সাইতামায় বাংলাদেশী গৃহবধুর
হত্যাকান্ডঃ নিহতের শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন
কমিউনিটি রিপোর্ট ।। মার্চ ১০, ২০১৯ ।।
সাইতামা'তে স্বামীর ছুরিকাঘাতে নিহত গৃহবধু শামীমা আকতার হত্যাকান্ডের আরো তথ্য
বেরিয়ে আসছে। নিহতের ছোট ভাই রুহুল আমিন জানিয়েছেন তার দুলাভাই শাহাদাত হোসেন
হৃদরোগী এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন।
কমিউনিটি নিউজের সাথে আলাপকালে রুহুল আমিন জানান ৬ ভাই-বোনের মধ্যে নিহত শামীমা
আকতার ছিলেন ৪র্থ, আর রুহুল আমিন ৫ম। বাংলাদেশে তাদের বাড়ি
মুন্সীগঞ্জ জেলায়। পরিবারের মধ্যে তারা শুধু দু'জনেই জাপানে থাকতেন। গত বছরের
অক্টোবরের ২০ তারিখ তাদের মা মারা যান, তারা পিতাকে হারিয়েছেন ২০১৫ সালের
জানুয়ারিতে।
তারা জাপান সরকারের কাছ থেকে বেকার ভাতা পেতেন। ডিসেম্বর থেকেই শাহাদাত হোসেনের
মধ্যে মানসিক চাপ থেকে আচরণ পরিবর্তন হতে থাকে। এ সময় তিনি খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে
দেন। এক রাতে হঠাৎ তিনি সারারাত ধরে তিনি রান্নাঘরে পায়চারি করতে থাকেন। শামীমা
আকতার চিন্তিত হয়ে রুহুল আমিনকে খবর দেন। তারা তাকে ট্যাক্সি করে হাসপাতাল নেন।
হাসপাতালে নেয়ার পর ৩ মাস ধরে চিকিৎসা দেয়া হয়। ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখ তিনি
হাসপাতাল থেকে সুস্থ্ হয়ে ছাড়া পান।
রুহুল আমিন
জানান, তাদের দু'জনের মধ্যে কোনো দাম্পত্য কলহ ছিলো না
রুহুল আমিন সস্ত্রীক ইবারাকি থাকেন। তার স্ত্রী জাপানি। আগের সপ্তাহের শনিবার
২৩ তারিখ তিনি বোন-দুলাভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ তার
বোনের সাথে শেষ কথা হয়েছিলো তার। এরপর তিনি ৬ তারিখ রাতে বোনের বাসায় ফোন দিলে
কেউ ফোন ধরেনি। পরদিন তিনি আবার ফোন দেন, কিন্তু তখনও কেউ ফোন ধরেনি। চিন্তিত
হয়ে তিনি রাতে সরাসরি তার বাসায় চলে যান। বাসায় গিয়ে কলিংবেল টিপতে থাকলেও কেউ
দরজা খোলেনি। এ পর্যায়ে তিনি পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ বিস্তারিত শুনে তাকে জানায় বিএম শাহাদাত হোসেন নামের একজন মিতা পুলিশ
স্টেশনে বিএম শাহাদাত হোসেন বলে একজন আটক রয়েছেন। তিনি ট্রেনে সংজ্ঞাহীন
অবস্থায় পড়েছিলেন, পরে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে আসে।
রুহুল আমিন থানা থেকে শাহাদাত হোসেনকে ছাড়াতে গেলে তিনি যেতে অস্বীকার করে বলেন
"তোমাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্কে নেই।" পুলিশ জোর করে তাকে রুহুল আমিনের
জিম্মায় দিয়ে দেয়। পথিমধ্যে শাহাদাত হোসেনের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে, রুহুল আমিন
পুলিশকে বোনের অনুসন্ধান চালানোর অনুরোধ করেন।
শুক্রবার সকালে পুলিশ রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী সহ শামীমা আক্তারের অ্যাপার্টমেন্টে
গিয়ে তাকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাদের
মুখমন্ডলে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন ছিলো। গলার
পেছনে লম্বা কাটা স্থান রয়েছে।
শাহাদাত হোসেনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। শামীমা আক্তারের লাশ ময়না তদন্তের
জন্যে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
শামীমা আক্তারের সাথে শাহাদাত হোসের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১২ বছর। তাদের কোনো সন্তান
নেই।
রুহুল আমিন জানান তিনি লাশ দেশে ফেরৎ পাঠাতে চান। টোকিও'র দূতাবাস জানিয়েছে তারা
লাশ দেশে পাঠানোর পুরো অর্থ যোগান দিতে অক্ষম, তবে খরচের অংশ বিশেষ তারা বহন
করবেন। বর্তমানে রুহুল আমিনের আইনগত ভাবে কাজ করার অনুমতি নেই, তাই এই বিপুল
খরচা বহন করা তার জন্যে কষ্টসাধ্য। তিনি প্রবাসীদের কাছে লাশ দেশে নিয়ে যাওয়ায়
সহযোগীতা কামনা করেছেন।
WARNING:
Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content
is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to
legal action.