[প্রথমপাতা]

 

 

 

এ.কে.এম. নূরুন্নবী

 

বাংলাদেশের দু'টি কবিতা


জীব-বৈচিত্র্যের সুন্দরবন


টোপর পরা পল্লবঘন তরুবীথি কুঞ্জকাননে

দক্ষিণ সাগরে ভাসা দ্বীপাঞ্চল প্রফুল্ল বদনে।

ঋতুতে রূপের মেলা দিগন্তের সীমানায়

ভিন্নতর দৃশ্যপট বঙ্গভূমির সাগর মোহনায়।

সুন্দরী গাছের বনরাজি উপকূল সমীরণে

সুন্দরবনের দৃশ্যপটে হৃদয় মত্ত সর্বক্ষণে।

ডোরাকাটা বাঘ চিত্রল হরিণ সাপের আবাস

ঘুরে বেড়ায় বনের বাহিরে কলরোলে সুপ্রকাশ।

গেওয়া সুন্দরীর স্নিগ্ধ পরশ হৃদয় করে আকুল

জীববৈচিত্র্যের সৌন্দর্য নন্দনকানন উপকূল।

অঞ্চল জুড়ে ধুন্দল কেওড়া গোলপাতা সুবিন্যস্তরে

রহস্যের ক্রোড়ে হাজার বছর ধরে উঠল বন গড়ে।

বাংলাদেশ ভারত বিস্তৃত বন সুনিবিড় অঞ্চল জুড়ে

নানা বৃক্ষরাজিতে শোভিত গভীর রহস্যে ভরে।

ছয়হাজার বর্গ কিলোমিটার বনের ঝোঁপ ঝাড়ে

অষ্টাদশ শতাব্দীতে দ্বিগুণ বন লুপ্ত হল অধরে।

মানুষের চাপে সংকুচিত হয়েছে বনের আয়তন

সাতক্ষীরা খুলনা বাগেরহাট পটুয়াখালী বাতায়ন।

দক্ষিণ পশ্চিম বিস্তীর্ণ উপকূল আকুলে হর্ষোদয়

সবুজের সমারোহ আলোড়িত শ্যামলিমা মন ভুলায়।

ঘর ছাওয়ার পাতা মৌচাকের মধু বনরাজি থেকে

ছিনিয়ে আনে মানুষ মহোৎসবে বন থেকে।

নদীগুলো নোনা মিঠা পানি মিলন অবিরল

পারশে মাছে ভরপুর নদী খালে সর্বকাল।

নিম্নাঞ্চলে হাঙর, ইলশে কামটের কোলাহল

অজানা প্রকৃতির বরণডালায় মন হারায় ব্যাকুল।

মনলোভা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আকৃষ্ট করে পর্যটকের

হাতছানি দিয়ে ডাকে কাব্যকুঞ্জবনে ভ্রমণ পিয়াসুদের ।

রূপসীবাংলার সৌন্দর্য আজি গঙ্গা ব্রক্ষপুত্রের মোহনায়।



রূপসী বাংলাদেশ


প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলানিকেতন

উৎসুক নয়নে দেখি রূপময়ী বন।

সার্থক চিত্রশিল্পীর নিখুঁত চিত্রকর্ম

অঢেল সৌন্দর্য নৈসর্গিক অনুপম।

শস্য শ্যামলে ভরামাঠ মুগ্ধ কলতান

রূপসীবাংলার স্নিগ্ধ মনোহর শোভন।

সৌন্দর্যের নৈসর্গিকে মোহিত চিত্রকর

হৃদয়স্পন্দনে এঁকেছেন মায়াবী জাদুকর।

শিল্পীর তুলিতে আঁকা কৃষ্ণচূড়ার উচ্ছ্বাস

মাধবী মঞ্জুরির ছবি আচ্ছন্ন আকাশ।

রূপসী ষড়ঋতুর আবর্তিত বাংলাদেশ

সুপ্ত হৃদয় ব্যেপে জাগিল আলোকরাশ।

আনন্দঘন কল্লোল উচ্ছ্বাসে সমস্ত গগন

যুগল নয়নে রূপের সমারোহ সারাক্ষণ।

হৃদয়ের মাঝে শুভ্র মেঘের স্তম্ভিত প্রাণ

মোহনীয় ভাণ্ডার মর্তলোকে পিঞ্জরদ্বারে স্থান।

গজারির ঘন বীথি সারি সারি দাঁড়িয়ে

ঝিলিমিলি লাবণ্যময় আকাশে শোভা হৃদয়ে।

নীলাভ পাহাড়ের ঢালে সাজানো চোখ ধরে

সারাটি বছর অপরূপ আবেশ দিগন্ত জুড়ে।

মাঠে মাঠে পানের বরজ সুন্দর পূর্বাঞ্চল

দাঁড়িয়ে আঁখের ক্ষেত নতশিরে দ্বীপাঞ্চল।

দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ পাহাড় বিশ্বচরাচর

সূর্যের ছটায় উন্মুক্ত পাহাড় আনন্দ বিভোর।

রোমাঞ্চকর আমেজে হারাই শ্যামল প্রান্তর

দূর থেকে বীণার ধ্বনি ভেসে বহে নিরন্তর।

ঋতুর পর ঋতুর এই বর্ণাঢ্য শোভাপায়

হৃদয়ে ব্যাপীয়ে মর্তলোকে ধরিনু তাহায়।

 

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

 

[প্রথমপাতা]

 

লেখকের আগের লেখাঃ