@
@
@
@
@ |
@
হাসিনা মুজিব নন, তাতে
হয়েছেটা কী?
আবদুল মান্নান
@
@
ভারতের প্রখ্যাত
সাংবাদিক ও বিশ্লেষক কুলদিপ নায়ারের নাম শুনেন নি এমন পত্রিকা পাঠক কম পাওয়া
যাবে । নায়ার বর্তমানে একজন সিন্ডিকেটেড কলামিষ্ট অর্থাৎ তার লেখা নিজ দেশ
ও দেশের বাইরে অনেক গুলো পত্রিকায় একই সাথে প্রকাশিত হয় । প্রাপ্ত তথ্য মতে
তার লেখা বিশ্বের ৮০টি দেশে ১৪টি ভাষায় নিয়মিত প্রকাশিত হয় । বাংলাদেশে
ইংরেজি দৈনিক ডেইলি ষ্টার, ভারতের ষ্টেট্সম্যান, পাকিস্তানের দি ডন, দি
নিউজ, এক্সপেস ট্রিবিউন, লন্ডনের সানডে গার্ডিয়ানের মতো বহুল প্রচারিত
প্রমুখ পত্রিকায় নিয়মিত তার কলাম প্রকাশিত হয় । ৯৩ বছর বয়সেও কুলদিপ নায়ার
যে নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন তার জন্য তাকে অবশ্যই প্রশংসা করতে হয় । কুলদিপ
নায়ারের জন্ম পাকিস্তানের শিয়ালকোটে ১৯২৩ সালে । পড়ালেখা লাহোরে । দেশ
ভাগের পর পরই ভারতে চলে আসেন, জড়িয়ে পরেন সাংবাদিকতায় । ইদানিং তিনি নিজেকে
একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবেও পরিচয় দেন । পাকিস্তান ছেড়ে চলে আসলেও তিনি
জন্মভূমির প্রতি টান ছাড়তে পারেন নি । সুযোগ পেলেই পাকিস্তান ছুঠে যান ।
পাকিস্তানেও তিনি বেশ সমাদৃত ।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার চার মাসের মাথায় ১৯৭২ সালে নায়ার বাংলাদেশে প্রথম
এসেছিলেন এবং অনেকের মতো তিনিও যুদ্ধবিধ্বস্থ বাংলাদেশের করুণ অবস্থা দেখে
এই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান ছিলেন । তবে পরবর্তিকালে বাংলাদেশের
সার্বিক উন্নয়ন দেখে তিনিও অনেকের মতো বিষ্মিত হয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের
সক্ষমতা সম্পর্কে নায়ারে জানার কিছুটা হলেও ঘাটতি আছে । তিনি এই বয়সেও
নিয়মিত বাংলাদেশে আসেন এবং ফিরে গিয়ে পরিবর্তিত বাংলাদেশ নিয়ে লিখেন ।
বাংলাদেশ হতে নায়ারের একটি আত্মজীবনী মূলক বই eবিয়ন্ড দি লাইন্সf (ইবুড়হফ ঃযব
খরহবং) প্রকাশিত হয় । সেই গ্রন্থে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে
লিখতে গিয়ে শেখ মুজিবের সাথে কাশ্মীরের জাতীয়তাবাদী নেতা শেখ আবদুল্লাহ্র
সাথে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন ( পৃষ্টা ২১৯)। বছর কয় আগে তার সাথে ঢাকায় দেখা
হলে এই ভুলের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করি । তিনি জানান পরবর্তি সংষ্করণে
তিনি তা শুধরে দেবেন । তা তিনি দিয়েছিলেন কী না জানা হয় নি । নায়ার ইন্দিরা
গাঁন্ধীর একজন বড়মাপের সমালোচক । ইন্দিরা গাঁন্ধির শাসন কালে যখন দেশে
রাজনৈতিক সংকট দেখা দেয় তখন ভারতে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয় (১৯৭৫-৭৭) ।
এই সময় কুলদিপ নায়ারকে গ্রেফতারও করা হয় । বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে তিনি
প্রায়শঃ লিখে থাকেন এবং তার লেখায় আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা সম্পর্কে এক
ধরণের নেতিবাচক মনোভাব লক্ষণীয় । এটি হতে পারে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সাথে
নেহেরু পরিবারের ও কংগ্রেসের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে যদিও বর্তমানে
কংগ্রেস ক্ষমতায় নেই। কুলদিপ নায়ার শেখ হাসিনা অথবা আওয়ামী লীগের কারণে
অকারণে সমালোচনা করলেও চারদলীয় জোট সরকারের শাসনকালের কুশাসন ও অপশাসন
সম্পর্কে তেমন একটা উচ্চ বাচ্য করেন নি । দেশে যখন বেগম জিয়া পেট্রোল বোমা
মেরে মানুষ হত্যার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তখন নায়ারকে এই ভয়াবহ রক্তাক্ত
কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে তার লেখনির মাধ্যমে তেমন একটা সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে
দেখা যায় নি । এমন কী সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে যে
কূটনৈতিক ঠা-া লড়াই চলছে সে সম্পর্কেও নায়ারের কোন মন্তব্য প্রতিবেদন চোখে
পরে নি । এfনিয়ে লিখলে তিনি হয়তো বলতেন বাংলাদেশের উচিৎ পাকিস্তানের সাথে
কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করে নেওয়া ।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি একই দিনে লন্ডনের দি সানডে গার্ডিয়ান ও ভারতের
ষ্টেট্সম্যান পত্রিকায় শেখ হাসিনাকে নিয়ে দুটি পৃথক লেখা প্রচারিত হয়েছে ।
লেখা দুটির মূল বিষয় ছিল শেখ হাসিনার অনেকটা নিষ্প্রয়োজন ও অযৌক্তিক
সমালোচনা । প্রথম লেখাটির শিরোনাম ঐধংরহধ রং হড় গঁলরন (হাসিনা মুজিব নন) আর
ষ্টেট্সম্যানে প্রকাশিত লেখাটির শিরোনাম ঐধং ইধহমষধফবংয ষড়ংঃ রঃ ভড়পঁং? (বাংলাদেশ
কী দিক হারাইয়াছে?) । প্রথম লেখাতে নায়ার শেখ হাসিনাকে একজন একনায়ক হিসেবে
আখ্যায়িত করে তাঁকে ইন্দিরা গাঁন্ধির সাথে তুলনা করেছেন । নায়ারের মতে
ইন্দিরা গাঁন্ধি প্রতিষ্ঠান (গণতন্ত্রের) ধ্বংস করেছিলেন যা তাঁর পিতা
নেহেরু গড়ে তুলেছিলেন এবং একই কাজ শেখ হাসিনাও করছেন । নায়ারের মনে থাকার
কথা শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে বেঁচে
ছিলেন সাড়ে তিন বছর এবং এই সময়ে তিনি একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশকে
নিজের পায়ের উপর উঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছিলেন যাতে তিনি অনেকাংশে সফল
হয়েছিলেন । এই সময় তিনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলার জন্য খুব বেশী সময়
পান নি । তাঁকে হত্যা করার পর যে যৎসামান্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কার্যকর
ছিল তা খোন্দকার মুশতাক, জেনারেল জিয়া আর এরশাদ ধ্বংস করে দিয়েছে । এই বিষয়ে
কুলদিপ নায়ারকে তেমন একটা সোচ্চার হতে দেখি না । জিয়া-এরশাদ বঙ্গবন্ধু
পরবর্তি বাংলাদেশকে দীর্ঘ একুশ বছর শাসন করে দেশকে কয়েক যুগ পিছিয়ে দিয়েছেন
।
নায়ার তার প্রথম লেখাটির উপসংহার টেনেছেন এই বলে eবাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা
শেখ মুজিবুর রহমান সকল বিরোধী দলকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দেশে এক দলীয় শাসন
ব্যবস্থা কায়েম করেন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের eপ্রাবধাf আর eইজবেস্তিয়ারf আদলে
দুটি পত্রিকা (আসলে চারটি হবে) অন্য সব পত্রিকা বন্ধ করে দেন । কিন্তু শেখ
মুজিবের অসামান্য জনপ্রিয়তার কারণে তিনি যাই করতেন তাই জনগণ মেনে নিতেন ।
তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার পিতার মতো জনপ্রিয়তা নেই । তিনি শুধু নিজের এবং
দেশের ক্ষতি করতে পারেনf । নায়ার আরো আবিষ্কার করেন eহাসিনার জনপ্রিয়তা নি¤œগামী
এবং এই কারণেই তিনি ঢাকার মেয়র নির্বাচন পর্যন্ত দিতে সাহস পাচ্ছেন না । এই
নির্বাচন দিয়ে তিনি যদি হেরে যান তাহলে বিরোধী দল তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে
পরবে এবং এতে শুধু দেশের ক্ষতিই হবেf। তার লেখার এতটুকু পড়ে মনে হলো বয়স
তাকে কাবু করে ফেলেছে কারণ তিনি ঢাকা ও চট্টগ্রামে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে
যে মেয়র নির্বাচন হয়েছিল সে সম্পর্কে অবগত নন, জানেন না যে সেই নির্বাচনে
দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি অংশ নিয়েছিল । আর বঙ্গবন্ধুর বাক্শাল
প্রতিষ্ঠা ও সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে শুধু চারটি পত্রিকা চালু রাখার
বিষয়টিকেও সময়ের প্রেক্ষাপটে বিচার করতে হবে । স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দেশে
আওয়ামী লীগ ছাড়া শুধু মাত্র মাওলানা ভাসানির ন্যাপ (চীন পন্থি), মোজাফ্ফর
আহমদের ন্যাপ (মস্কো পন্থি), কমিউনিষ্ট পার্টি ক্রিয়াশীল ছিল। মাওলানা
ভাসানির ন্যাপের ছত্র ছায়ায় সমবেত হয়েছিল স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি বড় অংশ
। মস্কো পন্থি ন্যাপ কখনো তেমন কার্যকর ছিল না । পাকিস্তান আমলে কমিউনিষ্ট
পার্টি নিষিদ্ধ ছিল । স্বাধীনতা পরবর্তীকালে কমিউনিষ্ট পার্টিকে বঙ্গবন্ধু
সরকার পূনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ করে দেন । ১৯৭২ সালে উগ্র বামপন্থী ধারার
ছাত্রলীগ ও সামরিক বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত হয় জাতীয়
সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ । এদের শ্লোগান ছিল বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রই দিতে পারে
জনগণের মুক্তি । তাদের রাজনৈতিক চিন্তাধারা ছিল অনেকটা চটকদার এবং বিশ্বাস
করতো বাংলাদেশের সকল সমস্যার চটজলদি সমাধান সম্ভব । তারা এও বিশ্বাস করতো
এই কাজ কখনো আওয়ামী লীগ বা বঙ্গবন্ধুকে দিয়ে সম্ভব নয় । তাদের প্ররোচনায়
অনেক স্থানে অন্তর্ঘাত মূলক কর্মকান্ড শুরু হয়, যা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশর
জন্য আত্মঘাতিমূলক । এই সুযোগ নিয়ে তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয় ভাসানি ন্যাপের
আশ্রয়ে থাকা স্বাধীনতা বিরোধী চক্রটি ।
এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যুদ্ধ করে একটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশ পরিচালনা
করতে গেলে সরকারকে অনেক আপদকালিন ব্যবস্থা নিতে হয় । বিশ্বের যে সকল দেশ
যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে সেfসব দেশের প্রথম দিককার সরকার প্রয়োজনে
এমন ব্যবস্থা নিতে পিছ পা হয় নি । বঙ্গবন্ধু এই ব্যবস্থা নিতে প্রায় তিন
বছরের সময় ব্যয় করেছিলেন । যে দিন তিনি বাক্শাল কায়েম করেন তিনি সংসদে
পরিষ্কার ভাবে কী প্রেক্ষাপটে এই ব্যবস্থা নিচ্ছেন তা বলেছেন এবং প্রত্যাশা
করেন এই ব্যবস্থার মাধ্যমে শুধু আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাই নন সকল দেশ
প্রেমিক ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী বাক্শালে যোগ দিয়ে দেশ পূনর্গঠনে অংশ নেওয়ার
সুযোগ পাবেন । ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাক্শাল প্রতিষ্ঠার বিল সংসদে
উত্থাপনের সময় বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ ভাষণে বলেন gআজকে এ্যামেন্ডেড
কনস্টিটিউশনে যে নতুন সিষ্টেমে আমরা যাচ্ছি, তাও গণতন্ত্র । শোষিতের
গণতন্ত্র । এখানে জনগণের ভোটাধিকার থাকবে । এখানে আমরা সমাজতন্ত্র চাই ।
এখানে আমরা শোষিতের গণতন্ত্র চাই । সাম্প্রদায়িকতার বীজ বাংলার মাটিতে
কোনদিন আসতে পারবে না, আমরা তা হতে দেব না । বাংলাদেশকে ভালবাসব না, বাংলার
মাটিকে ভালবাসব না, বাংলা ভাষা ভালবাসব না, বাংলা কালচারকে ভালবাসব না,-এ
আমরা চলতে দেব না । আমি এত দিন fফ্রি স্টাইলf দিয়ে রেখেছিলাম । তাই, যার যা
ইচ্ছা, তাই লেখে । কেউ, এ নামে বাংলাদেশকে ডাকে, কেউ ও নামে । বাংলাদেশের
নাম পর্যন্ত বলতে তারা লজ্জা বোধ করে । তাদের অধিকার নাই বাংলার মাঠিতে
থাকার । ...রাতের বেলায় দুfজনকে মেরে বিপ্লব করা যায় না । ...আন্দোলনের
মধ্যেই আমার জন্ম । আমি তো আন্দোলনের মধ্যেই মানুষ । আন্দোলন আমি জানি ।
কিন্তু আজ কী দেখতে পাচ্ছি ? ফ্রি স্টাইল। দেশের শত্রুরা এনজয়ইং ফুল
লিবার্টি । যার যা ইচ্ছা তাই করে । বিদেশীরা আসেন এখানে, তাদের গোপনে
দুবোতল মদ খাইয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্রিফ করে দেওয়া হয় । তারা মনে করে,
আমরা খবর রাখি না । আমরা খবর রাখিf । এই প্রেক্ষাপটেই দেশে বাক্শাল পদ্ধতির
শাসন ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল । বন্ধ করা হয়েছিল চারটি বাদে অন্য পত্রিকা
গুলো । কিন্তু কোন সাংবাদিক বা সংবাদ পত্র কর্মীকে বঙ্গবন্ধু বেকার হতে দেন
নি । তিনি সকলের কাজের ব্যবস্থা করেছিলেন । বাক্শাল ভাল ছিল কী মন্দ ছিল তা
বুঝার আগেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল । আজ যে সব রাজনৈতিক নেতা
সময় ও সুযোগ পেলেই বাক্শালের চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করেন তাদের প্রায় সকলেই,
বিএনপিfর প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া সহ বাক্শালে যোগ দিতে লাইন দিয়েছিলেন ।
সেই জিয়া ক্ষমতা দখল করে দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রেও নামে সকল স্বাধীনতা
বিরোধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন ।
fহাসিনার জনপ্রিয়তা নি¤œগামীf এটি নায়ারের একটি বড় আবিষ্কার । অন্য
সমীক্ষার কথা বাদই দিলাম, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৫ তারিখে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক
ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আই আর আই) বাংলাদেশের উপর একটি জরিপ
প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৪ সালের ৫
জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকারের ও শেখ হাসিনার প্রতি জনগণের সমর্থন
যথাক্রমে ৬৬ ও ৬৭ ভাগে দাঁড়িয়েছে । ৬২ ভাগ মানুষ মনে করে দেশ সঠিক পথে চলছে
যা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ছিল ৫৬ ভাগ । ৭২ ভাগ মানুষ মনে করে দেশের
অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল এবং ৬৪ ভাগের মতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা
বর্তমানে সন্তোষজনক । সুতরাং নায়ারের ভাষ্য মতে eনা শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা
নি¤œগামী, না বাংলাদেশের মানুষ দিক হারাইয়াছেf ।
নায়ার হয়তো ভুলে গেছেন এই একজন শেখ হাসিনাই সাহস করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা
সেতুর মতো একটা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সাহস দেখাতে পারেন । এমন সাহস
তাঁর পিতার ছিল । বিশ্বব্যাংক এই সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল এই অজুহাতে
যে এই প্রকল্পে তারা দূর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে । এ নিয়ে কানাডার আদালতে মামলা
হলো । প্রায় একবছর সময় ক্ষেপণ হলো । শেষমেশ কানাডার আদালত সেfদিন সাফ জানিয়ে
দিল এই সব অভিযোগ বিলকুল বাকওয়াজ । শেখ হাসিনার শাসনামলেই দেশ আজ খাদ্যে
স্বয়ংসম্পূর্ণ । তিনি একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করেছেন ।
এই শেখ হাসিনাই একজন জাতীয় নেতা হতে বিশ্ব নেতার স্বীকৃতি পেয়েছেন ।
নায়ার অনেকের মতো ডঃ ইউনুসের দারুণ ভক্ত । তিনি মনে করেন শেখ হাসিনার উচিৎ
ছিল ডঃ ইউনুসের সাথে বিবাদে না গিয়ে তাঁকে তাঁর দূত বানানো । নায়ার ভুলে
গিয়েছেন শেখ হাসিনাতো বিবাদে যান নি । গ্রামীণ ব্যাংকের নিয়ম অনুয়ায়ী বয়স
হলে ডঃ ইউনুসের অবসরে যাওয়ার কথা ছিল । তিনি না যাওয়াতে আইন অনুযায়ি
অপসারিত হয়েছেন । মামলা লড়েছিলেন উচ্চ আদালতে । তাতে তিনি হেরে গেছেন ।
হিলারী ক্লিন্টনকে তিনি ই-মেইল পাঠিয়েছিলেন এই ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের
উপর চাপ সৃষ্টি করতে যা এখন হিলারির ই-মেইল উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর জানা
গেছে । এমন অবস্থায় কী ভাবে নায়ার মনে করেন শেখ হাসিনা ডঃ ইউনুসকে তাঁর দূত
করবেন ? নায়ার লিখেছেন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা স্বাধীন নয় । বর্তমানে
বিচার ব্যবস্থা এমনই স্বাধীন যে একজন বিচারক অবসর পূর্ববর্তি ছুটিতে থাকা
কালে সরকারি সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে একজন যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে আদালতে
দাঁড়াতে পারেন ।
অনেকে চাইছিলেন বাংলাদেশ আফগানিস্তান বা ইরাকের মতো একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে
পরিণত হোক । একজন শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থানের কারণে তা সম্ভব হয় নি বলে এখন
তাদের গাত্রদাহ । তারা কুলদিপ নায়ারের মতো বিশ্লেষকদের ভাড়া করে তাদের নাম
ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার কুৎসা রটনার জন্য সর্বধা তৎপর । হা,
শেখ হাসিনা মুজিব নন । শেখ মুজিব বাংলাদেশে হাজার বছরে একজনই জন্ম নেয় ।
কিন্তু তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা তাঁর পিতার রেখে যাওয়া বাংলাদেশকে একটি নতুন
পরিচয় দিয়ে তামাম বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে তুলে ধরেছেন । শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনাই ।
লেখক: বিশ্লষক ও গবেষক । ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬
@
@
@
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
@
[প্রথমপাতা] |
@
@
@
লেখকের আগের লেখাঃ
[......লেখক আর্কাইভ]
|