[প্রথমপাতা] |
রবীন্দ্রনাথ এবং
পদ্মার ঢেউ ভাঙা কথা
মোমিন মেহেদী
আলোকিত আগামীর জন্য সোনার বাংলাদেশে সোনার তরী নিয়ে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
যে যাত্রা শুরম্ন করেছিলেন, সে যাত্রাপথের পথিক হয়ে এগিয়ে চলছি আমরা৷ আমরা
ক'জন নবীন মাঝি/ হাল ধরেছি শক্ত করে-রে...
কারন, দেশটা আমাদের৷ এই দেশের প্রতিটি পাখি গান গায় রবীন্দ্রনাথের সোনার
বাংলা'র সুরে৷ শৈশবের সেই সোনালী অতিতে জাল ফেললে উঠে আসবে আমার সোনার বাংলা/
আমি তোমায় ভালোবাসি'র মুগ্ধ করা জাতীয় সঙ্গীতের তান৷ রবীন্দ্রনাথের কলমে
বাংলাদেশের মানুষের মনের কথাও ভাষা পেয়ে উঠেছিল বলে বাংলাদেশের
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ বাংলাভাষায় অনেক সূক্ষ্ম অনুভূতিকে
প্রকাশ করতে শিখেছে৷ তাঁর হাতে বাংলাভাষা যেমন বিচিত্রগামী হতে পেরেছিল
পূর্বসূরীদের হাতে তেমনটা হতে পারে নি৷ কারণ রবীন্দ্রনাথের আগে যাঁরা
এসেছিলেন তাঁরা আমাদের শিৰার কথা ভাবেননি৷ ভেবেছেন কেবলমাত্র সৃষ্টিার কথা৷
যেমন রাজা রামমোহন, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধু সুদন দত্ত,
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায় তাঁদের কাজ করেছিলেন সাহিত্যেও একেবারে প্রাথমিক
পর্যায়ে৷ কিন্তু কবিগুরু ভেবেছেন আগামীর কথা, লিখেছেন সৃজনশীলতার হৃদবন্ধনে
আবদ্ধ হয়ে৷ আমরা একটু খেয়াল করলে দেখবো রবীন্দ্রনাথের বিপুল
সৃষ্টি-সম্ভারেরর বিচিত্র অলিগলিতে প্রবেশ করলে আমরা ধীরে ধীরে অনুভব করতে
থাকি চারপাশে আমরা যা-কিছু শাদা চোখে দেখি তার আড়ালেই লুকিয়ে আছে
উজ্জ্বলতার সূর্য৷ যা আমাদের সম্ভাষণ জানাচ্ছে৷ জাতিসত্তার ভিত্তি হিসেবে
ভাষাকে প্রদান করি বিশেষ গুরুত্ব৷ রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষায় লিখেছেন৷ বাংলা
আমাদের মাতৃভাষা৷ সেদিক থেকে রবীন্দ্রনাথ আমাদের কাছের মানুষ৷ বলা যায়
রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষার একপ্রকার জনকই৷ যদিও বাংলা ভাষার উদ্ভব ঘটেছে
কমপক্ষে তাঁর জন্মের ৭০০ বছর আগে৷ আর সেই বাংলা যথেষ্ট প্রাঞ্জল ও
কাব্যগুণমণ্ডিত৷ বিষয়টি একটু বিস্তারিত আলোচনার অপেক্ষা রাখে৷ কারণ বাংলা
ভাষা ও সাহিত্যের যে ইতিহাস আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়, তাকে
যথার্থ বলে ধরে নেয়ার বিরোধিতা করতে চাই আমরা৷ আর এই বিরোধিতার যুক্তিগুলোকে
তুলে ধরতে চাই একটু বিস্তারিতভাবে; যেটা সাধারণত করা হয় না৷ আমাদের কবিগুরু
কেবলমাত্র বাংলা সাহিত্যই নয় হিন্দিতেও রচনা করেছেন বিভিন্ন রকম রচনা৷
চযর্াপদের এক জায়গায় লেখা আছে, 'বাজনাব পাড়ী পঁউআ খালেঁ বাহিউ/ অদঅ বঙ্গালে
ক্লেশ লুড়িউ/ আজি ভুসু বঙ্গালী ভইলী৷/নিঅ ঘরিনী চণ্ডালী লেলী ৃ যার অর্থ 'পদ্মা
খালে বজ্রনৌকা পাড়ি দিচ্ছে৷ ভুসুুকু নির্দয় বাংলাদেশে যথেষ্ট ক্লেশ সহ্য
করল৷' স্বপ্নজ বিবরনে জানা যায়, প্রকৃত বাঙালি হলো৷ কারণ সে চণ্ডালীকে বিয়ে
করে ঘরের বউ হিসেবে গ্রহণ করল৷ বাঙালি হওয়ার জন্য চণ্ডালীকে বিয়ে করতে হবে
কেন, সেটা বোঝা সম্ভব নয় এই পদ থেকে৷ হিন্দুসমাজে চণ্ডালরা অস্পৃশ্য নীচ
জাতি৷ এ থেকে মনে হয় বাঙালিদের সাধারণভাবে সে সময় ভাবা হতো খুবই নীচ
কুলোদ্ভব৷ ভুসুকু ছিলেন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য৷ তিনি হিন্দু ছিলেন না৷
চণ্ডালীকে বিয়ে করার পথে তাই তার জন্য ছিল না কোনো ধর্মীয় বাধা৷ ড.
মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, সিদ্ধাচার্য ভুসুকু ছিলেন খ্রিষ্টীয় একাদশ শতকের
মধ্যভাগের লোক৷ যে বাংলা ভাষা পড়ে এখন সহজেই বুঝতে পারি, তার নমুনা আমরা
পাচ্ছি খ্রিষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দী থেকে৷ এ পর্যন্ত সবচেয়ে পুরনো যে
কাব্যগ্রন্থটি আবিষ্কৃত হয়েছে তা হলো, শাহ মুহম্মদ সগীর লিখিত ইছফ জুলিখা
নামক কাব্যগ্রন্থ৷ এর ভূমিকায় উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে গৌড়ের সুলতান গিয়াস
উদ্দীন আযমের নাম৷ গিয়াস উদ্দীন আযম শাহের রাজত্বকাল হলো (১৩৯৩-১৪০৯ খ্রিঃ)৷
সগীর তার কাব্য রচনার লক্ষ্য হিসেবে বলেছেন-
ইছফ জুলিখা কেচ্ছা কিতাব প্রমাণ
দেশি ভাষে মোহাম্মদ ছগিরী এ ভান
আমাদের জাতিসত্তার বিকাশে আছে সুলতানি আমলের বিশেষ অবদান আছে৷ সভ্যতার আলো
গায়ে মেখে বাংলাদেশের বর্তমানে আমরা যে সাহিত্য পড়ছি তাতে কিন্তু
রবীন্দ্রনাথের অবদান অপরিসীম৷ আমাদের বাংলা সাহিত্যে একটা দীর্ঘ ঐতিহাসিক
ভিত্তি রবীন্দ্রনাথ৷ রবীন্দ্রনাথ জন্মেছিলেন কলকাতায়৷ এ শহরকে ঘিরে শুরু হয়
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের যাত্রা৷ বলা যায়, এই যাত্রা রবীন্দ্রনাথকে কেন্দ্র
করেই শুরু হয়েছিল৷ যদিও অনেকের ধারনা বাংলা ভাষার জাগরণ আনেন মাইকেল
মধুসূদন দত্ত৷ আমরা এখন যে চলিত বাংলা লিখছি, তার প্রথম পরিচয় বিশেষভাবে
ফুটে উঠেছে মাইকেল মধুসূদনের লেখা নাটকের সংলাপে৷ রবীন্দ্রনাথের আগে বঙ্কিম
ও সঞ্জীব চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচনা করেছেন সাধু বাংলা গদ্যে উত্কৃষ্ট
মানের সাহিত্য৷ তাই বলে মুসলমানরাও গদ্য লেখায় পিছিয়ে থাকেননি৷ মীর মশাররফ
হোসেনের (১৮৪৭-১৯১১) গদ্য হলো খুবই উন্নত মানের৷ তিনি গদ্য লেখা শিখেন
কাঙ্গাল হরিনাথের কাছ থেকে৷ হরিনাথ কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে প্রকাশ করতেন
গ্রামবার্তা নামক পত্রিকা৷ এতে থাকত কৃষকদের অভাব অভিযোগের কথা৷ থাকত
জমিদার কর্তৃক রায়ত পীড়নের কথা৷ রবীন্দ্রনাথের পরিবার ছিল জমিদার হিসেবে
খুবই প্রজাহিতৈষি৷ বাংলাদেশ হলো মূলত কৃষকেরই দেশ৷ আমাদের জাতিসত্তা গঠনে,
তাই ঠাকুর পরিবারের পাশাপাশি কাঙ্গাল হরিনাথের অবদানও অনেক৷ রবীন্দ্রনাথ
যেমন 'আমাদেরকে বিপদে মোরে রৰা করো এই নয়ে প্রার্থনা' বলে সাহসী হতে, কর্মঠ
হতে বলেছেন তেমনি কাঙ্গাল হরিনাথ শিখিয়েছেন আমাদের বাংলা ভাষায় লিখে
মনোভাবকে গুছিয়ে প্রকাশ করতে৷ রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যপ্রতিভা সম্পর্কে
আমাদের মনে সৃষ্টি করা হয়েছে এক অতি উচ্চ ধারণা৷ এক সময় রবীন্দ্রনাথের
ছোটগল্প অনেক মনোযোগ দিয়ে পড়েছি৷ তবে তার লেখা নিয়ে ইদানিং কয়েকজন
রবীন্দ্রনাথ বিদ্বেষি লেখক বলছেন বিভ্রানত্মিমূলক কথাবাতর্া৷ এর মধ্যে এবনে
গোলাম সামাদ নামক এক ভ্রানত্ম লেখকের মতে, 'রবীন্দ্রনাথের গুপ্তধন, মহামায়া,
নিশীথে ও সম্পত্তি সমর্পণ এই চারটি গল্প হলো বিখ্যাত মার্কিন সাহিত্যিক
অ্যাডগার অ্যালান পোর কাছ থেকে নেয়া৷' আমি তার উদ্দেশ্যে বলতে চাই তাহলেতো
আপরি যে পোশাকটি পড়েন তাও বিদেশীদের কাছ থেকে নেয়া৷ পড়ছেন কেন, খুলে ফেলুন৷
কেউ কেউ বলছেন, 'রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত গল্প ক্ষুধিত পাষাণের ওপর আছে
বিখ্যাত ফরাসি সাহিত্যিক তেওফিল গোতিয়ের লেখা-খপ চমপন নপ শসশপ (১৮৬৬) নামক
গল্পের ছায়া৷ এসব দিক থেকে বিচার করলে মনে হয়, রবীন্দ্রনাথ যত না মৌলিক
সাহিত্যিক, তার চেয়ে হলেন অনেক বড় নিপুণ অনুবাদক৷' তাদের উদ্দেশ্যে বলতে
চাই, সেই অর্থে আপনারাতো রীতিমত রবীন্দ্রনাথ বিদ্বেষীই নন, বলা যায় চশমখোড়ও৷
কেননা, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি'র মত অনন্য জাতীয় সঙ্গীত যিনি
লিখেছেন, তাকে অস্বিকার করতে চাইছেন৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস অনতি বিলম্বে আপনারা
আপনাদের বাবাকে অস্বিকার করার দরজায় পৌছে যাবেন৷ তবে আমরা বাংলাদেশে
রবীন্দ্রনাথকে ভালোবেসে মূল্যায়ন করে রবীন্দ্র বন্দনা করে চলেছি৷ আর
রবীন্দ্রনাথের মধ্যে খুঁজে পেতে চাচ্ছি আমাদের জাতিসত্তার শেকড়৷ এ কথা সত্যি,
পাকিস্তান আমলে রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল৷ কেননা,
পাকিসত্মানের আমলারা মনে করতো রবীন্দ্রনাথ মানেই মুসলমানদের পরাজয়৷ আসলে কি
তাই? মোটেই নয়৷ আমরা আজো রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনার জন্যই হতে পেরেছি আজকের
স্বাধীন৷ হয়েছে বাংলাদেশের উদ্ভব৷ এখন রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনার ওপর কোনো বাধা
নিষেধ নেই৷ আমরা রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে খুবই আনন্দিত৷ কিন্তু ফাঁকে ফাঁকে
আমাদের কেউ কেউ ঝুঁকে পড়তে চাচ্ছি মার্কিন জ্যাজ সঙ্গীতেরই ওপর৷
রবীন্দ্রনাথই নতুন ধারার বাংলা গানের প্রথম প্রবর্তক৷ যদিও গানের ইতিহাস বলে,
বাংলা গানে নতুন ধারার সূচনা করেছিলেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়৷ কিছু দিন আগে
পত্রিকার খবরে পড়েছিলাম, ভারতের সাথে আমাদের এ মর্মে চুক্তি হয়েছে যে, ২০১১
সালে রবীন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্মজয়ন্তী ভারত ও বাংলাদেশ একত্রে পালন করবে৷ বলা
হয়েছে, এভাবে একত্রে রবীন্দ্রজয়ন্তী উদ্যাপন ভারত ও বাংলাদেশের মানুষকে
পরস্পরের কাছে আসতে সহায়ক হবে৷ তবে একটি কথা বলাটা খুবই প্রয়োজন, পদ্মায়
নাও ভাসিয়ে রবীন্দ্রনাথ অনেক কবিতা, গান ও উপন্যাস লিখেছেন৷ সেই পদ্মা এখন
হতে চলেছে মৃতপ্রায় নদী৷ বাংলাদেশকে পদ্মার পানি থেকে বঞ্চিত করে
রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে না৷ হতে হবে উভয় দেশের মধ্য
দিয়ে প্রবহমান নদীগুলোর পানির সুবণ্টন৷ মানুষ যে কেবল জৈবিক মানুষ মাত্রই
নয়, মানুষের আছে এক গভীর চেতনালোক এই বোধ আমাদের জাতীয় জীবনে ছিল বিরল৷
ইতিহাসের নানা বাঁক পরিক্রমায় উনিশ শতকে এসে আমাদের দেশের কিছু মানুষের
মধ্যে জন্ম নিয়েছিল বিপুল নতুন কর্মস্পৃহা৷ সেই বিপুল কর্মস্পৃহা আর
উদ্দামতা রবীন্দ্র-মোহনায় মিশেছিল বলেই রবীন্দ্রনাথ আর সীমিত থাকেন নি কেবল
একজন সৃষ্টিশীল মানুষ মাত্রে৷ বাংলাদেশের সমাজ-মানসেও রবীন্দ্রনাথ তাই কেবল
কবি, গীতিকার, কথাশিল্পী, নাট্যকার অর্থাত্ একজন সৃষ্টিশীল মানুষমাত্র
হিসাবেই স্মরণীয় নন, স্মরণীয় একজন মহান সমগ্রমানব হিসাবে৷ বাংলাদেশের
মানুষের যে কোনও সংকটে-সম্ভাবনায়, বিষাদে-আনন্দে রবীন্দ্রনাথ হন সহায়৷
রবীন্দ্রনাথের ভাষা ছাড়া আজ বাংলাদেশের কোনও একজন প্রিয়তম পারে না তার
প্রিয়তমাকে ডাকতে, নিজের আনন্দকে প্রকাশ করতে তাদের চাই রবীন্দ্রনাথ কল্পিত
ভাষা; হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে থাকা কোনও গোপন আঘাতের বেদনাকে প্রকাশের জন্যও
চাই রবীন্দ্রভাব ও ভাষাকল্পের আশ্রয়; সর্বোপরি বাংলাদেশের সমাজে আধুনিকতার
যে সামগ্রিক জাগরণ ঘটেছে তার মানসভিত্তি তো গড়ে উঠেছে রবীন্দ্রনাথকে
অবলম্বন করেই৷ রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আমি খুব জানি এমন দাবি করছি না৷ বরং এই
প্রতিভা সম্পর্কে সব সময়ই আরও গভীর ভাবে জানতে চাই৷ তবে এই প্রবন্ধে তাঁর
সম্পর্কে না জানাটা কী অসুবিধার সৃষ্টি করেছে তা কিন্তু আমি বুঝতে পারি নি৷
বিদ্যাসাগর-অক্ষয়কুমার-বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথ-শরত্চন্দ্র লালিত বাংলাসাহিত্যে
আমরা অবগাহন করছি মনের মায়াবী আলোয়৷ এ আলোয় সকল কালো পালিয়ে যাবে৷ আমাদের
মন ও মননের কথা রবীন্দ্রনাথে উজ্জ্বলভাবে আছে৷ রবীন্দ্রনাথকে জানতে, তার
লেখাকে খুব বেশি জ্ঞানী হবার দরকার নেই এ কথা আমার মনে হয় অনেকেই স্বীকার
করবেন৷ কেননা, কবিগুরু সারাজীবন চেয়েছিলেন সবার জন্য সাহিত্য নিমর্াণ করতে৷
শুধু মাত্র শিৰিতদের জন্য নয়৷ সেই দিক থেকেও রবীন্দ্রনাথ আমাদের অভিবাবকের
আসনে বসে আছেন।
mominmahadi@gmail.com
www.mominmahadi.blogspot.com
০১৭১২৭৪০০১৫
[প্রথমপাতা] |
|