|
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)
রাহমান মনি
করোনায় জাপান - নাইট
ক্লাব বন্ধ, স্কুল কলেজ সব খোলা, করোনায় বাংলাদেশ- নাইট ক্লাব খোলা আর
স্কুল কলেজ সব!!
বর্তমান সরকারের সাফল্য নিয়ে পায়শই বিভিন্ন
প্রচার মাধ্যমে একাধিক ফিচার, সংবাদ এমন কি বিজ্ঞাপনও দেখা যায়। অনেক
ক্ষেত্রেই সরকারের এই উন্নয়নকে রোল মডেল হিসেবে আখ্যায়িত করে উন্নত বিশ্বকে
বাংলাদেশ থেকে শিক্ষা নিতে পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।
বিশ্ব মহামারি করোনা মোকাবেলায়ও সরকারের সাফল্য ও সন্মান এক অনন্য চরম শিখরে
পৌঁছে যাওয়ার খবর মন্ত্রী, আমলা এবং নেতাদের মুখে মুখে। প্রবাস থেকেও
তাহাজ্জুদ নামাজ, তসবিহ জপা থেকে বুদ্ধিমত্তা, মেধা ও সময়োচিত পদক্ষেপের
ভুয়শি প্রশংসার স্তুতি পাওয়া যায় মিডিয়ার কল্যানে।
এইতো চলতি বছরের প্রথম সংসদ অধিবেশনে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে মনে করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল
হামিদ বক্তব্য রাখেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা
নিশ্চিত করতে সব ক্ষেত্রেই অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে সরকার।
অথচ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা বছরে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে করোনা
মোকাবেলায় জাপান সরকারের পদক্ষেপে জনগনকে খুশী করাতে না পারার জন্য মাথাবনত
ক্ষমা প্রার্থনা করেন। যদিও জাপান তার দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিনা
মুল্যে দুই ডোজ করে টিকা নিশ্চিত করে। যদিও জাপান দেরী করে টিকা দেয়া শুরু
করে তথাপি ১৭ জুন পর্যন্ত মোট ২ কোটি ৭০ লাখ টিকা দেয়া সম্পন্ন করে এবং চলতি
মাসে মোট ৪ কোটি টিকা প্রদান এবং আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই সবাইকে বিনা
মুল্যে টিকা প্রদান শেষ করার রোড ম্যাপ অনুযায়ী টিকা প্রদানের কার্যক্রম
এগিয়ে চলেছে।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়৷ এরপর ১৭ মার্চ থেকে
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়৷ যা আজও বলবত রয়েছে। প্রায় ১৬ মাস ধরে
এই বন্ধে এখন শিক্ষার্থীরা সীমিতভাবে অনলাইন ক্লাশে অংশ নিচ্ছেন৷ বার্ষিক
সমাপনী পরীক্ষা হয়নি৷ সীমিত সিলেবাসে এসাইনমেন্ট ভিত্তিক মূল্যায়ন হয়েছে৷
আর এইচ,এ্স,সি পরীক্ষার্থীরা পেয়েছেন অটোপাস৷ তবে এবার অটোপাস না দিয়ে
সীমিত সিলেবাসে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা করছে শিক্ষা
মন্ত্রণালয়৷ আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস নিলেও পরীক্ষা নিতে পারছে
না৷ ভর্তি পরীক্ষাও নেয়া সম্ভব হয়নি৷
এইতো মাত্র কিছুদিন আগে আমাদের শিক্ষা মন্ত্রী বললেন ২/১ বছর স্কুলে না গেলে
কিছু যায় আসে না বা এমন কোন ক্ষতি হবে না। তার উদ্দেশ্যে বলতে চাই, স্কুল
একটি শিশুকে শুধু লেখাপড়াই শেখায় না, বরং তাকে একতাবদ্ধ, শৃঙ্খল ও সামাজিক
হতেও শেখায়। সেখানে হৈ-হল্লা, ছুটোছুটি করে তাদের শারীরিক মানুষিক বিকাশও
ঘটে। তাই ২/১ বছর ঝরে যাওয়া একটি শিশুর জন্য অপুরনীয় ক্ষতি যেটি উপলব্দি
করার মতো মেধা আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর আছে বলে মনে হয় না। শিক্ষার্থী ও
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একে অন্যের পরিপূরক হলেও শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান (স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা পায়। শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে শিক্ষার্থীর জন্ম হয় না।
অপরদিকে ১৫ জানুয়ারী ’২০ জাপানে প্রথম করোনা সনাক্ত হয়। সনাক্ত হওয়ার পর
প্রায় ১৮ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এরমধ্যে তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলা জাপান। মোট
পাঁচবার জরুরী অবস্থা জারী করে অনেক কিছুই বন্ধ করে কিংবা আংশিক বন্ধকরে,
পানশালা ও রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে কিংবা খোলা রাখলে অ্যালকোহল বিক্রি না করার
শর্ত, ওই সব অঞ্চলে সিনেমা হল এবং পানশালা বা রেস্তোরাাঁয় থাকা লাইভ
মিউজিকের আসর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এতদসত্বেও কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহে এর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখা
হয়েছে।
আগে যেখানে ভর্তি এবং সমাপনী পর্ব বেশ জাঁকজমকপূর্ণ এবং উৎসব মুখর পরিবেশে
শিক্ষার্থীরা স্কুল জীবন শুরু ও শেষ করত সেখানে অনেকটা সিথিল এবং অনাড়ম্বর
পরিবেশে সম্পন্ন করা হয়।
জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ফেব্রুয়ারি
’২০ মোট ১৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর চাউর হলে ২ মার্চ ‘২০ থেকে ২৫
মার্চ পর্যন্ত করোনার কারনে প্রাথমিক এবং জুনিয়র স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া
হয়। যদিও মার্চ মাসে জাপানে স্কুলগুলো এমনিতেই ঢিলেঢালা চলে। বাংলাদেশে
যেমন ডিসেম্বর মাসে। কারন জাপানে শিক্ষা কার্যক্রম এপ্রিল থেকে মার্চ সেশন
হিসেবে ধরা হয়।
২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বসন্তকালীন স্বাভাবিক ছুটি থাকে।
১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এর মধ্যেও ৭ এপ্রিল নতুন বর্ষে শিশুদের
স্বাগতম জানানো হয় অনাড়ম্বর আয়োজনের মাধ্যমে।
এর মধ্যে করোনা ভয়াবহ রুপ ধারন করলে ৬মে ’২০ থেকে ৩১মে পর্যন্ত শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান সমুহে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
১জুন ‘২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহ খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক
দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রথম কয়েকদিন শিফট করে ক্লাশ নেয়া হয়।
গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে স্কুলগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয় যা আজ অবধি
অব্যাহত রয়েছে। যদিও এরমধ্যে ৫ বার জরুরী অবস্থা মোকাবেলা করতে হয়েছে
জাপানকে। এর মধ্যে আবার পুরো জাপান জরুরী অবস্থার আওতায় ছিল।
সনাক্তের ১৮ মাসের মধ্যে মাত্র ৫৬ দিন অর্থাৎ প্রায় ২ মাস জাপানে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। আর সনাক্তের ১৬ মাসের মধ্যে প্রায় ১৬ মাসই
বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কৃতিত্ব আমরা নিতেই পারি, তাই নয়
কি ! আমরা উন্নত নই তো কি ? উন্নতির দাবী আমরা করতেই পারি!
rahmanmoni@gmail.com
ARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
-
আমাদের
ছেলেবেলা, আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম?
-
শিক্ষার্থী
ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
-
বাসায়
গৃহকর্মীর প্রতি মানবিক হওয়াটা জরুরী
-
বাংলাদেশীদের
জন্য মহিয়সী এক জাপানি মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এবং আমার অযোগ্যত
-
দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী জাপানী এক বস-এর গল্প
-
জগতখ্যাত
জাপানী সততা
-
জাপানে
সাকুরা উৎসব, করোনায় ভাটা
-
জাপানে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন মিডিয়ার ভূমিক
-
সাংবাদিকতায়
নিরপেক্ষতা বলতে স্থায়ী কিছু নেই
-
সব
ঘটনা-ই ‘নিউজ’ হওয়া উচিত নয়
-
প্রবাসে
করোনা হলে জানান দিন, লুকোবার কিছুই নাই, আপনার করণীয়টা পালন করুন
-
জাপানের
ওকিনাওয়ার মাটিতে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করা মুন্সিগঞ্জ এর জাকির খান
-
জাপানে
অব্যাহত জন্মহ্রাসের ভয়াবহ চিত্র
-
দৈনন্দিন
কর্ম কান্ডে একজন জাপানী মা
-
দেশী
স্টাইলে প্রবাসের রাজনীতি, সংশোধন হওয়া জরুরি
-
বাংলাদেশে
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ড. তপন পালের প্রক্ষেপণ সঠিক হতে যাচ্ছে
-
রেকর্ড
গড়ে ইতিহাসে স্থান নিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী আবে
শিনযো
-
শ্রদ্ধাঞ্জলি– স্মৃতির মনি কোঠায়
মুন্সিগঞ্জ এর ধোপা স্যার
-
জাপান
প্রবাস জীবনে আমার কৃষি কাজে সম্পৃক্ত হ’বার
গল
-
প্রবাসীদের
জন্য ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের নিবন্ধন জরুরি কেন
-
প্রসংগ
- হলুদ সাংবাদিকতা, দুর্মুখদের শেষ অস্ত্র
-
জাপানকে জানার জ্ঞানকোষ হতে পারে ডঃ আশির আহমেদ এর ‘জাপান কাহিনি’
-
প্রসঙ্গ
জাপানে লকডাউন, বাস্তবতা
-
স্মৃতির
মণিকোঠায় সাংবাদিক সফিউদ্দিন আহমেদ ভাই
-
একজন
প্রবাসী মায়ের সফলতার গল্প
-
জাপান
প্রবাসী বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন সমূহের প্রতি বিশেষ অনুরোধ
-
টোকিও
শহীদ মিনার পুনঃস্থাপন, সাংবাদিক হিসেবে আমার কৈফিয়ত
-
জাপানে
সবচেয়ে বড় মসজিদ “বায়তুল আমান মসজিদ কমপ্লেক্স” বাস্তবায়নে প্রয়োজন সবার
সহৃদয় সহযোগিতা
-
প্রসঙ্গ
বাংলাদেশি দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি , টোকিও কত দূর?
-
জাপানে
বাংলাদেশী দক্ষ জনশক্তি রপ্তানীর দ্বার উন্মচিত
-
গণপিটুনি
অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত
-
জাপান
কাহিনী এবং একজন ডঃ আশির আহমেদ
-
জাপান
বিএনপি'র প্রতিবাদ প্রতিহতের অপচেষ্টা
-
নিয়ম
জেনেও না মানার প্রবনতা বন্ধ হওয়াটা জরুরী
-
জাপানে
বৈশাখী মেলা, আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য
-
উৎসব
মুখর পরিবেশে জাপানে শিক্ষা জীবন শুরু হয়
-
কোরিয়া
স্বাধীনতার শতবর্ষ পূর্তিতে "ওয়ান কোরিয়া" শ্লোগানে গ্লোবাল পিস কনভেনশন
২০১৯ অনুষ্ঠিত
-
জাপানে
আমার সেকাল – একাল
-
একজন
প্রবাসীর সুখ দুঃখ
-
বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে ফুকুশিমা'তে বসতে যাচ্ছে টোকিও
অলিম্পিক – প্যারা অলিম্পিক ২০২০ এর আসর
-
একটি
কবরস্থান প্রতিষ্ঠায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগ
|