প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

 

 

রাহমান মনি                                          

 

 

ধিক এইসব সংস্কৃতির ধারক-বাহক ফতোয়াবাজদের

 

 

 

প্রথমেই জানিয়ে নিচ্ছি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ সংবিধানের প্রতি আমার পূর্ণ সন্মান এবং সমর্থন রয়েছে । আমি কোন মৌলবাদী নই এবং মৌলবাদ কে সমর্থনও করিনা । তবে, ইসলাম ধর্মালম্বী এবং ধর্মীয় বিধিবিধান মেনে চলার চেষ্টা করি। পবিত্র কোরআন এর নির্দেশই আমার দিক নির্দেশনা, মনে প্রাণে তা বিশ্বাস করি ।

এই কথা বলার কারন, জাপানের এই প্রবাস জীবনের পথ চলায় তথাকথিত সংস্কৃতিমনা বনে যাওয়া অনেক ফতোয়াবাজদের কাছ থেকে যে সমস্ত গালমন্দ শুনতে হয় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আমি নাকি মৌলবাদী, রাজাকার !

একজন সংবাদকর্মী এবং পাঠক হিসেবে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি পত্রিকা নিয়মিতভাবে পড়ার চেষ্টা করি। ডানপন্থী, বামপন্থী ,মধ্যপন্থী সব ধরনেরই। বর্তমানে ইন্টারনেট এর কল্যাণে বিনা মুল্যে অনলাইনে পত্রিকা পড়া গেলেও এই জাপানে বাংলা পত্রিকা পড়তে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে ।

কবি মোতালেব শাহ আইয়ুব প্রিন্স ভাইয়ের কল্যাণে এবং ভাবীর মহানুভবতায় বাংলাদেশের প্রথম সারির পত্রিকা পাওয়া, এবং ডাকযোগে সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনগুলোর গ্রাহক হওয়া সত্বেও স্থানীয় হালালফুড এর দোকানগুলোতে সপ্তাহান্তে ধর্না দিতাম অন্যান্য পত্রিকা গুলো পড়ার জন্য।

ছোট বেলা থেকে অভ্যাস ছিল পত্রিকা পড়ার । ঘরে রাখা ‘ইত্তেফাক’ এবং খালেদা আপার কাছ থেকে ‘সংবাদ’ নিয়ে নিয়মিত পাঠ করার পাশাপাশি হাতের কাছে যা পেতাম তাই-ই পড়তাম , এমন কি মুড়ির ঠোংগা খুলেও পড়ে নিতাম ।

সেই আমি একদিন স্থানীয় একটি হালাল ফুডের দোকানে অন্যান্য পত্রিকার সাথে ‘ইনকিলাব’ নামক একটি পত্রিকাও পড়তেছিলাম। ব্যাস , আর যাই কোথায় ! অমনি শুনতে হ’লো মৌলবাদী , রাজাকার ।

মেজাজটা খুব খারাপ হলেও সামলে নিয়েছি। নিজেকে নিজে প্রশ্ন করেছি, ইনকিলাব পত্রিকা পড়লেই কি রাজাকার হয়ে যায় ? আর , বিভিন্ন আওয়ামী লীগ পন্থী পত্রিকা পড়লেই কি মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায় ?

আমার এই লিখা পড়ে ইনকিলাব প্রেমীদের উৎফুল্ল হবার কিছুই নেই ।

তবে , ইনকিলাব এর সব লিখাই যে খারাপ তা বলা যাবে না। ইনকিলাব উলটা পালটা রিপোর্ট লিখে যেমন পাঠকদের বিব্রত করে তেমনি সরকারের সুবিধাভুগিদের চরিত্র উদ্ঘাটনেও সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে। যদিও এখন আর সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি । নিজেরাই আওয়ামী লীগ সর্বস্ব হয়ে গেছে।

আমার অভিযোগ সেখানে নয় । যে কোন পত্রিকাই সরকার বিরোধী হতেই পারে । সাংবাদিকদের কাজ অসগংতি তুলে ধরা । সঠিক কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে সেটা নিউজ হবার কথা নয় , সঠিক না হলেই নিউজ হয় । তাই, বিরোধী মতামতকে ধুলায় পদদলিত করে নয়, বিরোধী মতকে সন্মান জানানোর মন-মানসিকতা থাকা চাই। আমাদের সমাজে যেটা নেই বললেই চলে ।

বিরোধী দলকে জানতে হলে প্রয়োজন হয় বিরোধী দল ঘেঁষা পত্রিকা পড়া । এখানে বিরোধী দল বলতে সরকার বিরোধীই শুধু নয় । নিজ দলের বিপক্ষ মতকে বুঝানো হয়েছে । বিশ্বের বড় বড় নেতারা সব সময় সাথে কলম ডায়রির পাশাপাশি বিরোধী মতের কয়েকটি পত্রিকা রাখেন ।

আমি, আমার নেতা, আমার দল যা বলবে তা-ই ঠিক আর বাকীরা সব বেঠিক এটা সভ্য সমাজে কাম্য হতে পারে না। এই সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিৎ । এইসব মানসিকতার লোক দিয়ে সংস্কৃতি চর্চা হলে সেটা হবে অপসংস্কৃতি । এই অপসংস্কৃতির ধারক বাহকরাই এখন সাংস্কৃতিক অঙ্গন দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে । ফল যা হবার তাই হচ্ছে ।

আগেই বলেছি, কারো পক্ষে সাফাই গাওয়া নয় আমার বক্তব্য হলো বরং নব্য ফতোয়াবাজদের কবল থেকে দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণে ফতোয়াবাজ যে শুধু ধর্মান্ধ এবং তা কেবলি ইসলাম ধর্মালম্বী হুজুরদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়ে দেয়ার চেষ্টা যে, ফতোয়া শুধু হুজুররাই দেননা , অন্যান্যরাও ফতোয়া দিয়ে থাকে ।

ফতোয়া যে শুধু মৌলভীরা দিয়ে থাকেন তা কিন্তু নয়। ফতোয়া দেয় মৌলবাদীরা । আর আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী সমাজ , মিডিয়া জগত এবং ইসলাম বিদ্ধেষী কিছু সংখ্যক সুবিধাভুগীদের সম্মিলিত অপ্প্রচারের শিকার আলেম সমাজ ।

কোন সন্তানই জারজ হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। যে কোন শিশুই জন্মের সময় নিষ্পাপ, ফুলের মতো পবিত্র হয় । হউক সে রিকশাওয়ালা, ঋণখেলাফি, আমির কিংবা সন্ত্রাসীর ঘরে। তারপর সে ধীরে ধীরে স্বীয় কৃতকর্মের জন্যই সে পরিচিতি লাভ করে বেঁচে থাকে বা থাকতে হয় ।

আর সন্তান খারাপ হলেই যে বাপ, মা খারাপ হবে পিতা মাতা ভাল হলেই যে সন্তান ভালো হবে এমন গ্যারান্টি নেই । আলেমের ঘরে জালেম কিংবা জালেমের ঘরে আলেমের আবির্ভাব আমাদের সমাজে অহরহ ঘটছে । তাই, সন ক্ষেত্রেই যে পিতা মাতা দায়ী থাকবেন এমন গ্যারান্টি হাবিবুর রহমান খান সাহেবদের মতো সম্মিলিত সাংস্কৃতিক দলের ধারক বাহক কোথায় পেলেন তা বলেননি ।

এতোদিন জেনেছিলাম বা দেখেছিলাম যারা সংস্কৃতির সাথে জড়িত থাকেন তারা হন সৃজনশীল , সুশীল সমাজ, মননশীল। মুন্সিগঞ্জ এর খালেদা খানম ( সবার প্রিয় খালেদা আপা ) কে অন্তত তাই-ই দেখেছি। যে সংস্কৃতি আমাদের সৃজনশীল হতে শিক্ষা দেয়না, আমাদের সহনশীল হতে সাহায্য করে না, সংযত হতে শিক্ষা দেয় না, সেই সংস্কৃতি চর্চা করে লাভ কি ? সামনে মাইক্রোফোন, সমমনাদের হাততালি পেয়ে মুখে যা আসে তাই বলতে হবে , এটা কোন ধরনের সংস্কৃতির চর্চা !

মাইক্রোফোন হাতে পেলে আর হুশ থাকে না। আর পুলিশ নামক সরকারী সন্ত্রাসী দল যা জনগণের অর্থে পালিত, সেই বাহিনী যদি সহায় থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই । ধরা কে সরা জ্ঞ্যান মনে করাটা অস্বাভাবিক নয় ।

তথাকথিত ওইসব সংস্কৃতির ধারক বাহক ফতোয়াবাজ শুধুই ধিক্কার জানাই ।
 


rahmanmoni@gmail.com

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

আরও দেখুন.....

.

আরও দেখুন.....