প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

 

 

 

 

 

কাকতাড়ুয়ার প্রয়োজন-অনেকগুলো

 


আবদুল মান্নান
 

 

সদ্যসমাপ্ত কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে যে যার মতো পোষ্টমর্টম করছে, চলবে আরো বেশ কিছুদিন । একসময় সব কিছু থিতু হয়ে যাবে । পূর্বের অবস্থায় ফিরবে সব কিছুই । এই নির্বাচনে ষ্টেকহোল্ডার ছিল অনেকেই । নুতন নির্বাচন কমিশনারের অধীনে এটি প্রথম নির্বাচন । এই কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছিলেন সেই বিএনপিকে তারা বুঝাতে চেষ্টা করেছেন তাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে । কমিশন আংশিক সফল হয়েছেন কারণ রিজভী, গয়েশ্বর, মউদুদ, খোন্দকার মোর্শারফ, আবদুল্লাহ্ আল নোমান, দুদু সকলে মনে করেন নির্বাচন পুরোপুরি সুষ্ঠু হয় নি, হলে তাদের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু একশত ভাগ না হলেও কাছাকাছি ভোটারের সমর্থন পেতেন । গয়েশ্বর একধাপ উপরে উঠে বলেছেন নির্বাচন ‘আনফেয়ার’ হয়েছে তবে ফলাফল ‘ফেয়ার‘ হয়েছে । যে দিন একাত্তরে আলবদরদের হাতে বুদ্ধিজীবীদেরকে নির্বোধ আখ্যা দিয়েছিলেন সে দিন হতে গয়েশ্বরের মানসিক সুস্থতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন । সরকারের প্রয়োজন ছিল এটি প্রমাণ করা তাদের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে । তারা সেটি নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে একশত ভাগ প্রমাণ করতে পেরেছেন । কুমিল্লায় সরকারি দলের প্রয়োজন ছিল দলের সভানেত্রী যে নির্দেশই দিক না কেন তাদের কোন্দল মিটানোর সাধ্য কারো নেই, হতে পারেন তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা তা প্রমান করা । সেটিতে তারা একশত ভাগ সফল । একদল সুশীল আর মিডিয়ার প্রয়োজন ছিল এটি প্রমাণ করতে সরকার যতই উন্নয়নের কথা বলুক না কেন এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে সরকারি দলের পরাজয় অনিবার্য । এরা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ ছাড়া আর যে কোন দলই থাকুক না কেন তাতেই সন্তুষ্ট কারণ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়াতে তারা শুরু হতেই মর্মপীড়ায় ভুগেন । এদের তেমন রাখঢাক নেই । একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকের একজন প্রতিবেদকতো নির্বাচনের পর দিনই লিখে ফেললেন ‘কুমিল্লায় ব্যালট বিপ্লব’। কোন কারণে ২০১৯ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপর্যয় ঘটলে নির্ঘাত এই দৈনিকের হেডিং হবে ‘অবশেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মুক্ত হলো’ । পদ্মাসেতু নাটক নিয়ে পত্রিকাটির ভূমিকা বিশ্বব্যাংকের চাইতেও নষ্ট ছিল ।
একটু পিছনে ফিরে যাই । ১৯৯১ সালে এরশাদের পতনের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি’র তিনশত আসনে প্রার্থী দেওয়ার মত কোন প্রার্থীই ছিল না । এটি স্বীকার করে নেওয়া ভাল নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের চাইতে বিএনপি অনেক বেশী স্মার্ট ও দক্ষ । তারা সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে জানে । আওয়ামী লীগের অনেক নেতা নেত্রী যখন নির্বাচন পরবর্তি কালে কে কোন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পাচ্ছেন সে হিসেবে ব্যস্থ তখন বিএনপি কমপক্ষে দুই শত আসনে জামায়াতের সাথে আসন ভাগাভাগির আঁতাত করে ফেলেছে । অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বাকশাল নেতৃত্বাধীন জোটকে ৬৮টি আসন ছেড়ে দিয়ে সর্বনাশের প্রথম সূত্রপাতটি ঘটালো । সেই অর্ধশত আসনের মধ্যে মাত্র পাঁচটি আসনে বাকশাল জয়ী হয়েছিল । বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাঁর কন্যা গণতন্ত্র পূনরুদ্ধারের জন্য এত যে সংগ্রাম করেছেন, এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসলে প্রথম নির্বাচনে তাঁকে বিরোধী দলীয় আসনেই বসতে হয় আর তার জন্য কাউকে দায়ী করলে দলের নির্বাচন পরিচালনায় যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদেরকেই দায়ী করতে হয় । ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও বিপর্যয়ের গুলিটা কানের কাছ দিয়ে চলে গিয়েছিল । সেই সময় জাসদের আ স ম আবদুর রব ও জাতীয় পার্টির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সমর্থন ও সহায়তা না করলে শেখ হাসিনার পক্ষে সরকার গঠন দুরুহ হয়ে পরতো । ইতিহাসের দায়বদ্ধতার কারণে কিছু সত্য কথাতো বলতেই হবে । ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হচ্ছে এমন ধারণা দলের নেতা কর্মী সমর্থক সকলেই ধরেই নিয়েছিলেন । সেই সময় রাষ্ট্রপতি যখন আমলা আবু সাঈদকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করলেন বিএনপি’র সে কী চিৎকার । একেবারে দলীয় ক্যাডার এখন প্রধান নির্বাচন কমিশনার । একধাপ এগিয়ে গিয়ে বললেন এই আবু সাঈদকে বঙ্গবন্ধু (তাদের ভাষায় শেখ মুজিব) ১৯৭৫ সালে পাবনার ডিস্ট্রিক গভর্নর নিয়োগ করেছিলেন । আসল ডিস্ট্রিক গভর্নর অধ্যাপক আবু সাঈদকে (১৯৯৬-২০০১ সালের শেখ হাসিনার সরকারের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ) পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বলতে হলো এই আবু সাঈদ সেই আবু সাঈদ নয় । সেই আবু সাঈদ আমি। তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব বেড়ে গেল । তিনি কত উঁচু মাপের নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনার তা বিএনপি’র কাছে প্রমান করতে হবে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে তিনি সারা দেশে নিরপেক্ষতার নামে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আর সমর্থকদের ঠেঙ্গিয়ে ঘর ছাড়া করলেন । নির্বাচনের দিন অনেক জায়গায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পর্যন্ত কোমড়ে দড়ি দিয়ে পুকুরে ডুবিয়ে রাখলেন । দুপুর হওয়ার আগেই কিল্লে ফতে । সন্ধ্যার আগেই বিএনপি-জামায়াত বিজয় মিছিল বের করলো অনেক স্থানে কারণ তারা জেনে গেছে নির্বাচনে কে জিতবে । পাকিস্তানের তৎকালিন আইএসআই প্রধান জেনারেল আসাদ র্দুরানি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশে আইএসআই পঞ্চাশ হাজার ডলার খরচ করেছে শুধু বিএনপিকে বিজয়ী করে আনার জন্য এবং শুধু ১৯৯১-৯৬ সনে নয় ২০০১-০৬ সনের নির্বাচনেও আইএসআই বাংলাদেশে একই উদ্দেশ্যে বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে । ২০০১ সালে বিচারপতি লতিফুর রহমানের সরকারের এক তত্ত্বাবধায়ক এক রহস্যজনক কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছিলেন । সব আলামত দেখে প্রয়াত এম আর আখতার মুকুল, আমি ও এবি এম মুসা লিখেছিলাম এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জেতার কোন সম্ভাবনা নেই । আমার লেখাটি সম্পাদক প্রকাশ করেননি । পরে তিনি আমাকে বলেছিলেন নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে এই ধরণের লেখা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের মধ্যে কোন রকমের হতাশা তৈরি করতে চাই নি। আমরা কেউই ভবিষ্যতদ্রষ্টা ছিলাম না । পরিবেশ পরিস্থিতি বিচার আর ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করে একটি নির্মোহ উপসংহার টানার চেষ্টা করেছিলাম । এ’রকম ভবিষ্যতবাণী আরো দু’একটি ক্ষেত্রে সত্য প্রমাণিত হয়েছে । শুধু ২০১০ সালের চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমার প্রত্যাশার ভবিষ্যতবাণী সম্পূর্ণ ভুল ছিল । বুঝতে পারিনি যে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চট্টগ্রামের মানুষ এত ভালোবাসতো তার পায়ের নীচের মাটি বহু পূর্বে সরে গিয়েছে । প্রায় দুই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর একান্ত আস্থাভাজন একদা ওয়ার্ড কমিশনার মঞ্জুরুল আলমের কাছে । মঞ্জুরুল আলমকে সমর্থন দিয়েছিল বিএনপি । দূঃখভারাক্রান্ত মনে দেখেছি যে মানুষগুলো পূর্বের নির্বাচনে ট্রেন বাস ভর্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থান হতে গিয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ভোট দিতে ঠিক তারাই ২০১০ সালের নির্বাচনে গিয়েছিল তাকে হারাতে । ট্রেনে ঢাকা ফেরার সময় একজন ফোনে কাউকে বেশ উচ্চ গলায় বলছিল ‘মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হারাতে চট্টগাম গিয়েছিলাম । কাজ শেষ করে ফিরছি’ । আমার কান্না ধরে রাখতে পারিনি । নির্বাচনের দিন রাতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী পরিচালনা দপ্তরে আমি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ আর ছিল না ।
এবার সদ্য সমাপ্ত কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে ফিরে আসি । নির্বাচনের সপ্তাহ দু’এক আগে পেশাগত কাজে কুমিল্লা গিয়েছিলাম । বেশ কয়েকজন সমাজদার আর বিচক্ষণ ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলাম কে হচ্ছেন নূতন মেয়র ? প্রায় সকলেই এক বাক্যে বললেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী যোগ্য এবং তার সততা নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই । তিনি এর আগে কাউন্সিলার ছিলেন । কিন্তু তিনি আফজাল খানের কন্যা হওয়ার কারণে তার বিজয়টা কঠিন হয়ে গেল, বলা যেতে পারে অসম্ভব । এক সময় আফজাল খান কুমিল্লা আওয়ামী লীগের একজন ডাকসাইটে নেতা ছিলেন । তিনি আর একজন আওয়ামী লীগ নেতা বাহারউদ্দিন বাহার বিভিন্ন সময়ে ভয়াবহ কোন্দলে জড়িয়ে পরেছিলেন যে কারণে কুমিল্লায় বর্তমানে আওয়ামী লীগ কম পক্ষে ছয়ভাগে বিভক্ত । ১৯৭৩ সনের পর কুমিল্লা সদর আসনে ২০০৮ সনে বাহারউদ্দির বাহার প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছিলেন । এর পর দু’জনের সমর্থকদেও মাঝে আরো বেড়েছিল । আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বন্ধু ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় দলে কাউয়া (কাক) ঢুকে পড়েছে গোমতি নদীর পানির স্রোতের মতো, এই বিভক্তিটাকে আরো জোড়ালো করতে । এদের অনেকেই অর্থের বিনিময়ে ঢুকেছেন এমন কথাও শুনতে হলে আমাকে । বাহার যখন ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচন করেন তখন আফজাল মনোনয়ন না পেয়ে তার ছেলেকে বাহারের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন । সেই আফজালের মেয়েকে এবার শেখ হাসিনা প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন । বাহার ক্যাম্পের কথা হলো তাতে কী হয়েছে ? মেয়েতো আফজালের । কর্ণেল (অব:) আকবর হোসেন (বর্তমানে প্রয়াত) বিএনপির সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী ছিলেন । প্রায়শঃ বলতেন যতদিন আমার বন্ধু আফজাল আর বাহার আওয়ামী লীগের রাজনীতি করবেন ততদিন আমার বিজয় নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করতে হবে না । কুমিল্লায় আর একজনের কথা শোনা যায় । তিনি পরিকল্পানা মন্ত্রী লোটাস কামাল । এই নির্বাচেন তিনি প্রকাশ্যে তেমন কোন ভ’মিকা রাখেন নি এবং তাঁর সমর্থকরা অনেকটা নির্লিপ্ত ছিলেন । সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেল ফলাফল অন্য রকমও হতে পারতো । সেদিন কুমিল্লা ক্লাবে বসে জানতে চাই ঢাকা হতে এত বড় বড় কেন্দ্রীয় নেতারা এসেছেন তারা কী পরিস্থিতি উন্নত করতে কোন ভূমিকা রাখবেন না? সোজা উত্তর যেখানে খোদ দলীয় প্রধান সফল হন নি সেখানে অন্যরা কী আর তেমন ভূমিকা রাখবেন । আর কেন্দ্রীয় নেতারাতো ভোট দিবেন না আর প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে ভোটারদের সাথে কথা বালার বা প্রচার চালানোর তেমন একটা সুযোগও পাবেন না । এই কাজটি ছাত্রলীগ করতে পারতো । দেখি তাদের উপরও জনগণের তেমন একটা আস্থা নেই । তাদের মতে ছাত্রলীগেই কাউয়ার সংখ্যা বেশী । কাউয়াদের যারা সাদরে দলে গ্রহণ করেছে তারা এটি উপলব্দি করতে ব্যর্থ হয়েছে এই কাউয়ারা ২০১৯ সালের সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই দলে ভিড়েছে । সেই নির্বাচনে একটি ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটিয়ে তারা তাদের নিজ বাসায় ফিরে যাবে । ২ এপ্রিল দৈনিক ইত্তেফাকের প্রথম পৃষ্টায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে আওয়ামী লীগের মাঠ এখন হাইব্রিডদের দখলে । গত চার বছরে ঢুকেছে চার হাজারের বেশী । এরাই আসল কাউয়া । উদ্দেশ্য টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, চাকুরির ফেরিওয়ালা । এরা কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নারের কাজ বন্ধ দেওয়ার মতো ধৃষ্টতা দেখায় । চট্টগ্রামের দুটি এলাকার মানুষ মোটামুটি ভোটের সময় নৌকা মার্কায় ভোট দেয় । ক’দিন আগে খোঁজ নিয়ে জানলাম আগামী নির্বাচনে তারা হয় ভোট কেন্দ্রে যাবেন না অথবা গেলেই অন্য কোন দলকে সমর্থন করবেন । তাদের ভাষায় এই কাউয়ারা গত কয়েক বছরে তাদের জীবন দুর্বিসহ করে ফেলেছে । সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে এটি নিশ্চিত ভাবে বলা যায় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে এই কাউয়ারা হয় নিজ দলে ফিরে যাবে অথবা নৌকার ব্যাজ পরে প্রতিপক্ষের জন্য কাজ করবে ঠিক যেমনটি করেছিল কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় । এর একটি আলামত সম্প্রতি দেখা গেছে । টেকনাফ হতে নির্বাচিত সংসদ সদস্য বদি আহমদ ইতোমধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আ্যডভোকেট খোন্দকার মাহবুবের সাথে দেখা করেছেন কক্সবাজারের ইনানি বীচে পোজ দিয়ে ছবি তুলেছেন এবং তা প্রচার করেছেন । একসময় বদি বিএনপি’র একজন একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন । মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগে এসেছিলেন । শোনা যাচ্ছে আগামী সংসদ নির্বাচনে যে শ’খানেক সংসদ সদস্য মনোনয়ন পাবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে তার মধ্যে বদিও আছেন । হয়তো বদি সময় থাকতে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাচ্ছেন । ২০০৮ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগ অনেক গঠনমূলক ভূমিকা পালন করেছে । কোন কোন নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের পূর্ব রাতে রাত জেগে পাহাড়া দিয়েছে যাতে জামায়াত বিএনপি রাতের অন্ধকারে কালো টাকা বিলি করতে না পারে । নির্বাচনের দিন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদেও ভোট দিতে নিয়ে গিয়েছে । কুমিল্লা সিটি কর্পোরশেন নির্বাচনে এক লক্ষ ভোটার ভোট দিতে যায় নি । এদেও ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা কেন করা হলো না? এমন প্রশ্নতো উঠতেই পাওে । এই সব গঠন মূলক কাজ করার দায়িত্ব ছিল ছাত্রলীগের । আগামী নির্বাচনের আগে তেমনটি আর দেখা যাবে মনে হয় না কারণ ছাত্রলীগের সেই নিষ্ঠা তেমন একটা আছে বলে আর মনে হয় না কারণ ছাত্রলীগেই সব চাইতে বেশী কাউয়া ঢুকেছে বলে মনে করা হয় । এই কাউয়া তাড়াতে আগামী নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের অনেকগুলি কাকতাড়ুয়ার প্রয়োজন হবে যারা নির্দয়ভাবে সকল কাউয়াকে ঝেঁটিয়ে দল হতে বহিষ্কার করতে পারবে । কাজটি কঠিন কিন্তু একাদশ সংসদ নির্বাচনে যে কোন ধরণের বিপর্র্যয় ঠেকাতে এই কাজটি এখনই শুরু করতে হবে । আর তা যদি না হয় কয়েক লক্ষ মানুষকে একাত্তরের মতো দেশ ত্যাগ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে । বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর দলের অনেক নেতা আর সংসদ সদস্যকে চোখ বন্ধ করে তাদেও অপকর্মেও জন্য দল হতে বহিষ্কার করেছিলেন । তিনি পারলে বর্তমান নেতৃত্ব কেন পারবেন না ?

লেখক : বিশ্লেষক ও গবেষক । এপ্রিাল ৩, ২০১৭

 

 

WARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ

 

 

 [......লেখক আর্কাইভ]