প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

রাহমান মনি                                          

 

 

জাপানে আমার সেকাল - একাল

 

 

বিদেশ যাবো , প্রবাসী হবো এমন চিন্তা যার মাথায় কম্মিন কালেও কোনদিন মাথায় ঘুরপাক খায় নি, সেই আমি কিনা প্রবাসীর খাতায় নিজেকে অন্তরভুক্ত করলাম ? তা ও প্রায় ৩ যুগের কাছাকাছি ? নিজ বয়সের অর্ধেকেরও বেশী সময় ! ভাবতেই অবাক লাগে । মনে হয় এইতো সেদিন ।

১৯৮৫ সালে সবে মাত্র স্নাতক পরীক্ষা শেষ । ব্যাবহারিক পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে । ভাইগ্না কাম সহপাঠী ফিরোজ দেওয়ান এর মাধ্যমে প্রস্তাব এলো জাপান যাওয়ার । বললো , মামা জাপান যাওয়া যায় , যাবি নাকি ? মাত্র ৮০,০০০ টাকা খরচ হবে । জাপানী ভাষা শিক্ষা বিদ্যালয়ে ভর্তি , বিমান ভাড়া সব-ই এর মধ্য থেকে ।

জাপান যাওয়া , নিহোঙ্গো ( জাপানী ভাষা ) স্কুলে ভর্তি সব মিলিয়ে মাত্র ৮০,০০০ ( আশি হাজার ) টাকা খুব একটা বেশী না হলেও আমার জন্য অনেক । বিশেষ করে আমি ভালো করেই জানতাম যে , আমার বাবা তা রাজী হবেন না । কারন , প্রথমত এতোগুলো টাকা ওই মুহূর্তে যোগান দেয়া একজন সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে তার পক্ষে সম্ভব নয় । তার উপর , আমার উপর তার নির্ভরতা এবং আশাটা ও অনেক বেশী । দেশে থেকেই কিছু করবো এইটাই ছিল আব্বার আশা ।

পিতৃতুল্য বড়ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু সব কিছু শুনে আশ্বাস দিলেন এবং পাসপোর্ট করার টাকাটা হাতে দিয়ে বললেন , তুই ব্যাবস্থা কর আমি টাকাটা যোগাড় করে দিবো । সত্যি হলে এই সুযোগ হাত ছাড়া ঠিক হবে না । একটু ভাল করে খোঁজ খবর নে । তোর উপর আমার বিশ্বাস আছে । আমার বিশ্বাস তুই ভুল পথে পা দিবি না।

ভাইয়ের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পর দ্বিগুন উৎসাহ নিয়ে বন্ধু ইকবাল হোসেন খান কে সাথে নিয়ে ফিরোজ হয়ে মোহাম্মদ আলী’র মাধ্যমে রফিক ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করি । এই রফিক ভাইয়ের মাধ্যমেই আমার জাপান আসা ।

এখানে বলে রাখা ভালো যে , ৮০,০০০ টাকা দেয়ার কথা বলা হলেও অনেক কষ্টে বড় ভাইয়ের যোগাড় দেয়া মাত্র ৫৬,০০০ ( ছাপ্পান্ন ) হাজার টাকা রফিক ভাইয়ের হাতে তুলে দেই এবং এই টাকার মধ্যেই তিনি আমাকে দুইবার জাপান এনেছেন এবং স্কুল এ ভর্তি সহ ।

থাইল্যান্ড এ এক সপ্তাহ অবস্থান শেষে সাথে ১,০০০ ডলার ( রফিক ভাইয়ের দেয়া ) নিয়ে জাপানে আসার সুযোগ হয় , পোর্ট অব এন্ট্রি ভিসার সুযোগে তিন মাসের ভিসা নিয়ে । তখন প্রায় সবাই একহাজার ডলার সাথে রাখতেন এবং জাপান ইমিগ্রেশন থেকে জিজ্ঞ্যাসা করলে বলা হতো “আই হ্যাভ ওয়ান থাউজেন্ড ডলার”। এমন কি ভিন্ন প্রশ্নেরও । এই নিয়ে জাপান প্রবাসীদের মধ্যে অনেক জোঁক প্রচলিত হয় ।

জাপান যখন আসি তখন জাপানে এক ডলারের বিপরীতে ১৯১ ইয়েন পাওয়া যেতো । আর বাংলাদেশে ছিল ৩২ টাকা ।

জাপান আসার পর পুকুরের পোণা মাছের সমুদ্রে সাঁতার কাটার মতো অবস্থা । কচিকাঁচার মেলা , স্কাউট , বি.এন.সি.সি. নিয়ে ব্যস্ত থেকে মফস্বল শহরে বেড়ে ওঠা দুরন্ত এক ছেলে টোকিওর মতো মেগা সিটিতে বড়ই বেমানান-ই হওয়ার কথা । কিন্তু শিশুকাল থেকে বিভিন্ন সংগঠন করা একজন কে তো আর দমে গেলে চলবে না । আর দমে যাওয়ার পাত্র ও আমি নই । আমাকে যে জাপান জয় করতেই হবে ।

তাই , সাত পাঁচ না ভেবেই কাজের জন্য অস্থির হয়ে পড়ি । কারন , আমাকে যে প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে হবে । ১.০০০ ডলার নিয়ে আসা হলেও রফিক ভাইয়ের কাছেই থেকে যায় । টাকাটা যে উনিই দিয়েছিলেন । হাত খরচের জন্য কিছু দিয়েছিলেন । কিন্তু আমার যে হাত খরচ বলতে কিছুই নেই । তাই সবটাই থেকে যায় ।

সপ্তাহ খানেক এর মধ্যে একটি কাজ ও মিলে যায় । জাপানী ভাষা জানার ভাণ্ডার শূন্যের কোঠায় হলেও কাজ করতে তেমন কোন অসুবিধা হয়না । কারন , ইশারা ভাষা বলতে আমার অভিধানে একটির ভাষার অস্তিত্ব রয়েছে যার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে নেয়া যায় ।

একাধিকবার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে এবং এখানে একটি জাপানী ভাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ( ইন্টারন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ ইন্সটিটিউট ) ভর্তি হয়ে ছয় মাসের মাথায় দেশে ফিরে যাই পুনরায় ছাত্র ভিসায় পুনরায় আসার জন্য । তখন সেই নিয়ম ই ছিল । অর্থাৎ তৃতীয় কোন দেশে যেয়ে পুনরায় জাপান প্রবেশ ।

মাত্র একমাসের মধ্যে ছাত্র ভিসায় পুনরায় জাপান আসা । জাপান যখন প্রথম আসি তখন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের পত্রের দাম আমার কাছে আকাশছোঁয়া বলে মনে হয়েছে যা এখন সহনশীল পর্যায়ে । কোন কোন ক্ষেত্রে অর্ধেকে নেমে এসেছে । কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারও অনেক কম ।

আর এই জন্য খাদ্যদ্রব্যের আমদানির একটি বড় ভুমিকা রয়েছে । জাপানে অর্থনীতি ঊর্ধ্ব গতি ( বাবল ইকোনোমি )’র সময় থেকে জাপান আমদানি নির্ভর হয়ে পরে । তার অন্যতম কারন হচ্ছে , শহরমুখী হওয়া । কৃষিকাজে জড়িতরাও এসময় শহরমুখী হতে থাকে ।

আমদানি বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের জন্য সাপেবর হয়ে দাড়ায় । নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম কমতে থাকে । চায়না , ইন্দোনেশিয়া , মেক্সিকো , ফিলিপিন্স , থাইল্যান্ড এমন কি মিয়ানমার থেকেও কৃষিজাত , জলজ এবং ফলজ আমদানি তার কারন ।

সেই সময়ের এবং বর্তমান সময়ের মুল্য তালিকার পার্থক্য বুঝার জন্য স্মৃতির পাতা এবং বর্তমান বাস্তবতায় কিছু তালিকা দেওয়া যেতে পারে । তালিকা টি যে ১০০% পরিশুদ্ধ এমনটি নয় । কারন , এলাকা বিশেষ এবং মান ভেদে কিছুটা তারতম্য অস্বাভাবিক কিছুই নয় ।

পণ্য পরিমাণ পূর্ব মূল্য ( মোটামুটি )বর্তমান মূল্য ( মোটামুটি ) ধরনঃ

চাল ১ কিলোগ্রাম ৬০০-৭৫০ মোটা চাল ২৫০-৪০০
দুধ ১ লিটার ২৫০-৩০০ মাঝারি মানের ১৫০-২০০
ডিম ১০টি ১৬০-২০০ বড় আকার ২৮০-৩৬০
শার্ট ১ পিস ৩,৫০০-৫০০ ক্যাজুয়েল ১,৯০০-৩,০০০
প্যান্ট ১ পিস ৫,০০০-৭,৫০০ ক্যাজুয়েল ২,০০০ – ৩০০০
চিঠি পাঠাতে ( বাংলাদেশে ) ১৬০ ইয়েন স্বাভাবিক ৯৩ ইয়েন

তবে , সব কিছুরই দাম কমেছে এমনটি নয় , কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুল্য বেড়েছেও । এই যেমন ট্যাক্সি ক্যাব , রেল , বাস অর্থাৎ যাতায়াত । আর এর প্রধান কারন হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি ।

জাপান যখন আসি তখন রেলভ্রমনে সর্বনিন্ম মুল্য ছিল ১২০ ইয়েন । যা বর্তমানে ১৪০ ( ৮ % কর নির্ধারণ এর পর ) ইয়েন । বাস টিকেটের মুল্য ছিল ১৬০ ইয়েন , যা বর্তমানে ২২০ ইয়েন । গত তিন দশকেরও বেশী সময় হিসেবে খুব একটা বেশী বলার কারন নেই । ১৯৮৯ সালে জাপান ন্যাশনাল রেলওয়ে ( JNR )থেকে জাপান রেলওয়ে ( JR ) অর্থাৎ সরকারী থেকে বেসরকারী খাতে যাওয়ার পরও ভোক্তাদের উপর খুব একটা প্রভাব পড়েনি । যদিও সে সময় ৫৫ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই করতে হয়েছিল ।

সবচেয়ে বড় মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে জাপানী টাকার মান অর্থাৎ ইয়েন এর মুল্য বৃদ্ধি । তখন এক ডলারে ১৯১ ইয়েন পাওয়া গেলেও এখন তা ১০৮ ইয়েন এ নেমে এসেছে । একটি সময় সর্বনিন্ম ৭৮ ইয়েন ( নব্বই দশকের প্রথমার্ধে ) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছিল। পক্ষান্তরে ৩২ টাকার বদলে বাংলাদেশে তা ৮০ টাকায় ঠেকেছে । ৮৫ টাকায় উঠার রেকর্ড ও রয়েছে । তারপরও আমাদের তৃপ্তির ঢেঁকুরের কমতি নেই ।

মানব জাতির অন্যতম মৌলিক চাহিদা গুলির মধ্যে অন্ন , বস্র , বাসস্থান , চিকিৎসা ও শিক্ষা অন্যতম । এই পাঁচটি মৌলিক চাহিদা গত ৩৩ বছর আমার জাপান জীবনে মূল্য কমতি ছাড়া বৃদ্ধি চোখে পড়েনি । বরং মান বৃদ্ধি পেয়েছে ।

অনেকেই বলে থাকেন জাপানে পড়াশুনা , চিকিৎসা খরচ খুব বেশী । হ্যা , বেশী তো নিশ্চয়ই । তবে , তা কি বাংলাদেশীদের আয় এবং জাপানীদের আয়ের সাথে তুলনা করলে বেশী ? নিশ্চয়ই না ।

জাপান সরকার কর্তৃক বেঁধে দেয়া নুন্যতম শিক্ষা ( ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত , নবম শ্রেনী পর্যন্ত ) সম্পূর্ণ বিনা বেতনে , দুপুরের আহার সহ । বিদ্যালয়ও দেশব্যাপী পর্যাপ্ত রয়েছে । আগে জাপানে একটি প্রবাদ চালু ছিল ‘জাপানে একটি শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশুনা শেষ করাতে অভিভাবককে এক কোটি ইয়েন গুনতে হয়’ যা এখন আর নেই ।

১৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিটি সন্তানের জন্য জাপান সরকার ১৩,০০০ ইয়েন করে মাসিক ভাতা দিয়ে থাকে , ৬ বছর বয়স পর্যন্ত চিকিৎসা , যাতায়াত ( বাস , রেল ) সব ই সম্পূর্ণ বিনাখরচে সম্পন্ন হয়ে থাকে । এমন কি কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিনোদন কেন্দ্রগুলোও ।

সেই সময়ে এক হাজার ইয়েন এর বিনিময়ে ( KDD ফোন কার্ড ব্যাবহার করে ) বাংলাদেশে মাত্র ১৫ মিনিট কথা বলা যেতো । এছাড়াও “কালেক্ট কল”করা যেতো । মনে হয় এখনকার প্রবাসীরা পদ্ধতিটির কথা জানা নেই । তাছাড়া আন্তর্জাতিক কল করায় এতো সুবিধাও ছিল না । আর , এখনকার কথা তো সবার-ই জানা ।

ছিলনা আজকের মতো শক্তিশালী কমিউনিটি । যদিও একটি পর্যায়ে সংখ্যার দিক থেকে আজকের সংখ্যার থেকে জাপানে বাংলাদেশ কমিউনিটি বেশ কয়েকগুন বেশীই ছিল এবং ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’ নামে ক্ষনস্থায়ী একটি সংগঠন-এর আবির্ভাবও ঘটেছিল তথাপি জাপানে আজকের মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মর্যাদায় এতোটা শক্ত অবস্থানে ছিল না ।

আজ জাপানে বাংলাদেশ সোসাইটি না থাকলেও তারচেয়ে বেশী সক্রিয় সংগঠনের অস্তিত্ব রয়েছে । এছাড়াও জাপানের মাটিতে অন্যদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষেধ থাকা সত্বেও বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন সমুহের অস্তিত্ব রয়েছে । কিছু কিছু ক্ষেত্রে একাধিক গ্রুপিং , এমন কি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সংগঠন সমূহেরও। অথচ তখন মূল দলের ও সন্ধান পাওয়া যেত না । শাসকদল জাতীয় পার্টির ও নয় ।

আর জাপানের মাটিতে ভিনদেশীদের নিজদেশীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ভালো চোখে যে দেখা হয় না , একথাটি বাংলাদেশীরা বুঝতে চান না বলেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশী বেশী করেন এবং ফেইসবুক এর মাধ্যমে তা প্রচার করে থাকেন । আর এই প্রচার ই বাংলাদেশীদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায় না তা হলপ করে বলা যায় না । কারন জাপান পুলিশ প্রতিটি বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকদের কর্মকাণ্ড তাদের নখদর্পণে রাখে ।

এখন জাপানে বাংলাদেশীদের দ্বারা পরিচালিত সংগঠনের সংখ্যা এতোই বেড়ে গেছে যে , সাপ্তাহিক ছুটির দিন গুলিতে একাধিক অনুষ্ঠান করেও কর্ম দিবসগুলিতেও অনুষ্ঠান রাখতে হচ্ছে এবং লোকসমাগমও হচ্ছে প্রচুর ।

সেই সময়ে জাপানের আইনকানুন সম্পর্কে , প্রবাসীদের অধিকার সম্পর্কে এতোটা ওয়াকিবহাল ছিলাম না যতোটা এখন ।

পুলিশ দেখলে মনে হতো এই বুঝি ধরে দেশে পাঠিয়ে দিবে ভিসা থাকা সত্বেও । এমন কি অনেক সময় বিভিন্ন কোম্পানির নিরাপত্তা কর্মীদেরও পুলিশ মনে করে ভুল করতাম । কিছু সংখ্যক প্রবাসীদের কাজ ই ছিল তিল কে তাল বানিয়ে বলা ।

১৯৮৬ সালের কথা । কুমিল্লা থেকে আগত জয়নাল নামের সিনিয়র এক ভাই ছিলেন , যার কাজ ই ছিল প্রতিদিন বিভিন্ন বানোয়াট খবর প্রচার করা । এখন যা বুঝতে পারা যায়।

প্রায় প্রতিদিন ই বাসায় এসে বলতেন , আজ অমুক যায়গায় অতোজন ধরা পড়েছে । অমুক স্টেশনে পুলিশ দাঁড়িয়ে রয়েছে বিদেশীদের চেক করার জন্য ।

ভিসা থাকলেও সবাই কেমন একটা আতংকে থাকতেন সে সময় । আর বর্তমানে ভিসাহীনরাও পুলিশের উপর একচোট নিতে ছাড়েন না ।

উন্নত হয়েছে প্রবাসীদেরও। একসময় দূতাবাসে যেতে যাদের হাঁটু কাঁপত তারা এখন মোবাইল দেখে দূতাবাসে ষ্টেজে ভাষণ ও দিয়ে থাকেন শুধুমাত্র লীগ এর উপর ভর করে। হউক না তা যতই বিষয় বহির্ভূত বক্তব্য। লীগ বলে কথা ।

বাংলাদেশকে যখন রেখে এসেছিলাম তখন বাংলাদেশ অনুন্নত ছিল। রাস্তাঘাট তেমন প্রশস্ত ছিল না। তবে মুনশিগঞ্জ থেকে ঢাকায় যেতে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা সময় লাগতো । আর বর্তমান উন্নয়নের জোয়ারে তিন থেকে চার ঘন্টা পর্যন্ত লেগে যায় । ক্ষেত্র বিশেষ তা বহুলাংশে বৃদ্ধি পায় । উন্নয়ন তো বটেই !

সত্তর দশকের মাঝামাঝি থানা কৃষি কর্মকর্তা আমার বাবাকে ৪,৩০০ টাকা বেতন পেতে দেখেছি । তা দিয়েই আমরা ১০ (৫ভাই, ৫ বোন ) ভাইবোনের লেখাপড়া , ২ জন কাজের লোক সহ সবার ভরণ পোষণ মোটামুটি ভালই কেটে যেতো । আত্মীয় স্বজন লেগেই থাকতেন সব সময় । বাংলাদেশও ছিল নিন্ম আয়ের দেশ । আমরা নিন্মমধ্যবিত্ত পরিবার ছিলাম ।

আর এখন , আমাদের ৫ ভাইয়ের মিলে ৬ জন ছেলে/মেয়ে । গড়ে ১.৫ জন । মাসিক আয় ও বেশ কয়েকগুন বেড়েছে । তারপরও সংসারে টানাপোড়ন । বাংলাদেশও নাকি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে । আগামী ১০ বছর পর নাকি আমেরিকাকেও ছাড়িয়ে যাবে । তাহলে , সংসার চালাতে হিমসীম খেতে হবে কেন ?

আজ প্রায় তিন যুগ পর যখন জাপান – বাংলাদেশের তুলনামূলক বিশ্লেষণ এ যাই তখন হিসেব মেলাতে পারিনা । চোখের সামনে জাপানের অগ্রগতি দেখেছি , জিনিষপত্রের দাম কমতে দেখেছি , কোন ঢাকঢোল পেটাতে শুনিনি ।

আর বাংলাদেশ ! যতো কম বলা যায় , ততোই যেনো মঙ্গল !!

rahmanmoni@kym.biglobe.ne.jp

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]