প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

 

শেখ হাসিনার তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বছর


প্রফেসর আবদুল মান্নান
 


 

৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি হবে । গত বছর এই দিনটিকে ঘিরে বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোট দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল । পেট্রোল বোমায় নৃশংসভাবে দগ্ধ হয়ে সেই যুদ্ধে কম করে হলেও দেড়শত নিরাপরাধ মানুষের জীবনহানি হয়েছিল । রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদের হানি হয়েছিল কয়েক হাজার কোটি টাকার । শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে এটি ছিল জামায়াত-বিএনপি জোটের দ্বিতীয় দফার যুদ্ধ । প্রথমটি হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে । বেগম জিয়া ও তার নেতৃত্বাধীন জোটের দাবি ছিল দশম সংসদ নির্বাচন দেশের সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক বাতিলকৃত ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ’ সরকারের অধীনে হতে হবে । আদালতের রায় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়ার পর দশম সংসদের নির্বাচন সংবিধানের আওতায় হবে তাই স্বাভাবিক ছিল । কিন্তু বেগম জিয়া আর তার নেতৃত্বে থাকা জোট সংবিধানের বাধ্যবাধকতা অস্বীকার করাতে সংঘাত অনিবার্য হয়ে পরেছিল । বেগম জিয়ার সেই সংঘাতের পথকে আলোকিত করেছিল দেশের এক শ্রেনির সুশীল ব্যক্তি, কিছু মিডিয়া আর বেশি কিছু বিদেশি রাষ্ট্র । তাদের কাছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার চেয়ে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের মদদে বিএনপি ক্ষমতায় থাকা অনেক বেশি কাঙ্খিত ছিল । সেই নির্বাচন শেষ পর্যন্ত হবে কী না তা নিয়ে আওয়ামী লীগের কিছু নেতার মধ্যেও সন্দেহ ছিল । বলতে হয় এই নেতাদের মাঝে ঈমানের ঘাটতি ছিল এবং শেখ হাসিনার ওপর আস্থার অভাব ছিল । শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও লক্ষ্যে অবিচল থাকার কারণে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত জোট শুধু প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি দেশে পেট্রোল বোমা ও আগুন যুদ্ধ শুরু করে দেশের জানমালের প্রভূত ক্ষতি করেছিল । দেশ অনেকাংশে একাত্তরে ফিরে গিয়েছিল । কোন একটি নির্বাচনে অংশ না নেয়া বাংলাদেশে নতুন কিছু নয় কিন্তু তাকে কেন্দ্র করে দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা ছিল একেবারেই নতুন । ৫ জানুয়ারি এক দমবন্ধ হওয়া পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন চৌদ্দ দল নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয় এবং ১২ জানুয়ারি ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেন । এই জানুয়ারির ৫ তারিখ সেই নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি হবে ।
কেমন গেল এই দুই বছর? অনেক বিচক্ষণ ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী বলেছিলেন নির্বাচন হলে কী হবে শেখ হাসিনার সরকার এই দফায় এক বছরও টিকবে না । সৌভাগ্য শেখ হাসিনার, সৌভাগ্য দেশের মানুষের শত বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার সরকার শুধু টিকেই যায় নি দেশকে অগ্রগতির পথে অনেক দূর নিয়ে গেছে । দেশে সুশাসনের মাত্রা আরো একটু ভাল হলে, দুর্নীতির লাগামটা শক্ত করে টেনে ধরতে পারলে আর ছাত্রলীগ নামধারী কিছু দুর্র্বৃত্তের বেপরোয়া অপকর্মকে রোধ করা গেলে শেখ হাসিনার সরকারের গত এক বছরের কর্মকা-ের জন্য তাঁকে গোল্ডন এ প্লাস গ্রেড দেওয়া যেত । তবে যারা শেখ হাসিনার পরিবর্তে বেগম জিয়া অথবা অন্য কোন তৃতীয় শক্তিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে অনেক বেশি আগ্রহী তারা আমার মতের সাথে একমত হবেন না । তারা বলবেন সব বুঝলাম কিন্তু গণতন্ত্র কই ? আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতা হতে দূরে রাখার যে কোন অসাংবিধানিক পন্থা-পদ্ধতিই হচ্ছে তাদের কাছে গণতন্ত্র । বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়ার ক্ষমতা দখলকে তারা গণতন্ত্র মনে করেন । নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সাত্তারকে হঠিয়ে এরশাদের ক্ষমতা দখলও তাদের জন্য গণতন্ত্র । একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী মাওলারা মান্নান, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ আর সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে মন্ত্রী সভায় ঠাঁই করে দেয়াটাকে তারা গণতন্ত্র জ্ঞান করেন । তবে নির্মোহভাবে চিন্তা করলে বলতে হয় শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনার বৃহষ্পতি গত একবছর ছিল একেবারে তুঙ্গে । শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, শেখ হাসিনাকে অনেকেই উন্নয়নশীল দেশের একজন রোল মডেল নেতা হিসেবে মনে করেন । তাঁর সরকারের অর্জনের কথা এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও নিজ বক্তৃতায় নিয়মিত তুলে ধরেন ।
পদ্মাসেতুর অর্থায়নে তেলেসমাতি কান্ড-কারখানার পর সে কী চারিদিকে ছি ছি শুরু হয়ে গেল । শেখ হাসিনার সরকার দেশের এমন সর্বনাশ না করলে কী হতো না ? আমার এক সিনিয়র সহকর্মী, একেবারে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অবসর নেওয়া মাথায় চুল কলপ করা অধ্যাপক একদিন শেখ হাসিনার চৌদ্দগোষ্টী উদ্ধার করে বলেন পদ্মা সেতুর সব টাকা মেরে দেবে এ কেমন কথা । তাকে বুঝানোর চেষ্টা করি কথাটা ঠিক নয় । কোন টাকাই যখন দেওয়া হয় নি শেখ হাসিনা মারার জন্য টাকা পেলেন কোথায় ? কে শোনে কার কথা । বলেন, কেন দেখেন নি দেশের একটি প্রধান শ্রেনীর দৈনিক এই বিষয়ে প্রতিদিন ধারাবাহিক ছাপছে । ব্যর্থ হই তাকে বুঝাতে সংবাদ মাধ্যম সব সময় সত্য কথা বলে না । আর দশটা পেশার মতো সংবাদপত্র জগতেও ধান্ধাবাজ আছে । না, আমার সেই সহকর্মীকে কিছুতেই বোঝানো গেল না । অগত্যা হাল ছেড়ে দেই । শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংকের পদ্মাসেতু নিয়ে এই সব বুজরুকি দেখে বিরক্ত হয়ে ঘোষণা করলেন পদ্মাসেতু হবে এবং তা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নেই হবে । বাংলাদেশের মানুষ যদি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে পারেন তা হলে একটি পদ্মা সেতু কেন তৈরি করতে পারবেন না ? এক বর্ষীয়াণ সাংবাদিক হাসপাতালের বেড হতে তরাক করে লাফ দিয়ে উঠে ছুঠলেন এক টিভি চ্যানেলে । সকলে সড়ে দঁড়ালেন । হাজার হলেও মুরুব্বি । মধ্যরাতের টক-শোর নির্ধারিত আলোচককে সরিয়ে নিজে তার আসন দখল করে ঘোষণা করলেন শেখ হাসিনা বাঁশের সাঁকো আর পদ্মাসেতুর মধ্যে তফাত বুঝলো না । শেখ হাসিনা ঠিকই বুঝেছিলেন । নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু এখন বাস্তব । প্রায় ২৭ ভাগ কাজ শেষ । প্রধানমন্ত্রী সেতুর মূল কাজের উদ্বোধন করলেন গত ১২ ডিসেম্বর । দুর্ভাগ্য সেই সাংবাদিক এখন প্রয়াত । সেই বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট বাঙালি কৌশিক বসু সপ্তাহ দু’এক আগে উড়ে এলেন ঢাকায় । মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীবর্গ আর অর্থনীতিবিদদের সাথে । সাক্ষাৎকার দিলেন একটি প্রথম শ্রেণির দৈনিককে সঙ্গে । অকপটে বললেন ‘একটা বিষয় আছে যে নিজেদের লোকেরা অনেক বেশি সমালোচনা করেন । ...এর মাধ্যমে সরকার বা নীতি নির্ধারকেরা অনেক বেশি কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে বাধ্য হয় । ...আমার ওখানে (বিশ্বব্যাংক) প্রসপেক্টাস গ্রুপ নামে একটি বিভাগ আছে । তাদের ডেকে আমি বাংলাদেশের তথ্য-উপাত্ত ঘাঁটছিলাম । তারাও আমাকে জানালো যে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এখন খুব কম জায়গাতেই হচ্ছে । দক্ষিণ আমেরিকার প্রবৃদ্ধি এখন ১ শতাংশের কম । জাপানে তৃতীয় প্রান্তিকে নেগিটিভ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ...বিশ্বব্যাপী এ রকম এক মন্দার সময় (বাংলাদেশের) সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অবশ্যই উল্লেখ করার মতো । ... আমাদের (বিশ্বব্যাংকের) প্রাক্কলন হচ্ছে আগামীবার বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, যা হবে চীনের প্রবৃদ্ধির সমান । পাঁচ সাত বছর আগেও ভাবা যেত না চীনের সাথে পাল্লা দেবে বাংলাদেশ’ । বলা বাহুল্য ব্যক্তিটি যখন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, অবধারিতভাবে এসে গেল পদ্মাসেতু প্রসঙ্গ । কৌশিক বসু বললেন ‘কী শিক্ষা পেলাম জানি না । তবে এইটুকু জানি, ইতিহাস যা-ই হোক না কেন, হতে পারে ওই ইতিহাসটির কারণেই ফল যেটা এসেছে, সেটা ভাল হয়েছে । ...নিজ থেকে পদ্মাসেতু করার কথা কিন্তু সাত-আট বছর আগে ভাবাও যেত না’ । কৌশিক বসু আরও বলেন ‘উন্নয়নের সোপানে বাংলাদেশ তর তর করে এগিয়ে যাচ্ছে’ । কৌশিক বসুর মতে ‘আাজকের বাংলাদেশ পুরোটাই সাফল্যের গল্প।’ অবশ্য বিএনপি প্রধান বেগম জিয়া মনে করেন সরকার উন্নয়নের নামে শুধু কমিশন খাচ্ছে ।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণের কর্মযজ্ঞ শুরু করা ছাড়া গত একবছরে শেখ হাসিনার সরকারের একটি বড় সাফল্য ছিল জঙ্গি দমনে সরকারের শক্ত অবস্থান যদিও বছরের শেষের দিকে এসে জামায়াত বংশোদ্ভুত জঙ্গিরা কয়েকজন বিদেশি হত্যা করে, শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে হামলা করে কাদিয়ানি মসজিদে আত্মঘাতী বোমা ফাটিয়ে সরকারের এই কর্মসূচিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছে । বাংলাদেশের কওমি মাদ্রাসাগুলি জঙ্গি তৈরির কারখানা হিসেবে এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত । সুযোগ পেলে তারা কী করতে পারে হেফাজত তা ২০১৩ সালের মে মাসে দেখিয়ে দিয়েছে । এখন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সময় হয়েছে । ওলামা লীগ নামক একটি সংগঠন মাঝে মধ্যে চরম সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয় । শুনেছি তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই । তা যদি হবে কোথা হতে আসে তাদের এই আস্ফালন করার শক্তি ? ৬৬ বছর পর হাজার হাজার রাষ্ট্রহীন ছিটমহল বাসীকে শেখ হাসিনা একটা দেশ দিয়েছেন । তাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই । কেউ কী ভাবতে পেরেছিল রূপপুরে দেশের প্রথম পারনবিক কেন্দ্র হবে ? হচ্ছে তো । নানা আন্তর্র্জাতিক চাপ মোকাবেলা করে শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে তিনজন একাত্তরের ঘাতকের ফাঁসির রায় কার্যকর করেছেন । এর জন্য তাঁর অবদান যদি স্বীকার করা না হয় তা হলে বুঝতে হবে বাংলাদেশকে এখনো অনেকে মনেপ্রাণে স্বীকার করে নিতে পারেন নি । গত এক বছরের বাংলাদেশ সময়ের আগেই উঠে গেল নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে । সরকারের তহবিলে এখন জমা আছে ২৭.৩০ বিলিয়ন ডলার । এটি সর্বকালের রেকর্ড । বিগত বছরের আইএমএফ’র দেওয়া তথ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সিএনএন-মানি প্রবৃদ্ধি ও আকারের দিক থেকে শীর্ষ ১০টি দেশের তালিকা তৈরি করে বলেছে এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় ।
বাংলাদেশের জন্মের সময় বিশ্বের যে সকল বাঘা বাঘা অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন বাংলাদেশ টিকে থাকলে বিশ্বের যে কোন দেশ টিকে থাকবে তারা এখন নড়েচড়ে বসে বলছে বাংলাদেশ সত্যিকারের অর্থে একটি রহস্যময় অর্থনীতির দেশে । অর্থনীতিবিদরা সাধারণত সংশয়বাদী হন । সেই অর্থনীতিবিদরাই যদি বলে বাংলাদেশ আগামীতে হয়ে উঠবে এশিয়ার একটি উদীয়মান বাঘ তখন সেই সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে প্রশংসা না করলে তো কার্পণ্য হবে । গত ২৩ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ১৮ বছরের বেশী বয়সী ২ হাজার ৫৫০ জন নারী-পুরুষের ওপর এক জরিপ চালায় মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) । সেখানে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা সরকারের থেকেও এক শতাংশ বেশি । সরকারের জনপ্রিয়তা যেখানে ৬৬ শতাংশ সেখানে প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা ৬৭ শতাংশ । বলতে হয় শত বাধা, ষড়যন্ত্র ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, বিচক্ষণতা আর দূরদর্শিতা তাঁকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে । বর্তমানে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে অবস্থানে আছেন সেখান হতে তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না যদি তিনি দু’একটি বিষয়ে মনোযোগী হন । প্রথমত বাংলাদেশের আমলাতন্ত্রে এখনো একটি গোষ্ঠী রয়ে গেছে যারা সব সময় প্রধানমন্ত্রীকে সঠিক পরামর্শ দেন না । এই সব আমলা নিজেদের বাইরে কখনও চিন্তা করতে পারেন না । এমন আমলাতন্ত্র দিয়ে সুশাসন কঠিন কাজ । দুর্নীতি বর্তমান সরকারের সময়কালে কমেছে সত্য তবে এখনো যতটুকু আছে তা নেহাত কম নয় । তা যদি না হবে তা হলে দেশের বাইরে হাজার হাজার কোটি টাকা কীভাবে পাচার হয় ? যে কোন সময়ের তুলনায় গত এক বছরের শেখ হাসিনার সরকারের অর্জন নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয় । তবে সেই অর্জনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ খেয়ে ফেলছে দলের কিছু অপরিণামদর্শী নেতা কর্মী আর ছাত্রলীগ নামধারী কিছু দুর্বৃত্ত । এই সবের লাগাম টেনে ধরতে পারলে আওয়ামী লীগকে বেগম জিয়া বা বিএনপিকে নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না । আপাতত বিএনপি একটি মৃত ঘোড়া । তবে শেখ হাসিনা তথা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালু থাকবে । বেগম জিয়া ঘোষণা করেছেন ‘খুব শিগগির সরকার পরিবর্তন হবে । আপনারা অপেক্ষায় থাকুন’ । তা হলে ঢাকা ল-নে ষড়যন্ত্রের চাকা কী ওভারটাইম খাটছে ? সেই ব্যাপারে শেখ হাসিনা হয়তো শঙ্কিত নন । কিন্তু তাই বলে অসতর্ক হলেতো হবে না । আবার দেখতে হবে নিরাপত্তার অজুহাতে তাঁকে যেন জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলা না হয় । শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ূ কামনা করি ।

লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক । জানুয়ারি ৪, ২০১৬

 

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

 [......লেখক আর্কাইভ]