|
||||||||||||||||||
|
২০১৭ সাল হতে পারে বাংলাদেশের জন্য নূতন সূর্যোদয়
WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action.
|
লেখকের আগের লেখাঃ
|
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এই মেয়াদে ২০১৬ সালটি ছিল বেশ ঘটনাবহুল। গেল বছর বিশ্বের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সংস্থা স্বীকার করে নিয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশটি দ্রুত উঠে যেতে পারে সার্বিক উন্নয়নের নূতন শিখরে। শেখ হাসিনার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শত্রুমুক্ত বাংলাদেশের প্রথম সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশকে পুনর্গঠনে সাফল্য দেখিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এই সময় যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান, আরব দেশগুলো (ইরাক ছাড়া) যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারা চায় নি বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে টিকে থাকুক। কিন্তু বাস্তবে তারা যখন দেখলো বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে নতুন দেশটি যুদ্ধের ধ্বংস্তূপ হতে উঠে দাঁড়িয়েছে তখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তারপর দেশটি দীর্ঘ একুশ বছর সেনাশাসনের অধীনে শাসিত হয়। বিশ্বে সেনাশাসন কোন দেশে মঙ্গল বয়ে এনেছে তার কোন নজির নেই। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম ছিল না। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলে মনে করা হয়েছিল গণতান্ত্রিকভাবে একটি নির্বাচিত সরকারের অধীনে দেশটি আবার উন্নয়নের নূতন রাস্তা খুঁজে পাবে। কিন্তু বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারের অদূরদর্শিতার কারণে তা হয়ে না উঠে বরং উল্টোটা হয়েছে। শুরু হয়েছিল পরিবারতন্ত্র, শাসন চলে গিয়েছিল দুর্নীতিগ্রস্থ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আর প্রশাসনের হাতে, সাধারণ মানুষের আয় বৈষম্য বেড়েছিল জ্যামিতিক হারে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলেও বেগম জিয়ার রেখে যাওয়া পরিস্থিতির কারণে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে অনেক ক্ষেত্রে সফল হতে পারে নি শেখ হাসিনার সরকার। কারণ রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ছিল ভিন্ন ভাবধারার আমলাতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে আর অভিজ্ঞতার অভাবে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও দেশ পরিচালনায় সঠিক ভূমিকা রাখতে পারেন নি যদিও শেখ হাসিনাকে নানান ক্ষেত্রে তাদের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যাদের ওপর তিনি আস্থা রেখেছিলেন তারা তাঁর সাথে সঠিক ব্যবহার করেন নি। অন্যদিকে বেগম জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপিতো প্রায় তিন বছর শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রপরিচালনায় পদে পদে বাধা দিয়েছে। তারপরও রাষ্ট্রপরিচালনায় শেখ হাসিনা শত বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও যতটুকু সাফল্য দেখিয়েছে তা কম নয়। প্রথম মেয়াদে তিনি বেগম জিয়ার রেখে যাওয়া দুর্নীতিতে ট্রান্সপেরেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর সূচকে বাংলাদেশের প্রথম অবস্থানের পদ হতে দেশটিকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছেন। সংবিধান হতে জেনারেল জিয়ার রেখে যাওয়া ইন্ডেমনিটি আইন রহিত করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার কাজ শুরু করতে পেরেছেন যা বেগম জিয়া ২০০১ সালে ফের ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় না যাওয়াটা হয়তো অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু যারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও এক শ্রেণির সামরিক-বেসামরিক আমলার ভূমিকার ওপর তীক্ষ্ম দৃষ্টি রেখেছিলেন তারা বুঝতে পেরেছিলেন সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়াটা দুরূহ হবে। এই আশঙ্কা ব্যক্ত করে একটি জাতীয় দৈনিকে আমি একটি মন্তব্য প্রতিবেদন পাঠালে তারা সেটি প্রকাশ করা হতে বিরত থাকে। পরে আমার কাছে সম্পাদক স্বীকার করেন সেই সময় আওয়ামী মহলে তারা কোন রকম আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চান নি। বেগম জিয়া জামায়াত ও চরম দক্ষিণপন্থী দল গুলোকে নিয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয় লাভ করে ভিন্ন আর এক মূর্তিতে আবির্ভূত হন। নির্বাচনের পর পরই তার দলের নেতা কর্মীরা এদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আর আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের ওপর এক ভয়ংকর নির্মমতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। কয়েক হাজার মানুষকে দেশ ত্যাগে তাঁর সরকার বাধ্য করেন। এটি ছিল ১৯৭১ সালের একটি মিনি সংষ্করণ। ২০০১ সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত শাসনকাল দেখে যে কারও মনে হবে এই সময়ে দেশটি ডাকাতের খপ্পরে পড়েছিল। যে একজন ব্যক্তি সেই সময় এই অপশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদ ও সংসদের বাইরে কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যাঁকে হত্যা করার জন্য ২০০৪ সালের একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনার জন্ম দেওয়া হয়েছিল। ২৪ জন নেতা কর্মী নিজের জীবন দিয়ে তাদের প্রাণ প্রিয় নেতাকে সে দিন রক্ষা করেছিলেন।
২০০৬ সালের পর বেগম জিয়া তাঁর ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করেছেন। জনরোষের কারণে তাতে তিনি ব্যর্থ হন। এক এগারর পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে যে সরকারটি ক্ষমতায় আসে সেটি সাধারণ মানুষকে সহজে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়। ছয় মাসের স্থলে তারা অসাংবিধানিক ভাবে দু’বছর ক্ষমতা দখল করে রাখে। সৃষ্ট হয় একদল সামরিক-বেসামরিক আমলা যারা নানা উপায়ে দেশের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে। তাদের সহায়তা করার জন্য কয়েকটি তাবেদার রাজনৈতিক দলও সৃষ্টি করা হয়। সাধারণ মানুষ যার নাম দেয় ‘কিংস পার্টি’। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। ছাত্র জনতার সম্ভাব্য আন্দোলনের আশঙ্কায় শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনের অসাংবিধানিক সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় এবং সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ধস নামানো বিজয় লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করে। সেই নির্বাচনে প্রথমবার বিএনপিকে বিরোধী দলে বসতে হয়। তারা চেষ্টা করে সংসদকে নানা উপায়ে অকার্যকর করতে। এই মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকারের দুটি বড় কৃতিত্ব ছিল। প্রথমটি ছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার কার্য সমাপ্ত করা। দ্বিতীয়টি একাত্তরের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করা। ২০০৯-১৪ মেয়াদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করতে দেশে ও দেশের বাইরে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হয়েছে। সরকার গঠনের দু’মাসের মাথায় বিডিআর বিদ্রোহ, হেফাজতের ঢাকা দখল, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বেগম জিয়ার নির্দেশিত নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে পেট্রোল বোমা যুদ্ধতো ছিলই একই সাথে ছিল কিছু আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার মতো নানামুখী ষড়যন্ত্র। দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রতো দিবালোকের মতো পরিষ্কার। পদ্মাসেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার মতো এক অভূতপূর্ব ঘটনাও ঘটেছে। কারা কারা এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত ছিল তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে হিলারি ক্লিন্টনের গোপন ই-মেইল ফাঁস হওয়াতে তা এখন দেশের মানুষ জানতে পেরেছে। এই সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় একজন শেখ হাসিনা সাহস আর দৃঢ়তা নিয়ে পাহাড়সম উচ্চতায় দাঁড়িয়েছিলেন বলে এখন সারা বিশ্ব তাঁকে এবং বাংলাদেশকে সম্মানের সাথে দেখে, সমীহ করে। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসে বলেন, উন্নয়নের জাদু দেখতে চাও তো বংলাদেশে যাও। দেশটি খাদ্যে স্বয়ংসিদ্ধ, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে, দারিদ্র্য বিমোচনে ভারত পাকিস্তানকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে, নিজের অর্থে পদ্মা সেতু বানাতে পারে। ২০১৭ সালে মহাশূন্যে দুটি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে। ষোল কোটি মানুষের দেশে নিরক্ষতার হার ত্রিশ শতাংশে নিয়ে আসতে পারে। এই সব চোখ ধাঁধানো উন্নয়নের কৃতিত্বতো শেখ হাসিনা সরকারকেই দিতে হয়।
সব ঠিক থাকলে ২০১৮ সালের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা আছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এতসব অভূতপূর্ব সাফল্যের পরও কী মানুষ সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন বিকল্প ভাবতে পারে? গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় অবশ্যই পারে। ভোট দিয়ে শয়তানকেও ক্ষমতায় বসাতে পারে। হিটলার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ক’দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ভোটাররা ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন ক্লাউনকে তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেনকে সফল নেতৃত্ব দেওয়ার পরও উইন্সটন চার্চিল ১৯৪৫ সালের নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছিলেন। ব্রিটেনের নির্বাচনের ইতিহাসে এমন অভাবনীয় ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। চোখ ধাঁধানো সব উন্নয়ন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা আর গাজীপুরের মেয়র নির্বাচনে পরাজিত হতে পারেন। ২০১৮ সালের সম্ভাব্য নির্বাচনে আপাতদৃষ্টিতে শেখ হাসিনা বা তাঁর দলের পরাজিত হওয়ার কোন কারণ নেই কিন্তু বিষয়টাকে হাল্কাভাবে নিলে ফলাফল বিপর্যয়কর হতে পারে যেমনটি ২০০১ সালে হয়েছিল। এটি যত না বিরোধী দল বা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কারণ হবে তার চেয়ে বেশি হতে হতে পারে দলের ও কিছু অঙ্গসংগঠনের অপরিণামদর্শী নেতা কর্মীদের অপকর্মের কারণে। এই মুহূর্তে বিএনপি বা তার মিত্ররা আওয়ামী লীগের জন্য তেমন কোন বড় ধরণের হুমকি নয় যদিও তাদের একটি বড় ভোট ব্যাংক আছে। তার ওপর সাংগঠনিকভাবে দলটি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। বিশ্লেষকরা মনে করেন এই দলটির নেতৃত্ব যতদিন বেগম জিয়া আর তারেক রহমানের হাতে থাকবে ততদিন দলটির স্থবিরতা কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে দলটির বিলুপ্তি ঘটবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০১৭ সালটি হবে আওয়ামী লীগের জন্য ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি কাল। শুরু করতে হবে ঘর গোছানো দিয়ে। ২০১৬ সালে দলটি একটি সফল কাউন্সিল করেছে। নূতন নেতৃত্বকে সামনে নিয়ে এসেছে। এটি একটি অত্যন্ত বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ। তবে বিভিন্ন জেলায় দলের অঙ্গসংগঠনের চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনতে না পারলে তা বিপদের কারণ হতে পারে। বছর কয়েক আগে আমি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু দুর্বৃত্তের কারণে মূল দলের কী ক্ষতি হয় তা একটি জাতীয় দৈনিকে মন্তব্য প্রতিবেদন লিখলে আমাকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক’দিন আগে অন্তঃদলীয় কোন্দলের কারণে একজন দলীয় কর্মী খুন হয়েছে। দুটি কলেজ দীর্ঘ দুই দশক ছাত্র শিবিরের দখলে ছিল। গত বছর তা শিবির মুক্ত হয়েছে। এলাকার মুক্তমনা মানুষ মনে করেছিল তারা শিবিরের দূর্বৃত্তদের হাত হতে পরিত্রাণ পেয়েছে। এখন তারাই বলছে তাদের পূর্বের বক্তব্য ভুল ছিল। ২৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলের কারনে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ বন্ধ হয়েছে। বন্ধু ওবায়দুল কাদের যতই বলুন তিনি ছাত্রলীগের কোন নেতিবাচক খবর শুনতে চান না সতর্ক না হলে তাঁর মনোবাসনা পূরণ হওয়া সম্ভব নয়।
বছর শেষে এই সরকারের অধীনে নারায়ণগঞ্জে একটি চমৎকার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। সেই নির্বাচনে বিএনপি নিজের শক্তি যাচাই করার সুযোগ পেয়েছে। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করতে পেরেছে ঐক্যবদ্ধ থাকলে যে কোন পরিস্থিতিতে দলটি অপ্রতিরোধ্য। তবে বছরের শেষ নির্বাচনটি ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচন যেটি বিএনপি বয়কট করলেও আওয়ামী লীগের বিরাট সংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। এমনটি হওয়ার অর্থ হচ্ছে জেলা পর্যায়ে দলের শৃঙ্খলার ঘাটতি রয়েছে আর যোগ্য প্রার্থী অনেক জায়গায় মনোনয়ন পান নি। মনোনয়ন নিয়ে এক ধরনের বাণিজ্য হয়েছে তেমন সংবাদ ইতোমধ্যে চাওড় হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের সময় এই সব বিষয় গুরুত্ব সহকারে বিবেচেনা করতে হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচন হবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী বিরোধী শিবিরের মধ্যে এবং সেই শিবিরকে মদদ দিতে বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহল সক্রিয় থাকবে। তাদের মোকাবেলা করতে হলে ২০১৭ সালকে প্রস্তুতি বছর হিসেবে চিহ্নিত করে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সেটি যদি না হয় তবে ২০০৯ সাল হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সকল অর্জন ভেস্তে যেতে পারে। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ হয়ে যেতে পারে আর একটি মিনি পাকিস্তান। উড়তে পারে আবার কোন এক স্বাধীনতা বিরোধীর গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা। বাংলাদেশ সব সম্ভবের দেশ এই কথাটি মনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তির ঐক্যের কোন বিকল্প নেই । সকল পাঠককে খ্রিস্টীয় নববর্ষের শুভেচ্ছা।
লেখক: বিশ্লেষক ও গবেষক । ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬