প্রথমপাতা  

সাম্প্রতিক সংবাদ 

 স্বদেশ

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ কমিউনিটি

লাইফ স্টাইল

 এক্সক্লুসিভ

বিনোদন

স্বাস্থ্য

বর্তমানের কথামালা

 শিল্প-সাহিত্য

 প্রবাসপঞ্জী 

আর্কাইভ

যোগাযোগ

 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

ওইখানে যেওনাকো তুমি (২৩ পর্ব)
 
 

- মেহেরুন নেছা রুমা -

 
সরকারী কোয়ার্টারে উঠেছে নীরা। যেদিন আসছে সেদিনই রুপা এবং রেহানা গিয়েছিল সেখানে। নীরার লোকজনই বাসাটা গুছিয়ে দিল এক দুপুরের মধ্যেই। রান্না থেকে শুরু করে সবকিছু। রেহানা এবং রুপাকে নিয়ে বিষয়টা ভাবছে নীরা। কিভাবে কি করা যায়। নীরা শতভাগ নিশ্চিৎ যে রুপাকে দিয়ে তারা সিডি তৈরি করেছে। এখন তাদেরকে পাবে কোথায় ?
সবকিছু থেকে হাল ছেড়ে দিয়েছে রুপা। পড়াশুনা এবং রোজকার কাজকর্ম কোনকিছুতেই তার মন নাই। রেহানা প্রথম দিনেই তার একজন পরিচিত ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল রুপাকে। এখন সে মোটামুটি সুস্থ্য আছে। তবে কিছুতেই রুপা সেই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। অসহ্য হয়ে উঠছে তার হোস্টেল জীবন। আশে পাশের সবাইকে সন্দেহ জনক মনে হয় তার কাছে।
এ অবস্থায় একদিন নীরা বলে,চল আমরা বাড়ি থেকে একবার ঘুরে আসি। আমি তো অনেক দিন বাড়ি যাইনি। আর অসীম কে নিয়েও যাওয়া হল না। তোরও ভাল লাগবে বাবা মার কাছে কিছুদিন থেকে আসবি।
কি করলে রুপার মনে শান্তি আসবে আর কি করলে আসবে না তা সে জানে না। তারপরেও নীরার ইচ্ছাতেই রুপা নীরা অসীম বাড়ি আসল। নীরার তিন দিনের ছুটি শেষে ঢাকা ফিরে গেল। রুপা ক’দিন বাড়ি থাকবে বলে থেকে গেল ।
ঘর থেকে বের হয় না,আগের মত কারো সাথে কথা বলে না রুপা। মেয়েকে এমন দেখে রুপার মা একটু চিন্তায়ই পড়ে গেলেন। এই তো কিছুদিন আগে যখন বাড়ি এল তখন তো রুপা স্বাভাবিক ছিল। এই ক’দিনে মেয়েটা এমন হয়ে গেল কেন। তারা চাকরী সম্পর্কে জানতে চাইল। রুপা বলল, ভাল লাগেনি তাই ছেড়ে দিয়েছি । আর কিছু বলেনি সে।
রুপা কিছুদিন বাড়ি এসে থাকাতে মানুষের আনাগোনা বেড়ে গেছে এই বাড়িতে। এরই মধ্যে বেশ কিছু বিয়ের প্রস্তাবও আসছে রুপার জন্য। তারা আগে থেকেই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে ঘুরঘুর করছিল। এখন রুপা বাড়ি আসাতে সেসব লোকজন তাদের কদম আরো কয়েক পা এগিয়ে দিল।
মা একদিন রুপাকে বললেন ,নানান জায়গা থেকে তোমার বিয়ের প্রস্তাব আসছে রুপা। আমরা কি এখন তোমার জন্য চেষ্টা করব ? ভাল পাত্র পেলে বিয়ে হলে তো মনে হয় কোন সমস্যা হবার কথা না। আর তোমার যদি অন্য কোন ইচ্ছা থাকে আমাদেরকে বলতে পার। তোমার উপর আমাদের বিশ্বাস আছে,ভরসাও আছে।
মায়ের এই বিশ্বাস আর ভরসার কথা শুনে রুপার অন্তরটা ভেঙে গুড়িয়ে আসছে। কোথায় রাখতে পারল সে বাবা মায়ের বিশ্বাস আর ভরসাকে। বিয়ে নিয়ে রুপা এখন পর্যন্ত কখনোই কিছু ভাবেনি। এতদিন সে তার ক্যারিয়ার নিয়েই ভেবেছে। লেখাপড়া করে ভাল একটা চাকরী করাটাই তার প্রধান লক্ষ্য ছিল। ওই ঘটনার পর সে এখন কোন কিছুই লক্ষ্য হিসেবে স্থির করতে পারছে না।
বাবা মা যদি কোনদিন জানতে পারে তাহলে সেদিন কি হবে সেই আশংকায় দিনরাত মনের মধ্যে দুরুদুরু করতে থাকে। এমন অবস্থায় তাদের বিয়ে দেয়ার ব্যাপারটাকে রুপা মন না চাইলেও সম্পূর্ন অবজ্ঞা করতে সাহস পেল না। মাকে বলল,তোমরা যা ভাল মনে কর তাই কর।
কথাটি শুনে রুপার মা খুশি হয়ে গেলেন। তাদের ভাবনা ছিল শহরে থেকে এত বড় বিশ্ববদ্যালয়ে পড়াশুনা করে মেয়েটা এখন আর তাদের কথার গুরুত্ব দিবে না। কিন্তু রুপার মত লক্ষèী মেয়ে সেটা দেখাল না দেখে মা মনে মনে মেয়ের বিয়ের ভাবনা ভাবতে শুরু করলেন।
রূপার জন্য সুপাত্রের সন্ধান পেতে দেরি হল না। সরকারি একজন কর্মকর্তা,দেখতে শুনতে ভাল,পরিবার ভাল,আচার ব্যবহার ভাল,এমনকি কনে পক্ষ থেকে কোনকিছু চাওয়া পাওয়ার দাবি নেই এমন পাত্রের সাথে ঘরোয়া আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে রুপার বিয়ে হয়ে গেল।
হঠাৎ করে সবকিছু হয়ে গেলেও বিয়ে নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট রুপার পরিবার। ঢাকা থেকে রেহানা ,নীরা এসেছিল বিয়েতে। রুপার মধ্যে কোন উচ্ছাস নেই। বাবা মা বিয়ে দিতে চেয়েছিল বিয়ে হয়েছে,এই তার অনুভূতি। মনের মধ্যে তো সেই দুর্ঘটনার ঘনঘটা দিনরাত চলতেই থাকে। একা একা কখনো ডুকড়ে কেঁদে ওঠে রুপা। কি সর্বনাশটাই তার হয়ে গেল।
অভি (রুপার বর) যেরকম মেয়েকে বৌ হিসেবে স্বপ্ন দেখেছিল রুপাকে পেয়ে যেন তার সব প্রত্যাশা পূরন হয়ে গেছে। বৌ কে নিয়ে সে খুবই উৎফুল্ল। অভির পরিবার চেয়েছিল বিয়ের পর কিছুদিন নতুন বৌ বাড়িতে থাকবে। কিন্তু অভি সেটা কিছুতেই মানতে নারাজ। সে তার সঙ্গে করেই নিজের কর্মস্থল ঢাকাতে বৌ কে নিয়ে যাবে। মাত্র সাত দিনেই রূপা অভির প্রানের প্রতিনিধি হয়ে গেছে। তাকে ছাড়া অভির এখন কিছুতেই চলবে না। সেই কথাটা বলতে সে কোন দ্বিধাই করেনি।

 

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ