প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

 এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

 

 

 

পান্থ পৌর্বাপর্য (চতুর্দশ পর্ব)

 

 

এ,কে,এম,নূরুন্নবী

 

এই পয়েন্টে প্রচুর ছোট বড় দোকান পাট ঝিনুক মার্কেট পর্যটকদেরকে আকর্ষণ করে।, থাইল্যান্ড,বার্মা,চীন দেশ থেকে জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট। রাখাইনরা তাদের নিজেদের তৈরি কাপড় চোপড় এ মার্কেটেই বিক্রয় করেন। এখানে রয়েছে সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর ও সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশান। এছাড়াও রয়েছে ইয়াসির লাইফ গার্ডের অফিস। সমুদ্রে সাঁতার কাটতে কেউ কখনও বিপদাপন্ন হলে এই অফিস থেকে উদ্ধার কর্মী গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। বেশী অসুস্থ হলে তারাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।যারা সমুদ্রে স্নান করতে নেমে সাঁতার কাটে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার থেকে ইয়াসির গার্ডের লোকেরা তাদের প্রতি সদাশয় লক্ষ্য রাখেন। জোয়ারের সময় সবুজ পতাকা ও ভাটার সময় লাল পতাকা এই অফিস থেকে দেখানো হয়। মানুষকে সতর্ক করার জন্য ইয়াসির গার্ডের লোকেরা এই দায়িত্ব পালন করে থাকেন। ভ্রমণ গাইড থেকে জানাযায় ১৯৯৫ সালে মালটিপারপাস সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছিলেন। তার একমাত্র পুত্র ইয়াসির সমুদ্রে সাতার কাটতে তলিয়ে যায়। তাকে আর কোন ভাবেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তিতে মালটিপারপাস সোসাইটি ডানকান ঢাকা অফিস ইয়াসির স্মরণে সমুদ্রে বিপদাপন্ন লোকদের সাহায্যের জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার করে বেশ কিছু লোক নিয়োগ দান করেন। এই লোকেরা সমুদ্রে স্নান কিম্বা সাঁতার কাটা লোকদের প্রতি টাওয়ারে বসে নজর রাখেন। কেউ বিপদাপন্ন হলে তখনি তারা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। প্রচুর লোকের কোলাহল। এখানেও প্রচুর হোটেল রয়েছে। যা ইতিপূর্বে আমাদের জানা ছিল না । তাছাড়াও রয়েছে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা।দেশ বিদেশের প্রচুর পর্যটকদের আনা গোনা। ঝাউবনের ভিতর দিয়ে আমরা পায়ে হাটার রাস্তা দিয়ে এগিয়ে গেলাম। কী যে বর্ণিল আলপনা, কী যে অপূর্ব সৃজন অনবদ্য শিল্পকর্ম যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়।মাধবী বললো আমার যদি কোন দিন সামর্থ হয় তা হলে এখানে একটা ছোট পরিসরে ডাকবাংলো গড়ে রাখব। আমরা অল্প সময়ের জন্য কলাতলা দিয়ে সি বিচ দেখে এলাম। এখানে এসে মনে পরে সময়ের চাকা স্থির নয়। সে সব সময় খুঁজে বেড়ায় আগামীর ঠিকানা।সময়ের পালা বদলে সূচিত হয় সভ্যতা,উন্মোচিত হয় অনবদ্য স্বর্ণদিগন্ত।এ সকল স্থানে এসে মানুষ ভবিষ্যতের বৈচিত্র্যময় রূপরেখা নির্মাণ করে। যে দিকেই তাকানো যায় দেখা যায় রঙিন বৈচিত্র্যের শোভিত রূপ।মন তখনি উড়ে যেতে চায় কল্পনার ডানা মেলে। মাধবীর মনের ইচ্ছা শুনে আমার কতগুলো কথা মনে পরে যায়। তাই শিলা আপু ও মাধবীকে নিয়ে তিন জনে হেঁটে হেঁটে আমরা যখন ঘুরছিলাম তখন কথা গুলো আলাপ করছিলাম। শিলা আপু বললেন শ্যামল তোমার কথা গুলো শুনতে ভালই লাগছে। তুমি বলতে থাক। তাহলে আমাদের হাঁটার পথটি খুব সহজ হয়ে যাবে। ঐতিহ্যসমৃদ্ধ ঐশ্বর্যের সম্ভার আমাদের দেশ।আমরা উজ্জিবিত হয়ে গড়ে তুলবো শিল্প-সমৃদ্ধ এ দেশ কে। সৃষ্টি করবে কোটি কোটি বেকারের কর্মসংস্থান। দারিদ্রতা হবে চির নির্বাসিত। বৈভব- প্রাচুর্যে ভরে উঠবে প্রতিটি ঘর প্রতিটি মহল্লায় সবার জীবনে ফিরে আসবে আনন্দ বৈভব মিলন মহামন্ত্রে।বাঙালী বীরের জাতি। তার রয়েছে সংগ্রামের ঐহিত্য। রয়েছে উন্নয়ন অগ্রগতির বিজয়রথ। তারা ভাগ্যলক্ষ্মীকে ছিনিয়ে আনতে পারে। গড়তে পারে সোনালি দিগন্তে এ দেশকে।আত্মশক্তিতে বাঙ্গালীরা ক্ষীণ নয়। শত কোটি লোকের দেশ চীন তাদের বেড়েছে বিপুল জনসংখ্যা তারা বেছে নিয়েছে কর্মসংস্থান। এখন তারা পৃথিবীর যাবতীয় ভোগ-সুখের হয়েছে অধিকারী। কর্মবীরেরাই পারে পৃথিবীকে উপভোগ করতে। এর জন্য হতে হবে আমাদেরকে কঠোর পরিশ্রমী। তাহলেই আমরা পারবো সমগ্র পৃথিবীর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে। শ্রমের গুরুত্বকে অস্বীকার করে সভ্য দুনিয়ার সাথে চলা কখনই সম্ভব নয়।আজ বিশ্বজগতের দিকে তাকালে দেখা যায় জীব-জন্তু,কীট-পতঙ্গ সবাই ছুটে চলেছে। আলস্যে কালক্ষেপণ করলে তাদের ভাগ্যে জুটবে উন্নয়ন সমৃদ্ধির বদলে ব্যর্থতার গ্লানিতে পরিপূর্ণতা।দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে কখনও মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। অদৃষ্ট কারো হাতে সম্পদ তুলে দেয় না। তোমার ভিতর এক "আমি" আছে, সে বড় দুরন্ত। তার স্বভাব পশুর মতো বর্বর ও উচ্ছৃঙ্খল। সে কেবল ভোগ বিলাস চায়। সে বড় লোভী। এ "আমি" কে জয় করতে হবে। তবেই মানুষের জীবন সার্থক ও সুন্দর হয়ে উঠবে।শিলা আপু বললেন, শ্যামল তুমি বেশ জ্ঞানের কথাই বললে,শুনতেও ভালই লাগছে। তবে এখানে আমি একটু তোমাদের দুজনকে শতর্ক করার জন্য আমার দেখা সামান্য অভিজ্ঞতার কথা না বলে পারছি না। আমি চাই না মাধবী ও তোমার মধ্যে কোন ভুল বুঝাবুঝি হোক। এ ব্যাপরটির প্রতি তোমরা উভয়েই শতর্ক যত্নবান হবে। প্রসঙ্গক্রমে আমি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ একশত দশ মুসলিম মণীষির জীবনী বইটি পড়ে ছিলাম।বইটি সম্পাদনা করেছিলেন হযরত মাওলানা মো: ইউসুফ, শর্ষিণা আলীয়া মাদ্রাসা।আমি হযরত মুহাম্মদ আলী হাকিম তিরমিজি (র) এর উপদেশ চেপটার পড়তে গিয়ে যা জানলাম তা তোমাদেরকে না বলে পারছি না।হযরত মুহাম্মদ আলি হাকিম তিরমিজি (র) এর উপদেশ হলো, বিশুদ্ধ চিত্তে যিনি উপাসনা করেন,তিনি এমন উচ্চ মর্যদার অধিকারী হন যে মানুষ তাঁকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করে। যে নিজের রিপুকে নিয়ন্ত্রন করে আল্লাহর তার গুঢ়তত্ত্ব প্রকাশ করতে থাকেন।রিপু ইবলিসের কাজ করে। অতএব তার থেকে সদা-সর্বদা সতর্ক থাকা দরকার। ইবলিস থেকেই নফসের উ‌ৎপত্তি।তাই দুয়ের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। প্রসঙ্গক্রমে একটি ঘটনা উল্লেখ করব। হযরত আদম (আ:) ও হযরত হাওয়া (আ:)আল্লাহর মার্জনা পাওয়ার পর যখন পুনরায় একসঙ্গে অবস্থান শুরু করেন তখন হযরত আদম(আ:)-এর অনুপস্থিতে শয়তান ইবলীস হযরত হাওয়া (আ:) এর কাছে হাজির হয়ে বলে, আমার পুত্র খান্নাসকে কিছুক্ষণের জন্য আপনার কাছে রেখে গেলাম। পরে এসে তাকে নিয়ে যাব।হযরত আদম (আ:) ফিরে এসে শয়তান ইবলীসের তনয়কে দেখতে পেলেন। তিনি রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে গাছের ডালে ঝুলিয়ে দিলেন। আর হযরত হাওয়া (আ:) এর উপরও অসন্তুষ্ট হলেন।ইবলীস পুত্রকে কেন তিনি জায়গা দিলেন? তাঁর শক্রতার কথা তিনি কী ভুলে গেছেন ইত্যাদি। তিনি আবার বাইরে গেলেন।আর ইবলীস সে ফাঁকে আবার এসে হযরত হাওয়াকে খান্নাসের কথা জিজ্ঞেস করলো। হযরত হাওয়া (আ:) সব কথা খুলে বললেন। তাতে ইবলীস চটল বটে, কিন্তু সেটা বুঝতে না দিয়ে খান্নাস বলে ডাক দেয়া মাত্র তার খণ্ডিত দেহাংশ জোড়া লেগে আস্ত জ্যান্ত খান্নাসের অবয়বে দাঁড়িয়ে গেল। আর ইবলীস আবারও হযরত হাওয়া (আ:)-এর ইচ্ছার বিরুদ্ধে খান্নাসকে সেখানে রেখে চলে গেল। একটু পরে হযরত আদম (আ:) ফিরলেন। আবার একই ঘটনা। এবার খান্নাসকে হত্যা করে পুড়িয়ে ছাই করে ফেললেন। সে ছাইয়ের অর্ধেক উড়িয়ে দিলেন আকাশে,বাকি অর্ধেক উড়িয়ে মিশিয়ে দিলেন সমুদ্রের পানিতে।আবার তিনি বাহিরে গেলেন।আবার ইবলীসের প্রবেশ ঘটলো। খান্নাসের পরিণতি দেখে এবারও সে ঘাবড়ে গেল না। তার নাম ধরে ডাক দিল। আর আকাশ ও সমুদ্রে নিক্ষিপ্ত ছাই একত্রিত হয়ে জীবন্ত খান্নাসের কলেবর ধারণ করলো। আর এবারও হযরত হাওয়ার অনুমতি ছাড়াই খান্নাসকে সেখানে রেখে সে চলে গেল।পরবর্তীতে খান্নাসের পরিণতি হল এই যে, তাকে এবার টুকরো টুকরো করে দুজনে তা খেলেন। ইবলীস এ কথা জানতে পেরে খুব খুশি। কেননা,সে এটাই চেয়েছিল।কেননা,তার সৃষ্টির উপাদান বংশানুক্রমে মানুষের বুকে বেঁচে রইলো।অর্থা‌ৎ প্রতিটি মানব সন্তানই ইবলীসের পথে প্ররোচিত হবার প্রেরণা ভেতর থেকেই লাভ করবে। তাতে ইবলীসের পরিশ্রম বেশ কমে যাবে।এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক কুরআনে বলেছেন, সে খান্নাস যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের হৃদয়ে।আমি শেষে শিলা আপুকে বললাম আপু মানুষের মনের মাঝে যে কুমন্ত্রণা দেয় তার হাত থেকে আমাদেরকে বাঁচতে হবে।খান্নাসের কুমন্ত্রণা থেকে শুধু আমি একা সাবধান থাকলে চলবে না।আপনি মাধবীকে ভাল করে বুঝিয়ে বলবেন আপু। তা হলে নিশ্চই আমরা অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছতে পারব। আপু বললেন, ভাল লাগলো তোমার কথা শুনে। তোমাদের মাঝে কোন ভুল বুঝাবুঝি হোক এটা আমি চাই না। যে কারণে এত কিছু উপসংহার টেনে কথা গুলো বললাম। মাধবীর আমার বান্ধবী তাছাড়া আমি তোমার বোন হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করলাম। তোমরা সুখি হও এটাই আমার কাম্য। (অসমাপ্ত)

 

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

 

[প্রথমপাতা]

 

লেখকের আগের লেখাঃ