[প্রথমপাতা]
|
বিদায় বাংলার শেষ নবাব
-অজয় দাশগুপ্ত-
বাঙ্গালির মনোজগতে নবাব সিরাজ উদ দৌলা এক বিস্ময়। বাংলা বলতে না জানা
উর্দূভাষী, মেজাজী এই শাসককে আমরা আমাদের শেষ স্বাধীন নবাব ও স্বাধীনতার
প্রতীক মনে করি। বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব সিরাজ ও পলাশী প্রান্তর আমাদের
বেদনার প্রতীক ও বটে। পলাশী প্রান্তরে অস্তমিত স্বাধীনতার সূর্য মীরজাফরের
ষড়যন্ত্র কাশিম বাজার কুঠি সিরা্জের বিয়োগান্তক প্রস্হান আমাদের শিল্প
সাহিত্যকে ও স্পর্শ করেছে। বিশেষত যাত্রা নাটক সিনেমায় সিরাজদৌলার স্হান
সবার ওপরে। বঙ্গবন্ধু ব্যতীত আর কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এতটা ভেতরে ঢুকতে
পারেননি।
অন্দরমহল অবধি ঢুকে পড়া নবাব সিরাজ উদ দৌলাকে ভালোবাসলেও তাঁর চেহারা বা
অবয়ব আমাদের কাছে অস্পষ্ট। সেই শূন্যস্হান পূরণ করেছিলেন আনোয়ার হোসেন।
৬৭ সালে বাঙ্গালির মনোজগতে সিরাজদৌল্লা আর আনোয়ার হোসেন হয়ে উঠেছিলেন এক
ও অভিন্ন। আজকের প্রজন্ম ভাবতেও পারবে না সিনেমা তখন কতটা হৃদয়গ্রাহী আর
জনপ্রিয় ছিল। শহর পেরিয়ে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে সিরাজদৌলা আর আনোয়ার
হোসেন একাকার। কলের গান রেডিও সর্বত্র আনোয়ার হোসেনের সংলাপ আলেয়ার গান
আর নবাবের জন্য শোক।
তারপর ও অনেক ছায়াছবিতে অসাধারণ অভিনয় করেছেন আনোয়ার হোসেন। জীবন থেকে
নেয়ায় বাঙ্গালি চেতনার উদ্ভাস, আলোর মিছিলে আদর্শবান সংগ্রামী কোথাও পিতা
কোথাও বড় ভাই কোথাও প্রেমিক তারপর ও তাঁর পরিচয় ছিল নবাব। রোজী -আনোয়ার
হোসেন আনোয়ারা-আনোয়ার হোসেন এমন জুটি আর কোনদিন ও গড়ে ওঠেনি। উঠবেও না
হয়তো বা।
বাংলা চলচ্চিত্রের দূর্দিনে মহা সংকট কালে আমরা হারালাম পদ্মা পাড়ের
অসামান্য এক অভিনেতাকে। যিনি অভিনয় গুনে অনেক নায়ককেও ম্লান করে
দিয়েছিলেন।
বিদায় হে বাংলার শেষ নবাব। আমরা তোমাকে ভুলবো না।
WARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
লেখকের আগের লেখাঃ
|