[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

নিজেদের প্রয়োজনে নয় দেশের প্রয়োজনে সংসদে যেতে হবে

 

প্রফেসর আবদুল মান্নান

আগামী ৩রা জুন নবম জাতীয় সংসদের শেষ বাজেট অধিবেশন বসছে । এরপর এই সংসদের হয়তো বড় জোড় একটা কী দু'টা অধিবেশন বসতে পারে । অবশ্য বিশেষ প্রয়োজনে আরো অধিবেশন হতে পারে । তারপর দশম জাতীয় সংসদেও নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে । এই অধিবেশনে নতুন স্পিকার ডঃ শিরীর শারমিন চৌধুরী প্রথম বারের মত তার দায়িত্ব পালন করবেন । জাতীয় সংসদে ৮৩ দিন বিরোধী দল অনুপস্থিত রয়েছে । সংসদে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া ৯০ দিনের বেশী অনুপস্থিত থাকলে সংসদ সদস্যদের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায় । ব্যারিস্টার মওদুদ শুক্রবার বিএনপি’র বিকল্প দপ্তর হিসেবে পরিচিত জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঘোষণা করেছেন তারা আসন্ন সংসদ অধিবেশনে নিজেদের প্রয়োজিন যোগ দেবেন । বলা বাহুল্য এটা কথার কথা কারণ সংসদ সদস্য পদ টিকিয়ে রাখতে হলে তাদের সংসদ অধিবেশনে যোগ দিতেই হবে এবং এটাও অনেকাংশে নিশ্চিত সেই অধিবেশনে তাদের এক বা দুদিনের বেশী উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম । বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়ত একদিন উপস্থিত থাকবেন । অতীত অভিজ্ঞতা অন্তত তাই বলে । ৭৭ দিন অনুপস্থিত থাকার পর সর্বশেষ বিএনপি জামায়াত জোট সংসদে যোগ দিয়েছিল গত বছরের ১৮ই মার্চ । এই দীর্ঘ সময়ে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ সংসদ সদস্য হিসেবে বেতন ভাতা হিসেবে তাদের যা যা প্রাপ্য তার সবটুকু সরকার হতে বুঝে নিয়েছেন । সংসদীয় দলের প্রতিনিধি হিসেবে বিদেশ ভ্রমন করেছেন, কিন্তু যে দায়িত্ব দিয়ে জনগণ তাদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন সেই দায়িত্বটুকু পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন । ব্যারিস্টার মওদুদ বলেছেন তারা সংসদে যাবেন ঠিক তবে সংসদে কতদিন অবস্থান করবেন তা নির্ভর করে সংসদের পরিবেশ পরিস্থিতির উপর । অতীতে দেখা গেছে সংসদে পরিবেশ নষ্ট করতে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের অবদান কোন অংশেই কম নয় । এদিক দিয়ে তাদের মহিলা সদস্যরা অবশ্যই অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেন । গত একবছর যদিও তারা সংসদ অধিবেশনে যোগদান থেকে বিরত থেকেছেন তথাপি তাদের অনাকাক্সিক্ষত আচরণ উপভোগ করা হতে জনগণ বঞ্চিত হন নি কারণ এদের দু’একজনকে কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল রীতিমত ষ্টার বানিয়ে ফেলেছে । কখনো কখনো এমনও পরিস্থিতি হয়েছে যে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিজ্ঞাপন বিরতি নিতে বাধ্য হয়েছেন । আগে আমি আমার একটি লেখায় লিখেছিলাম বিরোধী দলের কোন কোন সংসদ সদস্যের সংসদের ভিতরের আচরণ দেখলে তা আমাদের কলতলার ঝগড়াঝাটির কথা মনে করিয়ে দেয় । সংসদের ভিতর কথা কাটাকাটি, ঝগড়াঝাটি নতুন কোন বিষয় নয় । যে সব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র চর্চা হয় সে সব দেশের সংসদে হরহামেশা এমন হট্টগোল হয়েই থাকে । জাপানের সংসদে একজন সংসদ সদস্য অপর প্রান্তে বসে থাকা আর একজন সংসদ সদস্যের দিকে জুতা ছুড়ে মেরেছিলেন । দক্ষীণ কোরিয়ায় সরকারি দলের একজন সংসদ সদস্য নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিলে বাকিরা মিলে তাকে প্রহার করে রক্তাত্ব করে ফেলেছিল । ভারতের লোক সভায় হৈ হট্টগোলতো একটা নিয়মিত ব্যাপার । গত বছর সেই দেশের রাজ্য সভায় হৈ হট্টগোলের এক পর্যায়ে বিরোধী দলের সদস্যরা স্পিকার, যিনি আবার সেই দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি, তার সামনের মাইক তুলে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন । পাকিস্তানের পার্লামেন্টে কয়েক বছর আগে সরকার আর বিরোধী দল মিলে চেয়ার ছুড়াছুড়ি করতে করতে রাস্তায় চলে এসেছিলেন । পুলিশ তাদের আবার ভিতওে পাঠিয়ে দিয়েছে । এক সময় এই সব ব্যপারে ফরাসী ও ইটালিয় সংসদ অগ্রগামী ছিল । আর খোদ সংসদীয় গণতন্ত্রের জন্মস্থান ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টের বছর দুই আগে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে স্পিকার সার্জেন্ট এট আর্মসকে ডেকে বিরোধী দলীয় নেতাকে সংসদ হতে বের করে দিয়েছিলেন । তবে এই সব দেশের কোনটিতেই বাংলাদেশের মতো সংসদ বর্জনের রেকর্ড হয়নি । এই সব দেশে সব কিছুর পরও সকলে সংসদে ফিরে এসেছিল ।
বিরোধী দল সংসদ বর্জন করলেও রাজপথে তাদের কর্মকান্ড থেমে থাকে নি । তারা এই দীর্ঘ সময় ধরে তাদের ভাষায় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনের নামে হরতাল ডেকে দেশের জানমালের ব্যপক ক্ষতি সহ জনজীবন বিপর্যস্থ করেছে । অনেক প্রানহানী হয়েছে । এই দফায় বিএনপি ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড করতে কিছু বাড়তি সুবিধা পেয়েছে কারণ বর্তমানে তাদেরকে এই ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে জামায়ত-শিবির যারা এই সব ব্যাপারে বেশ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও পারদর্শি । জামায়াত-শিবির তাদের মিত্র বিএনপিকে এত নিষ্ঠার সাথে সহায়তা করার প্রধান কারণ বর্তমানে তাদের সকল কেন্দ্রীয় নেতা একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারের মুখোমুখি । ইতোমধ্যে চার জনের বিচারের রায় হয়েছে যার মধ্যে তিনজনকে মৃত্যুদ-ে দ-িত করা হয়েছে । আর কয়েকজনের রায় অপেক্ষমান আছে । বর্তমান সরকারের আমলে এই বিচার কার্যগুলি শেষ হয়ে যদি রায় কার্যকর হয়ে যায় তা হলে জামায়াত দল হিসেবে দীর্ঘদিনের জন্য কার্যত বিলুপ্ত হয়ে যাবে । সুতরাং জামায়াত-শিবিরের লক্ষ্য হচ্ছে ছলে বলে কৌশলে বর্তমান সরকারকে বিদায় করে তাদের পছন্দের একটি সরকারকে ক্ষমতাসীন করতে পারলে তাদের ষোলকলা পূর্ণ হবে । গত তিন বছরে বিএনপি তাদের মিত্রদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে শুধু যে রাজপথে সহিংস তা-ব সৃষ্টি করেছে তাই নয় তারা তাদের সকল সভা সমাবেশে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে । ১৯৯৬ সনের ১৫ ফেব্রুয়ারির এক দলীয় নির্বাচনে ‘নির্বাচিত’ বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার ছাড়া কোন সরকারই সময়ের আগে পদত্যাগ করেনি যদিও বিরোধী দল তা দাবি করেছে । এবারও তার ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা নেই । সুতরাং বিরোধী দলকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ।
দেশে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রধান এবং একমাত্র আলোচ্য বিষয় আগামী নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে সে সম্পর্কে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তার সুরাহা করা । সংকট হলে আলাপ আলোচনা করে তার সুরাহা করা তা সভ্য সমাজের রীতি । ভিয়েতনাম যুদ্ধে যখন মার্কিন বাহিনী সে দেশে নাপাম বোমা বর্ষণ করে দেশটিকে ধ্বংস করে দিচ্ছিল তখনও প্যারিসে উত্তর ভিয়েতনামের প্রতিনিধি দলের সাথে যুক্তরাষ্ট্র শান্তি আলোচনা করছিল । আলোচনার বিকল্প সংঘাত আর সংঘাত কখনো দীর্ঘ মেয়াদি শান্তি আনতে পারে না । বাংলাদেশের দূর্ভাগ্য হচ্ছে এখানে যখনই কোন রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা নিষ্পত্তি করার জন্য আমরা নিজেদের শক্তির উপর যত না আস্থাবান থেকেছি তার চেয়ে বেশী নির্ভরশীল হয়েছি বিদেশীদের উপর । কখনো ভিন দেশী রাষ্ট্রদূতরা আমাদের পরামর্শ দাতা সেজেছেন আবার কখনো অন্যদেশ থেকে কেউ কেউ উড়ে এসে আমাদের হেদায়াত করেছেন । যারা এই সব হেদায়াত করেন তাদের বেশীর ভাগই আমাদের দেশের একজন ডেপুটি সেক্রেটারি পদবীর কর্মকর্তা । দুই একজন আছেন জয়েন্ট সেক্রেটারি পদবীর । তাদের পরামর্শকে আমরা যত গুরুত্ব দেই ততটুকু গুরুত্ব আমরা আমাদের দেশের মানুষের পরামর্শকে দেই না । অবশ্য না দেয়ার একটা প্রধান কারণ হচ্ছে এদের অনেকেই আবার তাদের নানা কর্মকা-ের কারণে তাদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার এটা একান্ত ভাবে বাংলাদেশের নিজস্ব উদ্ভাবন । নব্বইয়ের গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এরশাদ সরকার পতনের পর বিচারপতি সাহাবুদ্দিনের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯১ সনে সাধরণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল । যদিও এই ধরণের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা আমাদের সংবিধানে ছিল না তথাপি তা সকলে গ্রহণ করে নিয়েছিল কারণ তা ছিল তিন জোটের রূপরেখার অন্তর্ভূক্ত । সেই নির্বাচনের পর সংবিধান সংশোধন করে বাংলাদেশ সংসদীয় গণতন্ত্রে ফিরে গিয়েছিল এবং এমন কী বিচারপতি সাহাবুদ্দিন যাতে তার পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারেন তার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল । প্রয়োজন মনে করেনি বলে সে সময় সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভূক্ত করা হয় নি । কিন্তু পরবর্তিকালে বিএনপি সব কিছু ভন্ডুল করে দিল মাগুরা ও ঢাকা-১০ উপনির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি করে । তখন স্বাভাবিক ভাবেই এটি সকলের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল যে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে আপাততঃ আর নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় । আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সকল বিরেধী দল দাবি তুলল আন্তত আগামী তিনটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে । প্রথম দিকে বিএনপি প্রধান এই দাবির তীব্র বিরোধীতা করলেও জনমতের চাপে এবং গণ আন্দোলনের মুখে তা মেনে নিতে বাধ্য হলো । ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী একটি একদলীয় নির্বাচন করে সংবিধান সংশোধন করা হলো এবং সেই সংবিধানের আলোকে ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো । তবে গোল বাঁধলো ২০০৬ এর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের প্রাক্কালে যখন বিএনপি কারসাজির মাধ্যমে তাদের পছন্দসই একজনকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে পুরো ব্যবস্থাকেই ম্যানুপুলেট করার চেষ্টা করলো । এর ফলে এল এক এগার । দু’নেত্রী সহ অনেকেই কারাবন্দী হলেন । শেষ পর্যন্ত আবারও গণ অসোন্তষ এবং নানা অপবাদ মাথায় নিয়ে এক এগারর সরকার সংসদ নির্বাচন দিয়ে বিদায় হলেন । ২০০৮ এর ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার গঠন করার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের রীট হলে হাই কোর্ট ও দেশের সুপ্রীম কোর্টের পূর্ণ বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানীর শেষে এই ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেন । রায়ে মহামান্য আদালত বলেন ‘সংবিধান (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা হইয়াছে । উক্ত আইনটি রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি জনগণের সার্বভৌমত্ব, রাষ্ট্রের প্রজাতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক পরিচয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করিয়াছে বিধায় ইহা অসাংবিধানিক তথা অবৈধ ঘোষণা করা হইল । ইহা আইন নয় ।’ রায়ে আরো বলা হয় ‘উরন্তু এই ব্যবস্থা পাঁচবৎসর ব্যাপী জনপ্রতিনিধিদের রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বকে নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করিয়া তোলে । এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ধারণা আমরা সৃষ্টি করিয়াছি বলিয়া গর্ব করিয়া বোকার স্বর্গে বাস করি, অথচ পৃথিবীর অনেক দেশেই নির্বাচনে প্রবল কারচুপি হয়, সে সকল দেশের সংবাদ মাধ্যম ও প্রয়োজনে সুপ্রীম কোর্ট কঠোরতম ভাষায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ এমন কি সরকারকেও সমালোচনা করে বটে, কিন্তু প্রজাতন্ত্রিক বা গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠাইবার কথা তাহারা চিন্তাও করে না । বিচার বিভাগকে তাহারা সকলে প্রশ্নের উর্ধে রাখে ।’
মহামান্য আদালত রায়ের শেষে মন্তব্য করেছেন ‘সংবিধানের (ত্রয়োদশ সংশোধন) আইন, ১৯৯৬, অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও আগামী দশম ও একাদশ সর্বোচ্চ এই দুইটি সাধারণ নির্বাচন জাতীয় সংসদের বিবেচনা অনুসারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার অধীনে হইতে পারে । তবে (১) জাতীয় সংসদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিগণকে বাদ দেওয়ার জন্য আইন প্রণনয়ন করিতে পারে, কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে তাহাদিগকে সম্পৃক্ত করা বাঞ্চনীয় নয়। বরঞ্চ, (২) তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধু মাত্র জনগণের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্যগণ দ্বারা গঠিত হইতে পারে কারণ, জনগণের সার্বভৌমত্ব ও ক্ষমতায়ন, গণতন্ত্র, প্রজাতান্ত্রিক , বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের basic structure এবং এই রায়ে উক্ত বিষয়গুলির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে ।
বিএনপি এবং তার মিত্ররা যদি দেশের সংবিধান মানেন এবং উচ্চ আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন এবং তারপর তারা একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন প্রত্যাশা করেন তা হলে তা ফয়সালা করার উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে জাতীয় সংসদ, রাজপথ নয় । উচ্চ আদালত দুই মেয়াদের জন্য যে ধরণের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পরামর্শ দিয়েছেন তাতে কোথাও নির্দলীয় কথাটি নেই এবং কী ভাবে এই সরকার গঠন করা যেতে পারে তারও একটি দিক নির্দেশনা দেয়া আছে । বিরোধী দল এবং সরকারি দলের উভয়েরই দায়িত্ব হবে পুরো বিষয়টাকে নির্মোহ ভাবে দেখা এবং কোন হঠকারি ব্যবস্থা চিন্তা না করে দেশ ও জনগণের কল্যানের বিষয়টি মাথায় রেখে সামনের সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়া । এটি প্রমান করার এখন সুযোগ এসেছে যে আমরা আমাদের সমস্যা নিজেরাই সামাধন করতে পারি বাইরের মাতব্বরির তেমন একটা প্রয়োজন নেই । বিরোধী দলের প্রতি অনুরোধ নিজেদের প্রয়োজনে নয় দেশের প্রয়োজন সংসদে যান এবং সেখানে পুর্ণ সময় পর্যন্ত অবস্থান করুন । আপনারা আপনাদের প্রায় সব শক্তি নিঃশেষ করে ফেলেছেন । আশা করি সকল মহলের শুভবুদ্ধীর উদয় হবে ।

লেখক : সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় । মে ১৮, ২০১৩

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ