|
স্বরলিপি'র ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান '১৫ পালিত
কমিউনিটি রিপোর্ট ।।
অক্টোবর ১৪, ২০১৫ ।।
টোকিও'র কিতা-কু'র তাকিনোগাওয়া কাইকানে গত ১১ অক্টোবর রোববার বিকেলে ২৩ বছর
আগে মুন্সী কে আজাদ ও রেনূ আজাদ এর উদ্যোগে ও একদল স্বপ্ন বিভোর তরুণ
শিল্পানুরাগী প্রবাসীদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত স্বরলিপি কালচারাল একাডেমি,
জাপান'র ২৩ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে অনুষ্ঠিত হলো এক মনোরম সাংস্কৃতিক
সন্ধ্যা।
মনোমুগ্ধকর এই সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় 'ভাবনা' ছিলো খুবই সাদামাটা। 'বাংলার
অপরূপ প্রকৃতি -বর্ষা ও নদী' অথচ এই বিশেষ শিশুতোষ ছড়ার মতো দু'টো পংতি ও
চারটি লাইন।
"পদ্মা যমুনা মধুমতি আর
মেঘনার মালা কন্ঠে পড়ি
দাঁড়ায়ে রয়েছে সুজলা যে দেশ
সেই দেশেতে বাস আমরা করি"
পরিবেশনার কারণে কতোটা বর্ণময় হয়ে উঠেছিলো তা হল ভর্তি দর্শকরা তিনঘন্টা
ঠাওর করে উঠতে পারেননি। দর্শক একটার পর একটা পরিবেশনা উপভোগ করেছেন।
দর্শকদের মোহিত করে রাখার জন্যে স্বরলিপিকে শুধু ধন্যবাদ নয়, বলতে হবে আমরা
অভিভূত, মুগ্ধ -স্বরলিপি তোমাকে অভিনন্দন।
সভাপতি নাসিরুল হাকিম ও প্রধান উপদেষ্টা মূনশী খ আজাদের স্বাগত বক্তব্যের
পর প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন'র শুভকামনা বক্তব্য শেষে মঞ্চ
আলোকিত হয়ে ওঠে।
সমবেত সংগীতের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পর্বের সূচনা। শাম্মি আখতার বাবলির
রবীন্দ্রসংগীত "ভালোবেসে সখি নিভৃতে যতনে"র পর স্বরলিপি কালচারাল একাডেমির
শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় নাচ ও গানের অনুষ্ঠানটি ছিলো উপভোগ্য। প্রবাসে
বেড়ে ওঠা এই শিশুদের চমৎকার পরিবেশনা দেখে বোঝার উপায় ছিলোনা এরা মাত্র
ক'বার রিহার্সেলে এতটা পারদর্শী হয়ে উঠেছে।
মাহাদি মাসুদ হিমু'র "তুমি কি দেখেছু কভু" গানটি মিষ্টি গায়কীর কারণে
দর্শকমন জয় করে। সোমা ও মাহি'র দ্বৈত সংগীত -"ভালোবেসে কোনো ভুল করিনি
আমি", তনুশ্রী বিশ্বাসের আধুনিক গান "আমার দুই চোখ দুই নদী", বাদল, সায়্মন
ও রানা এবং তাদের জাপানি স্ত্রীদের নিয়ে মিউজিক্যাল ড্রামা'য় দেশের মাছ
ধরা, জলদাস শ্রেণীর প্রকৃতির সাথে বেঁচে থাকার সংগ্রাম এবং সাগরে যাওয়া
স্বামীদের জীবন রক্ষার জন্যে আল্লাহ্'র কাছে প্রার্থনায় "তোর বান্দা যখন
হাত তুলেছে" গানটি জাপানি বধুরা নিজ গলায় গেয়ে দর্শকদের তাক লাগিয়ে
দিয়েছেন। কিশোরী নাওরীনের সুরেলা কন্ঠে "ডাকে পাখি খোলো আখি" ছিলো অনবদ্য।
তনুশ্রী বিশ্বাস ও শাম্মীর কবিতা আবৃত্তি রবীন্দ্রনাথের "কৃষ্ণকলি আমি
তারেই বলি" অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা যুগিয়েছে। ঢালী বাবু ও রোশনীর গাওয়া
"যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে" যুগল সংগীত শ্রুতিমধুর ছিলো। মা'কে নিয়ে শেখ
রানা বাদলের গান অনেকের চোখ ভিজিয়ে দিয়েছিলো। সমবেত নৃত্যে সোমা, রোশনী,
কনক, অদিতি'র নাচটি ভাবনা ও পারফরমেন্সের কারণে অনুষ্ঠানের সেরা একটি
পারফরমেন্স বলে মনে হয়েছে।
ব্যান্ড গানে মুহিত, সোমা ও বাবু দর্শকদের যথেষ্ট আনন্দ দিয়েছে। তানভীর,
শাম্মী ও বাদলের (গানগূলো)ছিলো শ্রুতিমধুর।
কলি, রানা ও তানভীরের অভিনয় সমৃদ্ধ নাচ ও নাট্য ভাবনাটি ছিলো চমৎকার।
নাসিরুল হাকিমের লেখা ও শেখ রানা বাদলের পরিচালনায় মঞ্চ নাটক "ফরমালিন
শিল্প গোষ্ঠি" দর্শকদের যথেষ্ট আনন্দ দিয়েছে। নাট্যাংশে অংশগ্রহণ করেছেন
রানা, দেলোয়ার, রতন, তানভীর, জুয়েল, শাহীন, বাদল, হীরা, শাম্মি, হিমু ও
সোমা।
এর মধ্যে একটি পর্বে -জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন
মোমেন -জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্তির জন্যে তাকে
অভিনন্দিত ও বিদায় জানিয়ে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
স্বরলিপি তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে 'স্মরনিকা' প্রকাশ করেছে। তনুশ্রী
বিশ্বাসের সম্পাদনায় মুদ্রিত সুভেনিরটি ছিলো আকর্ষনীয়। ভূতপূর্ব দু'জন
সভাপতি জুয়েল আহসান কামরুল ও কাজী আসগর আহমেদ সানি শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে
যেমন প্রশংসা পেয়েছেন তেমনি স্বরলিপি'র প্রধানতম কান্ডারী রুবেল'র নাম ছবি
কি আছে (?) -চোখে পড়েনি, না
থাকলে তা অনুচিত হয়েছে। সবার ছবির নীচে নাম থাকাটা
বাঞ্ছনীয় ছিলো। ছবি সংগ্রহ পদ্ধতি যথাযথ ছিলোনা -তাই অস্পষ্ট, ঘোলাটে ছবি'র
সংখ্যা অনেক।
অনুষ্ঠানে তনুশ্রী বিশ্বাস, জনি,তানজু, রতন, শাহীন, জুয়েল, দ্বীপ্তি জাহান
বেশ ক'জন উপস্থাপককে দেখা গেছে। নতুনদের সুযোগ দেয়ার এই চেষ্টাটি ছিলো
প্রশংসনীয়।
কামরুল হাসান লিপু'র মঞ্চসজ্জা ও সামগ্রিক অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন গোলাম
মাসুম।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
|