@
@
@ |
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।}
@
@
রাহমান মনি
@
@
দৈনন্দিন কর্ম কান্ডে
একজন জাপানী মা
@
@
@
@
মা ,
ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে স্বরবর্ণ যুক্ত হওয়া@বাংলা অভিধানের সবচেয়ে মূল্যবান এবং
বহুল উচ্চারিত একক@একটি শব্দ।
মা হচ্ছেন একজন পূর্ণাঙ্গ নারী।@পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিষ্ঠান।@অভিধানে স্থান
নেয়া মা নিজেই একটি অভিধান।
বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৭,০৯৯fর মতো ভাষার অস্তিত্ব রয়েছে ( সুত্র- ইন্টারনেট,
জুন ২০১৭, )।
আর সব গুলো ভাষাতেই মা-কে নিয়ে যতো গল্প , কবিতা , উপন্যাস বা গান লিখা
হয়েছে আর কাউকে নিয়ে এতো কিছু রচনা করা হয়নি। আর সব ধর্মেই eমাfকে সর্বোচ্চ
মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
তাই , জাতী , ধর্ম , বর্ণ নির্বিশেষে একজন মা শুধুই মা।
সন্তান জন্মদানের সময় কতো মা যে ইহলোক ত্যাগ করেন তার হিসেব কfজনাই বা
রাখেন! সেই সকল মায়েরদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের বিদেহীর আত্মার
শান্তি কামনা করি।
জাপানে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে নিম্নতম। ২০১৯ সালের
তথ্যমতে, জাপানের মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি এক লাখে মাত্র চারজন। আর বিশ্বে
নবজাতক শিশু মৃত্যুর হারও সবচেয়ে কম জাপানে। ইউনিসেফ এর তথ্য অনুসারে প্রতি
এক হাজার এক শত এগার জন শিশু জন্মের সময় মাত্র একজন শিশু মারা যায় জাপানে।
আর এর বিপরীতে রয়েছে পাকিস্তান । দেশেটিতে জন্মের সময় প্রতি ২২ জনে একজন
শিশু মারা যায়।
জাপানে শিশু মৃত্যু হার সবচেয়ে কম থাকার কারন হচ্ছে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা,
স্বাস্থ্যবিধির নীতিমালা এবং গণসচেনতা-ই প্রধান।
আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী যার অবদান তিনি হচ্ছেন সন্তানের মা। তার
সচেনতাই যে সব চেয়ে বেশী অবদান রাখে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।
একটি শিশু যখন জন্ম নেয় তখন সে একাই কেবল জন্ম নেয় না। জন্ম নেন একজন মা,
জন্ম নেয় একজন বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানি, চাচা-চাচি, মামা-মামি, ফুফা-ফুফু,
খালা-খালু বা এই জাতীয় অসংখ্য সম্পর্কের।
বিশ্বের সকল মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আজ আমি একজন জাপানি মা-এর সন্তান
এর প্রতি দায়িত্ব , দৈনন্দিন কর্ম পরিচালনা নিয়ে পাঠকদের জানান দিতে চাই ।
জাপানে একজন নারী যখন জানতে পারেন যে তিনি eমাf হfতে চলেছেন তখন থেকেই শুরু
হয়ে যায় তার সচেনতা এবং আগত সন্তানের প্রতি দায়িত্ব বোধ। তবে সব কিছু
স্বাভাবিক রেখে।
আর আমাদের দেশে একজন নারী যখন জানতে পারেন যে তিনি প্রথম সন্তান সম্ভাবনা
হতে চলেছেন তখন আর তাকে পায় কে। নিজে এবং পারিপার্শ্বিকতা এমনভাবে ঝেঁকে বসে
তার বেশীর ভাগ-ই কুসংস্কারে আচ্ছন্ন। এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবেনা। করলে
সন্তানের এই হবে , সেই হবে। তখন সন্তান সম্ভাবনা মা কিছুটা একঘেয়েমি
জীবনধারণে অভ্যস্ত হয়ে পরেন। দিনের অনেকটাই অলস সময় পার করেন সন্তান
সম্ভাবনা মা। গ্রামের কথা অবশ্য ভিন্ন। সেখানে যাবতীয় কাজ কর্ম সমাধা করেই
সন্তান সম্ভাবনা মা কে সময় পার করতে হয়।
অথচ একজন জাপানী নারীর বেলায় তা ভিন্ন। তিনি যখন জানতে পারেন যে তিনি
সন্তান সম্ভাবনা হতে চলেছেন তখন থেকেই শুরু হয় তার সতর্কতা। কিছুটা
সতর্কতার সাথে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবন যাপনেই অভ্যস্ত থাকেন তিনি।
প্রথমেই তিনি ছুটে যান স্থানীয় সিটি অফিসে। সিটি অফিস থেকে প্রথমেই একটি
নোট বুক সংগ্রহ করেন। যাকে স্থানীয় ভাষায় gবোশি তেচোh বা Maternity@Book আর
এই নোট বুকেই তার সন্তানের যাবতীয় তথ্য ( গর্ভধারন থেকে শুরু করে শিশুকাল
পর্যন্ত ) লিপিবদ্ধ করা থাকে। ভবিষ্যতে শিশুকাল সংক্রান্ত যে কোন তথ্য এই
নোট থেকে অনায়াসেই পাওয়া যায়। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে।
এই Maternity@Book নামের নোটটিতে হেলথ চেকআপের তথ্যগুলো শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত নিয়মিত লিপিবদ্ধ করা হয়। এমনকি জন্মের পরও বাচ্চার রেগুলার হেলথ
চেকআপ ও ভ্যাকসিনেশন রেকর্ড এই বইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়, যা দেখে যেকোনো
ডাক্তার সহজেই মা ও শিশুর শারীরিক অবস্থা ও হেলথ হিস্টোরি বুঝতে পারেন।
সন্তান সম্ভাবনা মা বিভিন্ন সময় ডাক্তারের বিভিন্ন পরামর্শ, গর্ভে বেড়ে উঠা
শিশুর বিভিন্ন ছবি , শারীরিক বৃদ্ধি থেকে শুরু করে সব কিছুই লিপিবদ্ধ করে
রাখেন। অনাগত শিশুর পরিচর্যার শিক্ষা নিতে মাতৃ বিদ্যালয়ে তিনি নিয়মিত
যাতায়াত করে থাকেন। এইসব বিদ্যালয়ে সন্তান সম্ভাবনা মায়েদের কিভাবে শিশুদের
কোলে নিতে হবে, কিভাবে ব্রেস্ট ফিডিং করাতে হবে, কিভাবে গোসল করাতে হবে
অর্থাৎ শিশুর পরিচর্যা বিষয়ক সব কিছুই শিক্ষা দেয়া হয়ে থাকে।
এছাড়াও জাপানে একজন সন্তান সম্ভাবনা মা সন্তান জন্মের আগে থেকেই সন্তানকে
কীভাবে লালন-পালন করতে হবে, তাকে কী খাওয়াতে হবে, কোন ঋতুতে কী ধরনের
পোশাক পরাতে হবে, ছোটখাটো সমস্যা হলে বাড়িতে বসেই কী করে তার সহজ সমাধান
করতে হবে ইত্যাদি বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন নিজ থেকেই, বিভিন্ন বইপত্র ঘেঁটে।
আর বর্তমান নেট-এর যুগে একটি ক্লিকের মাধ্যমেই সব কিছুই বর্ণনা সহ চলমান
সচিত্র প্রতিবেদন কাগজ কলমের শিক্ষা থেকে অনেক সহজেই অনুমেয়। জাপানে শতভাগ
না হলেও প্রায় বেশির ভাগ ( ৯৯% )লোক শিক্ষিত এবং ইন্টারনেটও সহজলভ্য তাই
তাদের জন্য এটি করা সহজ।
স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য অনুযায়ী জাপানে একজন অন্তঃসত্ত্বা মায়ের প্রায় ১৫ বার
নিয়মিত এন্টিনেটাল হেলথ চেকআপ ও আলট্রাসনোগ্রাফি করতে হয়। অর্থাৎ গর্ভাবস্থা
সময় ৪০ সপ্তাহ হলে, ৮, ১২, ১৬, ২০, ২৪, ২৬, ২৮, ৩০, ৩২, ৩৪, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯
ও ৪০তম সপ্তাহে প্রতিবার নিয়মিত আলট্রাসনোগ্রাফি টেস্ট, ভ্যাজাইনাল টেস্ট,
প্রেশার, ওয়েট, ফিটাল হার্টবিট ও ওয়েট চেকআপ করতে হয়।
এই সব কয়টিই ডাক্তাররা অত্যন্ত যত্নসহকারে, হাসিমুখে, বিনয়ের সঙ্গে
তত্ত্বাবধান করেন এবং প্রতিবার আলট্রাসনোগ্রাফি ছবি এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে
চাহিদা অনুসারে ভিডিও ফুটেজ প্রদান করা হয়। যার মাধ্যমে একটি শিশু ভ্রূণ
থেকে কীভাবে বড় হয়, সে সম্পর্কে একজন মা ও ডাক্তার সম্পূর্ণ অবগত থাকেন। এই
ছবিগুলিও বোশি তেচো তে স্থান পায়। অতি সম্প্রতি আবার মাতৃ উদরে ভ্রূণের
নড়াচড়া এমন কি তার আচরন এর ভিডিও ধারনও করা যাচ্ছে প্রযুক্তির আধুনিকতার
ছোঁয়ায়।
এরপর নিজ স্বাস্থ্যের নজর দেন সন্তান সম্ভাবনা মা। নিজে সুস্থ থাকলে যে
সুস্থ সন্তান জন্ম দেয়া যায় এই উপলব্দিটি একজন শিক্ষিতা মায়ের ভাল করেই জানা।
জাপানি মায়েরা কেবলি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত নন। তারা স্বশিক্ষা এবং
সু শিক্ষায় শিক্ষিত একটি জাতী। ব্যবহারিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়
কিন্টার গার্ডেন থেকেই।
তাই , অনাগত শিশুর সুস্বাস্থের জন্য নিজে স্বাভাবিক কাজ করার পাশাপাশি হালকা
ব্যায়ামও করে থাকেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
জাপানিরা এটা বিশ্বাস করে যে একটি সুস্থ–সবল জাতি উপহার দেওয়ার জন্য নরমাল
ডেলিভারির বিকল্প নেই।
এখানে বলে রাখা ভাল যে, জাপানে সব সময়ই নরমাল ডেলিভারির জন্য উৎসাহিত করা
হয়।
অনেক ইউরোপীয় দেশ ও আমেরিকার তুলনায় এখানে সিজারিয়ানের হার অনেক কম। এমনকি
এখানে ব্যথামুক্ত প্রসব অর্থাৎ epidurl anesthesia হার অনেক কম। মাত্র ৫
দশমিক ২ শতাংশ।
একটি শিশুর জন্মের পর থেকে দেখভালের দায়িত্ব মা নিজেই করে থাকেন। অন্যের
সাহায্য ছাড়াই । এখানে বাবুর দুধ গরম করে আনার জন্য বা ফুটফরমায়েশ খাটার
জন্য হোম হেল্পারের কোন সিস্টেম নেই।
জাপানে একজন মা বেল্টের সাহায্যে দুই বাচ্চাকে পিঠে বেঁধে সাইকেলের সামনের
ও পেছনের বেবি সিটে নিয়ে সাইকেল চালান। সকালে কাজে যাওয়ার আগে ডে কেয়ার-এ
রেখে কাজ শেষে আবার ডে-কেয়ার থেকে সন্তান নিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা
শেষ করে বাসায় ফিরে সব কাজ নিজেই সামাল দিয়ে থাকেন।
সন্তানকে বিদ্যালয়ের জন্য তৈরি করা, বিভিন্ন ক্লাব, পার্ক , গ্রন্থাগার
কিংবা শরীরচর্চা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া সব কিছুই মা-ই করে থাকেন জাপানে।
তবে জাপানি মায়েদের একটি বিষয় লক্ষ্যনীয়। খেলার সময় কিংবা চলাফেরা করার সময়
সন্তান পড়ে গেলে কিংবা হোঁচট খেলে দৌড়ে গিয়ে সোনা মানিক , লক্ষ্মী সোনা
জাতীয় সব্দ ব্যবহার করে বুকে না নিয়ে সন্তানকে নিজে নিজে উঠে দাঁড়ানোয়
উৎসাহ প্রদান করে
স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে মায়েরা শিশুকে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সঙ্গে
ওঠা-বসা, আচার-ব্যবহার, আদব-কায়দা , রাস্তা পারাপারে সিগনাল মানা , হাত
তুলে রাস্তা পার হয়া, পুলিশের সাহায্য নেয়া , নিজ হাতে খাওয়া ও নিজে
বাথরুমে যাওয়ার প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
ডে-কেয়ার থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতকালীন শিক্ষক এবং
অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ এর একটি নোট বুক থাকে। জাপানে যাকে eরেনরাকু চোf বলা
হয়f।
জাপানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ বছর শিক্ষাকালীন সময়েও প্রতি বছর একটি রেনরাকু
চো থাকে । এই রেনরাকু চো- তে বাড়ীতে শিশুর দৈনন্দিন জীবনযাত্রার হিস্টোরি
মা লিখে থাকেন , আর প্রতিষ্ঠানের হিস্টোরি লিখে থাকেন শিক্ষক।
এই রেনরাকু চোf একটি শিশুর দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি বিষয়াদি সব ই
লিপিবদ্ধ করা থাকে। একজন মা –ই জানেন এবং পারেন তার সন্তানের সুস্বাস্থ্য
নিশ্চিত করে সঠিক পথে পরিচালিত করার রোড ম্যাপ তৈরি করে সেই ট্রাকে উঠিয়ে
দিতে। একজন জাপানী মা ই পারেন সেই কাজটি দক্ষ নাবিকের মতো লক্ষ্যমাত্রায়
পৌঁছে দিতে।
জাপানের মায়েরা যে কেবল বাড়ীতে এবং বিদ্যালয়ের কাজকর্মেই দক্ষতার পরিচয় দিয়ে
থাকেন তা কিন্তু নয়।
এক বছর বয়স হওয়ার আগেই শিশুরা জাপানে পাবলিক লাইব্রেরির সদস্য হতে পারে।
মা তাঁর সন্তানের নামে প্রতি সপ্তাহে তিনটি বই ধার করতে পারেন। এছাড়াও
বিভিন্ন উৎস একটু বড় হওয়ার পর মা সন্তানকে নিয়মিত লাইব্রেরিতে নিয়ে
আসেন। গল্প ও ছবির বই পড়ে শোনান। হাঁটিহাঁটি পা পা করছে এমন শিশুও সেলফ
থেকে নিজের পছন্দমতো ছবি অথবা ছড়া গল্পের বই এনে মায়ের কাছে নিয়ে আসে পড়ে
দেওয়ার জন্য। মা শিশু কে কোলে বসিয়ে বেশ যত্ন করে পড়ে শুনান। এসময়ে শিশু
মনের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দিয়ে থাকেন।
সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট এর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত জাপানে মনে করা হয়
যে প্রতিটি ভালো ছাত্রের পেছনে একজন নিবেদিত মা থাকেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি
নিজে নিয়মিত সন্তানকে পার্কে, সাঁতারের ক্লাসে এবং পিয়ানো অথবা নৃত্যের
ক্লাসে নিয়ে যান। মা রাতে সবার পরে বিছানায় যান কিন্তু ভোরে ওঠেন সবার আগে।
কারন , স্বামী সন্তানের পছন্দমাফিক স্বাস্থ্যসম্মত এবং মান সম্পন্ন ও
কালারফুল আলাদা টিফিনবক্স প্রস্তুত করার জন্য তাঁর বেশ সময় প্রয়োজন হয়।
একজন জাপানী মা তার সন্তানকে প্রাতিষ্ঠানিক , পারিপার্শ্বিক বাহ্যিক এবং
ব্যবহারিক শিক্ষায় যেভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকে তা অন্য কোন জাতি সেভাবে পারে
কিনা আমার জানা নেই। এখানে মা তার নাড়ি ছেড়া জঠরের ধন সন্তানকে নামের আগে
মিস/মিস্টার সম্বোধন করে ডেকে থাকেন। নামের বিকৃতি চর্চা জাপানে নেই বললেই
চলে ।
জাপানে সন্তান তার মা-বাবাকেও ডাকার সময় সম্বোধন শেষে আগে মিঃ বা মিস বলে
সম্বোধিত করে থাকে। তবে কিছু কিছু সময় কেবলমাত্র মা- কে eঅফুকোরোf বলে ডেকে
থাকে। যার বাংলা অর্থ থলে। অর্থাৎ মায়ের পেটে থাকাকালীন একটি থলের মধ্যে বড়
হওয়ায় মা সব সময় সন্তানের কাছে থলে হিসেবেই বিবেচিত। সুখ দুঃখের শেষ ভরসা।
শেষ আশ্রয় স্থলও। সেই অর্থে মা কে থলে বলে সম্বোধিত করে থাকে।
জাপানি শিশুরা বিদ্যালয় ছাড়াও বিভিন্ন ক্লাব বা অন্যান্য সংগঠনের সাথে জড়িত
থাকে। এইগুলি সাধারণত মায়েরাই দেখভাল করে থাকেন। আর এই সব কর্মকাণ্ড
সাধারনত সাপ্তাহিক ছুটি অর্থাৎ বিদ্যালয় বন্ধকালীন সময়ে পরিচালিত হয়ে থাকে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্বেও মা তার সন্তানের জন্য কাকডাকা ভোরে উঠে
নিজ , স্বামী , সন্তানের ভোরের নাস্তা তৈরি করে সবাইকে পরিবেশন করিয়ে সব
গুছগাছ করার পর দুপুরের টিফিন ( জাপানি ভাষায় বেনতো বা প্যাকেটজাত খাবার )
নিয়ে বাই-সাইকেল, বাস কিংবা রেল এ করে বিভিন্ন শহরে সন্তানের অংশগ্রহনে
খেলাধুলায় উৎসাহ যুগিয়ে থাকেন।
শুধু স্নেহময়ী মা হিসেবেই নয় কর্তব্যপরায়ণ একজন স্ত্রী হিসেবেও জাপানী
রমণীদের তুলনা নেই। কথায় বলে ঘরে জাপানি বউ, হাতে ডলার, চায়নিজ খাবার এবং
পালিত হিসেবে যদি একটি জার্মান কুকুর থাকে সাথে, তার চেয়ে সুখী মানুষ আর এই
ভুবনে নেই।
অন্যান্য অনুসর্গের কথা জানা না থাকলেও একজন জাপানি স্ত্রী যে তার সব টুকু
দিয়ে স্বামী সেবায় ব্রত থাকেন একথা নিজ অভিজ্ঞতায় নির্দ্বিধায় বলা যায়।
জাপানে গৃহ কর্তার যাবতীয় কাজ গৃহকত্রী নিজেই করে থাকেন । এমন কি বেশীরভাগ
ক্ষেত্রেই সাহেবের বেতনের অর্থটা খরচের দেখভালও গৃহকত্রীই করে থাকেন। মাস
শেষে শেষে গৃহকর্তা কেবল মাসিক হাতখরচটা পেয়ে থাকেন তার কাছ থেকে। সাহেবের
এটা হলো না কেন ? ওটা গেল কই ? এগুলো বলার জন্য বা করে দেয়ার জন্য কারোর
অস্তিত্ব থাকে না।
সব দেশে সব জাতী ধর্মেই দুfচারটি ব্যতিক্রম থাকে। জাপানে যে অন্যায় হয় না ,
তা কিন্তু নয় , জাপানেও অন্যায় হয়ে থাকে। তবে তা ধাতব্যে পড়ে না। আনুপাতিক
হারে যা খুব-ই নগন্য। শিশু নির্যাতনের বেলায়ও তাই ই। যাও ঘটে থাকে আইনের
কঠোর প্রয়োগে তার সুরাহাও করা হয়। জাপানে আইনের শাসন এবং প্রয়োগ এতোটাই কড়া
যে শুধু রুই-কাতলাই নয় তিমি-হাতি হলেও নিস্তার নেই।
আর আমাদের দেশে বর্তমানে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাতে রুই-কাতলা হওয়ার আগেই
অর্থাৎ চুনোপুঁটি হলেই ধরাকে যে সরাজ্ঞ্যান মনে করে আইনের প্রতি
বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আইন তাদের জন্য নয়
বরং তাদের মুখের কথাই সেখানে আইন।
এভাবেই একজন জাপানি নারী তার জীবদ্দশায় একজন স্ত্রী , একজন মা , একজন
অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তাঁর নারীত্বের পূর্ণতা পরিপূর্ণ করেন।
সাপ্তাহিক জাপান প্রতিনিধি e'।
rahmanmoni@gmail.com
@
@
ARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
@
@
@
@
@
@
@
@
|