রীজ।

সেন্দাই ষ্টেশন থেকে মাতসুশিমা কাইগান ষ্টেশন হলো মাতসুশিমা যাবার সহজতম উপায়। সড়ক পথে ড্রাইভ করেও যেতে পারেন। সেন্দাই ষ্টেশন থেকে এক-দেড় ঘন্টার পথ। তবে সড়ক পথের বিপত্তি হলো ছুটির সময়্গুলোতে এতই ভীড় লেগে থাকে যে ২/৩ ঘন্টা লেগে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। তা ছাড়া গাড়ী পার্কিং নিয়েও বিপত্তি রয়েছে। কারন পার্কিং এর স্থানে কুলোয় না বলে সেখানেও লাইন ধরতে হয়।

রাতে থাকার জন্য মাতসুশিমা কাইগান থেকে সেনসেকি লাইনে জেআর নবীরু ষ্টেশনের আশেপাশে রাতে থাকার ব্যাবস্থা আছে। এসব স্থানের কোথাও কোথাও সারাদিনের জন্য সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায় ৬০০ ইয়েন দিন হিসেবে। সাইকেল দিয়ে আপনি ঘুরে আসতে পারেন ওকু মাতসুশিমা অঞ্চলটি। মাতসুশিমার কাছেই আছে নবীরু ও ওকু মাতসুশিমা সমুদ্র সৈকত। সব মিলিয়ে বেশ অনেক কিছু দেখার সুযোগ মিলবে মাতসুশিমা ভ্রমনে।

[প্রথমপাতা]

@