বাবা আমার বাবা
-সফিউল্লাহ
আনসারী-
সারা বিশ্বে পালিত
দিবসগুলোর মধ্যে বাবা দিবস অন্যতম।জুন মাসের তৃতীয় রোববার পালিত হয় বাবা
দিবস।১৯ জুন রোববার বিশ্ব বাবা দিবস।মায়ের মমতার সাথেই যে
স্নেহময় শব্দটি
সন্তানদের প্রিয় ডাক, সে বাবা।সময়ে-দু:সময়ে পাশে থেকে যিনি বন্ধুত্বের
চিরায়ত মহিমায় ভাস্কর,তিনিই বাবা।যাকে কেউ বাবা,আব্বা,বাপি,আব্বু,বাবুজি
নামে ডেকে থাকেন।সন্তানের প্রতিটা দুঃসময়ে বাবা থাকে পরিক্ষিত বন্ধুর মতো।পরম
মমতায়, স্নেহের বাধনে বুকে আগলে রাখেন বাবা।
শ্রাবন্তী মজুমদারের গাওয়া- কাটে না সময় যখন আর কিছুতে/বন্ধুর টেলিফোনে মন
বসে না/জানালার গ্রিলটাতে ঠেকাই মাথা/মনে হয় বাবার মত কেউ বলে না/আয় খুকু
আয়, আয় খুকু আয়..।এই গানটি সন্তানদের আবেগে আপ্ল“ত করে,করে ভালোবাসার
মূর্ছনায় øেহধন্য। অবুঝ শিশুর হৃদয়কে মুহূর্তেই আন্দোলিত করে যে ডাক,তা মা-বাবা।শিশুর
উচ্চারনের সারল্য ভরা সহজ ডাক বাবা।
বিশ্বের প্রায় ৫২ দেশে এ দিনটিতে বাবা দিবস পালিত হয়।যদিও বাবার প্রতি কোন
সন্তানের জন্য নিদিষ্ট কোন দিন বা দিবসেই বাবার প্রতি ভালোবাসা পুর্ণতা
পায়না,তারপরও ব্যাক্তি জীবনের ব্যাস্ততার এই সময়ে কেবল পিতার প্রতি
সন্তানের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য দিনটি বিশেষভাবে উৎসর্গ করা হয়।
বাবা আমার বাবা।বাবার স্থান শুধু বাবারই দখলে আর কারো নয়।সন্তানের মাথার
উপরে স্নেহ আর ভালোবাসায় বটবৃক্ষের ছায়া একমাত্র বাবাই দিতে পারেন।øেহ আর
মমতায় দৃঢ় বন্ধনের এক অনবদ্য স্বত: উচ্চারিত নাম-‘বাবা’।নতুন প্রজন্মের কাছে
মা দিবস-বাবা দিবসের ধারণাগুলো দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গত শতাব্দীর
প্রথমদিকে বাবা দিবস পালনের সুচনা হলেও ইদানিং অনেকটা জনপ্রিয় কায়দায় পালিত
হচ্ছে দিবসটি। সত্যি বলতে মা‘র পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি
দায়িত্বশীল-এটা বোঝানোর জন্যই এ দিবসটির সুত্রপাত বলা যায়।“১৯০৮ সালের ৫
জুলাই প্রথম ‘বাবা দিবস’ পালিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম ভার্জিনিয়ার
ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় প্রথম এ দিনটি পালিত হয়। আবার সনোরা স্মার্ট ডড নামে
ওয়াশিংটনের এক নারীর মাথাতেও বাবা দিবসের আইডিয়া আসে। যদিও তিনি ১৯০৯ সালে
ভার্জিনিয়ার বাবা দিবসের কথা একেবারেই জানতেন না। ডড এই আইডিয়াটা পান
গির্জার এক পুরোহিতের বক্তব্য থেকে, সেই পুরোহিত আবার মাকে নিয়ে অনেক ভালো
কথা বলছিলেন। তার মনে হয়েছিল, তাহলে বাবাদের নিয়ে কিছু করা দরকার। ডড আবার
তার বাবাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি স¤পূর্ণ নিজ উদ্যোগেই পরের বছর ১৯১০ সালের
১৯ জুন বাবা দিবস পালন করা শুরু করেন।১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসে
ছুটি ঘোষণার জন্য একটি বিল উত্থাপন করা হয়।১৯২৪ সালে সে সময়কার আমেরিকান
প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন।১৯৬৬ সালে
প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন বাবা দিবসে ছুটি ঘোষণা করেন। বিশ্বের বেশির ভাগ
দেশে জুন মাসের তৃতীয় রোববার বাবা দিবস হিসেবে পালিত হয়।”(উইকিপিডিয়া)
একেকটা শিশুর কাছে,একজন সন্তানের কাছে চিরন্তন আস্থার প্রতীক বাবা।এদিনকে
ঘিরে ব্যতিক্রমী উৎসব পালন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও
জনপ্রিয় কালচার হয়ে উঠছে।তবে আমাদের বাংলাদেশে আজো পারিবারিক ব্যাবস্থা
বিদ্যমান থাকায় সন্তান ও বাবা-মা একত্রে বসবাস করেন বলে দিবসটি সর্বস্তরে
তেমন উন্মাদনা বা আকর্ষন সৃষ্টি করতে পারেনা।তারপরও নানা আয়োজনে আমাদের
সামাজিকতায়,বিশেষ করে শহুরে পরিবেশে পালন হয়ে থাকে বাবা দিবস।মানুষ মাত্রই
সকলের কাছে বাবা অত্যান্ত সম্মান ও গুরুত্বপুর্ণ ব্যাক্তি হিসেবে অসাধারণ
আবেগ জড়িয়ে জীবনের বাঁকে-বাঁকে বন্ধু হিসেবে আছেন,থাকবেন। মা-বাবার
স্নেহ ভালোবাসা
সকলেরই কাম্য,হোক সে বাংলাদেশ বা বিশ্বের যেকোন দেশের সন্তান।বাবা দিবস যেনো
শুধু মাত্র একটা বিশেষ দিন বা গন্ডিবদ্ধ কোন আনুষ্ঠানিকতা না হয়। বাবা দিবস
হোক সন্তানের আবেগ আর ভালোবসায় রঙীন প্রেমময় আবহে সত্যিকারের উদ্যেশ্য ও
লক্ষকে ধারন করার চেতনায় উদ্ভাসিত দিন।বিশ্ব বাবা দিবসে সকল গর্বিত বাবাদের
প্রতি রইল অগণন ভালোবাসা ও অফুরন্তন শুভ কামনা...।
_______________________________________
সফিউল্লাহ আনসারী
সাংবাদিক
|