|
||||||||||||||||||
|
বেগম জিয়ার তের দফা-নির্বাচনে না যাওয়ার আলামত?
WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
|
লেখকের আগের লেখাঃ
|
বেশ কয়েক মাস পর বেগম জিয়া জনসম্মূখে এসেছিলেন গত ১৮ নভেম্বর আগামী সংসদ নির্বাচন কেমন করে ‘সুষ্ঠু’ হতে পারে তার একটা ১৩ দফা ফর্মূলা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জাতির সামনে হাজির করতে । আসরটি বসেছিল তার বাসভবনের পাশে একটি তারকা খচিত হোটেলে । এই অনুষ্ঠানে বেশ কিছু নূতন সুশীলও উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠানে বেগম জিয়ার আগমন, অবস্থান ও প্রস্থান অনেকটা নিষ্প্রভ ছিল । বিএনপি পন্থি বুদ্ধিজীবী ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী কিছদিন আগে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্তব্য করেছিলেন বিএনপি প্রধান বর্তমানে মানসিক অবসাদে ভুগছেন । এটি স্বাভাবিক । এই বয়সে তিনি নাতি নাতনি পরিবেষ্টিত থাকার কথা । বাড়ীর বউদের সেবা য্ত্ন পাওয়ার দাবিদার । তা হতে তিনি ভাগ্যগুণে বঞ্চিত । প্রবাসে এক ছেলের মৃত্যু হয়েছে । অন্য ছেলে লন্ডনে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক জীবন যাপন করছেন । দু’জনের পরিবারই প্রবাসে । বেগম জিয়া দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা অনেকটা একাকিত্বের অভিষপ্ত জীবন যাপন করেন । এই বয়সে এটি তাঁর হওয়া উচিৎ ছিল না । নিয়মিত দলীয় অফিসে আসলে সময়টা কিছুটা ভাল কাটতে পারতো । তাও সচরাচর হয়ে উঠে না । তাঁর অনেক নিকটজনদের বলতে শুনেছি তিনি দলের অনেক সিনিয়র নেতাকে তেমন একটা আস্থায় নিতে পারেন না । একজন নেতার কারণে নাকি কেউ এখন দলীয় নীতিনির্ধারনী সভায় মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকতে পারেন না ।
২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদেও নির্বাচনে বেগম জিয়ার দল বিএনপি আর তাঁর মিত্ররা অংশগ্রহণ করেননি কারণ তাঁর ধারণা ছিল বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রধান থাকলে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া সম্ভব নয় । তিনি দাবি করছিলেন নির্বাচনকালিন সময়ে একটি অনির্বাচিত তত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় থাকবে । সাংবিধানিক ভাবে এটা সম্ভব ছিল না কারণ এই ধরণের সরকার ব্যবস্থা ইতোমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ আদালত গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা ও সংবিধানের মূল ধারণার পরিপন্থী ঘোষণা করেছিল । আদালত তার মন্তব্যে বলেছিল ‘সংসদ যদি চায় তা হলে আরো দুই মেয়াদে এই ব্যবস্থা চালু রাখা যায়’ । এই মন্তব্য রায়ের অংশ ছিলে না এবং তা মানার কোন বাধ্যবাদকতাও ছিলনা । তারপরও সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং তা সংসদ গ্রহণ করেনি । সেই সংসদে বিএনপি এবং তার মিত্রদের সদস্য ছিল । তারা সেই আলোচনায় অংশ গ্রহণ করা হতে বিরত ছিলেন । ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি আর তার প্রধান মিত্র যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত দেশ ও জনগনের বিরুদ্ধে এক অঘোষিত অন্তর্ঘাত মূলক যুদ্ধ শুরু করে ২০১৩ সাল হতে । সেই যুদ্ধ অনেকটা একাত্তরে বাঙালিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত পাকিস্তান সেনা বাহিনীর যুদ্ধের সাথে তুলনীয় । এই যুদ্ধে দেশের জানমালের প্রভূত ক্ষতি হয় । প্রায় শ’তিনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায় । বাদ যায়নি অফিস ফেরত কেরানি, স্কুল পড়–য়া শিশু অথবা পেশাদার ডাক্তার প্রকৌশলী এমন কি অবুঝ পশুও। এদের বেশীর ভাগের সাথেই রাজনীতির কোন সম্পর্ক ছিল না । বেগম জিয়া এই যুদ্ধ পরিচালনার জন্য গুলশান্থ তার দপ্তরে কমান্ড পোষ্ট খুললেন । সেখানে তিনি নব্বই দিনের জন্য অবস্থান সারা দেশে অবরোধের ডাক দিলেন । সেই অবরোধ আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে না নেওয়াতে তাত্বিক ভাবে তা এখনো বহাল আছে । মূল যুদ্ধ শুরুর আগে রিহার্সল হিসেবে ২০১৩ সালের ১৩ মে বেগম জিয়া ঢাকা দখলের জন্য চরম হঠকারি উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠি হেফাজতকে মাঠে নামিয়েছিলেন । বেগম জিয়ার যুদ্ধে শুধু যে দেশের জান মালের ক্ষতি হয়েছিল তাই নয় বিদেশে দেশের ভাবমুর্তিও কালিমা লিপ্ত হয় ।
জাতিসংঘের প্রতিনিধি ওসকার তারানকো বাংলাদেশ সফরে এলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য । আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সহ তাদের সমমনা দলগুলের সাথে তিনি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন । বসলের সুশীল সমাজের সাথে । বাদ গেল না ভুতপূর্ব বামপন্থীরা। শোনা গেল সব পক্ষে একটি সমাধানে পৌঁছেছেন । সকলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো । অনেকটা বাড়া ভাতে পানি ঢালার মতো সব ভেস্তে গেল লন্ডন প্রবাসি বেগম জিয়ার পুত্র তারেক রহমােেনর কারণে । সেখান হতে বার্তা এলো শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কোর নির্বাচন হবে না । তাদের দাবী মেনে অসাংবিধানিক অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করলেই শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে । নির্বচনরে দিকে এগুলো সরকার । কিছুটা ঝুকিপূর্ণ হলেও এই সিদ্ধান্তটিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হয়েছিল একজন শেখ হাসিনার দৃঢ়তা আর সাহসের কারণে । নির্বাচনরে আগে শেখ হাসিন অনেকটা নিজ দায়িত্বে বেগম জিয়াকে তাঁর সরকারি বাসভবনে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন । বললেন আসুন আমার নির্বাচন বা অন্য যে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করি । অনুষ্ঠিত হোক এই নির্বাচন একটি নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত সর্বদলীয় সরকারের অধীনে । প্রধানমন্ত্রী এও বললেন সেই সরকারের যতজন মন্ত্রী চাইবে বিএনপি ও তার মিত্ররা তাই দেওয়া হবে । উদারতার আর কোন উৎকৃষ্ট উদহারণ হতে পারে না । বেগম জিয়া সেই আমন্ত্রণে সারাতো দিলেনই না উপরন্তু শেখ হাসিনাকে বেশ অপমানিত করেই টেলিফোন সংলাপের ইতি টানলেন । সেই নির্বাচনের আগে বেগম জিয়া তার কল্পিত তত্বাবধায়ক সরকারের একটি ফর্মুলা সাংবাদিকদের সামনে উপাস্থাপন করেছিলেন । বলেছিলেন অতীতে বিভিন্ন সময়ে যারা তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন তাদের নিয়ে নির্বাচনকালীন একটা সরকার হতে পারে । বেগম জিয়াকে যারা শলাপরামর্শ দেন অথবা যারা তার বক্তৃতা বিবৃতি লেখেন তাদের হোমওয়ার্কের যথেষ্ট ঘাটতি আছে । দেখা গেল বেগম জিয়া যাদের নিয়ে তার কল্পিত সরকার গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন তাদের অনেকই জীবিত নেই । যারা আছেন তাদের দু’একজন ছাড়া অন্যকেউ এমন একটা খচ্চর মার্কা সরকারে থাকাতে মোটেও ইচ্ছুক নন । ২০১৪ সনের নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র হতে একজন গবেষক বাংলাদেশে এসেছিলেন নির্বাচন নিয়ে গবেষণা করবেন বলে । এক পর্যায়ে তিনি আমার সাথে কথা বলতে এলে প্রসঙ্গক্রমে তাকে বলেছিলাম দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে হয়তো সংখ্যা গরীষ্ট আসনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে পরতো না কিন্তু তাদেও পক্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে সংসদে একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের ভ’মিকা পালন করা সম্ভব হতো । তাকে জানিয়েছি এই নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা প্রমান করেছে তারা প্রচলিত অর্থে কোন রাজনৈতিক দল নয় । তাদেও বড়জোর একটা এলিট ক্লাস ক্লাবের সাথে তুলনা করা যেতে পারে যেটি পরিচালিত হয় লন্ডন প্রবাসি একজন অপরিপক্ক রাজনৈতিক নাদান ধারা । সেই গবেষককে আরো বলেছি নির্বচানে অংশ না নিয়ে বিএনপি যে ঐতিহাসিক ভুল করেছে তার কারণে মুসলিম লীগের পথে তাদের যাত্রা আরো দ্রুত হবে । দলটির কর্মী সমর্থক ছিল । নিষ্ঠাবান ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের অভাব ছিল । তাদের সাথে এখানেই আওয়ামী লীগের তফাৎ। এক এগারর পর বর্ষীয়ান নেতা জিল্লুর রহমান নানা প্রতিকুলতার মাঝেও দলকে ধরে রেখেছিলেন । বিএনপিতে একজন জিল্লুর রহমানের অভাব ছিল । সেই কারণেই দলের শীর্ষ নেতা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী সায়ফুর রহমানকে তিনজনে চ্যাংদোলা করে এনে আবদুল মান্নান ভ’ঁইয়া, সাদেক হোসেন খোকা, মেজর (অবঃ) হাফিজরা বেগম জিয়াকে বাদ দিয়ে নতুন বিএনপি গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ।
বেগম জিয়া আগামী নির্বাচন নিয়ে যে পরিকল্পানা তুলে ধরেছেন তা অনেকাটা সেই নির্বাচনে না যাওয়ার একটা পূর্ব প্রস্তুতি । সংবিধানে বলা আছে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি । তিনি কারো সাথে আলোচনা করবেন কিনা তা একান্তভাবে তাঁর এখতিয়ার । প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান করেছিলেন । বেগম জিয়া এক অদ্ভুত ফর্মুলা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য যা করতে গেলে হয়তো কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে । বলেছেন বিএনপিতো বটেই, যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত, মুসলিম লীগ, বঙ্গবন্ধু হত্যকারীদেও দল ফ্রীডম পার্টি, নেজামে ইসলাম সহ, বিভিন্ন ধরেণর হোন্ডা পার্টি (দুই সদস্য বিশিষ্ট পার্টি) তাদের সাথেও নাকি আলাপ করতে হবে এবং শেষতক এমন একটা কমিশন গঠন করতে হবে যেটি সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে । এটি একটি অসম্ভব প্রস্তাব কারণ কোন কিছুই সকলের কাছে সমান ভাবে গ্রহনযোগ্য হতে পারে না । এখানেতো কয়েকজন মানুষের কথা বলা হচ্ছে । বিচারপতি সাহাবুদ্দিন সকলের কাছে একজন ফেরেস্তা তুল্য মানুষ । অথবা প্রয়াত বিচারপতি হাবিবুর রহমান । তাঁদের সমালোচকওে সংখ্যাও কম নয় ।
বেগম জিয়ার প্রস্তাবের মারাত্মক বিপদজনক প্রস্তাব হচ্ছে নির্বাচনকালিন সময় সেনা বাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা প্রদান । সেনাবাহিনী দেশের বেসামরিক আইন সম্পর্কে দশজনের মতো অনেকটা অজ্ঞ । তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সেনা আইন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন । সেনা আইনে কোন সেনা সদস্যের বিচার হলে তাকে আইনি সহায়তা দেন সেনাআইনে পারদর্শি একজন সেনা কর্মকর্তা । আর দেশে যখন সেনা শাসন প্রবর্তন হয় তখন অনেক ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তি হয় সেনা আইনে । তাহলে কী বেগম জিয়া নির্বাচনকালে দেশে সেনা শাসনে প্রবর্তনের কথা বলছেন ? বেগম জিয়া জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় সেনানিবাসে কাটিয়েছেন । সেনা সংষ্কৃতির অনেক কিছু তার ভাল লাগাটা বিচিত্র কিছু নয় । তাই বলে যে ব্যক্তি দু’বার দেশের বেসামরিক শাসনকালে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি হঠাৎ করে কী উদ্দেশ্যে সংসদ নির্বাচনের সেনাবাহিনীর জন্য বিচারিক ক্ষমতা দাবি করেন? নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন মনে করলে নির্বচানের সময়ে সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য সেনা বাহিনীর সহায়তা চাইতেই পারেন । তারা তখন সিভিল প্রশাসনের অধীনে দায়িত্ব পালন করবেন । বেগম জিয়ার সেই দিকে চিন্তা না করে সেনা বাহিনীর জন্য বিচারিক ক্ষমতা চাওয়াটা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার একটি দূরভিসন্ধি বলে অনেকের ধারণা ।
বিশ্বের যে সব দেশে গণতন্ত্রের চর্চা হয় সেই সব দেশে নির্বাচন পরিচালনার জন্য এক ধরণের রাষ্ট্রিয় সংগঠন থাকে যাকে নির্বাচন কমিশন বা অন্য কোন নামে ডাকা হয় । নির্বচানের সময় তাদেও সব কর্মকা- সব সময় সমালোচনার উর্দ্ধে থাকে না । বৃটিশ পার্লমেন্টে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নাম প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী । তা গৃহীত হলে রানি তা অনুমোদন করেন । প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সহায়তা করার জন্য দু’জন নির্বাহী থাকেন । ২০০০ সালের বৃটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন নানা কারণে সমালোচিত হয়েছিল । যুক্তরাষ্ট্রে একটি ফেডারেল নির্বাচন কমিশন থাকে । ফেডারেল কমিশন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেন এবং তা সিনেট কতৃক অনুমোদিত হয় । সদস্য থাকেন ছয়জন । গত কয়েকটি রাষ্ট্রপতি নির্বচানের পর সেই দেশের নির্বাচন কমিশনকে কারচুপি রোধে ব্যর্থতার কারণে তুমুলভাবে সমালোচিত হতে হয় । ভারতের নির্বাচন কমিশনের গঠন বাংলাদেশের আদলে । টিএন শেসান ছাড়া কোন নির্বচন কমিশনই বিতর্ক এড়াতে পারেন নি । শেসান একজন আমলা ছিলেন । বাংলাদেশে আবু হেনা প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে (১৯৯৬-২০০০) বেশ সুনাম কামিয়েছিলেন । তিনি একজন আমলা ছিলেন । বিচারপতি সাদেক (২০০০-২০০৫) ও বিচারপতি আজিজ (২০০৫-২০০৭) বহু বিতর্কেও জন্ম দিয়েছেন । আজিজের সময় এক কোটি ভ’য়া ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছিল । ১৯৭০ এর নির্বাচনে বিচারপতি সাত্তার পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন । সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের প্রধানদল হিসেবে জনগনের স্বীকৃতি লাভ করেছিল । সাত্তার পরবর্তি কালে জিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন । এরশাদ ক্ষমতা দখলের জন্য তার বুকে পিস্তল ঠেকালে তিনি মেরুদ- সোজা রাখতে পারেন নি । চেষ্টা করলে রাষ্ট্রপতি মনোনিত নির্বাচন কমিশন সকল চাপকে অগ্রাহ্য করে দায়িত্ব পালন করতে পারেন । এমন উদহারণ বাংলাদেশে আছে ।
বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নয় সব সময়ের জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন প্রত্যাশিত । নিষ্ঠাবান ও দৃঢ়চেতা মানুষের অভাব নেই । রাষ্ট্রপতিকে তাদের মাঝ হতে খুঁজে কমিশন গঠন করতে হবে । প্রয়োজনে তিনি যেই কারো সাথে আলোচন করতে পারেন । নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান । সব সময় সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সকল সমালোচনার উর্দ্ধে রাখাটা বাঞ্চনিয় । জিয়া সেনা প্রধান থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে সংবিধানকে অপমানিত করেছিলেন । সেনাবাহিনী হতে অবসর নিয়ে তিনি পিছনের তারিখ দিয়ে পদোন্নতি নিয়েছিলেন । এই সবই ছিল সংবিধান আর সকল নিয়ম নীতির বাইরে । এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক তা কাম্য নয় । বেগম জিয়ার প্রেসক্রিপসন অনুযায়ী কমিশন গঠন করতে হলে আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য কয়েক যুগ অপেক্ষা করতে হবে । তবে সুষ্ঠু ও সকলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচনের জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন নিশ্চয় কাম্য ।
লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক । নভেম্বর ২৭, ২০১৬