আমাদের
মুক্তিযুদ্ধ ও তাজউদ্দীন আহমদ
- অজয় দাশগুপ্ত
-
প্রায় সবগুলো মিডিয়াতেই বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের
জন্মদিন এই শিরোনামে সংবাদ দেখলাম। এটাই কি তাঁর আসল পরিচয়? স্বল্প সময়ের
প্রধানমন্ত্রীত্বে তাঁর কোন অর্জন বা গৌরব থেকে থাকলেও, তা নিতান্ত গৌন।
মুক্তিযুদ্ধের সফল নেতৃত্ব ,
নয়মাসের সংগ্রামী অর্জুন ও বিজয়ের নায়ক তাজউদ্দীন। মূলধারা ৭১ পড়লেই বোঝা
সম্ভব নিজেদের দলের ভেতর ও কতটা প্রতিকূলতা ছিল। ছিল দেশী বিদেশী চক্রান্ত
আর কূট কৌশল। তাঁর বলিষ্ঠতা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন ছিল সুদূর পরাহত।
খন্দকার মোশতাক গং দের পাশাপাশি আমেরিকা চীন ও পাকিস্তানের সাথে মোকাবেলার
জন্য যে প্রজ্ঞা মেধা ও দূরদর্শিতার প্রয়োজন সেটা তাঁর ছিল। পাশে পেয়েছিলেন
আরো তিন অকৃত্রিম সুহৃদ। তিনি ই একমাত্র নেতা যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়
পরিবারের সাথে থাকেন নি। কখনো কখনো খড়ের বিছানায় রাত্রি কাটিয়েছেন। বহুবার
নিজেদের মানুষ তাঁকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। সে মানুষটি দেশ স্বাধীন হবার পর
তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানাবার ওসুযোগ পাননি।
তাজউদ্দীন আহমদ যখন প্রাণ দিলেন তখন তিনি আওয়ামী লীগের কেউ নন। বঙ্গবন্ধুর
সাথে যোজন যোজন দূরত্ব তাঁর। কেউ তাঁর কথা শোনেনি। তাঁকে মূল্যায়ন দূরে
থাকুক মনেও রাখেনি। সেই তিনি নেতার জন্য দলের জন্য আদর্শের জন্য প্রাণ
বিসর্জন দিলেন স্বেচ্ছায়। দ্রুত ভুলে যাওয়া আর মোনাফেকির দেশে এগুলো কোন
বিষয় না। নিজ দলের ভেতর একা ও নি;সঙ্গ তাজউদ্দীন মূলত: একটি প্রতীক।
যাঁকে দেখে কোন ভদ্র লোক বা বিবেকবান মানুষের মনে রাজনীতি বা রাজনৈতিক দল
বিষয়ে ঘৃণা ছাড়া ভালোবাসা জন্মাবার কথা নয়। বড় ভুল সমাজে ভুল দেশে
জন্মেছিলেন আপনি। এখানে ডিগবাজী না খেলে কেউ মনে রাখেনা। গাদ্দারী না করলে
মাথায় তুলে নাচে না। দল না বদলালে মুখোশ না থাকলে লাইম লাইটে থাকা যায়না।
আপনার মত বটগাছ কে ধরে রাখা আমাদের রাজনৈতিক দলের টব বা ফ্লাওয়ার ভার্সের
কম্ম নয়। মার্জনা করবেন আমাদের।
|