'শরীফা বুলবুল এর তিনটি কবিতা'
আমি সেই মেয়ে
আমি সেই মেয়ে,
যাকে আপনারা চিনতেন বলাকা নামে!
এখনও বলাকার প্রাপক আমিই!
সকাল থেকেই ঘড়ির কাঁটায় মেলাচ্ছি পা!
দ্রোহ আমার শিরায় শিরায় ভিত গেঁথেছে
অন্যরকম দিনবদলের।
স্বপ্ন আমার উড়ে যাচ্ছে, অন্যরকম নেশার ঘোরে।
আসছে মাঘে সামলে নেব সকল ক্ষতি!
আমায় ভাসাবে কে!
আমিই তো নদীর অবাধ্য স্রোতের মতো
ভাসিয়ে দিয়ে হাসতে পারি নিয়তির অট্টহাসি!
যে আমি মৃত্যুর বিরুদ্ধে বহুবার হেঁটেছি উদ্ধত পায়ে!
আমি সেই মেয়ে
আমাকে সমস্ত রাত কাঁদিয়ে
বিপর্যস্ত করে তুলছে কে!
আমি তার মুখাগ্নি করবো।
আমি সেই মেয়ে
বৈকালিক ছাদের আড্ডা, গৃহস্থালী ছেড়ে
স্বপ্নগুলো ছড়িয়েছিলাম
শহরের পথে পথে...
চোখের পাতায় পাখির ডানার রং ঢেলে
যাওয়া সেইসব স্বপ্ন অন্ধকারকে কাঁপিয়ে
বেছে নিয়েছি এক তুমুল জীবন।
আমার ডানার নিয়ে ছাই নয়, আগুন।
আমি সেই মেয়ে!
আমাকে কাঁদাবে কে?
বেঁচে ওঠো জগতের যন্ত্রণাসকল
বেঁচে ওঠো অপরাজিতা
নির্যাতিতা গণধর্ষিতা,
বেঁচে ওঠো বাংলার হাসি
স্বপ্ন আমার রাশি রাশি...।
বেঁচে ওঠো গোপন বারুদ।
পোড়াও ওদের বারুদ দহনে।
মেয়ে বলে যারা তোমাকে,
কামুক ঠোঁটের কামরে ডলে
পিষেছিল পায়ে দলে।
ওদের ক্ষমা নয়, ক্ষমা নয়
ওদের মারনাঘাত হানতে হবে
পাহাড় ও সমতলে।
অপমান ঝেড়ে বেঁচে ওঠো মেয়ে
বেঁচে ওঠো জগতের যন্ত্রণাসকল
শক্তিময়ী দুর্গতিনাশিনীর দল।
হে পুরুষ নারীদের পরিত্রান দাও
হে পুরুষ নারীদের পরিত্রান দাও।
সাম্রাজ্যবাদের মতো তোমাদের
হিংস্র-নগ্ন-আধিপত্যবাদী আক্রোশ থামাও।
আমাদের শিশু আর স্বপ্নরা সন্ত্রস্ত!
আমাদের জীবন থেকে উৎসব মুছে যাচ্ছে।
নিভে যাচ্ছে মানচিত্রের আলো!
নারীর কান্নায় ভূমিকম্প হচ্ছে।
কেঁপে উঠছে বাংলা থেকে দিল্লী...
বিচারসভার সবকটি আলো
লজ্জায় অপমানে বিব্রত।
পুরুষ শহীদের এই পবিত্র মাটি ও জলের দিব্যি।
পরিত্রান দাও, পরিত্রান দাও মেয়েদের।
অনেক হয়েছে যৌনবিকার, আর না।
তোমার কামধনুকে ঝরে অবিরল
মেয়েদের কান্নার হীরক পান্না।
তোমরা যারা বলেছ, নারীকে
ডুবে যাওয়া পাতালের সিঁড়ি
ভুলে যাও ভুলে যাও
আকাশের অর্ধেক নারীরও
নারীও ছড়াবে ডানা বাংলা থেকে বিশ্ব।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |