প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

@

@

@

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

@

@

রাহমান মনি                                          

@

@

ডঃ আশির আহমেদ-এর জাপান কাহিনী পড়া মানেই নিত্য নতুন জাপানকে জানা

@

@

একজন আলোকিত মানুষ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের কাছ থেকে পাওয়া eজাপান কাহিনিf নিয়ে লেখকের লিখার হাত মূল্যায়ন একটি পর্যালোচনামুলক বানী দিয়ে মুখবন্ধ লিখে gজাপান কাহিনীর ৮ম খন্ডকে আরও আলোকিত করেছেন ।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার কর্তৃক মুল্যায়ন এর শেষ পংকি টি ছিল এরকম gলেখকের ব্যক্তিগত রসবোধ, চাউনি, বর্ণনাভঙ্গি একে প্রাণবন্ত করেছে।বইটি আমাকে জাপানের বাসিন্দা করে তুলেছে। পড়ার সময় মনে হয়েছে আমি নিজেই দেশটিতে আছি । সব পাঠকের হয়তো তাই মনে হবেh ।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের সাথে সুর মিলিয়ে একজন পাঠক হিসেবে বলতে চাই, স্যার eহয়তোf নয় , তাই-ই মনে হয়েছে।

শুধু কি তাই ! দীর্ঘ তিন যুগেরও বেশী জাপানে বসবাস করে আমি নিজেই যেনো জাপান কাহিনির প্রতিটি খণ্ডে এমন কি প্রতিটি গল্পে নতুন নতুন জাপানকে আবিস্কার করছি ।

জাপানি ভাবী গল্পে জাপানে যেটা অনিয়ম, অস্বাভাবিক , বাংলাদেশে সেটাই নিয়ম এবং স্বাভাবিক বুঝা গেলেও পুরো গল্প বুঝতে গেলে পাঠক কে খটকা খেতে হবে ।

জাপানি পুত্রদায়গ্রস্ত মাতা গল্পে কেনতারোfর মতো হাজার হাজার কেনতারো রয়েছে জাপানে। কেহ ইচ্ছাকৃত আবার কেহবা অনিচ্ছাকৃত । তবে সাধারনত উচ্চশিক্ষিত এবং চাকুরীজীবি পাত্রের পাত্রীর অভাব হয়না জাপানে । যদি সে নিজে অনীহা প্রকাশ না করেন। কারন , পরিসংখ্যান মোতাবেক জাপান ৪৮% পুরুষ (প্রায়) এবং ৫২% (প্রায়) মেয়ে। সেই হিসেবে পুরুষের তুলনায় মেয়ের সংখ্যা-ই বেশী। তারপরও এই গল্পে কেনতারোfর ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং পারিবারিক সাপোর্ট থাকা সত্বেও পাত্রী না পাওয়াটা সত্যি দুঃখজনক বলতে হবে।

জাপানি প্রফেসর গল্পটি পড়ে আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদ , পাঠদান সংশ্লিষ্ট সকলে যদি কিছুটা হলেও শিক্ষা নিতেন তাহলে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হfত বলে আমার মনে হয় । তবে এটাও ঠিক , উল্টোটাও হতে পারে ।

জাপানের অনেক প্রফেসরদের সাথে মেলামেশার সুযোগ ঘটেছে আমার । দেখতে শুনতে এবং চলাফেরায় আলাভোলা হলেও কাজ আদায়ে তাদের মতো পারদর্শী আর আছে কিনা আমার জানা নেই । যেভাবেই হউক বা যা প্রয়োগ করলে কাজ আদায় হবে সেভাবেই বা সে পন্থা অবলম্বন করে তারা যে কাজ আদায় করে নেন ডঃ আশির সেটাই ফুটিয়ে তুলেছেন ।

ডঃ আশির ৮৫ বছর গড় আয়ুর ৬২ বছরের ২ প্রফেসর কে তুলনামুলক যুবক আখ্যায়িত করলেও ৭২ বছরের গড় আয়ুর বাংলাদেশে ওই বয়সেও যুব রাজনীতির নেতৃত্ব ধরে রাখা বা চলে যাবার ভয়ে কতো কিছুই না করে !

আমাদের সমাজে একটি কথার প্রচলন রয়েছে যে বিদেশে শেষ বয়সে কেহ সন্তানের সেবা পায় না । আসলেই কি তাই ? বা আমাদের সমাজে কি সবার ভাগ্যে শেষ বয়সে কি সন্তানের সেবা জুটে ? তাহলে বাংলাদেশে এতো বৃদ্ধাশ্রম কেন ? তাছাড়া মাঝে মধ্যেই তো পত্রিকার নিউজ-এ - - - ।

জাপানে অনেক ফ্যামিলিকেই খুব কাছ থেকে দেখেছি পারিবারিক সম্পর্ক কতো গভীর ! যেখানে নিজেরাই বয়সের ভারে নুহ্যমান সেখানে বাবা মার প্রতি তাদের টান । কতোজনকে দেখেছি জীবন জীবিকা , চাকচিক্য ছেড়ে দিয়ে মা বাবার সেবা করতে ছুটে গেছেন তাদের কাছে । ভালমন্দ সব দেশে সব সমাজে এবং সব ধর্মেই রয়েছে ।

ডঃ আশিরের অনেক লিখা-ই পড়া হয়েছে । অনেক লিখাই একাধিকবার পড়েছি কিন্তু জাপান কাহিনির অষ্টম খন্ডে ৩৬ নাম্বার পাতায় gআমাদের আম্মা , আমাদের স্বপ্নাগর্ভাh শিরোনামের অনাকাঙ্ক্ষিত অথচ অবশ্যম্ভাবী eকঠিন সত্যfর মুখোমুখি হয়েও সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং আন্তরিকতা , ভালোবাসা , শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ নিয়ে মোকাবেলার যে কসরত করেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয় । এই নিয়ে বিশদ আলোচনার সুযোগ থাকলেও সল্প পরিসরে বলা যায় তাঁর স্বপ্নাগর্ভা মা তার সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন যার সুফল কিছুটা জীবিতাবস্থায় ভোগ করে গেছেন । আল্লাহ যেন বাকীটা তার নিজ হেফাজতে রেখে ভোগ করার সুযোগ দান করেন।

তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বা পোর্টেবল হেলথ নিয়ের আগেও আলোচনা করেছিলাম ২য় খন্ডে । তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দুfদুটি সেমিনারে অংশ নেয়ার সুযোগ ঘটে ছিল আমার । যার একটিতে ডঃ ইউনুস স্যারও বক্তব্য রেখেছিলেন । আমি আশাবাদী তথ্যপ্রযুক্তি দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা একদিন সারা বিশ্বে সমাদৃত হবে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিনা চিকিৎসায় মৃতের হার অনেকটাই হ্রাস পাবে ।

আনস্মার্ট সিইও গল্পে তিনি একজন তরুন উদ্যোক্তার একটি উক্তি eআমরা বলছি টিমশিপ । এইযুগ লিডারশীপের যুগ নয়। টিমশিপেরf । ধারণাটি যে কতো মহামুল্যবান এবং কার্যকরী তা একমাত্র তার সহকর্মী টিমমেম্বাররাই অনুধাবন করতে পারেন। আর এই টিম ওয়ার্ক শিক্ষাটা জাপানীরা শিশুকাল থেকেই পেয়ে থাকে । প্রাথমিক স্কুল গুলিতে রুটেশন অনুযায়ী সবাইকে সব কিছুই করতে হয় ।

ঝিনুক -সেলাই গল্পে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের উচিত জাপানে কি কি পণ্যের চাহিদা আছে তার উপর সার্ভে করার কথা বলা হয়েছে । কিন্তু এই সার্ভেটা করতে হলে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে, আর এইসব ছোটখাটো ব্যাপারে যদি দূতাবাস জড়িয়ে থাকে তাহলে শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়ন কিংবা জাতীর জনকের স্বপ্ন পুরনের কাজ করবে কখন ?

দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসা জাপানীদের কাস্টমার সার্ভিস সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন । জাপানে ভোক্তা ধরে রাখার জন্য সব ধরনের চেষ্টা এবং তার অধিকারে সব ধরনের ছাড় দিয়ে থাকেন। যা পেলাম তা আদায় করে নিলাম এমন ভাবনা জাপানী সেলসম্যানদের থাকে না। এছাড়াও অনুসন্ধিচ্ছুরা অনেক তথ্য পাবেন এই গল্পে ।

কথায় বলে, eবাংলাদেশীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েন মুনাফা করার জন্য, আর জাপানিরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়েন ব্যবসা করার জন্যf ।

ই-প্রতারণা পড়ে একটাই উপলব্দী হয়েছে দীর্ঘ জাপান প্রবাস জীবনে নিজে কোনোদিন প্রতারণার শিকার না হলেও জাপানেও প্রতারণা হয় ! তবে , জাপানে প্রতারিত হলেও প্রতিকার পাওয়া যায় । কিন্তু জন্মভূমি বাংলাদেশে ?

আপন ঠিকানা গল্পে RJ কিবরিয়া এবং তার টিমের অক্লান্ত পরিশ্রমে eহারিয়ে যাওয়া মেয়েটি তার পরিবারকে ফিরে পেয়ে যখন gমাগোh বলে ডাক দেয় তখন আর সইতে পারিনাf সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যায় । আমি নিজেও আপন ঠিকানার অনেক গুলো এপিসোড দেখেছি । আমাদের দেশে এমন একটি অনুষ্ঠান প্রশংসার দাবী রাখে । কিছুটা জাপানী অনুষ্ঠান gতোকুমিতসুকাজুও নো কানদো সাইকাই আইতাইh যা বাংলায় " কাজুও তোকুমিৎসুর মর্মস্পর্শী পুনর্মিলন! আমি তোমাকে দেখতে চাই" টিবিএস-এ সম্প্রচারিত একটি বৈচিত্রময় এবং জনপ্রিয় অনুষ্ঠান এর আদলে করা। জাপানে অনুষ্ঠানটি ১৯ অক্টোবর ২০০৬ থেকে ১৯ মার্চ ২০০৯ পর্যন্ত প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬.৫৫ থেকে ৭.৫৪ পর্যন্ত নিয়মিতভাবে সম্প্রচার করা হয়েছিল এবং নিয়মিত সম্প্রচার হওয়ার পরও জনপ্রিয়তার কারনে অনিয়মিত হিসেবে সম্প্রচার করা হয়েছিল বেশ কিছুদিন ।

জাপানের বাড়িঘর ডিজাইন করতে একজন ডিজাইনার বা আর্কিটেক্ট সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে বর্তমান আধুনিক প্রযুক্তির ইকো সুবিধাসহ সকল সুযোগ সম্বলিত অতীত , বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ সবটাই তার মেধা ও মননে স্থান দিয়ে থাকেন। তারপর সব জানা শেষে এজেন্ট এর কৌতূহলের জবাবে যখন eহোম অফিসf গৃহকর্তা ( হোম মিনিস্টার ) হিসেবে তার নিজের এবং eকিচেনের নিচে হিডেন ষ্টোর রুমf গৃহকত্রী ( কিচেন অওনার ) হিসেবে কিচেন মিনিস্টার এর কথা বলে তিনি শাশ্বত বাঙালী পরিবারের ঐতিহ্যের জানান দিয়েছেন ।

ডঃ আশির তার স্বভাবসুলভ প্রায় প্রতিটি গল্পেই কিছু তথ্য দিয়ে গল্পের সমৃদ্ধ করে থাকেন । জাপান কাহিনির ৮ম খন্ডেও তার ব্যতিক্রম ঘটানো হয়নি ।

পরিশেষে নিজেকেই নিজে বলি , gজাপান কাহিনি পড় , জাপানকে জানোh ।

জাপান কাহিনির প্রতিটি খন্ড পড়ে আমার তাই-ই মনে হয়েছে । অর্থাৎ , জাপান কাহিনী পড়া মানেই নিত্য নতুন জাপানকে জানা ।

ভাষা প্রাঞ্জল...একবসায় পড়ে ফেলার মতো সুপাঠ্য একটি বই ।।


প্রবাসী সংবাদকর্মী

rahmanmoni@gmail.com

@

@

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

@

@

 

@

@

@

@

@

@

@

আরও দেখুন.....

.

আরও দেখুন.....

@

@