|
||||||||||||||||||
|
মমতা কি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে কীলক?
WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
|
লেখকের আগের লেখাঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সব সময় নিজের জীবনকে নিয়তির উপর ছেড়ে দেবেন না ক্ষুব্ধ, লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্ö
|
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের রাষ্ট্রিয় সফর শেষে সোমবার অপরাহ্ণে দিল্লী হতে দেশে ফিরেছেন । নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ভারতে শেখ হাসিনার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর । মাঝ খানে প্রায় সাত বছরের ব্যবধান । ইতোমধ্যে মোদি একবার ঢাকা সফর করে গিয়েছেন । শেখ হাসিনা দিল্লী যাওয়ার আগে বিএনপি’র নেতা নেত্রী, এক শ্রেণীর বিজ্ঞ সুশীল মহল আর মিডিয়া চায়ের কাপে নানা ধরণের ঝড় তুলেছে । বিএনপি’র আবাসিক দপ্তর সম্পাদক (সিনিয়র মহাসচিব) রুহুল কবির রিজভী আর দলের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মউদুদ আহমদ ঘোষণা করলেন দিল্লী যাচ্ছেন শেখ হাসিনা সামরিক চুক্তির নামে বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দিতে । ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা পার্বত্য শান্তি চুক্তি করলে বেগম জিয়া বলেছিলেন চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর পর ফেনী নদী পর্যন্ত ভারতের অংশ হয়ে যাবে । দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে ছিলেন ক’দিন । তড়িৎ দেশে ফিরে বললেন দিল্লীর সাথে সামরিক চুক্তি করলে দেশের ষোল কোটি মানুষ মানবে না । গত শনিবার যখন ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ছয়টি চুক্তি আর ষোলটি সমঝোতা স্মারক স্মাক্ষর হলো তখন রিজভী এই চুক্তিকে ‘গোলামীর দস্তখত’ মন্তব্য করে দেশের জনগণ তা বাস্তবায়ন করতে দেবে না বলে হুঁসিয়ার করে দেন । বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যিনি একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নির্বোধ বলে ইতোমধ্যে নিন্দিত হয়েছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন ‘পাকিস্তান ভাঙার জন্যই ভারত মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিল।’ আবার প্রমাণিত হলো একাত্তরে পাকিস্তান হতে একটি রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীন হওয়াকে বিএনপি চার দশক পরেও কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না । ঠিক একই কায়দায় ২০০১-২০০৬ মেয়াদের চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সংসদে দাঁড়িয়ে বেগম জিয়ার একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন ভারতের পূবাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যে যে সকল বিচ্ছিন্নতাবাদি আন্দোলন করছে তারা আসলে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছে । বাংলাদেশের উচিৎ ১৯৭১ সালে ভারত বাংলাদেশকে যে ভাবে সহায়তা দিয়েছিল ঠিক একই ভাবে এই ‘স্বাধীনতা’ যোদ্ধাদেরও নৈতিক সমর্থন দেওয়া । চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এই বিচ্ছিন্নতাবাদিদের বেগম জিয়া সরকার শুধু নৈতিক সমর্থনই দেয় নি তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সহায়তা করেছে । চট্টগ্রামের দশট্রাক অস্ত্র চোরাচালান তার একটা বড় প্রমাণ । এর আগে এই বিচ্ছিন্নতাবাদিদের জন্য কয়েক হাজার রাউন্ড গুলির একটি চালান বগুড়ায় আটক করা হয় । বেগম জিয়া সরকারের সময়ই উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোর্শারফের সাথে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়া হয় । শেখ হাসিনা দিল্লী অবস্থান করার সময় বেগম জিয়া বিবৃতি দিয়ে বলেন দিল্লীর সাথে চুক্তি করে শেখ হাসিনা দেশকে বিক্রি করে দিয়ে আসছেন । দেশে ফিরলে তাঁর নাকি বিচার হবে । শেখ হাসিনা ভারতের সাথে কোন কিছু নিয়ে কথা বললে অথবা চুক্তি করলে সব সময় দেশ বিক্রি করেন বলে বেগম জিয়ার ধারণা । এক দেশ কতবার বিক্রি করা যায় তা অনেকেরই প্রশ্ন । আর কেউ কেউ দাবি তুললেন কী চুক্তি হচ্ছে তা আগেই জনসম্মূখে প্রকাশ করতে হবে । ২০০২ সালে বেগম জিয়া সরকার চীনের সাথে সামরিক চুক্তি করেছিল । সেই চুক্তিতে কী আছে তারা কখনো তা প্রকাশ করে নি । শেখ হাসিনার দিল্লী যাত্রার প্রাক্কালে দুটি বিষয় নিয়ে সকল মহলে আলোচনা হয়েছে । প্রথমটি দিল্লীর সাথে সম্ভাব্য সামরিক চুক্তি আর দ্বিতীয়টি ছিল তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি । বাস্তবে এই যাত্রায় দ্বিতীয় চুক্তি হওয়ার কোন পক্ষেরই কোন প্রস্তুতি ছিল না এবং তা হওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিল না । যখনই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা অধীষ্ট থেকেছে দু’দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানরা একে অন্যের দেশ সফর করেছেন এবং তাদের সব সময় উষ্ণ ও আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করা হয়েছে । প্রথমত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জনগণ ও সরকারের অকুণ্ঠ সাহায্য সহায়তার কথা বাংলাদেশের জনগণ সব সময় কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে । শেখ হাসিনা এবার যখন দিল্লী গেলেন প্রথমে সকলকে অবাক করে দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিমান বন্দরে অভ্যর্র্থনা জানান যা করার কথা ছিল একজন মন্ত্রীর । ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিমান বন্দরে সাধারণত সেই দেশের প্রজাতন্ত্র দিবসে কোন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান আমন্ত্রিত হয়ে এলে তাঁদের বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা জানান। এই যাবত শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, চিনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদকে বিমান বন্দরে নরেন্দ্র মোদি অভ্যর্থনা জানিয়েছেন । অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল সোমবার চারদিনের সফওে ভারত পৌঁছেছেন । দিল্লীর পালাম বিমান বন্দওে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান ভারতের রাজিব ইউনিয়ন মন্ত্রী রজিব প্রতাপ রেড্ডি । শেখ হাসিনার এবার সফরের সাথে যোগ হয়েছে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁর অতিথি হিসেবে থাকার আমন্ত্রণ জানানো যা একটি দূর্লভ ঘটনা । শেখ হাসিনা শুধু রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতির অতিথিই হন নি তিনি নিজ হাতে প্রণব মূখার্জির জন্য ভাপা ইলিশ রান্না করেছেন । শেখ হাসিনাকে যে বিরল সম্মান জানানো হয়েছে এমন সম্মান শুধু তাঁর পিতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭২ ও ১৯৭৪ সালে জানিয়েছিলেন ।
বিএনপি আর কিছু সুশীলের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছিল সামরিক চুক্তি হলে শেখ হাসিনা দেশে ফেরার আগেই ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দপ্তর কোলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম হতে সরিয়ে বাংলাদেশের কেনা এক স্থানে স্থাপন করা হবে । যে বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিক কারণে সাধারণ মানুষের কাছে সব চাইতে বেশী আলোচনা সেটি হচ্ছে তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি । গত তিন দশক ধরে সমস্যাটি ঝুলে আছে । আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সমস্যাটি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হয় আর ক্ষমতায় না থাকলে তা নিয়ে কেউ আর কথা বলেন না । ২০১১ সালে যখন ভারতের তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং বাংলাদেশে সফর করেন এই তিস্তা চুক্তি তখনই হয়ে যাওয়ার কথা ছিল । সেইমতে অন্তবর্তিকালিন সময়ে জন্য তিস্তার পানিবন্টন চুক্তির একটি খসড়াও প্রস্তুত করা হয়েছিল । কথা ছিল যেহেতেু তিস্তা পশ্চিম বঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে সেহেতু এই চুক্তি করার সময় পশ্চিম বঙ্গের মূখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ঢাকায় উপস্থিত থাকবেন । মমতা ঢাকা আসছেন তা প্রায় নিশ্চিত । মনমোহন সিং ঢাকা আসার আগের দিন বাংলাদেশের তৎকালিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী দিপু মনি একধাপ এগিয়ে গিয়ে বললেন বহু প্রতিক্ষিত তিস্তা চুক্তি হচ্ছে । কিন্তু সকলকে অবাক করে দিয়ে এবং নিজে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে পর্যন্ত অপমানিত করে মমতা শেষ মুহূর্তে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঢাকা আসতে অস্বীকার করেন । ভারত যেহেতু ফেডারেল কাঠামোর রাষ্ট্র সেহেতু এক রাজ্যের সম্পদ অন্য রাজ্যের সাথে বন্টন করতে হলে সেই রাজ্যের সম্মতি লাগে । তবে এটি যে সব সময় মানা হয় তাও নয় । ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বড় নদী কাবেরী । মূল অংশ কর্ণাটকে । সেখানে বাঁধ দিয়ে তামিল নাড়–কে দীর্ঘ দিন এই নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া হতে কর্ণাটকের রাজ্য সরকার বঞ্চিত করে আসছে । কিন্তু ভারতের সংবিধানের ২৫৩ ধারা অনুযায়ী কেন্দ্র সরকার যখন অন্য কোন দেশের সাথে চুক্তি করে তখন রাজ্যের অনুমোতি না নিলে কোন ক্ষতি নেই । কিন্তু রাজনৈতিক কারণেই কেন্দ্র সব সময় রাজ্য সরকার গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে । যদিও শেখ হাসিনার এবারের তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে কোন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল না তথাপি বরফ গলানোর জন্য দিল্লীতে শেখ হাসিনার অবস্থান কালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রণব মূখার্জি ও নরেন্দ্র মোদি উভয়ই দিল্লীতে আমন্ত্রণ জানান এবং সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে মমতা দিল্লীতে উপস্থিতও হন । শনিবার ছয়টি চুক্তি ও ষোলটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার পর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ সংবাদ ব্রিফিং-এর সময় পশ্চিম বঙ্গের মূখ্য মন্ত্রীর উপস্থিতিতে নরেন্দ্র মোদি বেশ জোরালো ভাবে বলেন তিস্তা চুক্তি হবে এবং তা তাঁর ও শেখ হাসিনার বর্তমান শাসনকালেই হবে । মোদির এই বলিষ্ঠ উচ্চারণ শুনে বাংলাদেশের সকল মানুষ বেশ উৎফুল্ল, আশান্বিত ও নিশ্চিত হয়েছিল । রাতে যখন শেখ হাসিনা আর মমতা তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে একান্ত বৈঠক করেন মমতা অপ্রত্যাশিত ভাবে সব কিছু উপর পানি ঢেলে দেন । বাইরে এসে সাংবাদিকদের বলেন তিস্তায় পানি নেই তার বদলে বাংলাদেশ ইচ্ছা করলে উজানের তোর্সা সহ ছোট ছোট আরো যে পাঁচটি নদী আছে সেখান হতে জল নিতে পারে । মজার কথা হচ্ছে এই নদী গুলোর কোনটাতেই বাংলাদেশে পানি দেওয়ার মতো পানি নেই আর দু’একটাতো অনেকটা মরা । আর দ্বিতীয়ত কোন অবস্থাতেই ওই সব নদীর পানি তিস্তায় আনা যাবে না । আর ভারতে বাংলাদেশের যৌথ বিবৃতিতে তিস্তার পানি বন্টনের কথা আছে মমতার ফর্মূলার কোন উল্লেখ নেই । এটি সকলে অনুধাবন করেছে তিস্তা যে মৃত্যু পথযাত্রী তা হতে একজন মমতার কারণে দ্রুত পানি বন্টন চুক্তি না হলে তাকে বাঁচানো যাবে না । মনে হলো এই বাস্তবতাটুকু বুঝার সক্ষমতা মমতার নেই । আর মনমোহন সিং-এর আমলে তিস্তার পানি বন্টনের জন্য যে খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছিল সেখানে দুই দেশের মধ্যে তিস্তার পানি বন্টনের কথাই ছিল অন্য কোন নদীর পানি নয় । বুঝা গেল মমতা তাঁর ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন । আসলে অনেক বিশ্লষকের মতে মমতা নরেন্দ্র মোদিকে ব্ল্যাক মেইল করতে চান । তিনি ছিট মহল বিনিময়ের সময় যে রকম কেন্দ্র সরকারের কাছ হতে ছিটমহল বাসির পূনর্বাসনের জন্য বিপুল পরিমাণের অর্থ আদায় করে নিয়েছিলেন । আর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সাম্প্রতিক কালে মমতার রাজ্য সরকারের বেশ কয়েকজন বাঘা বাঘা মন্ত্রী আর নেতা নেত্রী দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত । মমতা তিস্তার পানি বন্টন চুক্তিকে জিম্মি করে এই সব অভিযোগ হতে নিজের লোক জনের দায়মুক্তি আদায় করে নিতে চান । তবে নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যের উপর বাংলাদেশের মানুষ আস্থা রাখতে চান কারণ তিনি ডঃ মনমোহন সিং-এর মতো ততটা দুর্বল প্রধানমন্ত্রী নন । মনমোহন সিংকে একটি জোট সরকারের নেতৃত্ব দিতে হয়েছে এবং তিনি সব সময় সোনিয়া গান্ধির ছায়াতলে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন । সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্য সভার নির্বাচনে বিজেপি’র বিজয় তাঁর অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করেছে । মমতার পক্ষে মোদির সাথে পাল্লা দিয়ে বেশী দূর যাওয়া তেমন একটা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করতে চায় হাসিনা-মোদির আমলেই তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি হবে । তা হলে দুই প্রধানমন্ত্রী আবারও তাদের দূরদর্শিতার স্বাক্ষর রাখতে পারবেন যেমনটি তারা ছিট মহল বিনিময় চুক্তি ও সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে কওে দেখিয়েছিলেন ।
বিএনপি’র প্রত্যাশা অনুযায়ী কোন সামরিক চুক্তি হয় নি । হয়েছে সামরিক সহযোগিতার সমঝোতা চুক্তি যার ফলে দুই দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গুলি একে অন্যের সহায়তা করবে । সমঝোতাতে আরো আছে ভারত বাংলাদেশকে সামরিক খাতে ব্যয় করার জন্য পাঁচশত মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে । এই ঋণ ভারত হতে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে আবার রাশিয়া বা অন্য কোন দেশ হতেও সামরিক খাতে কেনা কাটা অথবা প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় করা যাবে । ভারতের ঋণ দেওয়ার অঙ্গিকারের অর্থই এই নয় যে তা নিতেই হবে । বাংলাদেশ চাইলে নিবে না চাইলে নিবে না । ভারত কাছ হতে বিএনপি আমল হতেই সেনা বাহিনীতে ব্যবহার করার জন্য যানবাহন ক্রয় করা হয় । উভয় দেশের সেনা কর্মকর্তারা একে অন্যেও দেশে প্রশিক্ষণ নেয় । প্রয়োজনীয় তথ্য আদান প্রদান করে । সামরিক ক্রয় অর্থ শুধু অস্ত্র আর গোলা বারুদ ক্রয় বুঝায় না । আর বর্তমান বিশ্বে চুক্তি বলি আর সমঝোতা, কোনটাই মানা বাধ্যতামূলক নয় । আর যে সব বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে তার মধ্যে আছে মুক্তিযোদ্ধাদেও পাঁচ মেয়াদী ভিসা প্রদান, বিনা খরচায় তাদেও চিকিৎসা, তাদেও সন্তানদেও লেখা পড়া করার জন্য বৃত্তি, ইত্যাদি । সাধারণ মানুষ এই সব জটিল সমীকরণ বুঝে না বলে বিএনপি আর তার মিত্ররা জনগণকে এত সহজে বোকা বানানোর চেষ্টা করে । তবে সব শেষে নরেন্দ্র মোদির কথার প্রতিধ্বনি করতে চাই । তিস্তা চুক্তি হবে এবং তা শেখ হাসিনা আর নরেন্দ্র মোদিই করবেন তা যেন সত্য হয়। আর তা করতে ব্যর্থ হলে সব চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হবে ভারত কারণ ২০১৮ শেষে বাংলাদেশে একটি সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা । সেই নির্বাচনে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা কত টাকা খরচ করবে তা আন্দাজ করাও কঠিন ।
লেখক : বিশ্লেষক ও গবেষক । এপ্রিল ১১, ২০১৭