[প্রথমপাতা]

 

 

ইয়াকুশিমাঃ জাপানের প্রাচীনতম বৃক্ষরাজির দ্বীপ
 

(কমিউনিটি ডেস্ক): ইয়াকুশিমা কিউসুর দক্ষিনে একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় দ্বীপ। ইয়াকুশিমা কাগশিমা প্রিফেকচারের একটি অংশ। এই দ্বীপটি চির সবুজ বৃক্ষে আচ্ছাদিত যে বৃক্ষগুলি হচ্ছে জাপানের সবচাইতে পুরোনো জীবিত বৃক্ষ। বয়সে এরা হাজার বছর ছাড়িয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। জাপানীরা গাছগুলোকে আদর করে ডাকে "ইয়াকুসুগি" যা ইয়াকুশিমা ও চির সবুজের শব্দ দুটির সংমিশ্রন।

প্রাচীনকালে এই চির সবুজ গাছগুলোর ব্যাপক ব্যাবহার ছিল। এদোর সময়্টাতে (১৬০৩ - ১৮৬৮) এই গাছগুলোকে চর্মরোগের ঔষধ হিসেবে ব্যাবহার করা হতো। বর্তমানে এটি জাপানের একটি জাতীয় উদ্যান। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ এ দ্বীপটিকে ইউনেস্ক ওয়ার্ল্ড ন্যাচারাল হ্যারিটেজ সাইট বলে ঘোষনা করে।

দ্বীপের ঠিক মাঝখানে রয়েছে জোমোনসুগি। জোমোনসুগি এই দ্বীপটির প্রধানতম আকর্ষন। জোমোনসুগি হলো একটি বিশাল গাছ যা বয়স ধারনা করা হয় মোটামুটি ২০০০ থেকে ৭২০০ বছর! এইটিই জাপানের সবচাইতে পুরাতন গাছ। জোমোন সময়কালে (খৃঃপূর্ব ১৩০০০ থেকে ৩০০ খৃঃপূর্ব) এই গাছটির জন্ম বলে মনে করা হয়। গাছটি উচ্চতায় খুব বিশাল নয়, ২৫ মিটারের মত উঁচু কিন্তু এর কান্ডের পরিধি ৫ মিটার।

প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য দ্বীপটি নিঃসন্দেহে খুবই আকর্ষনীয়। এখানে হাইকিং, ক্যাম্পিং ও একই সাথে প্রকৃতি দেখার মত দুর্লভ সুযোগ সবই পাওয়া যাবে। দ্বীপটির তীরে রয়েছে উন্নত সুযোগ সুবিধা গুলো। আছে থাকার জন্য ভাল মানের হোটেল। সারাদিন প্রকৃতি দর্শন শেষে রাতে হোটেলে গিয়ে বিশ্রাম নেবার মত ভাল সুযোগ রয়েছে এখানে।

গ্রীষ্মমন্ডলের অন্তর্ভুক্ত হওয়াতে ইয়াকুশিমাতে সারা বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। কাজেই সংগে ছাতা বা রেইনকোট থাকাটা জরুরী। যদিও বৃষ্টির সকল ক্ষেত্রে খুব দীর্ঘসময় স্থায়ী হয়না, তবু সংগে প্রতিরক্ষামূলক ব্যাবস্থা থাকাটা জরুরী। দ্বীপটিতে রয়েছে ২০০০ মিটার পর্যন্ত উঁচু পাহাড়। শীতকালে বৃষ্টি অনেক সময় তুষারে পরিনত হয়। কাজেই সে সময় এখানে হাইকিং এ না যাবার জন্যই পরামর্শ দেয়া হয়।

কাগশিমা থেকে ইয়াকুশিমা পর্যন্ত হাইস্পীড ফেরি রয়েছে। কাজেই এগুলোর একটি ধরে চলে যেতে পারেন ইয়াকুশিমা। ২/৩ ঘন্টার এই ফেরির ভাড়া হলো ৭০০০ ইয়েনের মত। আপনি ইচ্ছে করলে গাড়ী নিয়েও যেতে পারেন। গাড়ী বহনের জন্যও ফেরী সার্ভিস চালু আছে। মাঝারী সাইজের গাড়ীর জন্য খরচ হয় মোটামুটি ২৫০০০ ইয়েনের মত। এছাড়াও কাগশিমা এয়ারপোর্ট থেকে ইয়াকুশিমা এয়ারপোর্ট পর্যন্ত বিমানেও যেতে পারেন। ৩৫ মিনিট সময় লাগবে, খরচ যাবে ১০,০০০ থেকে ১৪,০০০ ইয়েনের মধ্যে।

দ্বীপে ভ্রমনকারীরা ১০০ তে ৯৬ মার্ক দিয়েছেন দ্বীপটিকে। কাজেই প্রকৃতি প্রেমীরা সত্যিকার প্রকৃতিকে পেতে চাইলে এই দ্বীপটি হতে পারে তাদের জন্য একটি আদর্শ স্থান।
  

[প্রথমপাতা]