[প্রথমপাতা]

 

 

 

হার্ট অ্যাটাক জীবন ঘাতি রোগ

 

- ডা. স্বপন কুমার মন্ডল -

 

 

হার্ট অ্যাটাক কী

হার্ট সারাদেহে রক্ত সরবরাহ করার পাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তবে এই কাজের জন্য তার নিজের মাংসপেশীতেও রক্তের প্রয়োজন হয়। নিজের মাংস পেশীতে রক্ত সরবরাহ করার জন্য যে তিনটি ধমনী থাকে, সেগুলোর এক বা একাধিক যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে রক্ত চলাচল বা অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়, তখন হার্টের খাকিটা অংশ মরে যায়। এটাকেই এম.আই বা সাধারণ ভাষায় হার্ট অ্যাটাক বলে।

কারণ কী?

রক্তে কোলেষ্টরলের মাত্রা বেড়ে গেলে অথবা রক্তচাপ থাকলে অথবা অন্য কারনে হৃদপিন্ড রক্ত চলাচলে বাধাঁগ্রস্থ হলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ

বুকে প্রচন্ড ব্যথা, বুকে চাপ, যন্ত্রণা, ভারী লাগা। সাধারণত বুকের সামনের দিকের মধ্যভাগের হাড়ের পিছনে ব্যথা শুরু হয়। ব্যথা থেকে তীব্রতর হতে থাকে এবং অধিক ওজন বোধ করে। ব্যথা বুক থেকে গলার বাম দিকে, বাম বাহু ও হাত পর্যন্ত বিস্তৃত হতে থাকে। বমি বা বমির ভাব হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, মাথা ঝিমঝিম করা, প্রচুর ঘাম, শ্বাস কষ্ট, ভয়, উদ্ধেগ, আকুল মুখচ্ছবি, ক্ষীণ ও দ্রুত পালস (নাড়ির গতি), মৃত্যুর ভয়,


হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলে কি করব

হার্ট অ্যাটাক হয়েছে মনে হলে বা বুকে ব্যাথা অনুভব করলে প্রথমেই জিভের নিচে angised বা অন্য কোন gliceryl trinitrate ট্যাবলেট কিংবা স্প্রে নিতে হবে। পরিস্থিতি গুরুতর মনে হলে ৩০০ মিলিগ্রামের অ্যাসপিরিন বড়ি পানিতে গুলে কিংবা চিবিয়ে খেতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ধমনীতে প্রাইমারী অ্যানজিওপ্লাস্টি করতে হবে।

কী পরীক্ষা দরকার

হার্ট অ্যাটাকের পর নিয়মিত ইসিজি ফলোআপ, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, ইটিটি করানো উচিত। এমপিআই, করোনারি অ্যানজিওগ্রামও করা লাগতে পারে।

যাদের ঝুঁকি বেশি

-মধ্য বয়সী,
-রক্তে কোলস্টেরলের পরিমাণ বেশি আছে এমন ব্যক্তি,
-ডায়বেটিস রোগী,
-ধূমপায়ী,
-অতিরিক্ত ওজন আছে এমন ব্যক্তি,
-উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তি,
-পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস,
-চিন্তাগ্রস্ত ব্যক্তি।

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কীভাবে কমানো যায়

১. নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম
২. ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করা, টেনশনমুক্ত থাকা,
৩. চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা, শারীরিক পরিশ্রম করে শরীরকে চর্বিমুক্ত
৪. ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়ন্ত্রনে রাখা এবং
৫. অল্প অল্প বুকে ব্যথা হলে বিশেষতঃ চল্লিশোর্ধ পুরুষ এবং পঞ্চাশোর্ধ মহিলাদের চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়ে বুকে ব্যথার কারণ নির্ণয় করা।


প্রতিরোধ:

-ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে, সিগারেটের নিকোটিন রক্তনালীকে সংকুচিত করে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে,
-দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে,
-ওজন, ডায়বেটিস এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে,
-হাঁটাহাঁটির অভ্যাস রাখতে হবে, ব্যায়্যাম করতে হবে,
-সম্পৃক্ত চর্বি; যেমন গরুর মাংস, মাখন, ঘি ইত্যাদি পরিহার করতে হবে,
-মদ্যপান এবং কফি পান পরিহার করতে হবে,
-লবণ খাওয়া কমাতে হবে,
-আঁশ সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে,
-হার্ট এ্যাটাক একবারও হয়নি কিন্তু ঝুকির মধ্যে রয়েছে এ রকম প্রত্যেকেরই ইসিজি, ইটিটি এবং এনজিওগ্রাম করে নেয়া উচিত।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিপ্লাটেলেট ড্রাগ (blood thinner) বন্ধ করা ইচিত নয়। বোর মেটাল/স্ট্যান্প প্লেসম্যান্ট (করোনারী এনজিওপ্লান্টি ) এ ক্ষেত্রে এক বছর ইকোসপিরিন, কোপিডোগ্রেল চালিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীরে কোন অপারেশনের প্রয়োজন হলে, হৃৎরোগ বিশেষগ্গের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

 

ARNING: Any unauthorized use or reproduction of 'Community' content is strictly prohibited and constitutes copyright infringement liable to legal action. 

[প্রথমপাতা]

 

 

 

 

লেখকের আগের লেখাঃ