[প্রথমপাতা]
|
ইতিহাস নিয়ে বালখিল্যতা দুঃখজনক
(দ্বিতীয় পর্ব)
মোঃ মহিউদ্দিন মজুমদার মাসুম
বিএনপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক জিয়ার ইতিহাস চর্চার গবেষনাগার থেকে
আবিস্কৃত ইতিহাসের প্রথম বিতর্কিত ডিনামাইডটির ঝড় থামতে না থামতে ৮ এপ্রিল
২০১৪ ইং লন্ডন থেকে দলীয় নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে আবারো বিস্ময়কর দ্বিতীয়
আবিস্কারটি উত্থাপন করলেন । তারেক জিয়া তার ভূমিকা বক্তব্যে উনারই মাতা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অন্যান্য সিনিয়র
নেতাদের সমর্থন সূচক বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন ।
আরো বলেছেন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগ নেতারা যেহেতু উনার ছুঁড়ে দেওয়া
প্রশ্নের উত্তর দেননি । তা প্রমান করে শেখ মুজিব নয় শহীদ প্রেসিডেন্ট
জিয়াউর রহমানই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট ও স্বাধীনতার ঘোষক ।
এরপর উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীদের হাততালিতে উজ্জীবিত হয়ে দ্বিতীয় আবিস্কারটি
তুলে ধরেন ।
তারেক জিয়া নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আহব্বান রাখলেন ৪৩ বছর ধরে দেশ-জাতি যে
মিথ্যা বিভ্রান্তিকর ইতিহাস জেনে আসছে উনি ঐতিহাসিক দলিলের ভিত্তিতে সেই সব
বিভ্রান্তি দূর করে সত্য প্রতিষ্ঠা করবেন এবং জাতিয়তাবাদী দলের কর্মীরা যেন
এই সত্য ইতিহাস জনগনের মাঝে ছড়িয়ে দেয় । বিভ্রান্তি দূর করার নামে যে
নাতিদীর্ঘ বক্তব্যটি দিলেন তাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে
বিভিন্ন প্রসঙ্গে কোড করতে গিয়ে অনেকটা শ্লেষ মিশ্রিত ভাষায় শেখ মুজিব, শেখ
হাসিনার বাপ, সে, সেই ব্যাক্তি ও আলফা ইন্স্যুরেন্সের দালাল শেখ মুজিব
ইত্যাদি ভাষায় আক্রমন করেছেন, এছাড়াও মুজিবনগর সরকারে থাকা জাতীয়
নেতাদেরকেও কোন সন্মানসূচক বিশেষন ছাড়াই সৈয়দ নজরুল, তাজউদ্দীন ও সে তারা
ইত্যাদি শব্দে উপস্থাপন করেছেন, যা শুনতে দৃষ্টিকটু শুনিয়েছে এবং তাতে
ভব্যতা সভ্যতা লেশমাত্র ছিলনা । প্রকারান্তরে নিজের বাবা-মাকে কোড করার
ক্ষেত্রে বিশেষনের ঘাটতি রাখেননি ।
তারেক জিয়া যেভাবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে টেনে হেঁচড়ে
নীচে নামিয়ে নিজের বাবা তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর
রহমানকে টেনে উপরে তোলার চেষ্টা করেছেন, তা রীতিমত অসভ্য যুগে রাজ্য দখলের
ন্যায় মনে হয়েছে । দখলদার রাজা যেমনি রাজ্য দখলের মাধ্যমে রাজ্যের সব ভোগের
অধিকার পেয়ে যান, তারেক জিয়া অনেকটা সেরকমই মুখের সামনে মাইক ও তথ্য
প্রযুক্তির সুবিধা পেয়ে ইতিহাস চর্চার নামে যা-তা বলার সুবিধা ভোগ করলেন ।
আমার দৃষ্টিতে জাতির জনক ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতিষ্ঠিত সত্য নিয়ে বিতর্ক
থাকলে তা বলার জন্য সর্বদলীয় ফোরাম ঠিক করা উচিত, ঐ ফোরাম অনুমোদন করলে
তবেই তা সর্ব সাধারনের জন্য প্রচার মাধ্যমে আসতে পারে, তবে লাগাম ছাড়া
বল্গাহীন ভাবে চলতে পারে না । কারন আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে অনেকেরই
কথাবার্তা ও প্রতিপক্ষ সমালোচনার সময় শব্দ প্রয়োগে শিষ্ঠাচারের মাত্রা
ভয়াবহ রকমের নিন্মমানের ।
এখনো তারেক জিয়ার দ্বিতীয় আবিস্কারটির কথা বলাই হলো না । শুনলে ভাববেন, এই
কথাতো পরিচিত মনে হচ্ছে, অনেক আগে কারা যেন বলেছিল, হ্যাঁ ঠিকই ভাবছেন,
তৎকালিন পশ্চিম পাকিস্থানী সরকার মুজিব নগর সরকারকে অবৈধ বলেছিল, সাথে সাথে
আকুন্ঠ সমর্থন দিয়ে প্রচারে এনেছিল ওদের এদেশীয় দোসঢ় রাজাকার আলবদর ও
আলসামস্ বাহিনীর প্রেতাত্মারা । কিন্তু স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের
বীর উত্তম খেতাবধারী সেক্টর কমান্ডার ও জেড ফোর্সের অধিনায়কের বড় সন্তান
তারেক জিয়া ঐ পাক প্রেতাত্মাদের অনুকরনে বললেন-শেখ মুজিব স্বাধীন
বাংলাদেশের প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ।
পাকিস্তানী ও ওদের এদেশীয় প্রেতাত্মারা আমাদের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করতে
আন্তর্জাতিক মহলকে আমাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর জন্য বার-বার মুজিব নগর
সরকারকে অবৈধ সরকার বলে আসছিল । দীর্ঘ ৪৩ বছর পর তারেক জিয়া ঐ একই সুরের
প্রতিধ্বনী করলেন কাদের স্বার্থে । তার জবাব তারেক জিয়া এবং বিএনপিকেই দিতে
হবে । এই পর্যন্ত সমালোচনা পড়ে মনে হতেই পারে আমি তারেক জিয়াকে কল্পিত ভাবে
পাক প্রেতাত্মার অনুচর বানিয়ে অন্যায়ভাবে উনার ভাবমূর্তির ক্ষুন্ন করছি ।
তারেক জিয়ার গবেষনাগার থেকে বিস্ময়কর উদ্ভবনা এবং তথাকথিত সত্য ইতিহাস (!)
সম্পর্কে তথ্য উপাত্ত দিয়ে ভুল বা অযৌক্তিক প্রমান করিনি, অথচ ভীন্ন
প্রক্রিয়ায় সমালোচনাকে একপেশে এবং উদ্দেশ্যমূলক ভাবতেই পারেন ।
যাহোক আসুন দেখি, তারেক জিয়ার কথার সাথে তৎকালিন বাস্তবতা কী বলে, তারেক
জিয়া ১০ এপ্রিল গঠিত মুজিব নগর সরকারের প্রক্লেমেশন থেকে পড়ে যা বলেছেন তা
সংক্ষেপ করলে দাঁড়ায়-সংবিধান গৃহিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের
অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন
করবেন । তারেক জিয়া এই প্রক্লেমেশনের আলোকে বললেন- শেখ মুজিব দেশ স্বাধীন
হওয়ার পর ১০ জানুয়ারী দেশে ফিরে ১২ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতি না হয়ে
প্রধানমন্ত্রীর হয়ে গেলেন, তখনও সংবিধান প্রনয়ন হয়নি । সংবিধান প্রনয়নের
পূর্বে শেখ মুজিব এভাবে রাষ্ট্রপতি না হয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়াটা অবৈধ । তাই
শেখ মুজিবকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী বলা যায় । আরো
বললেন এখন শেখ মুজিবের মত শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনাও অবৈধ প্রধানমন্ত্রী
।
তারেক জিয়ার উপস্থাপনা শুনলে বঙ্গবন্ধুকে অবৈধ প্রধানমন্ত্রীই মনে হবে ।
কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর সাথে থাকা আইনবিদ ডঃ কামাল হোসেন,
ব্যারিষ্টার আমিরুল ইসলাম সহ অন্যান্য বিজ্ঞ আইনবিদ ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব
তাজউদ্দিন ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম সহ অন্যরা এতোটা কাঁচা কাজ করেছেন, এমনটা
ভাবলেন কেন ? নাকী তারেক জিয়া জেনেও সুকৌশলে এঁড়িয়ে গেছেন । তারেক জিয়ার
অজানা থাকার কথা নয়- ঐ প্রক্লেমেশনে বঙ্গবন্ধুকে কতটুকু ক্ষমতা দেয়া ছিল ।
তারেক জিয়া যতটুকু পড়েছেন ঠিক তার নিচেই লিখা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান প্রয়োজনে গনপ্রজাতন্ত্রের সরকার গঠন থেকে শুরু করে বিচারক
কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ প্রত্যাহার ও সংবিধান রচনা সহ রাষ্ট্রের যাবতীয়
বিষয়ে পরিবর্তন পরিমার্জন আনতে পারবেন । বঙ্গবন্ধু ঐ প্রক্লেমেশনের আলোকে
১১ জানুয়ারী অর্ডিন্যান্স জারী করে পরিবর্তন আনেন, যাতে উল্লেখ ছিল
রাষ্ট্রপতির সমস্ত দায়িত্ব ও ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর বলে বিবেচিত হবে ।
তাছাড়া ঐদিন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনের বাসায় সংসদ বসিয়ে
সম্মিলিত সিদ্ধান্ত উপনীত হন বাংলাদেশ সংসদীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত হবে ।
আর ১২ জানুয়ারী সংসদ বসে এবং সাংসদরা বঙ্গবন্ধুকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
করেন । এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী
হওয়া সবই বৈধ ও আইনানুগ । এরপর কী বলবেন, তারেক জিয়া ইতিহাসের সত্য
অনুসন্ধান করেছেন নাকী উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বঙ্গবন্ধু ও মুজিবনগর সরকারকে
নিয়ে পাক কায়দায় কালিমালিপ্ত করার অপচেষ্টা করেছেন ।
এরপর অভিযোগ আনলেন শেখ মুজিব জাতিসংঘের ট্রাভেল ডক্যুমেন্ট না নিয়ে
পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ফিরেছে । শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশ
চাইলে পাকিস্তানী পাসপোর্ট নিয়ে দেশে আসত না । তারেক জিয়া জানেন কিনা
জানিনা, একমাত্র ভীনদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা মানুষ এবং কারো নাগরিকত্ব
বাতিল হলে ঐ ব্যাক্তিটি জাতিসংঘের ট্রাভেল ডক্যুমেন্ট পেয়ে থাকেন ।
বঙ্গবন্ধু যেহেতু পাকিস্তানী কারাগারে বন্দী ছিলেন এবং রাজনৈতিক আশ্রয় বা
নাগরিত্ব বাতিল-এই বিষয়গুলোর সাথে সম্পর্কিত নয়, সেহেতু বঙ্গবন্ধুর ট্রাভেল
ডক্যুমেন্ট পাওয়ার সুযোগই ছিল না । তারেক জিয়া এসব বলে বঙ্গবন্ধুকে খাটো
করতে গিয়ে নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট করেছেন ।
একটা দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে বা সাথে-সাথেই ঐ দেশের সবকিছু একদিনেই পরিবর্তন
করে নতুন ভাবে চালু করা সম্ভব নয়, কল্পিত আলাদিনের চেরাগ রাজনীতিবিদদের
হাতে থাকে না, পরিবর্তনের জন্য সময়ের প্রয়োজন । তারেক জিয়া জানেন কিনা
জানিনা, আমাদের নিজস্ব মুদ্রা ব্যবস্থা গড়ে ওঠার পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ ৭২
সালের মাঝা-মাঝি সময় পর্যন্ত পাকিস্তানী আমলের মুদ্রায় লেনদেন হয়েছে, তাতে
প্রমান করেনা, আমরা পাকিস্তান রয়ে গেছি, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি । তাছাড়া
যদি রণাঙ্গনের শহীদ মুক্তিযোদ্ধার ঘরে পাকিস্তানী পাসপোর্ট পাওয়া যায়, আমরা
ঐ শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানের চর বা পাকিস্তানী বলতে পারি কী ?
নিশ্চয়, তা পারি না । তারেক জিয়া নিশ্চয় জানতেন উনার বাবা তৎকালিন মেজর
জিয়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জীবনবাজী রেখে লড়েছেন কিন্তু ঘরে পাকিস্তানী
পাসপোর্ট রক্ষিত ছিলো । এইটা ঐ সময়ের বাস্তবতা । এইটা নিয়ে সমালোচনা
রাজনৈতিক অর্বাচীনদের মুখেই মানায়, কোন সাধারন মানের বুদ্ধির মানুষও এই
ধরনের কথা তুলবেন না ।
তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর একটি পুরনো ভিডিও-ক্লীপ দেখালেন, যা মার্চ মাসে উত্তাল
দিনগুলোর কোন এক সময় ধারন করেছিল বিদেশী সাংবাদিকরা, যাতে বঙ্গবন্ধু
ছয়-দফার ভিত্তিতে স্বায়ত্বশাসনের কথাই বলেছিলেন । এখানে উল্লেখ্য,
বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষন এমনভাবে দিয়েছিলেন, যাতে পাকিস্তানী শাসকগোষ্টী
দেশদ্রোহীতার অভিযোগে বঙ্গবন্ধু ঝুলিয়ে দিতে না পারেন, আবার জনগনও
স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন । এ থেকে কেউ যদি বঙ্গবন্ধু
স্বাধীনতা চাইতেন না, চান না, স্বাধীনতার কথা জীবনে চিন্তাও করেননি । আবার
পক্ষান্তরে, মেজর জিয়া স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখতেন, জনগনের মনের কথা বুঝতে
পারতেন, পড়তে পারতেন । এইভাবে তুলনা করাটা একদিনে যেমনি হাস্যকর, অন্যদিকে
বিব্রতকরও বটে অর্থাৎ এই তুলনায় রাজনীতি বিশ্লেষকরা দেশের প্রধান
বিরোধীদলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের চিন্তার দৈনতা দেখে লজ্জার হাসি
হাসবেন আর জিয়াউর রহমান জীবিত থাকলে ছেলের আদিখ্যেতায় নিশ্চিত বিব্রতবোধ
করতেন ।
তারেক জিয়া কেন বুঝেন না, ২৬ মার্চ চট্রগ্রামে আর্মি ক্র্যাকডাউনের আগে
জনগন মেজর জিয়াকে কখনও চিনতেন না, জানতেন না । রাজনীতিকরা জনগনকে স্বপ্ন
দেখিয়েছেন, জনগনকে তৈরী করেছেন । এই রাজনীতিকদের বক্তব্য বিবৃতি আন্দোলন
সংগ্রামের উত্তাপে মেজর জিয়াসহ অসংখ্য সামরিক বাহিনীর অফিসার-জোয়ানরা
স্বাধীনতার স্বপ্ন তৈরী করেছেন, লালন করেছেন এবং যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছেন ।
তারপরও তারেক জিয়ার উত্থাপিত বিতর্কটি যদি ইতিহাসের তথ্য উপাত্তের আলোকে
সত্য বলে বিবেচিত হতো, দেশ-জাতি উনার প্রতি কৃতজ্ঞ হতো । কিন্তু তারেক জিয়া
যেভাবে বিভ্রান্তিকর যুক্তি দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠিত সত্যকে চ্যালেঞ্জ
ছুঁড়েছেন, তা উনার নিজের পড়া-শুনা ও জ্ঞান-গরীমার সীমাবদ্ধতাকে জানান
দিয়েছেন । আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী মা খালেদা জিয়া হয়তঃ ছেলের গবেষনামূলক
পড়াশুনাকে উৎসাহিত করার জন্য সমর্থন দিয়েছেন, এতে দোষের কিছু ছিলনা-যদি
তারেক জিয়ার বয়সটা শিশু পর্যায়ে থাকতো । আর বিএনপির বিজ্ঞ বর্ষিয়ান নেতারা
তারেক জিয়াকে সমর্থন দিয়ে প্রমান করলেন জ্বী হুজুরের রাজনীতিই উনাদের নেতা
হওয়ার যোগ্যতা । নচেৎ জেনে শুনে উচ্চ শিক্ষিত জ্ঞানী নেতারা সমর্থন দিবেন
কেন ? উনারা ইতিহাসের সত্যতা জানেন না, এমনটা ভাববার কোন অবকাশ নেই ।
তারেক জিয়া নিশ্চয় জানেন ইতিহাসখ্যাত কোন রাজনীতিবিদের জীবনই কুসুমাস্তীর্ণ
ছিলনা, সর্বক্ষেত্রে সফলতা এবং অনুকূল পরিবেশ, এমনটাও নয় । রাজনীতিকরা
তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ভুলের মাশুল গুনতে হয়, আবার ভুল না করেও
প্রতিপক্ষের চক্রান্তের শিকার হতে হয় । তারেক জিয়া ভুলের মাশুল গুনছেন নাকী
চক্রান্তের শিকার, তা আলোচনায় আনছি না । বলার বিষয় হচ্ছে উনি যে বয়সে
দাঁড়িয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলীকে নিয়ে বিতর্ক
তুললেন, সেই বয়সে বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন । ইতিহাসের জন্ম দেয়াই
রাজনীতিকদের কাজ আর ইতিহাসবিদরা বের করে আনবেন ঐ ইতিহাসে কোন রাজনীতিবিদের
কী ভূমিকা ছিল । তারেক জিয়া ইতিহাসের ছাত্র হইতে চাইলে বা নিজেকে একাধারে
ইতিহাসবিদ ও রাজনীতিক ভাবলে ভীন্ন কথা । আর তা না হলে ইতিহাসের দায়িত্ব
ইতিহাসবিদদের হাতে ছেড়ে দেয়াই বাঞ্চনীয় । তাছাড়া নিজের ফেরারী জীবনের অবসান
ঘটিয়ে সব কিছুকে রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করে পরিস্থিতি জয়ের ইতিহাস তৈরী
করা, এতে অন্ততঃপক্ষে বিএনপির দৈনদশা কেটে চাঙ্গাভাব আসবে । (-শেষ )
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.
[প্রথমপাতা] |
লেখকের আগের লেখাঃ
|