হে আনন্দময় যৌবন আমার
মঈনুল ইসলাম মিল্টন
হে যৌবন, আমি তোমার জন্যে চরিত্রহীনের
কালিমা লেপন করেছি কপালে
যা আমার কাছে রাজটিকা সম।
হাজারো বিদ্রুপ উপেক্ষা করে তোমারই জয়গান গেয়েছি
তথাপিও হে যৌবন, হে আনন্দময় যৌবন আমার
কেন তুমি আমায় ছেড়ে যাবে?
কোন অপরাধে?
একদিন ভ্রমর হয়ে এক কিশোরীর জবা পাপড়ি থেকে
লেহন করেছিলাম প্রেম সুধা
এতই ছিলো আমার কাম ক্ষুধা
আমি ভুলেই গিয়েছিলাম ঘৃণার সংজ্ঞা
হে আমার আনন্দময় যৌবন,
হে আমার সুদর্শন রাজ পুরুষ।
একদিন তোমার জন্যে এক ভারতীয় লক্ষী নারীর
কৃষ্ণ চুলের গহীন গহ্বরে ডুবিয়ে রেখেছিলাম আমাকে
একটি পুরো সন্ধ্যেবেলা
একদিন এক চীনা তন্বীর তনু জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো
আমার এ সুঠাম দেহ, আর বর্ণিল আনন্দে উদ্ভাসিত মেয়ে
আমার হাত ধরে সাঁতার কেটেছিলো তোমারই জলাধারে।
হে আমার প্রিয় সখা যৌবন,
একদিন তোমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে
লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে অবিনাশী কাম উন্মাদনায় মেতে
এক কোরিয়ান হলদে পরীর সাথে রজন খেলায়
আমি মেতেছিলাম প্রায় সারারাত।
তার ভেতর অবগাহনের পরে গোলাপের গহীনে আগুন থেকে
লাভা উদ্গীরিত হয়ে ধুয়ে দিয়েছিলো আমার সমস্ত বিছানা চাদর
আদরে আহ্বালাদে ক্ষনে ক্ষনে সিৎকাররত কোরিয়ান মেয়ে
আমাকেও ভালোবেসে জড়িয়ে ধরেছিলো কি আদিম আনন্দে!
হে যৌবন, হে আনন্দময় যৌবন আমার কেন তুমি আমায় ছেড়ে যাবে?
কোন অপরাধে?
একদিন এক জাপানিজ অষ্টাদশীর সদ্যফোঁটা পুষ্পবৃন্তে স্পর্শ করেছিলো
আমার এ হাতের আঙুল, কি নিদারুন নির্লজ্জতায়
লাজুক লতা কাম উত্তেজনার লজ্জায় আরো রাঙা
তুমিই তো আনন্দের সম্ভার হে আমার রাজাধীরাজ, পয়মন্ত যৌবন।
একদিন এক ইউরোপিয়ান রূপসীর বিবসনা ফর্সা দেহে
লেপ্টে ছিলো আমার উন্মুক্ত দেহ প্রায় সারা রাত।
একদিন যৌবনের উন্মাদনায় মেতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম
এক আফ্রিকান কালো গোলাপের বুকে
সেও আহ্বালাদে খামচে ধরেছিলো আমার পিঠ বুনো সিংহির ন্যায়
তুমি ছাড়া একি সম্ভব হতো?
হে আমার যৌবন, হে আমার আনন্দের উৎস।
একদিন এক আমেরিকান শ্বেতাঙ্গিনীর নীল চোখের নীলাগুনে
দংশিত হয়েছিলাম আহনিশি
একদিন এক ল্যাটিন অপ্সরীর নিবিড় স্পর্শে
শুদ্ধ করেছি নিজেকে, হে আমার অচীর্ত যৌবন,
তোমারই জন্যে একদিন এক পাহাড়ী খাসিয়া মেয়ের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে
তাকে নিয়ে কবিতা লিখবো বলে লাউয়াছড়া পাহাড়ে ছুটে গেছি বারবার
কিন্তু তাকে আর খুঁজে পাইনি, একটি বারই দেখেছিলাম তাকে।
এসকল অসম্ভববের সম্ভব একমাত্র তোমারই কারণে
হে আমার স্বর্গীয় দেব কুমার যৌবন,
হে আমার সখা, আমায় যে যাই বলুক বেহায়া কিম্বা চরিত্রহীন
আমি তোমারই চির পূজক
এরপরেও কেন তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে?
কোন অপরাধে?
হে আমার যৌবন, হে আমার আনন্দের উৎস, হে রাজাধীরাজ যৌবন আমার।।
|