[প্রথমপাতা]
|
অন্ধকার
আকাশ মামুন
এক.
মজিদ আলীর সংসারে সুখ নেই বটে,কিন্তু শান্তি আছে।হাড় জিরজিরে দেহে অপুষ্টির
চিহ্ন স্পষ্ট।তবুও শত অভাব অভিযোগ আর চাওয়া পাওয়ার অসামানযশ্যতা কে মনের
কোনে চেপে রেখে ঠোঁটে যে এক চিলতে হাসির রেখা ফোঁটে উঠে তাতেই বোঝা যায় সুখ
না থাকলেও শান্তি আছে।কখনও অন্যের জমিতে মজুর খেটে,কখনও বর্গা চাষী হিসেবে
আবার কখনও বা পুবের ইট খোলায় কাজ করে পাঁচ সদস্যের পরিবারের খাদ্যের
সংস্থান করতে হিমসিম খেয়ে যায়।ছেলে ছেলে করতে করতে এখন সে তিন মেয়ের জনক।বড়
মেয়ে গোলাপী,ঠিক যেন পোলাপের পাপড়ির মত দেখতে ।ছেলে প্রত্যাশী বাবা মেয়ে
হওয়ার খবর শুনে যার পর নাই ক্ষুব্ধ।রাগে,দুঃখে,অপমানে সে তার স্ত্রী ও
নবাগত সন্তানের মুখ পর্যন্ত দেখতে যায়নি। পাড়া-পড়সি ঠেলে ঠুলে যখন পর দিন
পাঠাল,তখন ফুটফুটে মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে ক্ষোভ আর ধরে রাখতে
পারেনি।আবেগে আপ্লুত হয়ে পরম মমতায় কোলে তুলে নিয়েছিল।তার পর সোনালী,তারপর
ইতি।ইতি নামটা তার স্ত্রী ফজিলা বেগমই রেখেছিল।যেন এবার সে মুক্তি চায়।
ছেলের জনক হওয়ার প্রবল বাসনাটা মাঝে মাঝে মাঝ রাতে পুরোনো ব্যাথার মত জেগে
উঠে,ঘুম কেড়ে নেয়।আর তখন তার মাথায় প্রচন্ড খুন চেপে যায়।নিজের ব্যার্থতা
আর অযোগ্যতার কথা মনে পড়তেই গ্লানি বোধ তাকে গ্রাস করে ফেলে।তখন তার মাথায়
কেবলই উন্মত্ত ঝড় বইতে থাকে।সে ঝড় নিজেকে ও চার পাশকে লন্ডভন্ড করে দেয়।
তারপর হয়তো শ্রান্ত-ক্লান্ত দেহে ঘুমিয়ে পড়ে সেই দিনের মত।ভোরের সূর্যোদয়ে
আবার স্বভাবিক মজিদ আলী।
ছেলের বাবা হওয়ার ইচ্ছেটা যে তার মরে গেছে তা নয়।কিন্ত স্বাস্থ্যকর্মী আর
স্ত্রীর পিড়াপীডিতে সে পথ এখন রুদ্ধ।প্রথম দিকে স্ত্রীকে সে ভীষণ শারীরিক
নির্যাতন করত।যেন ছেলে না হওয়ার সব দোষ তার।পরবর্তীতে স্বাস্থ্যকর্মীর
ব্যাখ্যা তাকে স্বাভাবিক করেছিল।এখনও সে পুরোপুরি মানতে পারেনা ছেলে না
হওয়ার ব্যার্থতা একজন পুরুষের থাকতে পারে।তবে স্বাস্থ্যকর্মী বলেছে,আপনি আম
গাছ রোপণ করেতো আর কাঁঠাল প্রত্যাশা করতে পারেননা।মজিদ ভেবেছে কথাটার
যুক্তি আছে।তাই নিজের ব্যার্থতাকে স্বীকার করে নিয়ে মজিদ এখন মেয়েদের নিয়েই
স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্ন দেখার অবশ্য কারণও আছে ।বড় মেয়ে গোলাপী এবার নবম শ্রেণীতে।গেল বছর
অষ্টম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছে।হেড মাস্টার বলেছে পোলাপী একদিন অনেক বড়
হবে।মেয়ে বলেছে সে চাকরী করবে।তখন আর তার অন্যের জমিতে কাজ করতে হবে
না।নিজের জমি হবে,গরু হবে, পুকুর হবে।নিজের স্বপ্ন পালে মেয়ের সেই স্বপ্নের
কথা গুলো হাওয়া লাগিয়ে মজিদ দিন পার করতে থাকে।দিনের পর দিন,মাসের পর মাস
তাই রোদ বৃষ্টিতে হাড় ভাঙা খাটুনি খেটে যাচ্ছে দীর্ঘ শ্বাস বুকে চেপে
রেখে।এখন মেয়েই তার স্বপ্ন পূরণের চেরাগ।
হাট বাজারে চাল আর ডালর দাম হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে।তার সাথে পাল্লা দিয়ে
বাড়ছে মজিদ আলীর অস্থিরতার পারদ।মাঝ রাতে হঠাৎ হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় আর ঘুম
আসতে চায় না।ভাবি দিনের কথা ভেবে শুধু দীর্ঘ শ্বাস বাড়তে থাকে।সামনে চৈত্র
মাস ।কিভাবে সংসার চলবে।তিনটা মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে।স্কুলের খরচ না লাগলেও
খরচতো আছে।কি ভাবে জোগাবে সেই খরচ মজিদ আলী জানে না।এ সব ভাবতে ভাবতে কোন
দিন হয়তো শেষ রাতের দিকে একটু ঘুম আসে কোন দিন আবার আসেই না।
দুই.
প্রচন্ড গরম ।রোদে চার দিক খাঁ খাঁ করছে।গাছের পাতারা সব কেমন ঝিমাচ্ছে ।আর
সেই সাথে মজিদ ও ঝিমাচ্ছে। ফজিলা বেগমের ডাকে হঠাৎ ঘুম ভাঙল।
- হুনছেন?
-হু
-হু কইলে হব।ঝড় বাদলের দিন আইতেছে।কই ঘরেরতো চাল বেড়া খুটি কিছুই ঠিক
নাই।এই সব ঠিক না করলে যদি ঝড়ে উইড়া যায় তবে মাইয়াগো নিয়া কই দাঁড়াইবেন?
এবার যেন সত্ত্যি সত্ত্যি ঘুম উবে গেল মজিদ আলীর ।বাম থেকে ঘুরে ডান কত
হল।একে বারে যে কিছুই ভাবে নাই তা নয়।সলিম মিয়ার নাড়া আছে ।সে প্রতি বছরই
জমিয়া রাখে।বর্ষার আগে আগে চড়া দামে বিক্রি করে।মজিদ আলী সেখানে
গিয়েছিল।কিন্তু কিন্তু বাকীর জন্য সলিম মিয়া দিতে রাজি হয়নি।
-কই হুনছেন কিছু?
-হ হুনলামতো ।
-কই কিছুতো কন না।ঘর ছাওয়ন লাগব না।
-নাড়া পামু কই।
-জোগাড় তো করন লাগব।
-খাওয়নই পাই না কেমনে ছামু ঘর ক?
এবার ফজিলা বেগমের মুখ থেকেও দীর্ঘ শ্বাসের শব্দ শুনা গেল।
-এক বেলা না খাইয়া হইলেও ছাওয়ন লাগব।কি আর করন যাব।
-এক বেলাই কই খাবার পাবি।জিনিস পত্রের দাম যে হারে বারতাছে না খাইয়া মরন
লাগব।
দেহি পশ্চিম পারায় কি জানি এক এনজু আইছে।ওরা নাকি লোন দেয়।যদি পাওয়া যায়
তাইলেতো ভালাই হইতো।
-হ তাইলে তাই দেহেন।মাইয়াগো নিয়া তো আর না খাইয়া মরন যাব না।ঘর ভাংলে কই
গিয়া খারমু। কবে যে মাইয়া গুলান বড় হব।কবে যে চাকরি বাকরি করব।আল্লই জানে।
তিন.
গেল সপ্তাহে সরকার বাড়ীর ছোট ছেলেটা বাড়ী এসেছে।ঢাকায় থাকে,বড় ব্যবসা নাকি
আছে,মেলা টাকার মালিক। তার সাথে দেখা হয়েছিল মজিদ আলীর।মেলা সমাদর
করল।দোকানে ডেকে তাকে চা পর্যন্ত খাওয়াল।পরদিন বিকেলে তাকে দেখা করতে
বললো,কী যেন জরুরী কথা আছে।তাইতো আজ বিকেলে দেখা করতে গিয়েছিল।যা শুনেছে তা
তার বিশ্বাসই হতে চাচ্ছে না।এ যেন স্বপ্ন পূরণের হাতছানি।একটু একটু করে তার
স্বপ্নটা যেন তার কাছেই ধরা দিচ্ছে ।পরের জমিতে কাজ করতে আর ভাল
লাগেনা।সোনা ফসল ফলিয়ে তাদের দিয়ে আসতে হয়।কিন্তু চিন্তা করছে কী ভাবে
কথাটা স্ত্রীকে বলবে। ফজিলা বেগম যদি মেনে না নেয়।অবশ্য তাতে তার কিছু আসে
যায় না।সে কাওকে পরোয়া করে না।কেউ মেনে নিক আর নাই নিক গোলাপীকে সে ঢাকা
পাঠাবেই।সরকার সা'ব বলেছে ঢাকায় গেলে সে গোলাপীকে চাকরী নিয়ে দিবে।ভাল
মাইনে পাবে।তখন আর তার দুঃখ থাকবে না।অন্যের জমিতে কাজও করতে হবে না।ছোট
মেয়ে দুটোও ভালভাবে পড়া লেখা করতে পারবে।জিনিস পত্রের দাম যে ভাবে বাড়ছে
তাতে আর কুলিয়ে উঠতে পারছে না মজিদ আলী।মেয়েদের এত পড়ে কী হবে?তাই তার
চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত মেয়েকে সে ঢাকা পাঠাবেই। স্ত্রীকে কথাটা বলতেই যথারীতি
সে বেঁকে বসল।আমার এত ছোট মেয়ে,ও কী চাকরী করবে?আমি ওকে ঢাকা পাঠাব
না।ক্ষেপে যায় মজিদ আলী।তার এক কথা,পোলাপীকে সে ঢাকা পাঠাবেই।স্বামীর
নির্লিপ্ততার কাছে হার মেনে বিনয়ী হয়ে বলে,ওগো মেয়েটা পড়া লেখায় ভাল।আর
তাছাড়া ও বৃত্তি পেয়েছে,তোমারতো আর পয়সা লাগে না। এস.এস.সি টা পাস করুক,তার
পর পাঠাও।কিন্তু স্ত্রীর সেই আকুতি তাকে স্পর্শ করে না।অন্ধ মোহ আর অর্থ
লিপ্সার ভুত তাকে চেপে ধরেছে।তাইতো গোলাপীর চোখের জল আর স্ত্রী আকুতি কোন
কিছুই তার সিদ্ধান্তে চিড় ধরাতে পারে না।মজিদ আলী এখন প্রতি দিন সরকার
সাহেবের সাথে দেখা করে আর শুনে নানা রঙ্গীন স্বপ্নের কাহিনী।এদিকে জোগাড়
চলতে থাকে যাওয়ার সব ব্যবস্থার।সরকার সা'ব বলেছে কিছুই লাগবে না ,শুধু দুই
টা কাপড় হলেই চলবে। বাকী সব ব্যবস্থা সে করে দিবে।টাকা যা লাগে সে ধার
দিবে,পরে বেতন পেয়ে গোলাপী শোধ দিবে।মজিদ আলী বাড়ী ফিরতে ফিরতে ভাবে লোকটা
কতই না ভাল।
চাকরী দিবে আবার টাকাও ধার দিচ্ছে ।আল্লাহ্ তার মঙ্গল করুক।
চার.
শহরে এসে গোলাপী ভিমরী খাওয়ার জোগার।এত্ত বড়-বড় দালান,কত্ত গাড়ি।লোকে
লোকারণ্য,যেন হাট বার।তার কেবলই গ্রামের ফুলতলী হাটের কথা মনে পড়ে
যাচ্ছে।হাট বারে ফুলতলী এমন গিজগিজ করে।মানুষ আর মানুষ।শহরে এসে সরকার
সাহেব গোলাপীকে যে বাড়ীতে নিয়ে গেল সে বাড়ীতে মাত্র এক জন মহিলা থাকে । অথচ
গোলাপীদের সেই ছোট ঘরটিতে পাঁচ জন থাকতে হত।গোলাপী ভাবতে লাগল এ জগতে কারও
ঘর আছে,থাকার মানুষ নেই।আবার কারও থাকার মানুষ আছে,ঘর নেই।এটাই যেন দুনিয়ার
খেলা।গোলাপী ভেবে পায় না এই খেলার মানে কী?সরকার সাহেব বলে গেছে তার চাকরীর
ব্যবস্থা করে জলদি ফিরে আসবে।
কী সুন্দর তিন তালা বাড়ী।সামনে ফুলের বাগান।লাল,সাদা,গোলাপী,হলুদ,কত
ফুল,প্রজাপতি ঘুরছে এক ফুল থেকে আরেক ফুলে।যেন প্রজাপতি আর ফুলেরই বাড়ী।সব
কিছু সিনেমা সিনেমা লাগছিল গোলাপীর কাছে।ঘরের ভিতরেই সব ব্যবস্থা।
গোসলখানা,পায়খানা, সব।টেলিভিশনও আছে,রঙ্গীন।এতসব পেয়ে গোলাপী যেন তার
ছন্নছাড়া দারিদ্রতার ছাপ লাগা বিবর্ণ অতীতের দুঃসহনীয় স্মৃতি গুলো ভুলেই
গেল।যে স্মৃতি সে রেখে আসতে চায়নি।শত আবেগ,সহস্র আশ্রু দিয়ে যে স্মৃতিকে সে
ধরে রাখতে চেয়েছিল।আজ সুখের ছোঁয়া পেয়ে সেই স্মৃতি গুলো সে বেমালুম ভুলে
গেল।
পাঁচ.
মজিদ এখন খুব খুশি।সারা ক্ষন পান মুখে থাকে ।মেয়ের তার চাকরি করব।সরকার
সাহেব তার কিছু জমি তাকে চাষ করতে দিয়েছে।কিছু নগদ টাকাও দিয়ে
গিয়েছিল।বলেছে গোলাপী চাকরী করে শুধ দিবে।সেই টাকায় ঘর টাইট করে ছেয়ে ঝড়ের
চিন্তা দূর করেছে মজিদ আলী।কয়েক মন ধানও কিনেছে।এখন বেশ খুশ মেজাজে
থাকে।স্ত্রীর সাথে ঝগড়াও হয় না। রাতের পালা গান শুনতে যায়।গভীর রাতে ফেরার
পথে গলা ছেড়ে গানও গায় মজিত আলী।ফজিলা বেগম ভাবে লোকটা ভালই ।শুধু টাকা না
থাকলেই যা একটু উলটা পালটা করে।
ভাটির গভীর টানে জীবনের সায়াহ্নে এসে যেন এক চিলতে সুখ ধরা দিয়েছে মজিদ
আলির সংসারে।তারই ছোঁয়ায় জীবনকে বড় রঙ্গীন মনে হচ্ছে।বড় উপভোগ্য মনে
হচ্ছে।মেয়ে তাদের চাকরী করবে।সেই সুখেই আটখানা হয়ে ঘর বাহির করে কাটছে মজিদ
আলীর দিন।
ছয়.
সরকার সাহেব সেই যে গেল আর খোঁজ নেই।অবশ্য গোলাপীর কোন অসুবিধা হচ্ছে
না।তিন বেলা ভাল খেতে পারছে আর টেলিভিশনে সিনেমা দেখে দিন কাটছে।বেশ ভালই
আছে গোলাপী।রাতে,শুধু রাতে একটু খারাপ লাগে।মায়ের কথা খুব মনে পড়ে,মনে পড়ে
ছোট বোন দুটির কথাও।অবশেষে চতুর্থ দিন সরকার সাহেব আসল।সাথে আর একজন লোক।ও
আল্লা,লোকটা কী সুন্দর!নায়কের মত দেখতে।লোকটা আবার ওর দিকে তাকিয়েওছিল।কী
লজ্জাই না লাগছিল গোলাপীর।সরকার সাহেব বললো,ওনিই তোমার চাকরীর ব্যবস্থা
করবেন।আজ রাতে তুমি ওনার সাথে যাবে।গোলাপী বলেছিল রাতে ক্যান?অনেক
দূর,সকালে গেলে দেরি হতে পারে।পরে এখান থেকেই যেতে পারবে। গোলাপীও ভেবেছিল
প্রথম দিন দেরি করা ঠিক হবে না।তাই নির্দ্বিধায় লোকটার গাড়ীতে উঠেছিল
গোলাপী।গোলাপীর অবশ্য খুশি খুশিই লাগছিল।মনে হচ্ছিল যেন স্বপ্নপুরি।আর ঐ
সুন্দর লোকটা রাজকুমার।ইস লোকটার শরীর থেকে কী সুন্দর সেন্ট আসছে।সত্যিই
যেন কোন এক কল্পনার রাজ্যে চলে গেছে।মায়ের কাছে এরকম একটা গল্প সে
শুনেছিল।পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে রাজকুমার এসে রাজকুমারীকে নিয়ে উড়াল
দিল.........।তবে এখানে ঘোড়া নেই আছে জিপ।ভাবতে ভাবতে এক বিশাল বাড়ীতে এসে
যখন গাড়ী থামল তখন চারপাশে রাত।
সাত.
ঘরে ঢুকার পর লোকটা গোলাপীকে জড়িয়ে ধরেছিল।কী লজ্জাই না লাগছিল গোলাপীর।যেন
সে মরে যাবে।ও দেখেছে সিনেমার মধ্যে নায়করা নায়িকাকে এ ভাবে জড়িয়ে
ধরে।গোলাপী আর দাড়াতে পারছিল না,সারা শরীর যেন তার অবশ হয়ে যাচ্ছিল।কোন
রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে খাটের উপর ধপাস করে বসে পড়ল।নিঃশ্বাস দ্রুত হচ্ছে।
কিছুক্ষন পর গোলাপীর মনে হল একটা বিষাক্ত সাপ যেন তাকে বারবার ছোঁবল
মারছে।যার বিষে সারা শরীর জর্জরিত হয়ে যাচ্ছে।নীল হয়ে যাচ্ছ ও।তারপর আর
কিছুই মনে করতে পারেনা।এ ভাবে ঐ রাতে কয়েক বার তাকে ছোঁবল মেরেছে
সাপে।কাঁদতে চেষ্টা করেছে ও কিন্তু পারেনি।ওর কান্না মুখ পর্যন্ত এসে থেমে
গেছে।চোখ দিয়ে শুধু জল গড়িয়েছে।তিন দিন পর লোকটা তাকে সরকার সাহেবের বাড়ী
রেখে যায়।গোলাপী অনেক কেঁদেছে,সরকার সাহেবের পায়ে ধরেছে বাড়ী ফিরতে
চেয়েছে।সরকার সাহেব তাকে ফিরতে দেয়নি,আটকে রেখেছে একটা ঘরে। এখন মাঝে মাঝেই
কোর্ট প্যান্ট পরা লোক গুলো তাকে চাকরী দিতে আসে।আবাব বন্দি করে রাখে একটা
কামরায়।ঘরের ভিতরের অন্ধকারের মতই গোলাপীর রঙ্গীন স্বপ্ন গুলো অন্ধকার হতে
থাকে।এখন আর সে ঘরে আলো জালায় না।আলো দেখলেই তার ভয় হয়। গোলাপীর চলার পথে
এখন আলো যেন স্থিমিত,রুদ্ধ।অন্ধকারের অপদেবতা যে পথের একচ্ছত্র অধিপতি।আর
সে অন্ধকারে হারাতে থাকে গোলাপী ।এই অন্ধকার শেষ হবে কিনা,কখনো অন্ধকার
ফুড়ে আলো দেখা দিবে কিনা,আর দিলেও সে আলো গোলাপীকে আলোকিত করবে কিনা গোলাপী
নিজেও জানে না।
ARNING:
Any unauthorized use
or reproduction of
'Community' content is
strictly prohibited
and constitutes
copyright infringement
liable to legal
action.
[প্রথমপাতা] |
লেখকের আগের লেখাঃ
|