|
||||||||||||||||||
|
সাবধান, ষড়যন্ত্র বেশ গাঢ় হচ্ছে
দেশ, সরকার ও শেখ
হাসিনাকে যারা ভালবাসেন, যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি
অঙ্গিকারাবদ্ধ তারা সেই ২০১৩ সন হতে বলে আসছেন বর্তমান সরকারকে উৎখাত ও শেখ
হাসিনাকে হত্যা করার জন্য দেশে এবং দেশের বাইরে একটি গভীর ষড়যন্ত্র হচ্ছে
এবং তাতে শুধু দেশের ভিতরের সরকার বা শেখ হাসিনা বিরোধী শক্তিই যে সক্রিয়
শুধু তা নয় দেশের বাইরের একাধিক রাষ্ট্র ও শক্তি বেশ খোলা হাতে তাতে মদদ
দিচ্ছে এবং একই সাথে এই শক্তির যুগল বন্দিতে দেশের ভিতরে খুনখারাবী, ধর্মীয়
সংখ্যালঘুদের হত্যা, মন্দির ও প্রার্থনালয়ে হামলা, আওয়ামী লীগ নামধারী এক
শ্রেণীর তষ্করদের তাতে বুঝে না বুঝে ইন্ধন যোগানোর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারিদের
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা এই সবই তার পনিষ্কার আলামত । বাংলাদেশ, আওয়ামী
লীগ ও তার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই পাকিস্তানের গোয়েন্দা
সংস্থা আইএসআই নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে । এই বিষয়ে স্বাধীনতার পর পর সোভিয়েত
ইউনিয়ন ও ভারত সরকার নানা ভাবে বঙ্গবন্ধুকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছে কিন্তু
তিনি তাতে তেমন একটা কর্ণপাত করেন নি । অন্ধভাবে বিশ্বাস করতেন কোন বাঙালি
তাকে হত্যা করতে সাহস পাবে না । তিনি তাঁর কাছের মানুষগুলোকে অন্তর হতে
বিশ্বাস করতেন এবং শেষমেষ তাকে ও পুরো জাতিকে তার জন্য চরম মাসুল দিতে হয়েছে
। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রকারিদের হাত
অনেক দীর্ঘ হয়েছে, দেশের ভিতর তাদের শিকড় অনেক গভীরে গেছে ও মজবুত হয়েছে,
আর্থিক শক্তি অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিজেদের সক্ষমতা অনেক শক্তিশালী
হয়েছে । বর্তমানে এই শক্তি দেশের ভিতর একটি অত্যন্ত শক্তিশালী সিভিল বা
সুশীল সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, অনেক গুলো মিডিয়ার মালিক হয়েছে, আওয়ামী
লীগ নামক দেশের বৃহত্তম দলটির ভিতর দূষিত রক্ত ইন্জেক্ট করতে পেরেছে যার
লক্ষণ দেখা যাচ্ছে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক স্থানে দেশের ও দলের
শত্রুদের কাছে বঙ্গবন্ধুর নৌকা বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে । সব শেষে দেশের
একটি প্রথম সারির সংবাদ পত্রে খবর পরিবেশিত হয়েছে এই সব ষড়যন্ত্রের সাথে
বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের জড়িত হয়ে পরার খবর
আর তাদের সাথে এই সংযোগ স্থাপনে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে গেছে পাকিস্তানি ঘরাণার
রাজনীতিতে বিশ্বাসী দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
বিএনপি । গত ৫ মে দৈনিক ইত্তেফাক খবর দিয়েছে কোলকাতা, দিল্লি ও লন্ডনে গত
মার্চ মাসে একাধিক বৈঠক করেছেন ইসরাইলের প্রভাবশালী নেতা মেন্দি এন সাফাদি,
বিএনপি’র একজন প্রভাবশালী নেতা, একটি ইসলামী দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা এবং
এতে মোসাদের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশে কাজ করা একজন ব্যক্তি এই সব বৈঠকে
উপস্থিত ছিলেন । লন্ডনে বৈঠক চলাকালিন বাংলাদেশে একজন বিএনপি নেতার সাথেও
ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলার তথ্যও বর্তমানে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের কাছে আছে
। দৈনিক ইত্তেফাক গত ৯ মে প্রথম পৃষ্টায় নয়াদিল্লিতে এমন একটি বৈঠকে
উপস্থিত ব্যক্তিদের একটি গ্রুপ ছবি ছেপেছে যাতে অন্যান্যদের সাথে দেখা
যাচ্ছে বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব চট্টগ্রামের জাহাজ ব্যবসায়ী আসলাম চৌধুরী ও
বাংলাদেশে মোসাদের এজেন্ট হিসেবে পরিচিত সিপান কুমার বসু মোসাদ
কর্মকর্তাদেও সাথে পোজ দিয়েছেন। একাধিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান
সরকারের আমলে বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক আমার দেশের সাংবাদিক সঞ্জীব চৌধুরী যিনি
ঘন ঘন এই সব বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য ভারত সফর করেন । সঞ্জীব চৌধুরী
ধর্মীয় সংখ্যালঘু হলেও তিনি জামায়াত-বিএনপি রাজনীতির একজন কট্টর সমর্থক,
সাংবাদিক মহলে তিনি অনেকের কাছে সাংবাদিকদের বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় হিসেবে
পরিচিত । চট্টগ্রামের বাসিন্দা এই সঞ্জীব চৌধুরী এক সময় বিএনপি’র একজন
শীর্ষ নেতার মালিকানাধীন একটি বেসরকারি টিভিতেও কর্মরত ছিলেন । আসলাম চৌধুরী
একজন বড়মাপের ঋণ খেলাপি, ২০০৮ সনে সীতাকুন্ড আসন হতে বিএনপি’র পক্ষে আওয়ামী
লীগের কাসেম মাষ্টারের কাছে শোচনিয় ভাবে পরাজিত হয়েছিলেন, জাহাজ ভাঙ্গা
ব্যবসার সূত্রে তিনি বিদেশে অনেকের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন । এ সময় তিনি
কেআরএসএম ষ্টিলে কাজ করতেন । চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তিনি সাকাচৌধুরীর
অনুসারি ছিলেন । সিপান কুমার বসুর বাড়ি খুলনায় । বিয়ে করেছেন গোপালগঞ্জে ।
এই ষড়যন্ত্র চক্রের সাথে পরোক্ষ ভাবে যোগ হয়েছে ভারতের কট্টর হিন্দুত্বাবাদি
সংগঠন আরএসএস । বাংলাদেশের বাইরে থেকে এই ষড়যন্ত্রের ইন্ধন যোগাচ্ছে
জামায়াতের সিনিয়র একজন আইনজীবী ও তাদের বৃটিশ লবিষ্ট ও আইন উপদেষ্টা টবি
ক্যাডমেন যাকে বিরাট অংকের অর্থ দিয়ে ভাড়া করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ
ট্রাইবুনালের হাত হতে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বাঁচানোর জন্য । বর্তমান
সরকারের দৃঢ়তার কারণে তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়াতে বর্তমানে সেই
আইনজীবী ও ক্যাডমেন বেশ বেপরোওয়া । অভিযোগ আছে তারা এই ষড়যন্ত্রের সাথে আরো
গভীর ভাবে সম্পৃক্ত হতে সৌদি আরব, পাকিস্তান ও তুরষ্কের সাথে সংযোগ স্থাপন
করেছে । অন্য আর একটি পত্রিকা সংবাদ দিয়েছে বিএনপি জামায়াতের ২০০ নেতা কর্মী
পাকিস্তানে কমান্ডো ট্রেনিং নিয়ে বাংলাদেশে ফিরেছে । সৌদি আরব এমনিতেই
ইসরাইলের একজন পরীক্ষিত বন্ধু । বর্তমান বাদশা সালমানের আমলে সেই বন্ধুত্ব
আরো গাঢ় হয়েছে । উভয় দেশের কমন শত্রু ইরান । পানামা ডকুমন্টে প্রকাশ করেছে
বাদশা সালমান ২০১৫ সনে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেথানইয়াহুর
নির্বাচনি তহবিলে ৮০ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দিয়েছিলেন । পাকিস্তানের আইএসআই
দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলের মোসাদের সাথে কাজ করে আসছে । ইতোমধ্যে নিজামীর
ফাঁসির চূড়ান্ত রায় প্রকাশিত হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার ও তুরষ্কের
প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন । ভারতের বাইরে
ষড়যন্ত্রকারীরা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বর্তমান সরকারকে উৎখাত করে তাদের
পছন্দসই একটি প্রতিক্রিয়াশালী দক্ষিণ পন্থি সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য
কাজ করে যাচ্ছে বহুদিন ধরে। সিঙ্গাপুরেও বর্তমান সরকারকে উৎখাতের
পরিকল্পনার সাথে জড়িত বেশ কিছু জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
|
লেখকের আগের লেখাঃ |