[প্রথমপাতা]

 

 

 

ওইখানে যেওনাকো তুমি (২২তম পর্ব)
 
 

- মেহেরুন নেছা রুমা -

 
আজ রুপা যখন সবকিছু হারিয়ে উম্মাদ হয়ে দিশেহারার মত ঘুরপাক খাচ্ছে সে মুহুর্তে নীরার ফোন আসে । রুপা ফোন রিসিভ করে কাঁপা কণ্ঠে কিছুই বলতে পারছে না। এক সময় ও প্রান্ত থেকে কান্নার শব্দ পেল নীরা। তারপর রুপাকে বলল,এখুনি তুই রেহানার বাসায় চলে যা। ওখানে পৌঁছানোর পর আমাকে রেহানার ফোন দিয়ে কল করবি।

রুপা বলে,আপু আমি আর কোথাও যেতে পারব না। আমি আর কারো কাছে যাব না। আমার জীবনে সর্বনাশের আর কিছইু বাকি নেই। আমি বেঁচে থাকতে চাই না। আমি মরে যাব।

রূপাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দিল নীরা।

আমি যা বলছি তুই এখন তাই করবি রুপা। আর আমি দু’দিন পরেই ঢাকা আসছি। সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। বেঁচে থাকতে চাই না ,মরে যেতে চাই,এসব কথা তোর কাছ থেকে আমি আশা করিনি। তুই তো তুলি না,তুই হচ্ছিস রুপা।

নীরার কথা মত রুপা রেহানার রুমে গেল। কিন্তু কারো চোখের দিকে যেন আগের মত তাকাতে পারছে না সে। সে কী মহা অপরাধ করে ফেলছে ? না হলে এমন অপরাধ বোধ হচ্ছে কেন তার !

রেহানাকে হয় তো
নীরা কিছু বলে রেখেছিল। রেহানা রূপাকে দেখে আগের মতই ব্যবহার করছে।
রুপা বলল,আপু আপনার বাবার মৃত্যুর খবরটা শুনেছিলাম। আমি ঢাকা থাকলে আপনার সাথে যেতাম।

তুমি কি এসেছিলে আমার কাছে ?

হ্যাঁ । আর আপনাকে না পেয়ে আমার যে কি বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল আপু ,আমি এখন কিভাবে বলি আপনাকে সেকথা। সেদিন যদি আপনাকে পেতাম তাহলে হয়তো আজ আমার এ অবস্থা হত না।

শান্ত হয়ে বসোতো আগে। চেহারার এমন হাল করেছ কেন ? কি হয়েছে খুলে বল। তুমিতো অনেক বিচক্ষণ একটা মেয়ে। কোন রকম ভুল করার মত মেয়ে তুমি নও রুপা । তারপরেও কি হয়েছে সেটা আমাকে বলো।

রুপা তখন শুরু থেকে সবকিছু রেহানাকে বলল। সব শুনে তো রেহানার মাথায় হাত। এ কী শুনছে সে ! রুপাকে যে কিছু বলবে,কেন আগে এসব বলেনি ,কেন গেল সেখানে সেসব আর বলতে পারল না। মেয়েটার মুখের দিকে তাকানো যায় না কিছুতেই।

নীরার ফোন আসলে রেহানাই সবকিছু বলল তাকে। নীরা রেহানাকে কিছু বুঝাল। তারপর রুপাকে বলল,তুমি আজ এখানেই থাক। আমি ওই অফিসে গিয়ে দেখি ওদের বিরুদ্ধে কিছু করা যায় কিনা।

রুপা তখন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে উঠল, আপু প্লিজ এটা কর না। এসব নিয়ে জানাজানি হলে আমার আর কাউকে মুখ দেখানোর অবস্থা থাকবে না। ঘটনাটা বাবা মা পর্যন্ত গেলে তার আগেই তুলির মত আমাকেও চলে যেতে হবে।

একথা শুনে রেহানা রুপাকে বুকে জড়িয়ে নিল। তারপর মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, যা হয়েছে সেটা নিয়ে আর মন খারাপ করিস না। দুই তো আর ইচ্ছা করে যাসনি। কাউকে জানাব না। কিন্তু ওদেরকে কি এভাবে ছেড়ে দিতে বলিস ? নীরা বলছে আমাকে একটু আড়াল থেকে দেখে আসতে। আশে পাশে খবর নিতে। দ’ুদিন পরে নীরা এসে ওদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে। তুই কিছু ভাবিস না রুপা। আর এজন্য যে বেঁচে থাকা যাবে না,কাউকে মুখ দেখানো যাবে না এমন তো নয়।

রুপা বলল,তাহলে আপু আমিও যাব তোমার সাথে।

তাহলে তাই চল।

সেখানে যেয়ে কিছুই দেখতে পেল না তারা। অফিসের সাইনবোর্ড থেকে শুরু করে কোন কিছুই জায়গা মত নেই। গেটে বিশাল তালা ঝুলছে। আশে পাশের দু একটি ভবনে খোঁজ নিয়ে জানা গেল ওই অফিসটি নতুন কিছুদিন হল এখানে এসেছিল। এরই মধ্যে তারা কোথায় গেছে তা কেউ জানে না। সব শুনে রেহানা বুঝল আসলে ওরা ভাসমান । স্থায়ী কোন অফিস আদালত তাদের নেই। এমন করে মেয়েদের ধরে এনে কাজ উদ্ধার হওয়া পর্যন্ত এক এলাকাতে থাকে। তারপর অফিস গুটিয়ে আবার অন্য কোথাও চলে যায়।

 

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ