[প্রথমপাতা]

 

 

 

অধ্যাপক তাকাকুসু এবং রবীন্দ্রনাথের বাণী
 

প্রবীর বিকাশ সরকার
 

রবীন্দ্রভক্ত শ্রীমতী ওওবা তামিকোর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা এক দশকেরও বেশি। তারই বান্ধবী নৃত্যশিল্পী ইতাকুরা লিসার সঙ্গে পরিচয় গত বছর টোকিওর ইয়োয়োগি উদ্যানে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ উৎসবে। তিনি মূলত নৃত্যশিল্পী, ভারতীয় নৃত্যে বিশেষভাবে পারদর্শী। সমপ্রতি বলিউডের অভিনেত্রী হিসাবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন। ১৯৯০ সালে নির্বাচিত ‘মিস জাপান’ লিসা সম্প্রতি বলিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা আক্রাম শেখ নির্মিত জাপানে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী চলচ্চিত্র ‘ড্যান্স ড্যান্স ড্যান্স’-এর নায়িকা। চলচ্চিত্রটি বন্দরনগরী ইয়োকোহামার সমুদ্রতীরে ধারণকৃত। যে ইয়োকোহামার সঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের অনেক স্মৃতি বিজড়িত, তিনি এই নগরটিকে খুব ভালবেসেছিলেন। ইয়োকোহামা প্রায় শতবর্ষ আগেই ছিল সবুজে-নীলে মিশ্রিত সৌন্দর্যের অমরাবতী। এখানকার বিখ্যাত ‘সানকেইএন’ নামক সবুজ স্নিগ্ধ বাগানবাড়িতে কবি ১৯১৬ সালে প্রায় তিন মাস অবস্থান করেছিলেন। যে কারণে ওওবা তামিকো খুব গর্ববোধ করেন। তার সংস্পর্শে এসে লিসাও ক্রমেই রবীন্দ্রভক্ত হয়ে পড়ছেন। যদিওবা লিসার মাতামহ ছিলেন আমৃত্যু জাপানপ্রবাসী ভারতীয়, জাপানের জাতীয় সংবাদ সংস্থা কিয়োদো ৎসুশিন প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক। রক্তের টানেই সংস্কৃতির দিকে ঝুঁকে পড়েছেন শিশুকালেই লিসা।

২. জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে এক সন্ধ্যায় টোকিওতেই নতুন গড়ে ওঠা আধুনিক শিয়োদমে শহরে অবস্থিত কিয়োদো ৎসুশিন দপ্তরে ডাক পড়ল আমার। ফোন করলেন এই সংস্থারই অন্যতম প্রধান বার্তা সম্পাদক অগ্রজ বন্ধু বান তাকেজুমি, বললেন, তাকারাদা, শিমুরা, তামিকো এবং লিসা এসেছে তিন তলায় স্টারবাক কফিশপে আছি, সময় থাকলে এসে পড়ো আড্ডা দেওয়া যাবে। রবীন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা আছে। তুমি না থাকলে কীভাবে হবে? রবীন্দ্র-জাপান সম্পর্ক নিয়ে তো তুমিই এখন সবচেয়ে বেশি সরব ব্যক্তি।
তখন সন্ধ্যে ৬টা উতরে গেছে, আমার কাজও শেষ। মাত্র ৩০ মিনিটের পথ মেট্রোতে, ছুটে গেলাম শিয়োদমে। সেখানেই রবীন্দ্র বিষয়ে নানা কথার মধ্যে লিসা এমন একটি সংবাদ দিলেন আমি তো পারি না তখনই উড়ে চলে যাই! তিনি বললেন, রবীন্দ্রনাথের একটি স্মৃতি আছে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টি আমার শহর শিনমাচিতে অবস্থিত। পশ্চিম টোকিওতে। মুসাশিনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিযত্নের সঙ্গে সংরক্ষিত আছে তার একটি বাণী। সেটা কবি স্বহস্থে লিখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে উপহার দিয়েছিলেন। আমিও দেখিনি তবে ছাত্রীবস্থায় শুনেছি এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ভারতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লিখিত একটি বাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। রবীন্দ্রভক্ত ওওবা তামিকোর সঙ্গে ছবির চিত্রায়ণ করতে গিয়ে যখন ইয়োকোহামাতে পরিচয় হয় তখন আমার বিষয়টি মনে পড়লে তাকে আমি খুলে বলি। তিনি বললেন, তাহলে তো সেটা দেখা দরকার! আমার এক বন্ধু রবীন্দ্র-জাপান সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করছেন। বাংলাদেশি নাগরিক তিনিও দেখে নিশ্চয়ই খুব খুশি হবেন। তাকে নিয়ে চলো একদিন যাই সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রবীর বাবু আপনি কি যাবেন দেখতে?
আমি তার কথায় লাফিয়ে উঠে বললাম, যাব না মানে! এর চেয়ে আনন্দের খবর আর কী হতে পারে! আপনি আমাদের নিয়ে চলুন।
তিনি বললেন, আমি ক্যাম্পাসে গিয়ে আচার্যের সঙ্গে সরাসরি আলাপ করে আপনাকে জানাব।
আমি লিসাকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতীক্ষা করতে লাগলাম অস্থির চিত্তে!

৩. সেই শুভক্ষণটি এলো ১৪ ফেব্রুয়ারি সোমবারে। তামিকোর সঙ্গে কিচিজোজি স্টেশনে সাক্ষাৎ করে দ্রুত সংক্ষিপ্ত মধ্যাহ্নভোজ সেরে বাসে চড়ে ২০ মিনিট লাগিয়ে ১২টা ৪৫ মিনিটে গিয়ে পৌঁছলাম গন্তব্যস্থলে। দুপুর ১টায় সাক্ষাতের সময়। লিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন গরম কাপড়ে আপাদমস্তক ঢেকে। মেঘলা দিন ছিল সেদিন, শীতও পড়েছে জব্বর! এক ঝলক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশ্রী এবং বিশাল সবুজ ক্যাম্পাসটি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম! ছবি তুলতে তুলতে দোতলায় আচার্যের কক্ষে যাওয়ার পথে তার সচিব একজন তরুণী আমাদের তিনজনকে নিয়ে আচার্যের কক্ষে প্রবেশ করলেন। আচার্য হাসিমুখে আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন। ভিজিটিং কার্ড বিনিময় হলো। আমরা তার সাজানো-গোছানো কক্ষে রাখা সোফাতে বসলাম। এর মধ্যে সচিব মেয়েটি ধূমায়িত সবুজ চা দিয়ে গেলেন কিছু কেকসহ। লিসাই আমাদের দুজনের কর্মকান্ড সম্পর্কে আচার্য অধ্যাপক ড. তেরাসাকি ওসামুকে ব্যাখ্যা করলেন। অধ্যাপক রবীন্দ্রনাথের ভক্ত বলে জানালেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী আচার্য ভারতে গিয়েছেন, রবীন্দ্র-জাপান সম্পর্কে মোটামুটি অবগত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. তাকাকুসু জুনজিরোও হলেন আধুনিক জাপানের প্রথম দিকের বিশ্বখ্যাত বৌদ্ধপন্ডিত এবং ভারততত্ত্ববিদ। তৎকালীন টোকিও ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক থাকাকালীন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি পরবর্তীকালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং মৃত্যুর আগে রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত হয়েছিলেন। কবি তাকে স্বহস্তে লিখিত এই বাণীটি উপহার প্রদান করেন। যেটা আমি তোমাদের দেখাব। লোকসমক্ষে এটা খুব একটা প্রদর্শিত হয়েছে বলে আমার অন্তত জানা নেই। সুতরাং দুদেশেরই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জানা নেই যে, এমন একটি দুর্লভ নিদর্শন তথা মূল্যবান সাংস্কৃতিক সম্পদ আমাদের দেশে রয়েছে। এর জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে আমি গর্বিত।
চা পান করতে করতে তিনি আমাকে একটি প্রস্তাব দিয়ে বললেন, আমরা খুবই আগ্রহী রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহোদর-সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য। তুমি কি যোগাযোগটা করিয়ে দিতে পারবে?
এই কথা শুনে তামিকো বলল, স্যার, মি. সরকার মার্চ মাসে কলকাতায় যাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথ ও জাপান বিষয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। বিশ্বভারতীর একজন তরুণ এবং উচ্চ কর্মকর্তা নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে বিশিষ্ট রবীন্দ্র-গবেষক অধ্যাপক কাজুও আজুমার শিষ্য। জাপানে একাধিকবার এসেছে। তার সঙ্গে মি. সরকার গিয়ে আলাপ করতে পারবেন। আমার তো মনে হয় বিশ্বভারতী এই প্রস্তাব গ্রহণ করবে।
এ কথা শুনে আচার্য খুব খুশি হলেন। বললেন, আমরা চাই শিক্ষা বিনিময়ের মাধ্যমে এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে গবেষণা হোক দুদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। এখানে বৌদ্ধধর্ম ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৩০ বছর আগে। বৌদ্ধধর্ম ও রবীন্দ্রনাথ বিষয়ক উচ্চশিক্ষা ও গবেষণাও হতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের শিক্ষা বিনিময় সম্পর্ক বিদ্যমান। চীনের তরুণ গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বৌদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে এখানে গবেষণা করছেন। প্রকৃতিপ্রেমিক শান্তিবাদী রবীন্দ্রনাথের সম্পূর্ণ মানব গড়ে তোলার শিক্ষা একুশ শতকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা চাই বিশ্বভারতীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বিনিময় গড়ে তুলতে।
আমি তার প্রস্তাব বিশ্বভারতীতে পৌঁছে দেওয়ার প্রতীজ্ঞা করলাম। এরপর তিনি আমাদের তার টেবিলের পাশের দরজা খুলে একটি কক্ষে নিয়ে গেলেই আমাদের চোখে ধরা পড়ল বেশ বড় একটি কাচ ও কাঠের ফ্রেমে বাঁধানো দুলাইনের একটি কালো বাণী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক সিল্ক কাপড়ের ওপর স্বহস্তে লিখিত বাণীটি দেখে অভিভূত হয়ে গেলাম তিনজনই! অভূতপূর্ব! দৈর্ঘ্যে দেড় মিটার এবং প্রস্থে অর্ধমিটার। পালি ভাষার শ্লোকটি বাংলা ভাষায় লিখিত। আর সেটি হলো : ‘অক্কোধেন জিনে কোধং’ যার অর্থ, ক্রোধান্বিত না হওয়া মানেই ক্রোধকেই জয় করা। এটা মহামতি গৌতম বুদ্ধের বাণীসমূহ গ্রন্থিত ‘ধম্মপদ’ গ্রন্থ’ থেকে কবি নিয়েছেন বলে জানা যায়। বাণীটির নিচেই বাংলায় লিখিত কবির স্বাক্ষর বা নাম। বাণীটি লিখেছেন তৎকালীন জাপানব্যাপী জাতীয়তাবাদের তীব্র উত্থানকে উপলব্ধি করে। রবীন্দ্রনাথ ১৯১৬ সালেও টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত এক বক্তৃতায় জাপানের সমরবাদের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। সে যাই হোক, আমরা বাণীটির সামনে বেশ কিছু ছবি তুললাম। বুকের মধ্যে অদ্ভুত এক অনুভূতি! কারণ এই প্রথম রবীন্দ্রনাথের কোনো বাণী স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য অর্জন করলাম। আর এটা হয়েছে ইতাকুরা লিসার কল্যাণেই। কী বলে তাকে ধন্যবাদ জানাই! পরিশেষে আচার্যকে আমার ‘জানা অজানা জাপান’ ২য় খন্ডটি উপহার দিলাম, বললাম, স্যার এর মধ্যে কয়েকটি প্রবন্ধ আছে রবীন্দ্র-জাপান সম্পর্ক নিয়ে, যা প্রায় অজানাই বলা চলে।
৪. সেদিন বাসায় ফিরে আসার পর অনুসন্ধান করলাম এই বাণীটির ইতিহাস। হিরোশিমা নগরে জন্ম টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাকাকুসু জুনজিরোওর (১৮৬৬-১৯৪৫) সঙ্গে রবিঠাকুরের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠার সূচনা হয় ১৯১৩ সালে, যে বছর তিনি নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। এই বছর তাকাকুসু তৎকালীন খ্যাতিমান বৌদ্ধ পন্ডিত কাওয়াগুচি একাই এর সঙ্গে নেপাল ভ্রমণ করেন সম্ভবত এ সময় শান্তিনিকেতনে যান এবং রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পরিচিত হন। ১৯১৬ সালে যখন রবীন্দ্রনাথ প্রথম জাপান সফরে আসেন তার অভ্যর্থনা পরিষদের অন্যতম প্রধান সদস্য ছিলেন তিনি।
১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তৃতীয়বারের মতো জাপানে এলে পরে এবারও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে। এই সালেই অধ্যাপক তাকাকুসু টোকিওর ৎসুকুজি শহরে অবস্থিত বিখ্যাত হোনকানজি বৌদ্ধ মন্দিরের ভেতরে ‘মুসাশিনো বালিকা বিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসেছিলেন কি না জানি না কিন্তু তখন সিল্ক কাপড়ের ওপর তুলি দিয়ে কবি স্বহস্তে বাণীটি লিখে বন্ধুবর অধ্যাপক তাকাকুসুকে উপহার হিসেবে প্রদান করেন। অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদের মতো এই স্মৃতিটি তাকাকুসু নিজের কাছে যত্নের সঙ্গে রেখে দেন। ১৯২৯ সালে বর্তমান পশ্চিম টোকিওর শিনমাচি শহরে বিদ্যালয়টি মহিলা উচ্চবিদ্যালয় হিসেবে স্থানান্তরিত হয় এবং তার মৃত্যুর পর ১৯৫০ সালে যখন প্রতিষ্ঠানটি মুসাশিনো মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় তখন এই বাণীটি এখানে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে এটা প্রসিদ্ধ সহশিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে দেশ-বিদেশে পরিচিত। এই ক্যাম্পাসে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বিদ্যমান। আচার্যের কথা থেকে জানা যায়, এই বাণীটি দীর্ঘদিন উল্টোভাবে টাঙানো ছিল বাংলা ভাষা না বোঝার কারণে। তারপর বুঝতে পেরে সঠিকভাবে দেয়ালে স্থাপিত হয়। এই বাণীটি সম্পর্কে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক এবং বয়োজ্যেষ্ঠ বিশিষ্ট বৌদ্ধপন্ডিত মায়েদা ছেনগাকু তার একটি লেখায় উল্ল্যেখ করেছেন, যখনই বাণীটির দিকে তাকাতাম তখন মানসিকভাবে শক্তি উপলব্ধি করতাম। বাণীটি নানাভাবেই আমাকে জীবনশক্তিতে উজ্জীবিত করেছে, অনুপ্রাণিত করেছে।
উল্ল্যেখ্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জাপানের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিকবার বক্তৃতা দিয়েছেন। অনেক আলোকচিত্রও তার গৃহীত হয়েছে। চীনে ও জাপানে তিনি ভ্রমণকালে লিপিকলা দেখে উৎসাহিত হয়েছেন। তাই অনেক বাণী তিনি লিপিকলার আদলে লিখে বিভিন্নজনকে উপহার দিয়েছেন। কিন্তু যতখানি জানা যায়, একমাত্র এই বাণীটিই সশরীর স্মৃতি হিসাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত হচ্ছে। আর ভারত থেকে প্রেরিত একটি ভারতীয় নৌকোর মডেল রয়েছে তার আরেকজন বন্ধু অধ্যাপক ড. ওওকুরা কুনিহিকোর একদা বাসভবন বর্তমানে ইয়োকোহামাস’ ওওকুরায়ামা স্মৃতিসদনে।
আমি আচার্য অধ্যাপক তেরাসাকিকে অনুরোধ করলাম, রবীন্দ্রনাথের একটি স্মারক প্রস্তরমূর্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্থাপন করার জন্য, যদি সম্ভব হয় এ বছর তার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে। টোকিওর সঙ্গে কবির অনেক স্মৃতি বিজড়িত কিন্তু একমাত্র নাগানো-প্রিফেকচারের কারুইজাওয়ার আসামা পর্বতের পাদদেশ ছাড়া তার কোনো মূর্তি কোথাও নেই। আচার্য আমার প্রস্তাবটি মনোযোগ সহকারে শুনলেন।

 

[প্রথমপাতা]

 

লেখকের সাম্প্রতিক লেখাঃ

 

>>ওওকুরায়ামা স্মৃতিসদনে রবীন্দ্রনাথ

>>রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং নাকায়ামা তাইচি

>>শেখ হাসিনার জাপান সফর প্রসঙ্গে

>>বিচারপতি রাধাবিনোদ পালের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে