প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

 এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

 

 

 

পান্থ পৌর্বাপর্য (দশম পর্ব)

 

 

এ,কে,এম,নূরুন্নবী

 

আমরা চারটি রিক্সা নিয়ে ক্রমধেশ্বরী কালী মন্দিরে চলে গেলাম। আমি ও মাধবী তাড়াতাড়ি করে রিক্সা থেকে নেমে সাধু বাবার সাথে দেখা করে বললাম মাধবীর বাবা মা বড় ভাই বৌদি সবাই এসেছেন আপনার সাথে দেখা করতে।সাধু বাবা বললেন নিয়ে আসুন মন্দিরে উনাদেরকে। মাধবী সবাইকে নিয়ে মন্দিরে উপস্থিত হলো। সবাই সাধু বাবাকে নমস্কার জানালেন। উনি বললেন, আপনারা সবাই ভাল আছেন তো। বৌদি বললেন সাধু বাবা আপনার কাছে এসেছি আশীর্বাদের জন্য। হাঁ মা বলো কী বলতে চাও। বাবা আজ প্রায় সাত বছর হলো আমাদের বিয়ে হয়েছে আমাদের কোন সন্তান হয়নি। জানিনা ভগবান কার পাপে শাস্তি দিচ্ছেন। হাঁ মা তোমাদেরকে আশীর্বাদ করি ভগবান তোমাদের সহায় হোন। ভগবান মানুষকে বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা করেন। তোমরা কার্ত্তিক মাসে মেলার সময় পূজার জন্য খরচ পাঠিয়ে দিও। আমি তোমাদের জন্য ভগবানের কাছে আশীর্বাদ করবো। উনি সব কিছুর নিয়ন্ত্রনকারী। বাবা খরচ কত লাগবে। আমরা ভাবছি এখনই তা আপনার কাছে রেখে যাব।খরচ পড়বে একান্ন টাকা। মাত্র একান্ন টাকা। হাঁ বাবা, তাই লাগবে। আমরা আপনার কাছে একহাজার টাকা রেখে যাচ্ছি। না তা রাখা যাবে না। পূজার সময় দেশ বিদেশ থেকে অনেক ধনী গরীব লোক আসেন। একান্ন টাকা সবাই দিতে পারেন। কিন্তু সবার পক্ষে এক হাজার টাকা দেয়া সম্ভব হয় না। সবার সমান অংশ গ্রহণে পূজাটা করা হয়। যাতে সবাই সমান ভাবে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। এটাই ভগবানের নিয়ম। বড় দাদা সাধু বাবার হাতে একান্ন টাকা দিয়ে বললেন বাবা আমাদের জন্য আশীর্বাদ করবেন যেন ভগবান আমাদেরকে একটা সন্তান ভিক্ষা দেন। তিনি সব পারেন। এখানে তার প্রতি অগাধ বিশ্বাস থাকতে হবে। মানুষকে তিনি নিরাশ করেন না। মন দেল দিয়ে তার কাছে নালিশ করতে হবে। তিনি কাউকে নিরাশ করেন না। সাধু বাবা বড় দাদাকে জিজ্ঞাস করলেন, আপনি কী করেন। বড় দাদা বললেন আমি আচার্য গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির মালিক। সাধু বাবা বললেন খুব ভাল কথা। আপনার ব্যবসা ভালই চলছে মনে হয়। হাঁ বাবা আপনার আশীর্বাদে ভাল চলছে। আপনারা এখানে বেড়াতে এসেছেন। হাঁ বাবা। আর দু একদিন থেকেই আমরা ঢাকা ফিরে যাব। আপনার মন্দিরে আমি প্রতিবছর কিছু সাহায্য করতে চাই। হাঁ পারবেন,তবে পূজা ও মেলার সময় আসতে হবে। মেলাটা কোন সময় হয়। ওটা কার্ত্তিক মাসের উনিশ তারিখ থেকে উনত্রিশ তারিখ পর্যন্ত। এ সময় এলে মন্দির কমিটির সাথে আলাপ করে সাহায্য করতে পারবেন। দেশ বিদেশ থেকে অনেক লোক আসেন। অনেকেই টাকা পয়সা দিতে চান, আমাদের সাধু বাবারা সবার সাহায্য গ্রহণ করেন না। আপনার সাহায্য গ্রহণ করবেন বলে আমার বিশ্বাস। ঠিক আছে বাবা আমি অবশ্যই সে সময়ে এখানে আসবো এর পর তিনি মাধবীকে বললেন,তুমি তো বিমল বোসকে চেন,ওখানে গিয়ে তোমার বৌদি আর বড় দাদার হাতটা একটু দেখিয়ে নিও। ঠিক আছে বাবা আমরা তাহলে এখন আসি। হাঁ ঠিক আছে তাহলে এখন আসুন। ওখান থেকে আমরা সোজা বিমল জ্যোতিষীর কাছে গেলাম। উনি বসে ছিলেন। আমাদেরকে দেখে উনি বললেন বসুন। কেন এসেছেন। বললাম সাধু বাবা পাঠালেন। বলুন কে হাত দেখাবেন। মাধবী বললো আমার বৌদি আর দাদার হাতটা একটু দেখুন। আসুন আমার সামনে বসুন। বড় দাদা হাত সম্মুখে দিলেন। উনি প্রথমেই বললেন,আপনার হাততো একজন শিল্পপতির হাত। কী করেন আপনি। গার্মেন্টসের ব্যবসা করি। ঠিক আছে আপনার ব্যবসা। ঘরে সন্তান নেই এই তো সমস্যা। না চিন্তার কোন কারণ নেই। বিয়ের সাত বছর পর্যন্ত কোন সন্তান দেখা যায় না। এর পর দুটি সন্তান দেখা যায়। সেটা কি একই সাথে দুটি, না পরপর হবে। আপনার হাত বলে একত্রে দুটি সন্তান দেখা যায়। করতলে বুধের ক্ষেত্রে তারা চিহ্ন থাকলে জাতকের বুদ্ধি ও স্মৃতিশক্তি প্রখর হয়ে থাকে। সে ব্যবসা বাণিজ্যে অসাধারণ সাফল্য লাভ করে। সমস্ত জীবন এরা সুখী যশস্বী হতে পারে। রাহুর ক্ষেত্রে তারাচিহ্ন দেখা যায় তাই জীবনে এরা প্রচুর সম্মান পায়। শুক্রের ক্ষেত্রে তারাচিহ্ন দেখা যায় তাই এরা বিপরীত লিঙ্গের দ্বারা প্রতারিত কখনও হয় না। যাদের হাতে বৃহস্পতির ক্ষেত্রে তারা চিহ্ন থাকে তারা খ্যাতির শীর্ষদেশে উঠতে সক্ষম হয়। সে ভাগ্যবান ও বিখ্যাত ব্যক্তি হয়। হাতে বৃহস্পতি প্রধান দেখা যায়। এরা সহজে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তাদের কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা থাকে জন্মগত ভাবে। এদের মধ্যে ব্যক্তিত্ববোধ বেশি থাকে তাই কারও অধীনে কাজ করতে ভালবাসেন না। এরা আদর্শের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন। মর্মভাবও এদের মনে খুব বেশি থাকে। জীবনে এরা সত্ভাবে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে থাকেন। তারা বিদেশে সম্মানলাভ করেন এবং বিদেশ থেকে অর্থ পাবার যোগ আছে। বিদেশ ভ্রমণও হতে পারে। এরা বেশ জ্ঞানী হয়। এদের বিচারশক্তি ও মননশীলতা বেশি থাকে। দায়িত্ব ও নীতি জ্ঞান এদের বেশি। কখনও এরা নিজ ব্যক্তিত্ব হারায় না। এ ধরনের হাত বিরাট সৌভাগ্যের চিহ্ন। এরা সব সময় হাসিখুশী থাকেন। এই লোকেরা ভাগ্যবান হয়। এরা বাস্তববাদী,বিচক্ষণ। আপনার ব্যবসার প্রথম জীবনে বিফলতার তিক্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে। তাই বলা হয় "Failure is the pillar of success"ব্যর্থতাই সফলতার সোপান। অবিরাম সাধনায় মানুষ ব্যর্থতার গ্লানি মুছে ফেলে সাফল্যের দুযারে পৌছে। চাই ধৈর্যের সাথে কঠোর পরিশ্রম। অধ্যবসায়ের সাথে প্রতিভা যোগ হলে মানুষ বড় হতে পারে। বৈজ্ঞানিক নিউটন বলেন, " প্রতিভা বলে কিছু নেই। পরিশ্রম এবং সাধনা করে যা্ও, তাহলে প্রতিভাকে অগ্রাহ্য করতে পারবে। আমার বিশ্বাস আপনি অনেক উপরে উঠতে পারবেন। আপনি সফলতার চরম লক্ষ্যে পৌছে যাবেন। আমার স্ত্রীর হাতটা একটু দেখুন। আসেন মা সামনে এসে বসুন। মেষ রাশি নারীর ব্যবহার অমায়িক,পূর্ণ কর্ম ও অতিথি সেবায় তারা আগ্রহশীলা। তাদের মেজাজ বৈচিত্র্যপূর্ণ। কখনো কোন কারণে ক্রুদ্ধ হলে পর মুহূর্তেই আবার তা শীতল হয়ে যায়। মুরব্বী ও গুরুজনদের তারা খুব ভক্তি শ্রদ্ধা করে। বৃদ্ধাঙ্গুলি নমনীয বলে তারা উদার মহান হাসিখুশি ভাবযুক্ত হয়। তাদের ব্যবহার খুব মিষ্ট হয়। এরা অতি সহজে সবস্থানে ও সব পরিবেশে মানিয়ে চলতে পারে। এরা নিজের মতকে যেমন গুরুত্ব দেয়,তেমনি অন্যের মতকেও শ্রদ্ধা করে এবং তা থেকে শিক্ষা নেবার চেষ্টা করে। এরা খুব সামাজিক ভদ্র ও মিশুক হয় এবং সকলের সঙ্গে সহজে মিশতে পারে। পশ্চিম ও পূর্ব ভিটের ঘর তাদের জন্য সর্বদা মঙ্গলজনক। তাদের উপর দেও পরীর নজর থাকে বলে রাতে খারাপ স্বপ্ন দেখে ভয় পায়। মাঝে মাঝে রোগাক্রান্ত হয়। গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়। এ রাশির নারীগণ সর্বদা স্বামীর একান্ত বাধ্য হয়। স্বামীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখে।এরা গৃহকর্মে সুনিপূর্ণ হয়ে থাকে। সপ্তাহে শনিবার দিনটি তাদের জন্য শুভ। আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীগণও তাকে খুব ভালবাসে। বড় দাদা বললেন সন্তানের কথাটি একটু বলুন। আপনার স্ত্রীর হাতেও দুটি সন্তান দেখা যায়। তবে ধর্মের প্রতি একটু যত্নবান হবেন । ঠিক আছে দাদা। ঠাকুর বাবার সাথে কথা হয়েছে পূজা ও মেলার সময় আমি আসবো। তখন আবার দেখা হবে। ঠিক আছে অবশ্যই আসবেন। যাবার সময় উনার সাথে আবার দেখা করে যাবেন। আচ্ছা আসি। জি আসুন। বড় দাদা জ্যোতিষীকে একহাজার টাকা দিলেন উনি তা গ্রহণ করলেন না। বললেন আপনারা বাবার মাধ্যমে এসেছেন,আপনাদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করলে উনার প্রতি অসম্মান করা হবে। বাবার জন্য আমি প্রতিষ্ঠালাভ করেছি। বড় দাদা বললেন আমি আপনার প্রতি খুশি হয়ে এ টাকা দিচ্ছি। না কখন ও আমার পক্ষে টাকা নেয়া সম্ভাব হবে না। তাহলে কি সাধু বাবা যত লোক পাঠাবেন সব লোকের টাকা নিবেন না। না তা না এর একটা নিয়ম আছে যা আমি জানি। ও আচ্ছা ঠিক আছে আজ তা হলে আমরা আসি। ঠিক আছে আসুন। আমরা আবার মন্দিরে চলে গেলাম। সাধু বাবাকে ধ্যান রত পেলাম। আমরা অপেক্ষা করলাম। উনার ধ্যান ভঙ্গ হলে আমরা তার সাথে দেখা করে ওনার আশীর্বাদ নিয়ে ওখান থেকেই রওনা করলাম।আবার তাঁবুতে ফিরে এলাম। বড় দাদা বললেন শ্যামল ভ্রমণ গাইডটি একটু দেখ,কোথায় যাওয়া যায়। ( অসমাপ্ত)।

 

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

 

[প্রথমপাতা]

 

লেখকের আগের লেখাঃ