|
||||||||||||||||||
|
হঠাৎ সাগরকন্যা শেখ হাসিনা
WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
|
লেখকের আগের লেখাঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় নিজের জীবনকে নিয়তির উপর ছেড়ে দেবেন না ক্ষুব্ধ, লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্ö
|
ঢাকা বিমানবন্দরে বসে টের পেলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের বোয়িং ৭৩৭ বিমান ‘মেঘদূত’ কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে কারণ আমাদের বিমানের এক কর্মকর্তা এসে জানালেন প্রায় দু’ঘন্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষার পালা এখন শেষ হচ্ছে কারণ প্রধানমন্ত্রীর বিমান কক্সবাজার পৌঁছেছে । আমাদের বিমান ছাড়তে দেরী হবে তা তাদের কর্মকর্তারা মোবাইলে মেসেজ করে আগেই জানিয়েছিলেন । বেসরকারি সেবা খাত এখনো তাদের খদ্দেরদের কিছুটা সুবিধাতো দিয়েই থাকে । দেরি দেখে আমাদের সহযাত্রীদের অনেকেই একটু বিরক্ত হচ্ছিল কারণ তারাতো সপরিবারে কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রমোদ ভ্রমণে । আমার কয়েকজন পরিচিতজন প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফরকে সফল করতে দু’একদিন আগেই কক্সবাজার পৌঁছে গেছেন । তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছের মানুষ । আমার কক্সবাজার যাওয়াটা পেশাগত কাজে । বিরক্ত সহযাত্রীদের বুঝানোর চেষ্টা করি কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রথমবার একটি বোয়িং বিমান অবতরণ করছে, তাও আবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে । দেরীতো এক আধটু হতেই পারে । তারপরও তাদের বিরক্তি কাটে না । কক্সবাজার বিমানবন্দর বৃটিশরা তৈরী করেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় । বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধ অনেক সময় কক্সবাজার হতে পরিচালিত হতো । বার্মাফ্রন্ট খ্যাত জেনারেল সিøম (ঝষরস) কক্সবাজারেই তার ফরওয়ার্ড বেস স্থাপন করেছিল । সে সময় তিনি তাঁর সদর দপ্তর কুমিল্লা হতে কক্সবাজার আসতেন । কক্সবাজার ছাড়াও চট্টগ্রামের হাটহাজারি, ঢুলাহাজরা সহ আরো কয়েকটি অঞ্চলে ছোট ছোট বিমানবন্দর স্থাপন করা হয়েছিল বৃটিশ সেনা বাহিনীর জন্য। সবগুলোই বৃটিশ সামরিক বাহিনীর জন্য । কক্সবাজার বিমানবন্দর দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ছিল । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক আগে আজকের কক্সবাজারে (তখন এর নাম ছিল পালন্কি) ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একজন ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স সুপারিনটেন্ডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন । জানা যায় পলাশীর যুদ্ধের পর কোম্পানির বড় কর্তা ওয়ারেন হেস্টিংস্ বাংলার গভর্নর হওয়ার পর তিনি হিরামকে কক্সবাজারের প্রশাসক নিয়োগ করেন । তার কাজ ছিল এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষের কাছ হতে জোর পূর্বক খাজনা আদায় করে কোম্পানির কোষাগার সমৃদ্ধ করা । এই কাজটি তিনি আরাকান পর্যন্ত বিস্তৃত কররেছিলেন । এক সময় কক্সবাজার চট্টগ্রামের একটি মহকুমা ছিল । মানুষের পেশা ছিল মাছ ধরা আর লবণ উৎপাদন । বর্তমানে এটি একটি শহর । গত দুই দশকে এই শহরে পর্যটন শিল্পের বেশ উন্নতি হয়েছে । অপরিকল্পিতভাবে হলেও গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ভাল মানের হোটেল । এক সময় শীতের সময় ছাড়া খুব বেশী পর্যটকরা এখানে আসতেন না । বর্তমানে সারা বছর জুড়ে দেশী বিদেশী পর্যটকদের ভিড় লেগেই আছে । এক শ্রেণীর মানুষের হাতে অর্থ এসেছে । তারা পরিবার নিয়ে বছরে একবার হলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেড়াতে যায় । এটি একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ । কক্সবাজারে মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোর বেড়ানোর শখ অনেক বেশী । চট্টগ্রাম হতে ঘন্টা চারেকের পথ । ঢাকা হতে রাতে রওনা করে ভোরে কক্সবাজার পৌঁছানো যায় । বিলাসবহুল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসও আছে । দিনে একাধিকবার বিমান আসে ঢাকা হতে । পর্যটন শিল্পের বিকাশের কথা চিন্তা করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালেই ঘোষণা দিয়েছিলেন এই শহরকে তিনি আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে একটি আদর্শ পর্যটন নগর হিসেবে গড়ে তুলবেন । এর অংশ হিসেবে কক্সবাজার বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বছর দু’এক আগে। এরই মধ্যে রানওয়ে বড় করা হয়েছে । সেই রানওয়েতে শনিবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘মেঘদূতের’ অবতরণ । বঙ্গবন্ধু কন্যা কক্সবাজার আসবেন তাতে সারা জেলায় গত কয়েকদিন ধরেই বেশ সাড়া পরে গেছে । গত নয় বছরে এটি তার পঞ্চমবার কক্সবাজার আসা । বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধন ছাড়াও তিনি একাধিক প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করবেন এবং অপরাহ্নে কক্সবাজার স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দেবেন ।
বেলা দেড়টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে দেখি ভিআইপি লাউঞ্জ নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে । কক্সবাজার বিমানবন্দরকে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে উঠতে আরো অনেক কাজ করতে হবে । এতে বিমান যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে । এখনো এই বিমানবন্দরে যাত্রীদের মালামাল চেকইন বা বুঝে নেওয়ার কোন ভাল ব্যবস্থা নেই । বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের দক্ষতার বড় অভাব রয়েছে । হোটেলের পথে দেখি নানা রং-এর টুপি পরে মানুষজন দলে দলে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার দিকে রওনা দিয়েছেন । যত মানুষ রাস্তায় দেখি এর অর্ধেকও যদি সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয় তাহলে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকানো কঠিন । কিন্তু অতীতে এই শহরে দলের কোন্দল মাথায় রেখে শংকিত হই । সেই কোন্দল এখনো কম বেশী আছে বলে সকলে জানালো । এমন পরিস্থিতি দেশের অনেক জেলায় এখন বাস্তবতা । সকলের বিশ্বাস শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হবে । কিন্তু একজন শেখ হাসিনা কতটুকু করতে পারবেন তারও তো একটা সীমা থাকা উচিত । শুধু শেখ হাসিনা নির্ভর আওয়ামী লীগ হলে তা দলের জন্য মঙ্গল নয় । দল সংগঠন নির্ভর হওয়া ভাল ।
হোটেলের লবিতে ঢুকতেই দেখা হলো আমার পূর্ব পরিচিত ফজল মিয়ার সাথে । প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় উপস্থিত থেকে তাঁর বক্তব্য শুনবেন বলে তিনি টেকনাফ হতে এসেছেন । লবণের ব্যবসা করেন । বয়স আশির ঘরে । এখনো বেশ শক্ত আছেন । পড়ালেখা তেমন একটা করেন নি । এক মেয়েকে ডাক্তার বানিয়েছেন । এতে তিনি বেশ গর্বিত । সত্তরের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে দু’দিন আগে কক্সবাজার এসে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছিলেন । আঞ্চলিক ভাষায় বললেন শেখ সাহেব ছিলেন বাঘের বাচ্চা । সে সময় নাকি তার মনে হয়েছিল শেখ সাহেবের নির্বাচনি বক্তৃতা টেকনাফের পাড়া মহল্লায়ও শোনা গেছে । আমার কাছে এরা সকলে অন্ধ বঙ্গবন্ধুর অনুসারী । কোন লোভ লালসার হাতছানি এদের কখনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হতে বিচ্যুত করতে পারে নি । দূর্ভাগ্য হচ্ছে বাংলাদেশে ফজল মিয়াদের সংখ্যা আশংকাজনক ভাবে কমছে । দিনে আওয়ামী লীগ আর রাতে জামাত-বিএনপি’র সাথে ষড়যন্ত্র করে তেমন মানুষের সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে বলে অনেকে মনে করেন । এরা সকলেই হাইব্রিড । কোন কোন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে আগামী নির্বাচনে একশত দলীয় সংসদ সদস্য এবার মনোনয়ন নাও পেতে পারেন । তেমনটি যদি হয় তখন দেখা যাবে কতজন বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন আর কতজন বিএনপি-জামাতে যোগ দিচ্ছেন । ১৯৯১ এর নির্বাচনে একজন বড়মাপের ছাত্রলীগ নেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন । বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী, দূঃখ করে বলেছিলেন ওই ছেলেটাকে এত উপরে না তুলে দু’টা রাম ছাগল পুষলে অনেক বেশী লাভ হতো ।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কক্সবাজারে বক্তৃতা করবেন তাতো ফজল মিয়াকে শুনতেই হবে। বললেন বয়স হয়েছে । আর একবার শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার সৌভাগ্যতো নাও হতে পারে । সাধারণ কর্মীরাই যে এখনো আওয়ামী লীগের শেষ ভরসার জায়গা তা না বুঝার কোন কারণ নেই । এই সাধারণ কর্মীদের কোন চাওয়া পাওয়া নেই । শুধু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায় । শেখের বেটি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তা দেখেই তাদের তৃপ্তি । কিন্তু অধিকাংশ নেতা এদের তাদের নিজ স্বার্থে ব্যবহার করা ছাড়া দলের কোন কাজে লাগাতে চায় না । নেতারা সব সময় চাটুকার বেষ্ঠিত থাকতে পছন্দ করেন । ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে । ফজল মিয়া জানালেন বঙ্গবন্ধু কক্সবাজারকে ভালবাসতেন শুধু তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য নয় এই এলাকার মানুষের আতিথেয়তার জন্য ।
ইদানিং কক্সবাজার সদর সার্বিক ভাবে বিশৃঙ্খল । একটি মাত্র সড়ক । তাতে রাজ্যের গাড়ী, রিক্সা, আর ব্যাটারি চালিত রিক্সা । দুপাশে অসংখ্য হোটেল আর রেষ্টুরেন্ট । চলাচল মাঝে মাঝে প্রায় অসম্ভব । মানুষ এখন ইনানীর দিকে ছুঠছে । ইনানী যেতে হলে এখন সহজ পথ মেরিন ড্রাইভ । সড়কটি এর আগেও সেনাবাহিনী করে দিয়েছিল । সমূদ্রের ভাঙ্গনে তার অনেক অংশ বিলীন হয়ে গেছে । বর্তমান অসাধারণ ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটিও সেনাবাহিনী নির্মাণ করেছে । এই সড়ক পথে সোজা টেকনাফ যাওয়া যাবে । প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় ফিরে যাওয়ার পর রাতে সেই সড়ক দিয়ে বেশ খানিকটা দূর পর্যন্ত গিয়ে মনে হলো এটির কোন কোন অংশ ভাঙনের মুখে পড়তে পারে । সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সড়ক ও জনপথের । তারা কতটুকু তা করতে পারেন তা আগামীতে দেখা যাবে ।
১৯৯১ সনের ঘূর্ণিঝড়ের পর শেখ হাসিনা কক্সবাজারে এসে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ত্রাণ কাজে অংশ নিয়েছিলেন । এক দ্বীপ হতে অন্য দ্বীপে ঘুরে বেড়িয়েছেন । কখনো নৌকায় কখনো লঞ্চে । তখন এক সাংবাদিক আমাকে জানিয়েছিলেন মহেশখালী যাওয়ার পথে ছোট পাটাতনের উপর দিয়ে শেখ হাসিনা বেশ সহজে লঞ্চে উঠে গেলেন । সাংবাদিকদের কেউ কেউ ইতস্তত করছিলেন । তখন তিনি তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললেন আমার হাত ধরো । তারাতো অবাক । তিনি আরো বললেন বাংলাদেশের মানুষ যদি নদী আর সমূদ্রকে ভয় পায় তাহলে তো চলবে না । সাংবাদিকরা অবাক । শেখ হাসিনা এত সহজে মানুষের কাছে আসতে পারেন তাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না । সেজন্যইতো তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা । এই সেদিন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়ুয়াদের মাঝে বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যারয় মঞ্জুরী কমিশনের ‘প্রধানমন্ত্রী গোল্ড মেডেল’ বিতরণ শেষে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সিঁড়িতে সকলের গ্রুপ ছবি তোলা হবে । মোট ২৩০ জন । সকলে যখন লাইন করতে ব্যস্ত ঠিক তখন এক কন্যা এসে আবদার করে বললো ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে একটুৃ হাগ করি?’ (মানে, একটু আপনার বুকে মাথা রাখি?) তিনি মেয়েটাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন । অন্য মেয়েদের মধ্যে তা খানিকটা সংক্রামিত হলো । নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের সরাতে চাইলে তিনি বলেন ‘থাক না । ওরা সকলেতো আমার সন্তান তুল্য’। সকলে অভিভূত । এই গুণটা ক’জনের আছে ? কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভটার ফলক উন্মোচন হলো ইনানী বিচের কাছে । তখন বৈশাখের রোদের কারণে প্রচন্ড তাপ । সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা শেষে সকলকে অবাক করে কয়েকজন দলীয় নেতা কর্মীদেও নিয়ে খালি পায়ে তিনি হঠাৎ নেমে পরলেন পাশের ইনানী বিচে । নিরাপত্তা কর্মীরাও অপ্রস্তুত । তারা আর বুট খোলার সময় পেলেন না । তারাও সকলে বুট পরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বঙ্গোপসাগরের নোনা জলে নেমে পরলেন । সে এক অভাবনীয় দৃশ্য । প্রধানমন্ত্রীর সেই ছবি এখন বাংলাদেশের একটি পত্রিকা ছাড়া সকল পত্রিকায় বেশ গুরুত্ব সহকারে ছেপেছে । সামাজিক গণমাধ্যমে তা ভাইরাল হয়েছে । তবে সকলেই যে শেখ হাসিনার পানিতে নামার ছবিকে সহজে নিয়েছেন তা নয় । কারো কারো মন্তব্য হাওরে বানভাসি মানুষদের রেখে প্রধানমন্ত্রী জল কেলি করছেন ! একজন আবার মশকরা করে লিখেছেন এই ছবিটি প্রধানমন্ত্রীর অফিসিয়াল ছবি করা হোক । এই বাচালটা একবার লিখেছিল সজিব ওয়াজেদ জয়টা যেন কে? এরা আবার ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আহমেদি নিজাদ কোন কারণ ছাড়া রাস্তায় গাড়ী থামিয়ে নামাজ পড়ার ছবিকে শেয়ার করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যান । গাড়ীর মধ্যে নামাজ পড়লে তারতো কোন অসুবিধা ছিল না । বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী (সাবেক) ডেবিড ক্যামেরনের পাতাল রেলে চড়ার ছবিটা এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল । মন্তব্য শেখ হাসিনা কেন এ’রকম সাধারণের মতো চলতে পারেন না । এই অর্বাচীনরা ভুলে যান শেখ হাসিনার মতো ডেভিড ক্যামেরনকে একটা বুলেট তাড়া করছে না ।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সাথে শেখ হাসিনার অনেক স্মৃতি । সেদিন তিনি এই সব স্মৃতির কিছুটা রোমন্থন করেছেন । ১৯৬২ সনে বালিকা শেখ হাসিনা কক্সবাজার এসেছিলেন বাবার হাত ধরে । ১৯৫৮ সনে আইউব খান সামরিক শাসন জারি করলে বঙ্গবন্ধু ইনানীতে বন বিভাগের একটি রেস্ট হাউসে দু’বার কিছু দিনের জন্য অবস্থান করেছিলেন । সে সময় এলাকার কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে আপন করে নিয়েছিলেন । সম্ভবত সে কারণেই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে সে দিন ইনানী বিচের বালু আর জলরাশি কিছু সময়ের জন্য তিনি যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তা ভুলিয়ে খালি পায়ে বিচে আর পানিতে নামতে বাধ্য করেছিল । মাঝে মধ্যে শেখ হাসিনার অনেক আচরণ দেখে মনে হয় তিনি যে বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের শুধু প্রধানমন্ত্রীই নন বরং বর্তমান বিশ্বে একজন স্বীকৃত স্টেট্সম্যান তা ভুলে যান । হয়ে যান কারো বুবু বা আপা । একজনতো এক বড় অনুষ্ঠানে তাঁকে দাদি বলে বেশ জোর গলায় সম্বোধন করলে আমি খানিকটা অবাক হয়ে যাই । মেয়েটির বয়স ষোলর কম হবে না ।
সোমবার কক্সবাজার হতে ফেরার সময় বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ করে মনে হলো তারা চান বঙ্গবন্ধু কন্যা বার বার কক্সবাজার ফিরে আসুন । শেষ করি মৌসুমী ভৌমিকের একটি গানের ক’টি কলি দিয়ে ।
‘আমি শুনেছি সে দিন তুমি সাগরের ঢেউয়ে চেপে নীল জল দিগন্ত ছুঁয়ে এসেছ ..
আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনাবালি তীর ধরে, বহুদুর বহুদুর হেঁটে এসেছ..
আমি কখনও যাইনি জলে, কখনও ভাসিনি নীলে, কখনো রাখিনি চোখ ডানামেলা গাঙচিলে..
আবার যেদিন তুমি সমুদ্র স্নানে যাবে, আমাকেও সাথে নিও, নেবে তো আমায়, বলো নেবে তো আমায়?’
মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকুক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ।
লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক । মে ৮, ২০১৭