|
||||||||||||||||||
@ @ @ @ @ |
@ ভোটের আগে জোটের রাজনীতি @
@ WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. @ |
@ @ @ লেখকের আগের লেখাঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় নিজের জীবনকে নিয়তির উপর ছেড়ে দেবেন না ক্ষুব্ধ, লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্ö @ @ @ @ |
যে সব দেশে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ পরিচালনার জন্য সরকার গঠিত হয় সেই সব দেশে নির্বাচনের সময় হলে বিভিন্ন ধরণের প্রস্তুতি চোখে পরে । এই প্রস্তুতি একেক দেশে একেক রকম হয়ে থাকে । যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির সরকার । সেই দেশের রাজনীতি মূলতঃ রিপাবলিকান আর ডেমোক্রেট দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ । রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় দুই একটি নূতন দলেরও সমাহার ঘটে, যেমন গ্রীণ পার্টি বা টি পার্টি । যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বেশ জটিল যা সে দেশের অনেক ভোটাররাও বুঝতে পারেন না । একজন প্রার্থী বেশী ভোটারের সমর্থন পেয়েও হেরে যেতে পারেন । ডনাল্ড ট্রাম্পের তুলনায় হিলারি ক্লিন্টন প্রায় ত্রিশ লক্ষ ভোট বেশী পেয়েও পরাজিত হয়েছেন । দলের প্রার্থী কে হবেন তা ঠিক করতে আগে দলের নিবন্ধিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থকদের সমর্থন প্রয়োজন হয় । এটাকে বলে প্রাইমারি । দলের সমর্থকরা যদি মনে করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজনকে মনোনয়ন দিবে তাহলে তিনিই মনোনয়ন পাবেন এবং শেষতক নির্বাচনে জিতে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেবেন । যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থায় কোন জোটের অস্থিত্ব নেই । আবার আটলান্টিকের এপারে নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন । সেখানে অধিকাংশ দেশে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু আছে । কোন কোন দেশে নামকাওয়াস্তে রাজতন্ত্রও আছে । যেমন বৃটেন বা স্পেন । সেখানে সংসদ বা পার্লামেন্ট প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করে। পার্লামেন্টের সদস্যরা সাধারণ ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত হয় যেমনটি হয় আমাদের দেশে বা ভারতবর্ষে । প্রধানমন্ত্রী শপথ গ্রহণের পর মন্ত্রীসভা গঠন করেন । বৃটেনে যদিও মূল দল টোরি আর লেবার পার্টি সেখানে আরো একাধিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে । কোন একটি দল যদি সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায় তা হলে তারা অন্য দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে পারে । এটি কোয়ালিশন সরকার । বর্তমানে বৃটেনে থেরেসা মেfর নেতৃত্বে যে সরকার আছে তা একটি কোয়ালিশন সরকার । এই রকম সরকারের বিপদ হচ্ছে এটা অনেক সময় বেশ নড়বড় হয় কারণ কোন দল যদি সমর্থন প্রত্যাহার এবং মূল দল যদি সংসদে সংখ্যাগরিষ্টতা হারায় তা হলে যে কোন সময় সরকারের পতন হতে পারে । অন্যদিকে শরীক দলগুলো সরকারকে নানা ভাবে ব্ল্যাক মেইলও করতে পারে । ফ্রান্স, ইতালি আর জাপানে এই রকম পরিস্থিতি আগে বেশ হোত । ভারতে ১৯৭৭ সালের পর সব সরকারই কোয়ালিশন সরকার ছিল । বর্তমান মোদি সরকারকে যদিও এনডিএfর (ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স) কোয়ালিশন সরকার বলা হয় বাস্তবে ভারতীয় লোকসভায় মোদির বিজেপিfর একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা আছে ।
দেশ ভাগের পর উপমহাদেশে ১৯৫৪ সনে প্রথমবারের মতো পূর্ব বাংলায় পাকিস্তানের জন্মদাতা মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনি জোট বা যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয় । এই জোটে ছিল আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক পার্টি, গণতন্ত্রী দল আর নেজামে ইসলাম । জোটের নেতৃত্বে ছিলেন এ কে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানী আর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি । এই জোটকে বলা হতো যুক্তফ্রন্ট । এই যুক্তফ্রন্ট সাধারণ মানুষের কাছে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল । নির্বাচনের সময় যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার রচিত হয়েছিল একুশ দফা ভিত্তিক যার প্রতিটি দফাই ছিল বাঙালির স্বার্থ সংরক্ষণ । সাধারণ মানুষের কাছে এটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী কখনো বাঙালিদের স্বার্থ রক্ষা করবে না । সেই নির্বাচনে পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক পরিষদে মাত্র নয়টি সিটে জয়ী হয়ে সেই যে মুসলিম লীগ ধরাশায়ী হয়েছিল আর কখনো উঠে দাঁড়াতে পারে নি । ১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে আর কোন সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নি । ১৯৭০ এর নির্বাচনে কোন রকমের জোট ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় পরিষদের মোট ভোটের ৭৫ ভাগ ভোট পেয়ে তিনশত আসনের মধ্যে ১৬৭ টি আসনে জয়ী হয়ে অবিভক্ত পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল । সেই নির্বাচন বয়কট করেছিল মাওলানা ভাসানী নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বা ন্যাপ । তিনি ভোটের আগে ভাত চাই শ্লোগান তুলেছিলেন । আওয়ামী লীগের বাইরে ময়মনসিংহ হতে পিডিপি প্রার্থী নূরুল আমিন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজা ত্রিদিব রায় বিজয়ী হয়েছিলেন । এটিই ছিল জিন্নাহ্র পাকিস্তানের প্রথম ও সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচন ।
১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালের সংবিধানের আওতায় অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়েছিল । ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বিএনপিfর প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থাকে তছনছ করেছিলেন । তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান থেকে eহাঁf eনাf ভোট নামক তামাশা করে eহাf বাক্সে ৯৯ শতাংশ ভোটের ব্যবস্থা করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছিলেন । সেনা ছাউনিতে বিএনপির জন্মলাভের পর ১৯৭৯ সালে জিয়া একটি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে ৪১.১৬ শতাংশ ভোটের ব্যবস্থা করে বিএনপিকে ২০৭টি আসন পাইয়ে দেন । সেই সময় বাংলাদেশ প্রথম মিডিয়া ক্যূ নামক শব্দ যুগলের সাথে পরিচিত হয় । চট্টগ্রাম সহ অনেক আসনে বিএনপিfর প্রার্থীদের ভোট গণনা এক ঘন্টার মধ্যে শেষ হয় এবং তাদের অনেক আসনে লক্ষাধিক ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় । এরপর ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দুটি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । প্রথমটি বিএনপি বয়কট করে আর দ্বিতীয়টি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই বয়কট করে । এই নির্বাচনকে বৈধতা দিতে জাসদের আ স মা আবদুর রবের নেতৃত্বে বাহাত্তরটি নাম সর্বস্ব দলের জোট করে তাদের জাতীয় পার্টির eবিরুদ্ধেf সরকারি খরচে নির্বাচনে নামানো হয় । ১৯৮১ সালে জিয়ার মৃত্যুর পর নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় । ততদিন বঙ্গবন্ধু কন্যা ছয় বছরের বেশী সময় প্রবাসে কাটিয়ে দেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন । সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে ডঃ কামাল হোসেন বিচারপতি সাত্তারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরে যান । সেই নির্বাচনে প্রথম বারের মতো ডঃ কামাল হেসেনকে আওয়ামী লীগ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে থাকা বাম দল গুলো জোটবদ্ধ ভাবে সমর্থন যোগায় । এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো জোটবদ্ধ হতে থাকে । আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন পনের দল, বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন সাত দল আর বাম পন্থিদের নিয়ে পাঁচ দল । ১৯৯০ সালে এরশাদের পতন হলে ১৯৯১ সালের নির্বাচন জোট বদ্ধভাবে না হলেও বিএনপি জামায়াতের সাথে সমঝোতা করে অপ্রত্যাশিত ভাবে নির্বাচনে বিজয় লাভ করে । বিএনপি ভোট পেয়েছিল ৩০.৮১ শতাংশ আর আসন পেয়েছিল ১৪০টি । জামায়াতের সমর্থন নিয়ে সেইবার তারা সরকার গঠন করেছিল । অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ৩০.০৮ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়ে সংসদে ৮৮টি আসনে বিজয়ী হয়েছিল । এটি বলতে হয় সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপিfর চাতুর্যের কাছে হেরে যায় । বিএনপি প্রমাণ করে নির্বচনে সূক্ষ্ম কৌশল প্রণয়নে আওয়ামী লীগ তাদের কাছে তেমন কোন ফ্যাক্টর নয় । এই কাজটি তারা ২০০১ সালের নির্বাচনেও করেছে । সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অতিমাত্রায় আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগেছে । বুঝতেই পারেনি তাদের শাসনামলে সামরিক-বেসামরিক আমলাদের এক বিরাট অংশ প্রতিপক্ষ শিবিরের আজ্ঞাবহ হয়ে গিয়েছিল ।
২০০৬ এর নির্বচনের আগে দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে আর একধরণের জোটের আবির্ভাব দেখা যায় । সেই বছর সেপ্টম্বর মাসে গুলশানের একটি কমিউনিটি সেন্টারে দেশের বড় মাপের একদল সুশীল eযোগ্য প্রার্থী আন্দোলনf এর ব্যানারে একজোট হয় । যদিও তারা বলে তাদের এই মোর্চা আসন্ন নির্বাচনে যাতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো eযোগ্যf প্রার্থী দাঁড় করায় তবে তারা একজোট হয়েছিল কী ভাবে eচাষা ভূষাfর দল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য বিজয়কে ঠেকানো যায় সেই উদ্দেশ্যে । এক এগারর পর ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের ছত্রছায়ায় এদের কয়েকজন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে বলে বাংলাদেশের রাজনীতি ভাল লোকের জন্য নয় । দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বেগম জিয়া জামায়াতকে নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে যেই যুদ্ধের সূচনা করেছিলেন এই সুশীলদের অনেকেই নানা ভাবে তখন বেগম জিয়ার কর্মকান্ডে উৎসাহ যোগায় । একমাত্র শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে তাদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়ে যায় ।
আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে আবারো জোটের রাজনীতি শুরু হয়েছে । এই বারও এই সব জোটের প্রধান উদ্দেশ্য মূলতঃ মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে কীভাবে দূর্বল করা যায় সেই ব্যবস্থা করা । এইবার নানা ধরণের জোটের আবির্ভাবের আলামত দেখা যাচ্ছে । যদিও জোটের উদ্যোক্তারা বলছেন তৃতীয় ধারার রাজনীতি জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য তাদের জোট বদ্ধ হওয়া কিন্তু সেই তৃতীয় ধারার রাজনীতি যে কী তা পরিষ্কার নয় কারো কাছে । এরশাদ ইতোমধ্যে ৫৮টি নাম সর্বস্ব দলকে তার পিছনে কাতার বন্দী করেছেন যাদের মাত্র দুfটির নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন আছে । চরের পীরও ইসলাম পন্থি কিছু দলকে নিয়ে মোর্চা গঠনের চেষ্টা করছেন । সিপিবি, বাসদ ও বামমোর্চা মিলে eবিকল্প শক্তিf গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে তবে তাদের শক্তির উৎস কী তা জনগণের কাছে এখনো পরিষ্কার নয়। সিপিবি পাকিস্তান আমলে নিষিদ্ধ ছিল । বঙ্গবন্ধু তাদের স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন । ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচন জামায়াত-বিএনপিfর সাথে সিপিবিও বয়কট করে এই বলে নির্বাচনের পরিবেশ নেই । বাসদ ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে বর্তমানে নাম আর নেতা সবর্স্ব দলে পরিণত হয়েছে । বামমোর্চা কী তা জানতে রীতিমত গবেষণা করতে হবে । জামায়াত জানে দলীয় ব্যানারে তাদের এই দফায় আর নির্বাচন করা হবে না । সুতরাং তারা তাদের প্রধান মিত্র বিএনপিfর সাথেই চলে যাওয়া ভাল বলে চিন্তা করেছে। যদি বিএনপি আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জামাতের ভাগ্যে কিছু আসন জুটতেই পারে । আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বেও একটি জোট গঠনের চেষ্টা হচ্ছে । প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি বেশ কিছু পরিচিত সুশীল আর রাজনৈতিক নেতাদেও নিয়ে তার বাসায় রাতের খাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছিলেন । পুলিশ গিয়ে তা ভন্ডুল করে দেয় । এটি অযথা বাড়াবাড়ি । যারা সেদিন সেখানে সমবেত হয়েছিলেন তারা কেউই একক বা জোটগত ভাবে আসন্ন নির্বাচনে কোন ফ্যাক্টর নয় । সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এদের প্রায় সকলেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে । তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যারাই মোর্চা বা জোট গঠনের পরিকল্পনা করছেন তাদের উদ্দেশ্য মূলত একটাই, আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষের হাতকে শক্তিশালী করা । ১৯৯১ সালের নির্বাচনে তা দেখা গিয়েছিল । নির্বাচনের প্রাক্কালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পনের দলীয় জোট হতে বের হয়ে আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে বাকশাল ও ছোটখাট কিছু দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে । অবাক করার বিষয় হচ্ছে সেই নির্বাচনে আবদুর রাজ্জাক শরিয়তপুর হতে নৌকা মার্কায় নির্বাচনে বিজয়ী হয় আর তার নিজের দল বা জোটের কাছে আওয়ামী লীগ ৪২টি আসন ছেড়ে দেওয়ার মতো এক আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়ে একটি বাদে সব গুলোতে তিনশত হতে দুই হাজার ভেটোর ব্যবধানে হেরে যায় । নির্বাচনের আগে নির্বাচনি জোট হওয়া খারাপ কিছু নয় । তবে এই সব জোটের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সব সময় সজাগ থাকতে হবে । জোটের সাথে নোটও আসে । আগে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই নোট সরবরাহ করতো । বর্তমানে ইসরাইলের মোসাদ তাদের সাথে যোগ দেওয়ার আলামত ইতোমধ্যে দেখা গেছে ।
রোববার নির্বাচন কমিশন আসন্ন সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে । এর আগের দিন বেগম জিয়া লন্ডনের উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছেন । সেখানে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সময় কাটাবেন এবং চিকিৎসা করাবেন বলে দলীয় সূত্র বলছে । তবে কখন ফিরবেন সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু বলেন নি । তাঁর বিরুদ্ধে আনিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা শেষ পর্যায়ে । তাঁর অবর্তমানে যদি মামলার রায় হয়ে যায় এবং তাতে যদি তিনি সাজাপ্রাপ্ত হন তা হলে দলে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে । যাওয়ার সময় তিনি দলের দায়িত্ব কাউকে দিয়ে যান নি । একটি বড় রাজনৈতিক দলের কান্ডারি দীর্ঘদিন স্বদেশে অনুপস্থিত থাকলে দলের জন্য ক্ষতিকর । বিএনপির ক্ষেত্রে এটি আরো বেশী সত্য কারণ দলটি বেগম জিয়া আর তারেক জিয়া কেন্দ্রিক । নির্বাচনি রোড ম্যাপ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন । বিএনপিfর মহাসচিব মির্জা ফখরুল কিছুটা ব্যতিক্রম । তিনি বলেছেন তিনি রোড দেখতে পাচ্ছেন না । রোড না দেখে রাজনীতির গাড়ী চালালে ভয়াবহ দূর্ঘটনা ঘটতে পারে যা কাম্য নয় । সকল মহলকেই চারিদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে ।
লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক । জুলাই ১৮, ২০১৭
@
@