প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

@

@

@

@

@

@

বাপের হোটেলে খাওয়ার মজাই আলাদা !!


আবদুল মান্নান
@


@

বিশ্বব্যাংক, আইএলও আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য উপাত্ত্ব ব্যবহার করে দৈনিক ইত্তেফাক গত ২৩ অক্টোবর প্রথম পৃষ্টায় একটি সংবাদ শিরোনাম করেছে এই বলে eযুব বেকারত্ব বাড়ছে!f সংবাদটি পড়ে আমার এক বন্ধুর কাছে এই বিষয়ে তার মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন eএটা আবার নতুন কী? বাপের হোটেলে খাওয়ার মজাই আলাদাf। বাপের হোটেল কথাটা আমাদের দেশে বেশ প্রচলিত কারণ এই দেশের সংষ্কৃতিতে ছেলে মেয়েরা তাদের পড়া লেখা শেষ না করা পর্যন্ত বাপের হোটেলেই খায়, অর্থাৎ তার পড়া লেখার খরচ সহ থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা পরিবার থেকেই করা হয় । অনেকে অবস্য ইদানিং শ্বশুরের হোটেলেও খাওয়া শুরু করেছেন । ব্যতিক্রমও আছে । কfদিন আগে আমার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কন্যা আমাকে জানালো তাদের বিভাগে একজন ছাত্র শেষ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা শেষে মৌখিক পরীক্ষা দিতে আসলে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় পরীক্ষাতো শেষ হলো এখন সে কী করবে ভাবছে । ছাত্রটি সকলকে অবাক করে দিয়ে বলে সে তা ঠিক জানে না কারণ তারতো এতদূর পড়া লেখা করারই কথা ছিল না । সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে এতদূর এসেছে এবং তার এক ভাই এখনো কলেজে পড়ে । তার পড়া লেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে হয়ত রাজ মিস্ত্রির কাজই করে যেতে হবে । উপস্থিত শিক্ষকরা অনেকটা হতবাক হয়েই তাকে উপদেশ দিল তার উচিৎ বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা । তার সরল উত্তর তার মতো একজন ছাত্র কী বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে ? বুঝা গেল তার নিজের উপর আস্থার অভাব আছে যা তার থাকা উচিৎ নয় । তার শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার শিক্ষকদের উচিৎ ছিল তার নিজের উপর আস্থা না থাকার বিষয়টা দূর করা । এমন অবস্থায় শিক্ষা জীবন শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে সচিব হয়ে অবসরে গিয়েছেন তেমন কয়েক জনকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন অনেকে । বাংলাদেশে সকলে যে বাপের হোটেলে খেয়ে পড়া লেখা করে তা কিন্তু নয় । তবে বেশীর ভাগই করে কারণ এটি আমাদের সংষ্কৃতি । বিদেশে ছেলে মেয়েরা খুব বেশী হলে হাই স্কুল পর্যন্ত বাপের হোটেলে খেয়ে পড়া লেখা করেন তারপর নিজের আয় রোজগার করে নিজে উচ্চ শিক্ষার খরচ চালান । তবে উন্নত বিশ্বে eশিক্ষা আমার সাংবিধানিক অধিকারf বলে সকলে উচ্চ শিক্ষার পিছনে ছোটেন না । শুধু যারা শিক্ষক হবেন অথবা সরকারি আমলা বা কোন বিশেষ পেশায় যাবেন, যেমন চিকিৎসা, প্রকৌশল, স্থাপত্য, গবেষক তারা উচ্চ শিক্ষায় প্রবেশ করেন । যুক্তরাষ্ট্রে পড়া লেখা করার সময় আমার এক সহপাঠি ষ্টিফেন খুব ভোরে বের হয়ে যেত ম্যাকডোনাল্ডস্ এর রান্না ঘরে কাজ করার জন্য । তার বাবা ছিলেন পর পর পাঁচ বার নির্বাচিত হওয়া আমেরিকার একজন জাঁদরেল সিনেটর । বাংলাদেশে এমন বাস্তব কাহিনী অসংখ্য আছে । তবে তারা তাদেও কেউই ওই রকম সিনেটরের সন্তান নন ।
দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে দেশে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী যুব বেকারত্বের হার ১০ দশমিক ৩ শতাংশ (৪২ লাখ ২৩ হাজার) । আইএলও বলছে ১১ শতাংশ (৪৫ লাখ ১০ হাজার) কর্মক্ষম বেকারের সংখ্যা আরো বেশী । বাংলাদেশ পরিসংখ্যার ব্যুরোর তথ্যে বলা হয়েছে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে কর্মক্ষম বেকারত্বের হার ছিল চার দশমিক তিন শতাংশ এবং ২০০৯ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশে। অবস্য পরিসংখ্যান ব্যুরো শুরু থেকেই তাদের তথ্য উপাত্ত্ব পরিবেশনের ক্ষেত্রে কয়েক বছর পিছিয়ে থাকে যার ফলে বাংলাদেশে কোন পরিকল্পনাই সঠিক ভাবে করা সম্ভব হয় না । কfদিন আগে পরিকল্পনা কমিশনের এক সভায় বেশ ক্ষোভের সাথে প্রধানমন্ত্রীও একই কথা বলেছেন । আইএলও তাদের তথ্যে আরো বলেছে দেশের উচ্চ শিক্ষিত তরুণ তরুণীদের ২৬.১ শতাংশ বেকার । পাল্টা আর একটি সংবাদ হচ্ছে দেশের যুব সমাজের এই যখন অবস্থা তখন বাংলাদেশে বৈধ ভাবে ত্রিশ হতে পঁয়ত্রিশ হাজার বিদেশী কাজ করে এবং তারা প্রতি বছর বাংলাদেশ হতে গড়ে পাঁচ বিলিয়ন ডলার নিজ দেশে পাঠায় । অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ মানুষ কাজ করে বলে ধারণা করা হয় । এই বিদেশীদের মধ্যে আছে ভারতীয়, পাকিস্তানী, শ্রীলংকান, চীনা, কোরিয়, নেপালি, তুর্কি, ইউরোপীয়, কেনিয়ান প্রমূখরা । বাংলাদেশে সব চেয়ে বেশী কাজ করে ভারতীয়রা । বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত্ব নিয়ে এক গবেষণা পত্রে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার সম্প্রতি বলেছে বিদেশে কর্মরত যে সকল ভারতীয় নিজ দেশে অর্থ পাঠায় সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম । ২০১২ সালে তারা বাংলাদেশে হতে ৪.০৮ বিলিয়ন ডলার নিজ দেশে পাঠিয়েছে । একজন দেশী উদ্যোক্তা যার প্রতিষ্ঠানে ভারতীয় সহ বেশ কfজন বিদেশী কাজ করেন তার কাছে জানতে চাই দেশে এত বেকার থাকতে কেন আপনি বিদেশীকে নিয়োগ দেন ? তার সহজ উত্তর eআমিতো দেশী লোকদের কাজ দিতে চাই । বিদেশীদের তো আমাকে তিন চার গুণ বেশী বেতন দিতে হয় । কিন্তু আমাদের দেশের যে সকল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী নিয়ে বের হয় তাদের বেশীর ভাগেরই প্রয়োজনীয় কর্মদক্ষতা থাকে না আর তাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি জনিত সমস্যাতো আছেই । কাজ শেখার এক ধরণের অনিহা তাদেও মধ্যে কাজ করে । তবে এদের মধ্যে আবার ব্যতিক্রমও আছে । তা না হলে আমাদের বেসরকারি খাত একেবারে শূন্য হতে এতদূর আসতো না ।f আমি আর কথা বাড়াই না । চার দশকের বেশী সময় ধরে শিক্ষকতা পেশায় থাকার সুবাধে সেই ভদ্রোলকের কথার সাথে দ্বিমত করার তেমন কোন কারণ দেখিনা । আমার এক সাবেক ছাত্র বাংলাদেশের বড় মাপের গামের্ন্টস ব্যবসায়ী । কয়েক বছর আগে তার কারখানার ওয়াশিং প্লান্টের জন্য সুদূর মেক্সিকো হতে তাকে একজন সুপারভাইজার আনতে হয়েছে কারণ দেশে চেষ্টা করেও সে কাউকে নিয়োগ দিতে পারে নি । সনদ নির্ভর শিক্ষার কারণে আমাদের এমন সর্বনাশ ঘটছে । এই কারণেই এই দেশে এক শ্রেণীর প্রতারক সার্টিফিকেট বিক্রির দোকান খুলে বসেছে । আমাদের বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় যদি মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে কাজের বুয়া প্রেরণ বন্ধ করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এদেশের জনগণের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির প্রতি নজর দিত তা হলে পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব ছিল। মধ্য প্রাচ্যের আরব দেশগুলিতে বাংলাদেশের অথবা অন্যান্য দেশের গৃহ কর্মীদের সাথে কী অমানুষিক ব্যবহার করা হয় তা ইউটিউবের বদৌলতে যে কেউ এখন দেখতে পারেন ।
বাংলাদেশের শিক্ষিত যুব শক্তির বেকারত্ব দূর করা অসম্ভব নয় । তার জন্য চাই সমন্বিত উদ্যোগ এবং সঠিক পরিকল্পনা । এই মুহূর্তে দেশে সাড়ে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থী বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রমে আছে । এটি বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার আনুমানিক এক তৃতীয়াংশ । এই সংখ্যাটি যে কোন মাপকাটিতেই একটি তাক লাগানো সংখ্যা । বাংলাদেশের বিশাল জনসংখ্যার ৬৫ ভাগের বয়স ৩৫ বছরের নিচে । এই সাড়ে পাঁচ কোটি শিক্ষার্থীর প্রায় সকলেই এই ৬৫ ভাগের অংশ । নানা মুখী পরিকল্পনার কারণে বাংলাদেশের শিশু হতে শুরু করে যুবক, সকলকে সরকার শিক্ষামুখী করতে সক্ষম হয়েছে । এটি নিঃসন্দেহে সরকারের একটি বিরাট সাফল্য এবং বিশ্বব্যাপী নন্দিত । প্রায় সাত লাখ শিক্ষার্থী এই বছর এইচএসসি পাস করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছে । কয়েক হাজার শিক্ষার্থী হয়ত এই স্তরেই তাদের পড়া লেখার পাট চুকিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চাকুরির সন্ধান করবে । পরিসংখ্যার ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঊনত্রিশ লক্ষের উপর শিক্ষার্থী কলেজে ডিগ্রী (পাস, অনার্স ও মাষ্টার্স) লেভেলে পড়ছে । বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ালেখা করছে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখের উপর (উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সহ) । এই সংখ্যা হতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভূক্ত কলেজের শিক্ষার্থীগুলোকে বাদ দেয়া হয়েছে । এই সব পরিসংখ্যানের সংখ্যা কিছুটা এদিক ওদিক হতে পারে তবে বাস্তবতা হচ্ছে যে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলে পড়–য়ার সংখ্যার ঘাটতি নেই আর প্রতি বছর এই লেভেল হতে পাশ করে বের হয়ে আসার সংখ্যাও বাড়ছে। আর চিন্তার বিষয় হচ্ছে এর একটি বিরাট সংখ্যক ডিগ্রীধারী তরুণ তরুণী বেকার থাকছে কারণ তারা যে বিদ্যার সনদ নিয়ে বের হচ্ছে তার অধিকাংশই কর্মক্ষেত্রে কোন কাজে আসছে না । এই সংখ্যার অর্ধেক যদি কারিগরি বা বৃত্তিমূলক শিক্ষায় আসতো তা হলে তারা এই বেকার ক্লাবের সদস্য হতো না । দক্ষ, কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন মানব সম্পদের চাহিদা বিশ্বব্যাপি কারণ এখন শ্রমঘন অর্থনৈতিক বা উৎপাদন কর্মকান্ডের সব দেশেই মৃত্যু ঘটছে । যন্ত্র বা প্রযুক্তি এখন মানুষের স্থলাভিসিক্ত হচ্ছে । যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পে নিজের গাড়ীতে নিজে পেট্রোল ভরতে হয় । ক্রেতা নিজেই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিল পরিশোধ করে চলে যান । ওয়ালমার্টের মতো বিশাল বিপনি কেন্দ্রে গোটা পঞ্চাশেক সহায়তাদানকারী ছাড়া আর কোন কর্মচারি নেই । ট্রেন চলছে ড্রাইবার ছাড়া । কয়েকটি দেশে চালক ছাড়া টেক্সি ক্যাবও চালু হচ্ছে । এর ফলে একজন কাজ খোঁজা তরুণ তরুণীর প্রচলিত কাজের বাজারটা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে । দেশে বা বিদেশে বাংলাদেশের একজন যুব শ্রেণীর মানুষ যদি সত্যিকার অর্থে অর্থবহ কাজ পেতে চায় তা হলে তাকে কর্মদক্ষতা (ংশরষষ) অর্জন করতে হবে, তার কোন বিকল্প নেই । এই কর্মদক্ষতার মধ্যে আছে চলন সই ইংরেজি জ্ঞান, কম্পিউটার ব্যবহার জনিত সাধারণ ধারণা, আধুনিক সাধারণ জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পর্কে চলতি ধারণা, কিছুটা সৃজনশীলতা আর নতুন জ্ঞান আহরণের আগ্রহ । বাংলাদেশের তরুণ তরুণীদের মাঝে এর প্রত্যেকটির প্রচন্ড ঘাটতি আছে । পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা নিতে গিয়ে এটি আমার প্রত্যক্ষ উপলব্দি । চাকুরি খোঁজার পরিবর্তে চেষ্টা করলেই যে একজন উদ্যোক্তা হওয়া যায় তা আমাদের যুব সমাজ কদাচিৎ চিন্তা করে ।
বিশাল তরুণ প্রজন্ম হচ্ছে বাংলাদেশের ঈর্ষণীয় সম্ভাবনাময় সম্পদ । একে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশের সামগ্রিক চেহারা পাল্টে যেতে পারে স্বল্প সময়ে । এর জন্য চাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন । একজন এমবিএ পাশ করা গ্রাজুয়েট যদি একটি সমূদ্র বন্দর কী ভাবে কাজ করে তা না জানেন সেই ডিগ্রীর তেমন একটা মূল্য নেই । অর্থনীতিতে পাশ করা অনেক গ্র্যাজুয়েট সরকারি ব্যয় বাড়লে তা মূদ্রাস্ফিতিতে কী প্রভাব ফেলবে তা বলতে পারেন না । বাংলাদেশের তৈরী পোষাক শিল্পের এমন রমরমা অবস্থা হয়ত এক সময় থাকবে না । তখন কোন কোন খাত গুরুত্ব পাবে তা খুব কম তরুণ তরুণীই জানেন । নিজ দেশ সম্পর্কে অজ্ঞতা অবিশ্বাস্য । একটি অত্যন্ত দামি স্কুলের শিক্ষার্থীদের ধান দেখতে কেমন হয় তা দেখানোর জন্য শিশুরা ছোট শিশিতে মায়ের কাছ হতে ধান নিয়ে যায় । বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের নাম বলতে গেলে প্রথমে বলে সিডনি অপেরা হাউজ অথবা লন্ডনের টাউয়ার ব্রীজ । স্কুলে তাদের তাই শেখানো হয় । কারণ ব্যবহৃত বই ওই সব দেশ হতে আসে । স্কুল হতে বিশ্ববিদ্যালয় কোন পর্যায়ের শিক্ষার সাথে সাধারণ জন জীবনের সম্পর্ক নেই বললেই চলে । এর জন্য শিক্ষার্থীরেদও কোন ভাবেই দায়ি নয় । এই দায় আমাদেও শিক্ষা ব্যবস্থার । এই ধরণের শিক্ষা বর্তমান প্রতিযোগিতা মূলক বিশ্বে অচল । সে কারণেই বাংলাদেশে এত শিক্ষিত বেকার । এই পরিস্থিতি হতে রেহায় পেতে হলে সারা দেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ছাড়া সেই শিক্ষার প্রতি পড়–য়াদের আকৃষ্ট করতে হবে । ক্রম পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সাথে তাদের পরিচিত করার জন্য চাই প্রয়োজনীয় বরাদ্দ । সরকার দেশে অনেকগুলি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে । সেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষা দেয়া ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে শিক্ষা দেয়া আপাততঃ বন্ধ করতে হবে । একজন শিক্ষার্থীকে যদি কর্ম বান্ধব প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা দেয়া যায় তা হলে অনেকেই বাপের হোটেলে খাওয়া বন্ধ করতে পারবে । একজন দক্ষ কারিগর বিশ্বেও যে কোন দেশেই সামাদৃত । এমবিএ বা এমএ পাশ করে নিউ ইয়র্কের জুতার দোকানে সেলসম্যানের কাজ করার মধ্যে তেমন কোন বাহাদুরি নেই । অনেকেই হয়ত জানেন না বিদেশে একজন এমএ পাশ গ্র্যাজুয়েটের চেয়ে একজন মোটর মিস্ত্রি চার থেকে পাঁচ গুণ বেশী আয় করেন । একই সাথে আমাদের সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গিটাও পাল্টাতে হবে । বিয়ের বাজারে শুধু একজন এমবিএ বা এমএ পাশের কদর থাকবে আর অন্যদের কদর তেমন একটা থাকবে না তেমন দৃষ্টিভঙ্গির আসু পরিবর্তন প্রয়োজন । মাইক্রোসফ্ট-এর প্রতিষ্ঠাতো একজন হাই স্কুল পাশ । তার অধ্যবসায় তাকে বিশ্ব নন্দিত করেছে ।

লেখক: গবেষক ও বিশ্লেষক । অক্টোবর ২৫, ২০১৫

@

@

@

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

@

[প্রথমপাতা]

@

@

@

লেখকের আগের লেখাঃ

 [......লেখক আর্কাইভ]